৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫, শুক্রবার, ০৫:১৬:১২ অপরাহ্ন


আর্লি ভোট শুরু : ২৪ জুন চূড়ান্ত ভোট
নিউইয়র্ক কি ইতিহাসের প্রথম মুসলিম মেয়র পেতে যাচ্ছে!
দেশ রিপোর্ট
  • আপডেট করা হয়েছে : ১৮-০৬-২০২৫
নিউইয়র্ক কি ইতিহাসের প্রথম মুসলিম মেয়র পেতে যাচ্ছে! জোহরান মামদানিকে সমর্থন দিচ্ছেন কংগ্রেসওম্যান ওকাসিও


নিউইয়র্ক সিটির মেয়র নির্বাচনে ডেমোক্রেটিক পার্টির প্রাথমিক বাছাইপর্বে একজন তরুণ অভিবাসী এবং রাজনৈতিক পরিবার থেকে আসা নিউইয়র্ক অঙ্গরাজ্যের সাবেক এক গভর্নরের মধ্যে মূল লড়াইটা হবে। ওই তরুণ অভিবাসী ডেমোক্রেটিক পার্টির বামপন্থী রাজনীতিক হিসেবে পরিচিত। আর সাবেক ওই গভর্নর একজন মধ্যপন্থী রাজনীতিবিদ। ডেমোক্রেটিক পার্টির প্রার্থিতার দৌড়ে এগিয়ে থাকা এই দুই প্রতিদ্বন্দ্বী হলেন নিউইয়র্ক অঙ্গরাজ্যের আইনসভার ডেমোক্র্যাট সদস্য জোহরান মামদানি এবং সাবেক গভর্নর অ্যান্ড্রু কুমো। নিউইয়র্কের মেয়র নির্বাচনকে সামনে রেখে ডেমোক্রেটিক পার্টির প্রাথমিক বাছাইপর্বকে প্রগতিশীল আন্দোলনকারীদের সঙ্গে রক্ষণশীল ধারার পুরোনো প্রজন্মের লড়াইয়ের প্রতিচ্ছবি হিসেবে দেখা হচ্ছে। ২৪ জুন প্রাথমিক বাছাইপর্বের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। মেয়র পদে সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে ৪ নভেম্বর। যদিও ইতিমধ্যে আর্লি ভোট শুরু হয়েছে। গত ১৪ জুন থেকে আর্লি ভোট শুরু হয়েছে। আর্লি ভোট চলবে ২২ জুন পর্যন্ত। এ পর্যন্ত বিভিন্ন জরিপে দেখা যাচ্ছে জোহরান মামদানি এগিয়ে রয়েছেন। নিউইয়র্ক সিটিতে যে প্রার্থী প্রাইমারিতে জয়লাভ করে তারই চূড়ান্তভাবে মেয়র নির্বাচিত হওয়ার কথা ডেমোক্রেটিক পার্টি থেকে। সেই হিসাবে নতুন ইতিহাস সৃষ্টি হতে পারে নিউইয়র্ক সিটির মেয়র নির্বাচনে। প্রথমবারের মতো হয়তো মুসলিম মেয়র পেতে যাচ্ছে নিউইয়র্ক সিটি। মেয়র ছাড়াও অন্যান্য পদে প্রাথমিক নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। যার মধ্যে রয়েছে সিটি কম্পট্রোলার, পাবলিক অ্যাডভোকেট, কাউন্সিলম্যান এবং বিচারপতি পদে। কাউন্সিলম্যান পদে বাংলাদেশি আমেরিকান সাহানা হানিফকেও প্রাইমারিতে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে হচ্ছে।

ডেমোক্র্যাটদের প্রাথমিক বাছাই কেন গুরুত্বপূর্ণ

নিউইয়র্ক নগর মূলত ডেমোক্রেটিক পার্টির ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত। তাই বলা যায়, আগামী নভেম্বরে অনুষ্ঠেয় মেয়র নির্বাচনে ডেমোক্রেটিক পার্টির প্রার্থীরই জয়ী হওয়ার সম্ভাবনা বেশি। ২০২১ সালে ডেমোক্রেটিক পার্টির প্রার্থী হিসেবে এরিক অ্যাডামস প্রায় ৪০ শতাংশ ভোটের ব্যবধানে রিপাবলিকান প্রার্থী কার্টিস স্লিওয়াকে পরাজিত করেছিলেন। সেই জয়ের পর থেকে এরিক অ্যাডামস জাতীয় পর্যায়েও একটি পরিচিত মুখ হয়ে ওঠেন।

