ইউনিভার্সিটি অব ক্যালিফোর্নিয়া লস অ্যাঞ্জেলেস (ইউসিএলএ) ক্যাম্পাসে গত এপ্রিল মাসে প্রো-প্যালেস্টাইন ক্যাম্পে সহিংস আক্রমণ চালানোর অভিযোগে দুইজন ইসরায়েলপন্থী কর্মীকে সম্প্রতি গ্রেফতার করা হয়েছে। গত ২৫ অক্টোবর শুক্রবার ইউসিএলএর ছাত্রসংসদের সভাপতি অ্যাডাম তফাইলি একটি বিবৃতিতে জানান, এই সহিংস ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে আগস্ট মাসে দায়েরকৃত ফৌজদারি অভিযোগের ভিত্তিতে দুই ব্যক্তিকে গ্রেফতার করা হয়েছে এবং তাদের প্রাথমিক শুনানির নির্ধারিত হয়েছে। বিবৃতিতে আরো বলা হয়, দুইজন ব্যক্তির মধ্যে একজনের বিরুদ্ধে একটি ফৌজদারি অপরাধ এবং অন্যজনের বিরুদ্ধে অভিযোগটি প্রাথমিকভাবে ফৌজদারি হলেও এখন তা মিসডিমিনারে রূপান্তরিত হয়েছে। এছাড়াও তাদের বিরুদ্ধে আরো একটি মামলা বর্তমানে পর্যালোচনাধীন রয়েছে।
গ্রেফতার হওয়া ব্যক্তিরা হলেন এয়াল শালম এবং মালাচি জোশুয়া মার্লান-লিব্রেট। শালমের বিরুদ্ধে অবৈধভাবে টিয়ার গ্যাস ব্যবহারের অভিযোগ আনা হয়েছে। সংঘর্ষের সময় ধারণকৃত ভিডিও ফুটেজে দেখা যায়, এক ব্যক্তি মেরুন রঙের হুডি পরে, ধাতব পাইপ হাতে নিয়ে টিয়ার গ্যাস ছড়াচ্ছেন এবং শিক্ষার্থীদের গালিগালাজ করছেন। ঘটনাস্থলে উপস্থিত এক সাংবাদিক, ডোলোরেস কুইন্টানা, সেই ব্যক্তিকে শালম হিসেবে চিহ্নিত করেন। তবে তার ইউসিএলএর সঙ্গে কোনো সংযোগ রয়েছে কি না, তা এখনো স্পষ্ট নয়।
অন্যদিকে মালাচি জোশুয়া মার্লান-লিব্রেট, যিনি ইউসি সান্তা ক্রুজ থেকে ২০২০ সালে স্নাতক পাস করেন, তার বিরুদ্ধে চারটি অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে মারাত্মক অস্ত্র দ্বারা আক্রমণ, বিশেষ পরিস্থিতিতে ফৌজদারি অপরাধের সঙ্গে ঘৃণামূলক অপরাধ, এবং আরও দুটি পৃথক ঘটনায় সহিংস আচরণের অভিযোগ।
প্রাথমিক তথ্য অনুসারে, ৩০ এপ্রিল রাতে ইউসিএলএ ক্যাম্পাসে ফিলিস্তিনপন্থী ক্যাম্পে এই সংঘর্ষ ঘটে। সংঘর্ষ চলাকালীন, ইসরায়েলপন্থী কর্মীরা ফিলিস্তিনপন্থী শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে টিয়ার গ্যাস স্প্রে করে এবং শারীরিকভাবে আক্রমণ চালায়। শিক্ষার্থীরা জানায়, আক্রমণকারীরা তাদের হুমকি দেয় এবং মানসিকভাবে অত্যাচার করে। শিবিরের নিরাপত্তা রক্ষীরা উপস্থিত থাকলেও প্রায় তিন ঘণ্টা পর পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। লস অ্যাঞ্জেলেসের মেয়র কারেন ব্যাস এই সহিংস ঘটনাটিকে ‘নিন্দনীয় এবং অগ্রহণযোগ্য’ বলে অভিহিত করেন। ইউসিএলএর ছাত্রসংসদ থেকে জানানো হয়েছে, তারা শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ এবং দায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে প্রস্তুত।
এই ঘটনাটি যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় পর্যায়ে ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি করে, বিশেষ করে যেখানে বিভিন্ন ক্যাম্পাসে ইহুদি শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করেন যে, ফিলিস্তিনপন্থী আন্দোলন তাদের জন্য হুমকির পরিবেশ তৈরি করছে। সংঘর্ষের কয়েক দিন পরে, পুলিশ ক্যাম্পাসের শিবির থেকে ২০০ জনকে গ্রেফতার করে, যাদের অধিকাংশই ‘ফ্রি প্যালেস্টাইন’ স্লোগান দিচ্ছিলেন।