১৪ ডিসেম্বর ২০১২, শনিবার, ০২:৫৭:০৯ পূর্বাহ্ন


২ লাখ ৪০ হাজার ডলার আত্মসাতের অভিযোগে হুমায়ুন গ্রেফতার
দেশ রিপোর্ট
  • আপডেট করা হয়েছে : ২৭-১১-২০২৪
২ লাখ ৪০ হাজার ডলার আত্মসাতের অভিযোগে হুমায়ুন গ্রেফতার


কুইন্সের জ্যামাইকা বাসিন্দা হুমায়ুন কবীরকে (৫৩) মহামারি চলাকালীন ফেডারেল ত্রাণ কর্মসূচি থেকে ২ লাখ ৪০ হাজার ডলারের বেশি চুরি করার অভিযোগে গ্রেফতার করা হয়েছে। অভিযোগ অনুযায়ী, তিনি উবার এবং লিফট চালক হিসেবে আর্থিক ক্ষতির মিথ্যা তথ্য দিয়ে ইকোনমিক ইনজুরি ডিজাস্টার লোন (ইআইডিএল) এবং পে-চেক প্রোটেকশন প্রোগ্রাম (পিপিপি) থেকে লোন গ্রহণ করেন। তবে এই অর্থ ব্যবহার করে তিনি ব্যবসা পুনরুদ্ধারের পরিবর্তে নায়াগ্রা ফলস এলাকায় তিনটি আবাসিক সম্পত্তি কিনেছেন।

ডিস্ট্রিক্ট অ্যাটর্নি মেলিন্ডা ক্যাটজ এই ঘটনায় তীব্র নিন্দা জানিয়ে বলেছেন যে হুমায়ুন কবীর সরকারি ত্রাণ কর্মসূচির অপব্যবহার করে নিজের স্বার্থসিদ্ধি করেছেন। মহামারিকালীন ত্রাণ তহবিল থেকে হাজার হাজার ডলার চুরির অভিযোগে গ্র্যান্ড লারসেনি এবং অন্য অপরাধের জন্য অভিযুক্ত হয়েছেন। অভিযোগ প্রমাণিত হলে তার সর্বোচ্চ ১৫ বছরের কারাদণ্ড হতে পারে।

অভিযোগের বিবরণ

৫৩ বছর বয়সী হুমায়ুন কবীর, যিনি কুইন্সের জ্যামাইকা এলাকায় ১৬১ স্ট্রিটে বসবাস করেন, তার বিরুদ্ধে গ্র্যান্ড লারসেনি দ্বিতীয় ডিগ্রি, চুরি করা সম্পত্তির মালিকানা এবং ব্যবসার রেকর্ড জালিয়াতিসহ মোট নয়টি অভিযোগ আনা হয়েছে। অভিযোগ প্রমাণিত হলে সর্বোচ্চ ১৫ বছরের কারাদণ্ড হতে পারে। বিচারক এডওয়ার্ড ড্যানিয়েলস অভিযুক্তকে আগামী ১৬ জানুয়ারি ২০২৫ আদালতে হাজির হওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন।

অভিযোগ অনুযায়ী, ২০২০ সালের জুন মাসে কবীর এসবিএতে ইকোনমিক ইনজুরি ডিজাস্টার লোনের জন্য আবেদন করেন এবং জানান যে, তিনি পরিবহন শিল্পে কাজ করেন। তার আবেদন অনুমোদিত হয় এবং তার ব্যক্তিগত অ্যাকাউন্টে ৫০ হাজার ১০০ ডলার জমা হয়।

২০২১ সালের মার্চ মাসে কবীর পিপিপি লোনের জন্য আবেদন করেন এবং উবার চালক হিসেবে কাজ হারানোর কথা উল্লেখ করেন। তার আবেদন অনুমোদিত হয় এবং তিনি ২০ হাজার ৮৩৩ ডলার তুলে নেন। এর কিছুদিন পর মে মাসে, কবীর আবার পিপিপি লোনের জন্য আবেদন করেন এবং আরো ২০ হাজার ৮৩৩ ডলার পান।