নতুন মেয়রকে কী কী সামলাতে হবে

নিউইয়র্ক সিটির মেয়র হওয়ার অর্থ হলো, তিনি যুক্তরাষ্ট্রের অন্যতম বৃহত্তম ও ব্যস্ততম শহরের নির্বাহী কর্মকর্তা। শহরটির নতুন মেয়র যিনি হবেন, তাকে অনেক সমস্যা ও জরুরি চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে হবে। এর মধ্যে আছে আবাসন, জীবনযাত্রার ব্যয়, যানজট ও গণপরিবহন। নিউইয়র্কবাসীর ক্ষেত্রে এ নির্বাচনের প্রভাব স্পষ্ট। তবে প্রতি বছর শহরটিতে ভ্রমণে আসা প্রায় ৬ কোটি ৫০ লাখ মানুষের ওপরেও এ নির্বাচনের ফলাফলের প্রভাব পড়বে।

নিউইয়র্ক শুধু যুক্তরাষ্ট্রের জন্য নয়, পুরো বিশ্বের জন্যই একটি গুরুত্বপূর্ণ আর্থিক ও সাংস্কৃতিক কেন্দ্র। রাজনৈতিকভাবে প্রাথমিক বাছাইপর্বের এ প্রতিযোগিতা ডেমোক্রেটিক পার্টির ভবিষ্যৎ এবং দলটির বামপন্থী অংশের প্রার্থীদের নির্বাচনী সক্ষমতা বোঝার পূর্বাভাস হিসেবে কাজ করতে পারে। বিশেষ করে আগামী বছর অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া কংগ্রেসের মধ্যবর্তী নির্বাচন এবং দুই বছর পর হতে যাওয়া প্রেসিডেন্ট নির্বাচনকে সামনে রেখে এ বাছাইপর্ব খুবই গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠবে। নিউইয়র্কের মেয়র হওয়ার মানে দেশজুড়ে পরিচিতি পাওয়া। সর্বশেষ তিনজন মেয়রের সবাই পরে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের প্রাথমিক বাছাইয়ে অংশ নিয়েছিলেন।

মূল প্রতিদ্বন্দ্বী কারা

ডেমোক্র্যাটদের প্রাথমিক বাছাইপর্বে প্রধান দুই প্রতিদ্বন্দ্বী হলেন ৬৭ বছর বয়সী অ্যান্ড্রু কুমো এবং ৩৩ বছর বয়সী জোহরান মামদানি। নিউইয়র্ক অঙ্গরাজ্যের সাবেক গভর্নরের সন্তান এবং নিজেও গভর্নর হওয়া কুমোর কর্মজীবন বিস্তৃত। ২০১১ সালে নিউইয়র্কের গভর্নর হওয়ার আগে তিনি যুক্তরাষ্ট্রের আবাসন ও নগর উন্নয়নমন্ত্রী এবং নিউইয়র্কের অ্যাটর্নি জেনারেল হিসেবে কাজ করেছেন। ২০২১ সালে যৌন কেলেঙ্কারির ঘটনাকে কেন্দ্র করে কুমো পদত্যাগ করেন। তিনি এখন রাজনীতিতে ফেরার চেষ্টা করছেন। কুমোকে কয়েক বছর আগে পদত্যাগের আহ্বান জানানো মানুষদের সঙ্গেই তিনি আবার সম্পর্ক গড়ে তুলছেন।

জোহরান মামদানি কোনো রাজনৈতিক পরিবারের সন্তান নন। উগান্ডায় ভারতীয় বংশোদ্ভূত মা-বাবার ঘরে জন্ম নেওয়া মামদানি ২০২১ সাল থেকে নিউইয়র্ক অঙ্গরাজ্যের আইনসভার সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। তিনি ডেমোক্রেটিক সোশ্যালিস্টস অব আমেরিকা (ডিএসএ) সমর্থিত প্রার্থী। মাত্র ৩৩ বছর বয়সী মামদানি নিজেকে এমন একজন প্রার্থী হিসেবে তুলে ধরেছেন, যিনি সাবেক গভর্নর অ্যান্ড্রু কুমোকে হারাতে পারেন। তিনি ভোটারদের মন জয় করতে আবাসন, গণপরিবহন, চাইল্ড কেয়ার ও অর্থনৈতিক ন্যায়বিচারের ওপর জোর দিচ্ছেন।

