স্বৈরাচারী শেখ হাসিনা পালিয়েছে, কিন্তু তার দোসররা এখনো প্রশাসন থেকে সর্বত্র রয়েছে। তারা এখনো ষড়যন্ত্র অব্যাহত রেখেছে। বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে পিজি হাসপাতালে স্লো পয়জনিং করা হয়েছে। বিএসএমএমইউর প্রক্টর এবং ড্যাবের কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম-মহাসচিব ডা. শেখ ফরহাদ এসব কথা বলেন। গত ১৯ জানুয়ারি সন্ধ্যায় কুমিল্লাবাসী আয়োজিত জ্যাকসন হাইটসের ইটজি রেস্টুরেন্টে অনুষ্ঠিত এক সভায় তিনি এসব কথা বলেন। যুক্তরাষ্ট্র বিএনপির সহ-সভাপতি ও বাংলাদেশ সোসাইটির নির্বাচন কমিশনের চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট জামাল আহমেদ জনি সভাপতিত্বে এবং ইঞ্জিনিয়ার মাইনুদ্দীনের পরিচালনায় অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন ডা. শেখ ফরহাদ। বিশেষ অতিথি হিসাবে উপস্থিত থেকে বক্তব্য রাখেন যুক্তরাষ্ট্র বিএনপির সাবেক যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক আনোয়ারুল ইসলাম, বাংলাদেশ সোসাইটির সাবেক সহ-সাধারণ সম্পাদক আমিনুল ইসলাম চৌধুরী, সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান সালাউদ্দিন সরকার, সাবেক চেয়ারম্যান রুহুল কুদ্দুস খোকন, প্রফেসর মনির হোসেন, দাউদকান্দি বিএনপির ভাইস প্রেসিডেন্ট কামরুল ইসলাম, আল আমিন সুমন, দেওয়ান আব্দুস সাত্তার, সাইদুজ্জামান রিঙ্কু প্রমুখ।
প্রচণ্ড খারাপ আবহাওয়াকে উপেক্ষা করে বিপুলসংখ্যক কুমিল্লাবাসী অনুষ্ঠানে উপস্থিত হয়েছিলেন। প্রধান অতিথির বক্তব্যে ডা. শেখ ফরহাদ বলেন, দলের প্রতি ভালোবাসার কারণেই এই বৈরী আবহাওয়াকে উপেক্ষা করে আপনারা আজকের অনুষ্ঠানে এসেছেন। আপনারা যারা দেশ ছেড়েছেন, আমি জানি এর পেছনে কষ্টের কাহিনী আছে। তিনি বলেন, জুলাই-আগস্ট আন্দোলনে প্রবাসী বাংলাদেশিদের বিরাট ভূমিকা রয়েছে। ওই সময় বাংলাদেশে সবকিছু বন্ধ ছিল। কিন্তু আপনাদের কারণে আমরা তথ্য পেয়েছি। আপনাদের কারণেই দেশের অর্থনীতির চাকা সচল রয়েছে। তিনি বলেন, ৪ আগস্ট আমাদের পিজি হাসপাতালের ৪০টি বাসে সরকার পরিকল্পনা করে আগুন লাগিয়ে দেয়। প্রথম আসামি করা হয় আমাকে। কিন্তু পরিবর্তনে আমরা বেঁচে যাই, এখন তাদেরই আসামি করা হয়েছে। কিন্তু ক্ষোভের সঙ্গে বলেন, শেখ হাসিনা পালিয়েছে, তার দোসররা প্রশাসন থেকে সর্বত্র। তারা এখনো ষড়যন্ত্র করছে। তিনি জুলাই-আগস্ট বিপ্লবে তারেক রহমানের পরিকল্পনার কথা বলতে গিয়ে বলেন, তার পরিকল্পনাতেই আন্দোলন সফল হয়েছে। তিনি আরো বলেন, গত ১৫ বছর যারা বিএনপি করেনি, এখন তারাই বিএনপির নাম ভাঙিয়ে চাঁদাবাজি করছে। আর মিডিয়া তা ফলাও করে প্রচার করছে। কারণ মিডিয়াও এখনো ফ্যাসিস্ট মুক্ত হয়নি। তাদের দোসররা মিডয়ায় বসে রয়েছে। তিনি বলেন, বেগম খালেদা জিয়ার আপসহীন ভূমিকার কারণেই আজকে দেশ স্বৈরাচার মুক্ত। বেগম খালেদা জিয়াকে যখন পিজি হাসপাতালে নেওয়া হয়, তখন তাকে স্লো পয়জনিং করা হয়েছে। আল্লাহর রহমতে তিনি বেঁচে গিয়েছেন। তিনি আরো বলেন, বাংলাদেশের মানুষ আর আওয়ামী লীগকে চায় না। তবে আমরা যদি স্বৈরাচারের বিচার করে যেতে না পারি, তাহলে আরেকটি ফ্যাসিস্ট তৈরি করবে। তিনি যুক্তরাষ্ট্র বিএনপির বিষয়টি কেন্দ্রে জানাবেন বলে উল্লেখ করেন।
অ্যাডভোকেট জামাল আহমেদ জনি অনুষ্ঠানে সফল করার জন্য সবার প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে বলেন, আজকে শহিদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের জন্মবার্ষিকীতে আমি তার আত্মার মাগফেরাত কামনা করছি এবং আমাদের একটি দেশ দেওয়ার জন্য তার প্রতি কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করছি। বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার রোগমুক্তি কামনা করছি এবং বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের হাততে শক্তিশালী করার প্রত্যয় করছি।
মোহাম্মদ আনোয়ারুল ইসলাম শহিদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান আত্মার মাগফিরাত কামনা করেন এবং যুক্তরাষ্ট্র বিএনপি নেতাদের যে অপমানসূচক চিটি দেওয়া হয়েছে তা কেন্দ্রীয় নেতাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন।
আমিনুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, আমাদের অবস্থা যেন আওয়ামী লীগের মতো না হয়, সেদিকে কেন্দ্রীয় নেতাদের সজাগ থাকার আহ্বান জানান।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথিকে ফুলেল অভিনন্দন জানানো হয়।