৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫, শুক্রবার, ০৫:০৯:২৫ অপরাহ্ন


উত্তমের লাশ ১০ দিন পড়েছিল বাথরুমে
দেশ রিপোর্ট
  • আপডেট করা হয়েছে : ১২-০২-২০২৫
উত্তমের লাশ ১০ দিন পড়েছিল বাথরুমে উত্তম কুমার


সত্যিই বড় মর্মান্তিক। এমন করুণ মৃত্যু কারো কাম্য হতে পারে না। তারপরও মানুষ কীভাবে এমন মৃত্যুকে আলিঙ্গন করে, তা-ও আবার আমেরিকার মতো উন্নত দেশে থেকে। বলছিলাম বাংলাদেশি আমেরিকান উত্তম কুমারের কথা। একা থাকতেন ১৫০-৪০, ৭১ অ্যাভিনিউ ফ্লাশিংয়ের একটি অ্যাপার্টমেন্ট বিল্ডিংয়ে। এখানের ৮ নম্বর বিল্ডিংয়ে নিজের ক্রয় করা অ্যাপার্টমেন্ট। নিউইয়র্ক পুলিশের পক্ষ থেকে নিউইয়র্কস্থ বাংলাদেশ কনস্যুলেটে উত্তম কুমারের ইনফরমেশন দেওয়া হয়। ইনফরমেশনের মধ্যে ছিল তার নাম, ঠিকানা এবং জন্মতারিখ। তারা আরো জানিয়েছে, উত্তম কুমারের লাশ নিউইয়র্কের ফিউনারেলে পড়ে রয়েছে। তার কোনো আত্মীয়স্বজন পাওয়া যাচ্ছে না। মৃত্যুর পর তার লাশ ১০ দিনের মতো বাথরুমে পড়েছিল। লাশের গন্ধে অ্যাপার্টমেন্টে বিল্ডিংয়ের লোকজন পুলিশে খবর দেয়। পুলিশ এসে লাশ নিয়ে যায় এবং বাসা সিলগালা করে চলে যায়। নিউইয়র্কস্থ বাংলাদেশ কনস্যুলেট থেকে বিষয়টি জানানো হয় সাংবাদিক সোহেল মাহমুদকে। এর আগে তিনি এ রকম আরো কয়েক কেসের সমাধান করেছেন। সোহেল মাহমুদ সঙ্গে নেন ড্রামের অর্গানাইজিং ডিরেক্টর কাজী ফৌজিয়াকে। শুরু করেন মিশন।

প্রথমেই ছুটে যান উত্তম কুমার যে বিল্ডিংয়ে থাকতেন সেই বিল্ডিংয়ে। তার অ্যাপার্টমেন্ট নম্বর ছিল ওয়ান এল। তার সেখান থেকে জানতে পারেন উত্তম কুমার তার বাসায় একা থাকতেন। বাসায় কোনো ফোন ছিল না, এমনকি ইন্টারনেটও ব্যবহার করতেন না। যার গন্তব্য ছিল কাজ এবং বাসা। ইন্টারনেটের জন্য যেতেন লাইব্রেরিতে। সোহেল মাহমুদ ও কাজী ফৌজিয়া সেই বিল্ডিংয়ের সুপারের সঙ্গে দেখা করেন। কথা বলেন, ওই বিল্ডিংয়ের বাংলাদেশি সিকিউরিটির সঙ্গে। সিকিউরিটি এ কে এম আহমেদ বলেন, আমি এখানে সাত বছর থাকি। সাত বছর থেকে তাকে আমি দেখছি। তিনি একা থাকতেন। তার সঙ্গে কেউ ছিল না। কারো সঙ্গে তার যোগাযোগও ছিল না। তার লাশ বাথরুমে পড়েছিল প্রায় ১০ দিনের মতো। প্রায় ২০ বছরের মতো তিনি এই বিল্ডিংয়ে ছিলেন। তাকে সবাই টম নামে চিনতেন। তারা উত্তম কুমারের ব্যাপারে কোনো তথ্য উদ্্ঘাটন করতে পারেননি। এমনকি একটি ছবিও উদ্ধার করতে পারেননি। যে কারণে সোহেল মাহমুদ বিষয়টি তার প্রবাসী টিভিতে তুলে ধরেন।

প্রবাসী টিভির প্রতিবেদন দেখে উত্তম কুমারের আত্মীয় অদিত্য মজুমদার সোহেল মাহমুদের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। অদিত্য মজুমদার বলেন, সে এখানে আসে ১৯৯৫ সালে। আসার পর থেকে তার সঙ্গে কারো যোগাযোগ নেই। আমি ২০০৬ সালে তার খোঁজে একবার আসি। কিন্তু তাকে পাইনি। সে থাকতো ঢাকার টিকাটুলির রামকৃষ্ণ মিশনে। সে আমার ভাইপো। সে আমার জেঠাতো ভাইয়ের ছেলে। তার বাবা-মা থাকেন চট্টগ্রামের দেওয়ান বাজারে। তাদের সঙ্গেও তার যোগযোগ ছিল না। তার বোনের মেয়ে থাকে ফ্লোরিডায়। ওর কাছ থেকে আমি ঠিকানা সংগ্রহ করি। সে ঠিকানা অনুযায়ী আমি যাই। পরে আপনাদের প্রতিবেদন দেখে আপনার সঙ্গে যোগাযোগ করি। আপনাকে ধন্যবাদ। আপনাদের কারণেই আমরা তাকে পেয়েছি। তার সৎকার কারে আপনাদের সহযোগিতা চাই।

শেয়ার করুন