০৫ ডিসেম্বর ২০২৫, শুক্রবার, ০৯:৩১:৩৫ অপরাহ্ন
শিরোনাম :
স্ন্যাপ সুবিধা ফিরলেও কঠোর নিয়মে বিপাকে ৪০ মিলিয়ন মানুষ মসজিদে ধারাবাহিক হামলা, উদ্বেগে মুসলিম সম্প্রদায় ফেব্রুয়ারি ১ থেকে রিয়েল আইডি ছাড়া বিমানযাত্রায় লাগবে ৪৫ ডলারের ফি নিউইয়র্কে শীতকালে ঘর গরম রাখার জন্য এনার্জি সহায়তার আবেদন শুরু দারিদ্র্যপীড়িত দেশ থেকে যুক্তরাষ্ট্রে অভিবাসন স্থায়ীভাবে বন্ধের আহ্বান ট্রাম্পের ১৯ দেশের গ্রিনকার্ডধারীদের পুনর্মূল্যায়ন শুরু তারেকের ‘ফেরা ইস্যু’ ঘোলা পানিতে মাছ শিকারে চেষ্টা বিডিআর বিদ্রোহের নৃশংস হত্যাকাণ্ডের কমিশন রিপোর্টে তোলপাড় রাষ্ট্রীয় সর্বোচ্চ মর্যাদায় খালেদা জিয়া ১১ মাসে ২৮ জন বাংলাদেশী ভারতীয় সীমান্ত রক্ষীবাহিনী কর্তৃক নিহত হয়েছে


মাহমুদ খলিলের মামলা চলবে, সরকারের আপত্তি খারিজ
দেশ রিপোর্ট
  • আপডেট করা হয়েছে : ০৭-০৫-২০২৫
মাহমুদ খলিলের মামলা চলবে, সরকারের আপত্তি খারিজ মাহমুদ খলিল


ফিলিস্তিনি বংশোদ্ভূত এবং কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ছাত্র মাহমুদ খলিলের মামলা নিউজার্সির ফেডারেল আদালতে অব্যাহত রাখার নির্দেশ দিয়েছেন বিচারক। গত ৩০ এপ্রিল আদালতের এই রায়ে যুক্তরাষ্ট্র সরকারের মামলাটি বন্ধ করার প্রচেষ্টা প্রত্যাখ্যাত হয়েছে। সরকার দাবি করেছিল, ইমিগ্রেশন আইনের কিছু ধারা অনুসারে খলিলের আবেদন খারিজ হওয়া উচিত। কিন্তু আদালত স্পষ্ট জানিয়েছে, এই আইনের মাধ্যমে এমন সাংবিধানিক দাবি খারিজ করা যাবে না। মাহমুদ খলিল, যিনি একজন বৈধ স্থায়ী বাসিন্দা এবং রাজনৈতিক মতপ্রকাশের পক্ষে সোচ্চার ছিলেন, গত ৮ মার্চ নিউইয়র্কে আটক হন। তার স্ত্রী ড. নূর আবদাল্লা, যিনি সদ্য তাদের প্রথম সন্তানের জন্ম দিয়েছেন, জানান আমি স্বস্তি পাচ্ছি যে, আদালত এই গুরুত্বপূর্ণ মামলাটি এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার অনুমতি দিয়েছে। তবে এখনো অনেক পথ বাকি। আমার স্বামী যেন আমাদের সন্তানের সঙ্গে একত্রিত হতে পারেন, সেজন্য আমি লড়াই চালিয়ে যাবো।

আমেরিকান সিভিল লিবার্টিজ ইউনিয়নের ইমিগ্র্যান্টস রাইটস প্রজেক্টের সিনিয়র আইনজীবী নূর জাফর বলেন, এই রায় প্রমাণ করে, ফেডারেল সরকার নির্বিচারে কারো সাংবিধানিক অধিকার হরণ করতে পারে না। সরকারের পক্ষ থেকে যুক্তি দেওয়া হয়েছিল, ইমিগ্রেশন ও ন্যাশনালিটি অ্যাক্টের (আইএনএ) নির্দিষ্ট ধারা আদালতের এখতিয়ার সীমিত করে। কিন্তু আদালত রায়ে জানায়, মাহমুদের মতামত ও রাজনৈতিক কার্যকলাপের বিরুদ্ধে নেওয়া পদক্ষেপ সাংবিধানিকভাবে প্রশ্নবিদ্ধ, এবং তা বিচারিক পর্যালোচনার আওতাভুক্ত।

আইনজীবী অ্যামি গ্রিয়ার বলেন, আমরা আজ এক ধাপ এগিয়ে গেলাম মাহমুদের অধিকার পুনরুদ্ধারে। এসিএলইউ-নিউজার্সির নির্বাহী পরিচালক আমল সিনহা বলেন, মাহমুদকে বেআইনিভাবে আটক করা হয়েছে এবং এটি সরাসরি রাজনৈতিক প্রতিশোধের একটি উদাহরণ। মাহমুদের আইনি দল আদালতের কাছে জামিন এবং লুইজিয়ানা থেকে তার নিউজার্সিতে প্রত্যাবর্তনের আবেদন করেছে। তারা একটি প্রাথমিক আদেশ চাচ্ছে, যার মাধ্যমে মাহমুদকে অবিলম্বে মুক্তি দিয়ে তার স্ত্রী ও নবজাতকের কাছে পাঠানো যায়। এই আদেশের ফলে ট্রাম্প প্রশাসনের সেই নীতিও স্থগিত হতে পারে, যার অধীনে ফিলিস্তিনি অধিকারের পক্ষে মতপ্রকাশ করা ব্যক্তিদের লক্ষ্যবস্তু করা হয়।

সেন্টার ফর কনস্টিটিউশনাল রাইটসের আইন পরিচালক বাহের আজমি বলেন, মাহমুদের মতামতের স্বাধীনতাকে দমন করার জন্য সরকার যে নীতি প্রয়োগ করেছে, তা স্পষ্টভাবে অসাংবিধানিক। আদালতের এই রায় প্রমাণ করে, বিচার বিভাগকে পাশ কাটিয়ে এসব নীতি প্রয়োগ করা যাবে না।

নিউইয়র্ক সিভিল লিবার্টিজ ইউনিয়নের নির্বাহী পরিচালক ডোনা লিবারম্যান বলেন, এই রায় মাহমুদের পরিবারের জন্য আশা জাগিয়েছে এবং রাজনৈতিক মতপ্রকাশের অধিকার রক্ষায় একটি বড় অগ্রগতি। মাহমুদের মামলা এখন নিউ জার্সির আদালতে চলমান এবং তার মুক্তি নিশ্চিত করতে এসিএলইউ, অনওয়াইসিএলইউ, ড্র‍্যাটেল লুইস, সেন্টার ফর কনস্টিটিউশনাল রাইটস, ক্লিয়ার প্রজেক্ট এবং অন্যান্য মানবাধিকার সংগঠন সম্মিলিতভাবে কাজ করছে। এই মামলা শুধু মাহমুদের জন্য নয়, বরং যুক্তরাষ্ট্রে রাজনৈতিক মতপ্রকাশের স্বাধীনতা, নাগরিক অধিকার এবং সরকারের ক্ষমতার সীমারেখা নির্ধারণে একটি গুরুত্বপূর্ণ দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে।

শেয়ার করুন