০৫ ডিসেম্বর ২০২৫, শুক্রবার, ১০:৫৯:৫৬ অপরাহ্ন
শিরোনাম :
স্ন্যাপ সুবিধা ফিরলেও কঠোর নিয়মে বিপাকে ৪০ মিলিয়ন মানুষ মসজিদে ধারাবাহিক হামলা, উদ্বেগে মুসলিম সম্প্রদায় ফেব্রুয়ারি ১ থেকে রিয়েল আইডি ছাড়া বিমানযাত্রায় লাগবে ৪৫ ডলারের ফি নিউইয়র্কে শীতকালে ঘর গরম রাখার জন্য এনার্জি সহায়তার আবেদন শুরু দারিদ্র্যপীড়িত দেশ থেকে যুক্তরাষ্ট্রে অভিবাসন স্থায়ীভাবে বন্ধের আহ্বান ট্রাম্পের ১৯ দেশের গ্রিনকার্ডধারীদের পুনর্মূল্যায়ন শুরু তারেকের ‘ফেরা ইস্যু’ ঘোলা পানিতে মাছ শিকারে চেষ্টা বিডিআর বিদ্রোহের নৃশংস হত্যাকাণ্ডের কমিশন রিপোর্টে তোলপাড় রাষ্ট্রীয় সর্বোচ্চ মর্যাদায় খালেদা জিয়া ১১ মাসে ২৮ জন বাংলাদেশী ভারতীয় সীমান্ত রক্ষীবাহিনী কর্তৃক নিহত হয়েছে


ফোবানার সংবাদ সম্মেলন : জানালেন ভুল বোঝাবুঝির অবসান হয়েছে
দেশ রিপোর্ট
  • আপডেট করা হয়েছে : ১৮-০৬-২০২৫
ফোবানার সংবাদ সম্মেলন : জানালেন ভুল বোঝাবুঝির অবসান হয়েছে সংবাদ সম্মেলনে ফোবানার নেতৃবৃন্দ


ফোবানার দুটো গ্রুপ এক হয়েছে। এই দুটো হচ্ছে শাহনেওয়াজের নেতৃত্বাধীন ফোবানা এবং গিয়াস আহমেদের নেতৃত্বাধীন ফোবানা। গত ১৬ জুন সন্ধ্যায় জ্যাকসন হাইটসের নবান্ন পার্টি হলে তারা যৌথভাবে সংবাদ সম্মেলন করেছেন। বসেছিলেন পাশাপাশি। বললেন, আমাদের মধ্যে ভুল বোঝাবুঝির অবসান হয়েছে। সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন ফোবানার স্ট্রিয়ারিং কমিটির চেয়ারম্যান শাহনেওয়জ, ফোবানার স্ট্রিয়ারিং কমিটির সদস্য গিয়াস আহমেদ, এক্সিকিউটিভি সেক্রেটারি কাজী শাখাওয়াত হোসেন আজম, মেম্বার সেক্রেটারি মঈনুল হক চৌধুরী হেলাল, ফোবানার কর্মকর্তা মোহাম্মদ হোসেন খান, আলী ইমাম শিকদার, হাসানুজ্জামান বাচ্চু, আবুদারা জোবায়ের, খন্দকার ফরহাদ, রহিম নিশান, ফাহাদ সোলায়ান, সাংবাদিক সাহাবুদ্দিন সাগর, ওয়াহেদ কাজী এলিন।

লিখিত বক্তব্যে শাহনেওয়াজ বলেন, আপনারা অবগত আছেন যে, ‘ফোবানা’ (ফেডারেশন অব বাংলাদেশি এসোসিয়েশনস অব নর্থ আমেরিকা) প্রবাসের একটি অত্যন্ত মর্যাদাপূর্ণ সংগঠন। ফোবানা উত্তর আমেরিকায় বসবাসরত বাংলাদেশি প্রবাসীদের বৃহত্তম একটি সংগঠন। এটি মূলত যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন রাজ্য ও কানাডা থেকে পরিচালিত বাংলাদেশি সংগঠনগুলোর একটি সম্মিলিত প্ল্যাটফর্ম। ১৯৮৭ সালে ওয়াশিংটন ডিসিতে প্রথম সম্মেলন আয়োজনের মধ্য দিয়ে ফোবানার যাত্রা শুরু হয়। ফোবানার মূল লক্ষ্য ছিল-যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসরত বাংলাদেশিদের মধ্যে ঐক্য ও সংহতি বৃদ্ধি, বাংলাদেশি সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যকে তুলে ধরা এবং এর প্রচার ও প্রসার, বিভিন্ন সামাজিক, সাংস্কৃতিক এবং শিক্ষামূলক কার্যক্রমের মাধ্যমে প্রবাসীদের জীবনযাত্রার মান উন্নয়ন, যুক্তরাষ্ট্র ও বাংলাদেশের মধ্যে নানা ক্ষেত্রে সেতুবন্ধন রচনা করা।