জোহরান মামদানি নির্বাচিত হলে তিনিই হবেন নিউইয়র্ক নগরের ইতিহাসে প্রথম মুসলিম এবং ইমিগ্র্যান্ট মা-বাবার সন্তান মার্কিন মেয়র। জোহরান মামদানির জন্ম উগান্ডার কাম্পালায়। তিনি সাত বছর বয়সে নিউইয়র্ক নগরে চলে আসেন এবং পরে যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকত্ব লাভ করেন। তার মা মিরা নায়ার ভারতীয় বংশোদ্ভূত একজন বিখ্যাত মার্কিন চলচ্চিত্র নির্মাতা আর বাবা মাহমুদ মামদানি কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক।

মামদানি একটি প্রগতিশীল প্ল্যাটফর্ম থেকে নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন। নির্বাচনী প্রচারে তিনি বিষয়গুলোর ওপর জোর দিচ্ছেন, তার মধ্যে আছে ভাড়া স্থিতিশীল রাখা, সরকারি বাসের ফি তুলে নেওয়া এবং নগর কর্তৃপক্ষের মালিকানাধীন সাশ্রয়ী মূল্যের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান তৈরি করা।

জনমত জরিপগুলোয় দেখা গেছে, ছোট দাতাগোষ্ঠী এবং বামপন্থী স্বেচ্ছাসেবকদের কাছে মামদানির জনপ্রিয়তা বেড়ে চলেছে। তিনি অপ্রতিরোধ্যভাবে এগিয়ে চলেছেন। এক সময় তিনি পেছনে থাকলেও একটিও এখন তিনি ফ্রন্ট রানার। তার প্রতিদ্বন্দ্বী এখন অ্যান্ড্রু কুমো।

আর কারা প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন

ডেমোক্রেটিক পার্টির আরো যারা প্রার্থী হয়েছেন, তাদের মধ্যে আছেন সিটি কম্পট্রোলার ব্র্যাড ল্যান্ডার, নিউইয়র্ক সিটি কাউন্সিলের স্পিকার অ্যাড্রিয়েন অ্যাডামস, সাবেক কম্পট্রোলার স্কট স্ট্রিঙ্গার, অঙ্গরাজ্যের সিনেট সদস্য জেলনার মাইরি, রাজনৈতিক উপদেষ্টা ও অঙ্গরাজ্যের সাবেক আইনপ্রণেতা মাইকেল ব্লেক এবং বিনিয়োগকারী হুইটনি টিলসন। নানা কেলেঙ্কারির ঘটনায় তদন্তের মুখোমুখি বর্তমান মেয়র এরিক অ্যাডামস এবার স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন।

নির্বাচনে কনজারভেটিভ অধিকারকর্মী কার্টিস স্লিওয়া একমাত্র রিপাবলিকান প্রার্থী।

জরিপ কী বলছে

যুক্তরাষ্ট্রের সংবাদমাধ্যম পলিটিকোতে ৯ জুন প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে বলা হয়, এটা এখন মোটামুটি পরিষ্কার, মেয়র নির্বাচনে ডেমোক্রেটিক পার্টির প্রাথমিক বাছাইয়ে এখন মূল লড়াই হচ্ছে জোহরান মামদানি ও অ্যান্ড্রু কুমোর মধ্যে। এক সময় কুমো এগিয়ে থাকলেও এখন মামদানি এগিয়ে। তবে কুমোর নিজস্ব জরিপে বলা হচ্ছে, কুমো মামদানির চেয়ে এগিয়ে রয়েছেন।

মামদানির সমর্থক হিসেবে পরিচিত ‘নিউইয়র্কারস ফর লোয়ার কস্টস’ সুপার পিএসি এবং ‘ওয়ার্কিং ফ্যামিলিজ পার্টি’-এর জাতীয় পিএসির পক্ষ থেকে ‘ডাটা ফর প্রগ্রেস’-এর মাধ্যমে এই জরিপ চালানো হয়েছে। ফলাফল বলছে, মামদানির দারিদ্র্য আর ধনীদের মধ্যে বৈষম্য দূর করার প্রতিশ্রুতি অনেক ভোটারকে আকর্ষণ করছে, বিশেষ করে যারা বাসস্থান সংকট ও দাম বাড়ার বিষয়গুলো নিয়ে চিন্তিত। 

নিউইয়র্কারস ফর লোয়ার কস্টসের মুখপাত্র বিল নাইডহার্ড এক বিবৃতিতে বলেন, এই জরিপ থেকে পরিষ্কার বোঝা যায়, নিউইয়র্কের মানুষ এখন জোহরান মামদানির মতো এমন একজন মেয়র চান, যিনি জীবনযাত্রার ব্যয় কমানো নিয়ে ভাবেন। তারা কেলেঙ্কারিতে জড়ানো অ্যান্ড্রু কুমোর মতো এমন একজন ব্যক্তিকে চান না।

