৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫, শুক্রবার, ০৩:১৮:০৫ অপরাহ্ন


১০০ শেফ, ৫০০ আমন্ত্রিত অতিথি
আমেরিকান কারি অ্যাওয়ার্ডসের অভূতপূর্ব আয়োজন
দেশ রিপোর্ট
  • আপডেট করা হয়েছে : ২৮-০৫-২০২৫
আমেরিকান কারি অ্যাওয়ার্ডসের অভূতপূর্ব আয়োজন অ্যাওয়ার্ড প্রদান করছেন সিনেটর শেখ রহমান


নিউইয়র্কে প্রথমবারের মতো অনুষ্ঠিত হয়ে গেল আমেরিকান কারি অ্যাওয়ার্ডসের জমকালো আয়োজন। বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে আগত শেফ ও নিউইয়র্কের হোম শেফসহ প্রায় ১০০ রন্ধনশিল্পী অ্যাওয়ার্ডস অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিত অতিথি ছিলেন আরো পাঁচ শতাধিক। খলিল গ্রুপ অব কোম্পানিজ ও আশা গ্রুপের যৌথ আয়োজনে গত ২৪ মে কুইন্সের অভিজাত ভেন্যু টেরেস অন দ্য পার্কে অনুষ্ঠিত হয় এই আয়োজন। অনুষ্ঠানের টাইটেল স্পন্সর ছিল আশা রেস্টুরেন্ট ও খলিল বিরিয়ানি হাউস। 

অনুষ্ঠানের শুরুতেই নৃত্যাঞ্জলির শিল্পীরা দলগত নাচ পরিবেশন করেন। এছাড়াও নৃত্য পরিবেশন করেন বাংলাদেশ একাডেমি অব ফাইন আর্টস-বাফার শিল্পীরা। সংগীত পরিবেশন করেন সারেগামাপা খ্যাত বলিউডের সংগীতশিল্পী প্রিয়ানী ভানী পান্ডীত ও দিব্যরাজ বোস। সাদিয়া খন্দকারের সঞ্চালনায় স্বাগত বক্তব্য রাখেন আমেরিকান কারি অ্যাওয়ার্ডসের যৌথ আয়োজক যুক্তরাষ্ট্রের জনপ্রিয় শেফ, খলিল গ্রুপ অব কোম্পানিজের প্রেসিডেন্ট মো. খলিলুর রহমান ও বিশিষ্ট ব্যবসায়ী আশা গ্রুপের প্রেসিডেন্ট ও সিইও আকাশ রহমান। এরপরই শুরু হয় অ্যাওয়ার্ড প্রদান। ১৮টি ক্যাটাগরিতে ২৬ জনকে পুরস্কৃত করা হয়।

আমেরিকান কারি অ্যাওয়ার্ডসে বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে পুরস্কার পান বেস্ট রেস্টুরেন্ট সান সু কাপ সান (কোরিয়ান), আলাদিন সুইটস অ্যান্ড রেস্টুরেন্ট (বাংলাদেশি আমেরিকান), বেস্ট ক্যাটারিং সার্ভিস গোল্ডেন প্যালেস (ব্রঙ্কস, নিউইয়র্ক), বেস্ট শেফ প্রফেশনাল মাহবুবুর রহমান (যুক্তরাষ্ট্র), বেস্ট শেফ ইন্টারন্যাশনাল মো. বিল্লাল হোসেন (কাতার এয়ারওয়েজ) ও ড. মানিন্দার সাধু (কানাডা), রাইজিং স্টার অব দ্য ইয়ার নূর হোসেন (যুক্তরাষ্ট্র), বেস্ট ফিউশন কারি ইনোভেশন মাস্টারশেফ লওরেন্স গোমেজ (ভারত), ফ্লেভারস অব দ্য ফিউচার হাবিবুর রহমান জহির (বাংলাদেশ), কালিনারি ওয়েলনেস চ্যাম্পিয়ন প্রফেসর ডা. মজিবুল হক (টেক্সাস), হসপিটালিটি আইকন সাখাওয়াত হোসেন (বাংলাদেশ), কালিনারি লিজেন্ড টিপু রহমান (ইউকে), বেস্ট ফুড ব্লগার (এথনিক ফুডস) আদনান ফারুক হিল্লোল এবং বেস্ট ফুড ব্লগার (মডার্ন অ্যান্ড ফিউশন ফুডস) নুসরাত ইসলাম। দেশ-বিদেশে রন্ধনশিল্পে বিশেষ অবদানের জন্য অস্ট্রেলিয়ান শেফ বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত টনি খানকে লাইফটাইম অ্যাচিভমেন্ট অ্যাওয়ার্ড প্রদান করা হয়। প্রত্যেকের হাতে পুরস্কার তুলে দেন যুক্তরাষ্ট্রের জর্জিয়া অঙ্গরাজ্যের সিনেটর শেখ রহমান। 