২০২১ সালের আগস্টে কবীরের ইকোনমিক ইনজুরি ডিজাস্টার লোনের মূলধন ৫০ হাজার ১০০ ডলার থেকে বাড়িয়ে ২ লাখ ৫ হাজার ৩০০ ডলার করা হয়। প্রতিটি লোন গ্রহণের সময় কবীর প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন যে, এ তহবিল শুধু মহামারিজনিত আর্থিক ক্ষতি মোকাবিলা এবং তার ব্যবসার জন্য ব্যবহৃত হবে।

তদন্ত ও মামলা

২০২৩ সালের মার্চ মাসে একটি প্রতারণা পর্যবেক্ষণ সেবা থেকে তথ্য পেয়ে নিউইয়র্ক স্টেট ডিপার্টমেন্ট অব ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসেস কবীরের লোন ব্যয়ের তদন্ত শুরু করে। ব্যাংকের নথি পর্যালোচনা করে জানা যায়, কবীর এই লোন থেকে প্রাপ্ত ২ লাখ ৪৬ হাজার ৯৬৬ ডলারের তহবিল তিনটি আবাসিক সম্পত্তি কিনতে ব্যবহার করেছেন। ২০২৪ সালের জানুয়ারিতে এই মামলা কুইন্স জেলা অ্যাটর্নি অফিসে তদন্ত ও বিচার প্রক্রিয়ার জন্য হস্তান্তর করা হয়। অভিযোগের বিষয়ে অবগত হয়ে কবীর ২১ নভেম্বর ১০৩তম পুলিশ প্রিসিংকটে আত্মসমর্পণ করেন।

ডিস্ট্রিক্ট অ্যাটর্নি ক্যাটজ বলেছেন, ‘কোভিড-১৯ মহামারি লাখ লাখ কর্মী এবং ছোট ব্যবসার মালিকদের জীবিকা নির্বাহের ক্ষেত্রে গভীর চ্যালেঞ্জ তৈরি করেছিল। অভিযুক্ত ব্যক্তি আমাদের ফেডারেল সরকারের প্রদান করা এই জরুরি সহায়তামূলক কর্মসূচিগুলোর অপব্যবহার করে নিজের ব্যক্তিগত স্বার্থসিদ্ধি করেছেন বলে অভিযোগ করা হয়েছে। আমাদের পাবলিক সার্ভিস কর্মসূচির জালিয়াতি মোকাবিলায় আমরা দৃঢ়প্রতিজ্ঞ। আমি ধন্যবাদ জানাই হোমল্যান্ড সিকিউরিটি ইনভেস্টিগেশনস নিউইয়র্ক, নিউইয়র্ক স্টেট ডিপার্টমেন্ট অব ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসেস এবং নিউইয়র্ক সিটি পুলিশ ডিপার্টমেন্ট ফাইন্যান্সিয়াল ক্রাইমস টাস্ক ফোর্সকে, যারা এই অভিযুক্তকে বিচারের আওতায় আনতে আমাদের সহায়তা করেছেন।

এই তদন্ত কুইন্স ডিস্ট্রিক্ট অ্যাটর্নি অফিস, হোমল্যান্ড সিকিউরিটি ইনভেস্টিগেশনস নিউইয়র্ক এল ডোরাডো টাস্ক ফোর্স এবং নিউইয়র্ক সিটি পুলিশ ডিপার্টমেন্ট ফাইন্যান্সিয়াল ক্রাইমস টাস্ক ফোর্সের সহযোগিতায় পরিচালিত হয়।

মামলাটি পরিচালনা করছেন ডিস্ট্রিক্ট অ্যাটর্নির ফ্রড ব্যুরোর সহকারী অ্যাটর্নি জোশুয়া সি ট্র্যাকটেনবার্গ, জোসেফ টি কনলের তত্ত্বাবধানে। বর্তমানে হুমায়ুন জামিনে রয়েছেন।

শেয়ার করুন