র‍্যাংকড চয়েস ভোটিং কী, কীভাবে কাজ করে

নিউইয়র্ক সিটির স্থানীয় নির্বাচনে ভোটাররা এই পদ্ধতিতে একসঙ্গে সর্বোচ্চ পাঁচজন প্রার্থীকে ভোট দিতে পারেন। ভোটাররা তাদের পছন্দের কয়েকজন প্রার্থীর ক্রম নির্ধারণ করেন। যেমন প্রথম পছন্দ, দ্বিতীয় পছন্দ-এভাবে। প্রথম দফার গণনায় শুধু প্রথম পছন্দের প্রার্থীর ভোট গোনা হয়। যদি কোনো প্রার্থী ৫০ শতাংশের বেশি ভোট না পান, তাহলে সবচেয়ে কম ভোট পাওয়া প্রার্থীকে বাদ দিয়ে আবার গণনা শুরু হয়।

প্রতিটি নতুন দফার গণনায় বাদ পড়া প্রার্থীর ভোটগুলো তার ভোটারদের ব্যালটে থাকা পরবর্তী পছন্দ অনুযায়ী অন্যান্য প্রার্থীর মধ্যে বণ্টন করা হয়।

গাজা ইস্যু কেন নির্বাচনে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে

গাজায় যুদ্ধবিরতির দাবিতে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের প্রস্তাবে যুক্তরাষ্ট্র কীভাবে ভোট দেবে বা ইসরায়েল কতটা সামরিক সহায়তা পাবে, তা নিউইয়র্ক নগরের পরবর্তী মেয়র ঠিক করবেন না। তবু স্থানীয় নির্বাচনে মধ্যপ্রাচ্যের এই সংঘাতের প্রভাব পড়বে। মামদানি জোরালোভাবে ফিলিস্তিনিদের অধিকারের পক্ষে কথা বলেন। তিনি গাজায় যুদ্ধ বন্ধের দাবিতে ২০২৩ সালের নভেম্বরে হোয়াইট হাউসের বাইরে অনশন করেছিলেন। জোহরান মামদানির এমন অবস্থানের কারণে ইসরায়েলের সমর্থকদের মধ্যে ব্যাপক ক্ষোভ তৈরি হয়েছে। মামদানি যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক হলেও রিপাবলিকান পার্টির নিউইয়র্ক সিটি কাউন্সিলের সদস্য বিকি প্যালাডিনো সম্প্রতি তাকে দেশ থেকে বিতাড়িত করার দাবি জানান।

প্যালাডিনোর ওই বক্তব্যের বিরুদ্ধে অনেকে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানান। এর জবাবে তিনি বলেন, বর্তমান নিয়ম অনুযায়ী, ফিলিস্তিনপন্থী গোষ্ঠীর সঙ্গে মামদানির সম্পৃক্ততা থাকায় তিনি নাগরিকত্বের যোগ্য নন।

জোহরান মামদানির সমর্থন

মেয়র প্রার্থী জোহরান মামদানি বিরোতিহীনভাবে প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন। নিউইয়র্কের বিভিন্ন এলাকায় তিনি সমাবেশ ও র‌্যালিতে অংশ নিচ্ছেন। তিনি ম্যানহাটন, জ্যামাইকা, ব্রঙ্কসসহ বিভিন্ন এলাকায় সমাবেশ করছেন। গত ১৪ জুন সন্ধ্যায় ম্যানহাটনে এক সমাবেশে কংগ্রেসওম্যান ওকাসিও কর্টেজ বলেন, এই সিটিতে সবই সম্ভব। এক বছর আগে আমার সঙ্গে জোহরান মামদানির দেখা হয়েছিল এস্টোরিয়ার একটি রেস্টুরেন্টে। ওই সময় সে আমাকে বলেছিল যে মেয়র পদে দাঁড়াবেন। তার সেই প্রত্যাশা আজ প্রাপ্তিতে পরিণত হয়েছে। তিনি এন্ড্রু কুমোর উদ্দেশ্যে বলেন, জোহরানের মানি নেই, কিন্তু আমাদের পক্ষে জনগণ আছে সেটা আমাদের মূলশক্তি। তিনি বলেন, আমরা আর নিউইয়র্ক সিটিতে দুর্নীতিবাজ এবং নারী কেলেঙ্কারির সঙ্গে জড়িতদের দেখতে চাই না। তিনি বলেন, আমি জোহরান মামদানির পক্ষে কাজ করছি বলে অনেকেই আমাকে হুমকি দিচ্ছেন, আমরা রাজনীতি নাকি শেষ। আমি তাদের কথা শুনেনি, আমি জনগণের কথা শুনেছি। তিনি বলেন, আমাদের রাজনীতি পরিবর্তন করতে হলে আমাদের পরিবর্তন হতে হবে।