ফোবানা সৃষ্টির পর থেকে আমরা সে লক্ষেই কাজ করে আসছি। আমাদের নির্ধারিত লক্ষ্যগুলোর সবকটি সম্পূর্ণভাবে পূরণ করতে না পারলেও এক্ষেত্রে আমাদের চেষ্টার ত্রুটি ছিল না। আর তারই ফলশ্রুতিতে আমরা ইতোমধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন রাজ্য ও পাশের দেশ কানাডায় মিলে ৩৮টি সফল সম্মেলন উপহার দিতে পেরেছি।

তিনি আরো বলেন, আপনারা জানেন, গত দুই বছর আমাদের মধ্যকার কিছু ভুল বোঝাবুঝির কারণে আমরা পৃথকভাবে সম্মেলন আয়োজন করেছি। আমরা পৃথকভাবে সম্মেলন আয়োজন করলেও মন এবং মননে আমরা ফোবানার লক্ষ্য থেকে বিন্দুমাত্র বিচ্ছুত হয়নি। আমরা যে লক্ষ্য নিয়ে ফোবানার যাত্রা শুরু করেছিলাম দু’পক্ষই সে লক্ষ্য নিয়ে যথেষ্ট আন্তরিকতার সঙ্গে সম্মেলন উপহার দিয়েছি। কিন্তু দুই বছর পর আমরা অত্যন্ত আনন্দের সঙ্গে ঘোষণা করছি যে, আমাদের মধ্যকার সব ধরনের ভুল বোঝাবুঝির অবসান ঘটিয়ে ৩৯তম ফোবানা সম্মেলনটি আমরা ঐক্যবদ্ধভাবে আয়োজন করছি। এবারের সম্মেলনটি অনুষ্ঠিত হবে নিউইয়র্কের আলোকিত ও পর্যটক আকৃষ্ট শহর নায়াগ্রাতে। আগামী ২৯, ৩০, ৩১ আগস্ট নায়াগ্রার হোটেল শেরাটনের নান্দনিক ভেন্যুতে এ সম্মেলন আয়োজন করা হচ্ছে। আমরা আশা করছি, প্রতি বছরের মতো বিভিন্ন রাজ্য থেকে ৩৯তম ফোবানা সম্মেলনে বাংলাদেশি প্রবাসীরা যোগ দেবেন এবং সম্মেলনকে সফল ও সার্থক করবেন। এবারের সম্মেলনের প্রতিপাদ্য নির্ধারণ করা হয়েছে, ‘প্রবাসী নতুন প্রজন্মই হোক আগামী ফোবানার শক্তি’।

তিনি বলেন, আমরা আপনাদের আশ্বস্ত করতে চাই, এবারের সম্মেলনে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, সেমিনার, সিম্পোজিয়াম এবং অন্যান্য কার্যক্রমের পাশাপাশি যুক্তরাষ্ট্রের মূলধারার রাজনীতি, সংস্কৃতির সঙ্গে বাংলাদেশের সাংস্কৃতিক সেতুবন্ধন রচনার জোর প্রয়াস থাকবে। আমরা মনে করি, এবারের ফোবানা সম্মেলন উত্তর আমেরিকায় বসবাসরত বাংলাদেশিদের জন্য একটি মিলনমেলা এবং নিজেদের সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যকে নতুন প্রজন্মের কাছে তুলে ধরার ক্ষেত্রে নতুন ইতিহাসের জন্ম দেবে। বাংলাদেশের কৃষ্টি, কালচার, সাহিত্য-সংস্কৃতিতে সৃজনশীলতাকেও এবারের সম্মেলনে প্রাধান্য দেওয়া হবে। আমরা প্রবাসীদের নিয়ে বিজনেস নেটওয়ার্ক তৈরি ও অভিজ্ঞতা বিনিময়, বিজনেস লাঞ্চ, বাংলাদেশের শিল্প, সাহিত্য, সাংস্কৃতিক, কৃষ্টি, ঐতিহ্য তুলে ধরে বিভিন্ন আসর, ইয়ুথ গ্রুপের কার্যক্রম বৃদ্ধিসহ নানা বিষয়ের ওপর অগ্রাধিকার দিবো। এবারেও ফোবানার কার্যক্রম নিয়ে প্রকাশ করা হবে একটি ম্যাগাজিন বা স্মরণিকা। এছাড়া আমাদের এবারের সম্মেলনের ‘প্রবাসী নতুন প্রজন্মই হোক আগামী ফোবানার শক্তি’ মূল প্রতিপাদ্যকে প্রাধান্য দিয়ে প্রবাসের নতুন প্রজন্মকে কীভাবে ফোবানার সঙ্গে নিবিড় সম্পর্ক তৈরি ও দায়িত্ব দেওয়া যায় সে বিষয়ে প্রাধান্য থাকবে।

