যৌক্তিক কারণ ছাড়াই ঢালাওভাবে বরখাস্ত, ছাঁটাই, লে-অফকে অবিলম্বে বেআইনি ঘোষণার দাবিতে গত ৬ ও ৭ মার্চ মেরিল্যান্ড রাজ্যের ফেডারেল আদালতে একটি মামলা হয়েছে।
ডেমোক্র্যাট শাসিত ২০ রাজ্যের ২০ জন অ্যাটর্নি জেনারেল সংঘবদ্ধভাবে এ মামলা দায়ের করেছেন ট্রাম্প প্রশাসনের অন্তত দুই ডজন ফেডারেল এজেন্সির বিরুদ্ধে। মামলা গ্রহণের পর শিগগিরই শুনানি অনুষ্ঠিত হবে বলে আদালত জানিয়েছেন।
গত ২০ জানুয়ারি ক্ষমতা গ্রহণের পর প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের নতুন দফতর ‘ডিপার্টমেন্ট অব গভর্নমেন্ট অ্যাফিসিয়েন্সি’র প্রধান ধনকুবের ইলোন মাস্ক প্রচলিত রীতি অনুযায়ী কোনো ধরনের নোটিশ ছাড়াই কয়েক লাখ ফেডারেল কর্মচারীকে বরখাস্ত করেছেন। এর মধ্যে অন্তত ২৪ হাজার জন রয়েছেন প্রবেশনারি অফিসার। মূলত এদের বরখাস্তকে সম্পূর্ণ বেআইনি হিসেবে অভিহিত করা হয়েছে মামলার আবেদনে।
মামলায় আরো উল্লেখ করা হয়, ফেডারেল সরকারের ব্যয়-সাশ্রয়ের অভিপ্রায়ে বিভিন্ন দফতরের আড়াই লক্ষাধিক কর্মকর্তা-কর্মচারী বরখাস্তের আদেশ জারির পরিপ্রেক্ষিতে গোটা আমেরিকায় এক ধরনের অস্থিরতা তৈরি হয়েছে। ক্ষোভ সৃষ্টি হচ্ছে। বরখাস্তকৃতরা এখনো কীভাবে দিনাতিপাত করবেন পরিবার-পরিজন নিয়ে, সে ধরনের অনিশ্চিত একটি অবস্থা বিরাজ করছে।
আরো উল্লেখ করা হয়েছে, ফেডারেল চাকরিবিধির ন্যূনতম শর্ত পালনের চেষ্টা করা হয়নি এ গণবরখাস্তের আদেশ জারির আগে। তাই সবাইকে পুনর্বহালের আবেদনও জানানো হয়েছে দায়েরকৃত এ মামলায়। একই সঙ্গে ফেডারেল প্রশাসনের আর কোনো কর্মচারীকে বরখাস্তের আদেশের বিরুদ্ধেও আগাম স্থগিতাদেশ চাওয়া হয়েছে। মামলায় যুক্তি দেখানো হয়েছে যে, ব্যয় সংকোচন অথবা সাশ্রয়ের অজুহাতে গণবরখাস্তের অসহায় ভিকটিম হতে চলেছেন ট্যাক্স প্রদানকারী আমেরিকানরা। কারণ তারা কোনো ধরনের সেবাই সহজে পাবেন না। বিশেষ করে প্রবীণদের সোশ্যাল সিকিউরিটি বেনিফিট, যুদ্ধ ফেরত সৈন্যদের কল্যাণভাতা ইত্যাদি স্থবিরতায় আক্রান্ত হবে, যা কোনোভাবেই কাম্য নয়।
মামলায় মেরিল্যান্ডের অ্যাটর্নি জেনারেলের সঙ্গে বাদী হয়েছেন মিনেসোটা, আরিজোনা, ক্যালিফোর্নিয়া, কলরাডো, কানেকটিকাট, হাওয়াই, ইলিনয়, ম্যাসাচুসেটস, মিশিগান, নেভাদা, নিউজার্সি, নিউমেক্সিকো, নিউইয়র্ক, ওরেগণ, রোড আইল্যান্ড, ভারমন্ট ও উইসকনসিনের অ্যাটর্নি জেনারেলরা। মামলা দায়েরের জন্যে ম্যারিল্যান্ডকে বেছে নেওয়ার কারণ হচ্ছে, ইলোন মাস্কের আগ্রাসী পদক্ষেপের ভিকটিমের মধ্যে সবচেয়ে বেশি বাস করেন এই স্টেটে, যে সংখ্যা ৩ লাখ ৬৬ হাজারের বেশি। এরপরের অবস্থানে রয়েছে ভার্জিনিয়া স্টেটে ৩ লাখ ২১ হাজার। যদিও ভার্জিনিয়ার অ্যাটর্নি জেনারেল এই মামলায় সম্পৃক্ত হননি।
উল্লেখ্য, এর আগে ট্রাম্পের জারি করা আরো কয়েকটি আদেশকে চ্যালেঞ্জ করে একই ধরনের মামলা হয়েছে বিভিন্ন আদালতে।