অনুষ্ঠানে হোম শেফ প্রতিযোগিতার বিজয়ীদের হাতে পুরস্কার তুলে দেন আয়োজনের বিচারকরা। পুরস্কারপ্রাপ্তরা হলেন- মেইন কোর্স বিভাগে তিনটি পুরস্কার আলমা ফেরদৌস লিয়া (প্রথম পুরস্কার), তাসনুভা ইসলাম (দ্বিতীয়) ও মাকসুদা আহমেদ (তৃতীয়), এপেটাইজার বিভাগে দুটি পুরস্কার জাহানারা বেগম (প্রথম) ও ফারাহ তাজ (দ্বিতীয়) এবং আফটার কোর্স (ডেসার্ট) বিভাগে তিনটি পুরস্কার মেহনাজ ভূঁইয়া (প্রথম), হাইজিয়া রহমান (দ্বিতীয়) ও শাহানা বেগম (তৃতীয়)। এছাড়াও বিশেষ বিবেচনায় আরও তিনজন হোম শেফকে পুরস্কার দেওয়া হয়। তারা হলেন- কৃষ্ণা তিথি (ইনোভেশন অ্যান্ড প্রেজেন্টেশন), শায়লা রশীদ (ডেডিকেশন অ্যান্ড সার্ভিস) ও ওয়াসিয়া ইসলাম (ডেডিকেশন অ্যান্ড সার্ভিস)। 

উপস্থিত বিচারকরা ছিলেন বাংলাদেশের সুপরিচিত রন্ধনশিল্পী রাহিমা সুলতানা রীতা, লবী রহমান, মেরীনা খন্দকার, শাহীন আফরোজ ও ওয়াশিংটন ইউনির্ভাসিটি সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজির স্কুল অব বিজনেসের অ্যাসিস্ট্যান্ট প্রফেসর কালিনারি বিশেষজ্ঞ মো. গোলাম মোস্তফা। এ সময় বিচারকদের সবার হাতে সম্মাননা স্মারক তুলেন দেন সিনেটর শেখ রহমান।

অনুষ্ঠানে নিউইয়র্কের বিশিষ্ট ব্যক্তি মাস্টার অব ল মোহাম্মদ এন. মজুমদার, অ্যাটর্নি রাজু মহাজন, বাংলা পত্রিকা ও টাইম টিভির সম্পাদক আবু তাহের, আশা গ্রুপের চেয়ারপারসন নারী উদ্যোক্তা এশা রহমান, খলিল গ্রুপের চেয়ারপারসন মোছাম্মৎ রিমা খাতুন, কি-ম্যাক্স রিয়েলিটির রিয়েলটর মোহাম্মদ কবীর, সাংবাদিক হাবিবুর রহমান, এটিভি ইউএসএর স্টেশন চিফ শামীম আল আমিন, সাপ্তাহিক সাদাকালোর নির্বাহী সম্পাদক মোহাম্মদ কাশেম, আশা গ্রুপের জিএম বোরহানুস সুলতান, কমিউনিটি অ্যাকটিভিস্ট নূরে আলম জিকু এবং বাংলাদেশে খলিল কালিনারি আর্টস সেন্টারের ভাইস প্রিন্সিপাল ও আমেরিকান কারি অ্যাওয়ার্ডসের সমন্বয়ক ফাতেমা শিরিন। 

সিনেটর শেখ রহমান বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের উত্তরোত্তর উন্নতি ও সমৃদ্ধিতে বাংলাদেশিরা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখে চলেছেন। তারা মূলধারার বিভিন্ন অঙ্গনে নিজেদের প্রতিভার স্বাক্ষর রাখছেন। প্রথমবারের মতো আয়োজিত আমেরিকান কারি অ্যাওয়ার্ডস অনুষ্ঠানটিও মূলধারায় কালিনারি শিল্পে এশিয়ান ও বাংলাদেশি ফুডকে জনপ্রিয় করে তুলতে সহায়তা করবে।

মো. খলিলুর রহমান বলেন, যুক্তরাষ্ট্রে রন্ধনশিল্প জগতে কারি অ্যাওয়ার্ডসের আয়োজন ব্যাপক সাড়া ফেলেছে। আজকের এই গালা নাইটে ৫০০ মানুষের উপস্থিতি এটিই প্রমাণ করেছে। আগামীতে দেশ-বিদেশের রন্ধনশিল্প জগতের আরো ব্যক্তিত্বের সমাবেশ ঘটবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি। 

আকাশ রহমান বলেন, যুক্তরাষ্ট্রে প্রথমবারের মতো হলেও আয়োজনটিকে আন্তর্জাতিক মানের করার জন্য আমরা সর্বাত্মক চেষ্টা করেছি। অ্যাওয়ার্ডের ইউনিক ডিজাইন ও অনুষ্ঠানের স্বাতন্ত্র্য বৈশিষ্ট্য আয়োজনকে সফল ও সার্থক করে তুলেছে। আগামী বছর এ আয়োজন আরো বড় পরিসরে করার ঘোষণা দেন তিনি। 

অনুষ্ঠানে যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন স্টেটের বিশিষ্ট ব্যক্তি, রাজনীতিবিদ, আইনপ্রণেতা ও রন্ধনশিল্পীরা উপস্থিত ছিলেন। 

শেয়ার করুন