এছাড়া বাংলাদেশ এবং প্রবাসের শিল্পীদের নিয়ে একটি নান্দনিক অনুষ্ঠান উপহার, ইস্যুভিত্তিক সেমিনারগুলোতে সংশ্লিষ্ট বিষয়ে বিশেষজ্ঞ পর্যায়ের ব্যক্তিকে আমন্ত্রণ জানানো হবে। ফোবানার অতিথির তালিকা চূড়ান্ত হলে সংবাদ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে আপনাদের জানানো হবে।

তিনি আরো বলেন, আপনাদের আমরা এটিও আস্বস্ত করতে চাই, এবারের ফোবানার স্টিয়ারিং কমিটি অতীতের চেয়ে অনেক শক্তিশালী। তাই এবারের সম্মেলনকে স্বার্থক করতে আমরা ইতোমধ্যে স্টিয়ারিং কমিটির নেতৃবৃন্দকে নিয়ে একাধিক উপকমিটি করেছি। এসব উপকমিটির চেয়ারম্যানরা সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে নিয়ে সম্মেলনে তাদের কার্যক্রম কীভাবে মানসম্পন্ন ও যুগোপযোগী করা যায়, সে লক্ষ্যে ইতোমধ্যে কাজ শুরু করেছে। আমরা আশা করছি, সম্মেলনের আগে সংবাদপত্রে বিজ্ঞাপন, সংবাদ বিজ্ঞপ্তি আর প্রয়োজন হলে আরো সংবাদ সম্মেলন করে আমাদের সম্মেলনের তথ্যগুলো আপনাদের মাধ্যমে প্রবাসী বাংলাদেশিরা যাতে জানতে পারেন এবং তারা যেন সম্মেলনমুখী হয়, সে লক্ষ্যে কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণ করা হবে। আমরা আশা রাখি, এবারের সম্মেলন দল-মতের উর্ধ্বে থেকে বাংলাদেশ ও উত্তর আমেরিকার জাতীয় স্বার্থকে প্রাধ্যান্য দিয়ে ঐক্যের শক্তিকে জোরালো করবে। আর এবারের সম্মেলনে প্রবাসীরা যাতে ফেলে আসা বাংলাদেশকে খুঁজে পায় সে চেষ্টা থাকবে। আমরা ৩৯ তম ফোবানা অনুষ্ঠানের দূয়ারে দাঁড়িয়ে অকপটে স্বীকার করছি ফোবানার এই কঠিন পথ পাড়ি দিতে যাদের সহযোগিতা ছিল তাদের মধ্যে আপনারা অন্যতম প্রধান নিয়ামক শক্তি হিসেবে কাজ করেছেন। আপনাদের প্রচার-প্রচারনা ফোবানাকে উত্তর আমেরিকা তথা বাংলাদেশে একটি মর্যাদাশীল সংগঠনে পরিণত করতে অগ্রণী ভূমিকা রেখেছে। এ কারণে আপনাদের প্রতি আমাদের রয়েছে উদার কৃতজ্ঞা প্রকাশ।

আমরা এ সংবাদ সম্মেলন থেকে আপনাদের মাধ্যমে ফোবানার বিভক্ত সব গ্রুপকে জাতীয় স্বার্থে দলমতের ঊর্ধ্বে ওঠে সব ধরনের ভেদাভেদ ভুলে একটি ফোবানার পতাকা তলে ঐক্যবদ্ধ হয়ে, ফোবানা যে লক্ষ্যে সৃষ্টি হয়েছিল সেটি বাস্তবায়নে সব পক্ষের প্রতি উদাত্ত আহ্বান জানাচ্ছি। 

আমরা আশা করছি, আগামী ৩৯তম ফোবানাকে সামনের রেখে অতীতের মতো আমাদের প্রতি আপনাদের সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে। আমাদের লিখিত বক্তব্যের ওপর আপনাদের কোনো প্রশ্ন থাকলে আমরা স্টিয়ারিং কমিটির পক্ষ থেকে যথাসাধ্য উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করবো। পরিশেষে আপনাদের আবারও আন্তরিক ধন্যবাদ এবং ৩৯তম ফোবানার নায়াগ্রা সম্মেলনে যোগদানের বিনয়ী আমন্ত্রণ জানাচ্ছি।

সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে জানানো হয়, এবার প্রধান অতিথি হিসেবে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে সলিমুল্লাহ খানকে।

শেয়ার করুন