০৫ ডিসেম্বর ২০২৫, শুক্রবার, ০১:২৭:০৯ অপরাহ্ন
শিরোনাম :
স্ন্যাপ সুবিধা ফিরলেও কঠোর নিয়মে বিপাকে ৪০ মিলিয়ন মানুষ মসজিদে ধারাবাহিক হামলা, উদ্বেগে মুসলিম সম্প্রদায় ফেব্রুয়ারি ১ থেকে রিয়েল আইডি ছাড়া বিমানযাত্রায় লাগবে ৪৫ ডলারের ফি নিউইয়র্কে শীতকালে ঘর গরম রাখার জন্য এনার্জি সহায়তার আবেদন শুরু দারিদ্র্যপীড়িত দেশ থেকে যুক্তরাষ্ট্রে অভিবাসন স্থায়ীভাবে বন্ধের আহ্বান ট্রাম্পের ১৯ দেশের গ্রিনকার্ডধারীদের পুনর্মূল্যায়ন শুরু তারেকের ‘ফেরা ইস্যু’ ঘোলা পানিতে মাছ শিকারে চেষ্টা বিডিআর বিদ্রোহের নৃশংস হত্যাকাণ্ডের কমিশন রিপোর্টে তোলপাড় রাষ্ট্রীয় সর্বোচ্চ মর্যাদায় খালেদা জিয়া ১১ মাসে ২৮ জন বাংলাদেশী ভারতীয় সীমান্ত রক্ষীবাহিনী কর্তৃক নিহত হয়েছে


অভিবাসীদের সুরক্ষা চ্যালেঞ্জে
নিউইয়র্ক ফর অল অ্যাক্ট থেমে গেল স্টেট আইনসভায়
দেশ রিপোর্ট
  • আপডেট করা হয়েছে : ১৮-০৬-২০২৫
নিউইয়র্ক ফর অল অ্যাক্ট থেমে গেল স্টেট আইনসভায় গত ১২ জুন নিউইয়র্ক স্টেট ক্যাপিটলের বাইরে ‘নিউইয়র্ক ফর অল অ্যাক্ট’-এর পক্ষে অভিবাসী অধিকার কর্মীরা প্রতিবাদ করছেন


অভিবাসী সম্প্রদায়কে সুরক্ষা দিতে প্রস্তাবিত ‘নিউইয়র্ক ফর অল অ্যাক্ট’ বিলটি এই বছর স্টেট অ্যাসেম্বলিতে গৃহীত হওয়ার আগেই পথ হারালো। বিলটি নিউইয়র্ক স্টেটে অভিবাসন-সংক্রান্ত ফেডারেল সংস্থাগুলোর সঙ্গে স্থানীয় আইনপ্রয়োগকারী সংস্থার সহযোগিতা নিষিদ্ধ করার কথা বলেছিল। তবে রাজনৈতিক দ্বিধা, সময়সংকট এবং কেন্দ্রীয় সরকারের কার্যক্রম রোধে রাজ্যের অসহায়তা সব মিলিয়ে বিলটির ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত রয়ে গেছে। বিলটির প্রস্তাব দেন স্টেট সিনেটর অ্যান্ড্রু গুনার্ডেস এবং অ্যাসেম্বলি মেম্বার কারিনেস রেয়েস। বিলটি যদি পাস হতো, তবে পুরো স্টেটে একটি অভিন্ন মানদণ্ড তৈরি হতো, যেখানে স্থানীয় সরকার বা পুলিশ ইমিগ্রেশন অ্যান্ড কাস্টমস এনফোর্সমেন্ট (আইস)-এর সঙ্গে সহযোগিতা করতে পারতো না। যদিও নিউইয়র্ক সিটি ইতিমধ্যেই ‘সাংচুয়ারি সিটি’ হিসেবে পরিচিত, যেখানে পুলিশ আইসের সঙ্গে তথ্য ভাগ করে না, কিন্তু স্টেটের অন্যান্য অংশে এখনো সেই স্বাধীনতা নেই।

অ্যাসেম্বলি মেম্বার কারিনেস রেয়েস জানান, নিউইয়র্ক সিটির বাইরেও অভিবাসীদের ধরপাকড় বাড়ছে, কিন্তু স্টেটব্যাপী সাধারণ মানুষের মধ্যে সেই বাস্তবতা সম্পর্কে সচেতনতা নেই। সেই কারণেই রাজনীতিবিদরাও কার্যকর পদক্ষেপ নিচ্ছেন না। আইনপ্রণেতাদের আশা ছিল, শেষ মুহূর্তে বিলটি নিয়ে আলোচনা হবে। কিন্তু গত সপ্তাহে স্টেট সিনেট তাদের অধিবেশন শেষ করলেও বিলটি আলোচনাতেও আসেনি। এর অন্যতম কারণ হলো ৪০ দিন দেরিতে বাজেট পাস হওয়া। এর ফলে অন্যান্য সাধারণ বিলের পক্ষে সময় বের করাই কঠিন হয়ে দাঁড়ায়।