জোহরান মামদানি বলেন, কংগ্রেসওম্যান ওকাসিও কর্টেজ হচ্ছেন আমার রাজনীতির মডেল। তিনি আমাদের উৎস এবং প্রেরণা। তার দেখানো পথেই আমরা হাঁটছি। তিনি আমাদের দেখিয়েছেন কীভাবে স্রোতের বিপরীতে যুদ্ধ করে জয়ী হতে হয়। তিনি বলেন, আমি গর্বিত একজন ইমিগ্র্যান্ট এবং মুসলিম প্রার্থী হিসেবে। তিনি বলেন, আমি নিউইয়র্ককে সবার জন্য এফেডেবল সিটিতে পরিণত করতে চাই। শিশুদের জন্য স্বার্থসেবা নিশ্চিত করতে চাই, বাস ফ্রি করতে চাই, ভাড়া দুই বছরের জন্য ফ্রিজ করতে চাই, বাড়ির মালিকদের জন্য ট্যাক্স ফ্রিজ করতে চাই। সিটিতে হেইট ক্রাইম বন্ধ করতে চাই। সবার জন্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে চাই। তিনি আরো বলেন, আমাদের কোন কিং নেই। আমার বিরুদ্ধে সবাই মাঠে নেমেছে, এমনকি কুমোও রিপাবলিকানদের কাছ থেকে অর্থ নিচ্ছেন। তিনি বলেন, এখন যে অবস্থা দেখছি, তাতে বোঝা যাচ্ছে ২৪ জুন রাত চাঁদের আলোতে উদ্ভাসিত হবে এবং পরদিন নতুন সূর্যালোক দেখতে পাবো। তিনি সবাইকে অগ্রিম এবং ২৪ জুন ভোট দেওয়ার আহ্বান জানান।

অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন-স্টেট সিনেটর জন লু, রাজনীতিবিদ, বিভিন্ন সংস্থার প্রতিনিধিরা বক্তব্য রাখেন।

জ্যামাইকায় এক সমাবেশেও জোহরান মামদানি সবাইকে ভোট দেওয়ার অহ্বান জানান। তিনি বলেন, আমি মুসলিম বলে কুমোর নির্বাচনী পরিচালনা কমিটির পক্ষ থেকে আমার দাড়ি বড় করে ছাপানো হয়েছে এবং আমার প্রতি অন্যরকম ইঙ্গিত করা হয়েছে। তিনি আরো বলেন, নিউইয়র্কে প্রায় ২ লাখ ৫০ হাজার মুসলিম ভোটার রয়েছে। তার মধ্যে গত বছর মাত্র ৭ শতাংশ ভোট দিয়েছে। তিনি বলেন, আমরা যদি সবাই ভোটাধিকার প্রয়োগ করি তাহলে আমাদের জয় নিশ্চিত ইনশাআল্লাহ। তিনি অ্যাসেম্বলিম্যান ডেভিড ইউপ্রিনের সমালোচনা করে বলেন, তারা এই জ্যামাইকায় আমার বিরুদ্ধে সমাবেশ ও র‌্যালি করবো। আমি তাদের উদ্দেশ্যে বলতে চাই, এতোদিন আপনারা আমাদের গল্প শুনিয়েছেন এখন আমরা আপনাদের গল্প শোনাবো।

 অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য রাখেন-মাওলানা শামসে আলী, মাওলানা দেলোয়ার হোসেন, জ্যাকসন হাইটস বাংলাদেশি বিজনেস অ্যাসোসিয়েশনের প্রেসিডেন্ট গিয়াস আহমেদ, গোল্ডেন অ্যাজ হোম কেয়ারের প্রেসিডেন্ট শাহ নেওয়াজ, জ্যামাইকা বাংলাদেশ ফ্রেন্ডস সোসাইটির সভাপতি ফখরুল ইসলাম দেলোয়ার প্রমুখ। আলোচনা শেষে একটি র‌্যালি জ্যামাইকার বিভিন্ন স্ট্রিট প্রদক্ষিণ করে।

শেয়ার করুন