নিউইয়র্ক ফর অল অ্যাক্ট হলো একটি প্রস্তাবিত আইন, যা নিউইয়র্ক স্টেটে অভিবাসী সম্প্রদায়ের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে চায়। এ আইনের মূল উদ্দেশ্য ছিল স্টেটের স্থানীয় এবং স্থানীয় আইনপ্রয়োগকারী সংস্থাগুলোকে ফেডারেল ইমিগ্রেশন অ্যান্ড কাস্টমস এনফোর্সমেন্ট (আইসিই) সংস্থার সঙ্গে সহযোগিতা না করার বাধ্যবাধকতা আরোপ করা। অর্থাৎ স্টেটের প্রতিটি স্থানীয় পুলিশ বা সরকারি সংস্থা আইসের অননুমোদিত অভিযান বা গ্রেফতারের ক্ষেত্রে সহযোগিতা করতে পারবে না। বর্তমানে নিউইয়র্ক সিটি ‘সাংচুয়ারি সিটি’ হিসেবে অভিহিত, যেখানে পুলিশ আইসিইয়ের সঙ্গে তথ্য ভাগ করে না, কিন্তু রাজ্যের অন্যান্য অংশে এই ধরনের সুরক্ষা এখনো বিস্তৃত নয়। নিউইয়র্ক ফর অল অ্যাক্ট বিলটি পুরো রাজ্যে অভিবাসীদের জন্য একটি অভিন্ন সুরক্ষা বিধান তৈরি করতে চেয়েছিল, তবে রাজনৈতিক অমিল এবং সময়সীমার সংকটে এই বিলটি পাস হয়নি।

বিলটি নিয়ে সচেতনতা তৈরি করতে প্রতিবাদকারীরা ক্যাপিটল বিল্ডিংয়ের সামনে ও সিনেট চেম্বারের প্রবেশপথে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন। কিন্তু তাতেও রাজনীতিকদের মনোভাব বদলায়নি।

এদিকে অ্যাসেম্বলি স্পিকার কার্ল হেস্টি বলেন, আমরা এই ঘটনার জন্য মর্মাহত, কিন্তু রাজ্য হিসেবে আমাদের পক্ষে আইসিইয়ের অভিযান রোধ করা কার্যত অসম্ভব। তিনি যোগ করেন, ফেডারেল সরকারের অধীনে থাকা সংস্থাগুলোর কর্মকাণ্ড রোধে রাজ্য আইন কোনো বড় ভূমিকা রাখতে পারে না। এ প্রসঙ্গে উল্লেখযোগ্য আরেকটি আইন হলো প্রটেক্ট আওয়ার কোর্টস অ্যাক্ট, যেটি আদালত প্রাঙ্গণে আইসের ওয়ারেন্ট ছাড়া গ্রেফতার রোধ করে। কিন্তু সেটিও ইতোমধ্যেই যুক্তরাষ্ট্রের বিচার বিভাগের চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছে।

এমনকি ‘নিউইয়র্ক ফর অল অ্যাক্ট’ আইনসভায় পাস হলেও গভর্নর ক্যাথি হোচুল এটি সই করতেন কি না, তা নিয়েও সন্দেহ ছিল। গত সপ্তাহে কংগ্রেসে সাক্ষ্যদানকালে রিপাবলিকান কংগ্রেসম্যান মাইক ললার তার অবস্থান জানতে চাইলে হোচুল বলেন, আমি নিশ্চিত নই এটি আদৌ পাস হবে কি না। তিনি বিলটির প্রতি কোনো প্রতিশ্রুতি দেননি। বর্তমান পরিস্থিতিতে আইসের বিরুদ্ধে স্টেটের ক্ষমতা সীমিত থাকায়, অভিবাসী অধিকার রক্ষা নিয়ে রাজনীতিকদের মধ্যে একধরনের নির্লিপ্ততা দেখা যাচ্ছে। তবে সমাজকর্মীরা বলছেন, লড়াই এখানেই থেমে থাকবে না। রাজ্যের প্রতিটি কোণায় অভিবাসীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে তারা আন্দোলন চালিয়ে যাবেন।

শেয়ার করুন