নিউইয়র্কে বাংলাদেশি ব্যবসায়ীদের যে কটি পুরোনো এবং মর্যাদাপূর্ণ সংগঠন ছিল তার মধ্যে চার্চ ম্যাকডোনাল্ড বাংলাদেশি বিজনেস অ্যাসোসিয়েশন অন্যতম (সিএমবিবিএ)। প্রতিষ্ঠার পর থেকেই এই সংগঠন ঐহিত্য বাজার রেখে চলছিল। কিন্তু দায়িত্ব পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে এক শ্রেণির কর্মকর্তাদের কারণে ব্রুকলিন এলাকায় আরেকটি ব্যবসায়ীক সংগঠন করা হয়। এসব পক্ষপাতদুষ্ট কর্মকর্তাদের একচোখা নীতির কারণে আরেকটি সংগঠনের জন্ম হয়। শুধু তাই নয় খয়ের খাঁদের খাতির করার কারণে ঐতিহ্যবাহী সংগঠনের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ হয়েছে। ব্রুকলিনের বাংলাদেশি অধ্যুষিত এলাকা চার্চম্যাকডোনাল্ডে নিউইয়র্কের সবচেয়ে বড় মেলা হতো সিএমবিবিএর পথমেলা। কিন্তু দুর্বল এবং ঘরকোণা নেতৃত্বের কারণে আজ এই সংগঠনের ভাবমূর্তি তলানিতে এসে ঠেকেছে। এক সময় এই মেলায় হাজার হাজার মানুষ হতো। বেশ সময় নিয়ে সবাইকে সম্পৃক্ত করে মেলা করা হতো। এখন যারা নেতৃত্বে আছেন তারা মনে হয় পছন্দ করেন শর্টকাট রাস্তা। তাছাড়া সবাইকে নিয়ে পথমেলা করতে গেলে যদি তাদের চেয়ে ভালো নেতৃত্ব সামনে চলে আসে- সেজন্য তারা যেনতেনভাবে একটি মেলা করে দায়িত্ব শেষ করেন। অনেকেই অভিযোগ করে বলেছেন, সারা বছর একটি মাত্র মেলা। তা-ও তাড়াহুড়া করে কেন? এই মেলা ছাড়া সাধারণত আর তো কোনো অনুষ্ঠান দেখা যায় না। বছরে একটি অনুষ্ঠান পরিকল্পনা করে সবাইকে নিয়ে করলে অসুবিধা কোথায়? যারা দায়িত্বে থাকেন তারা নিজেদের অনেক বড় কিছু মনে করেন, তাই এই বাজে অবস্থা। তাছাড়া একই ব্যক্তিদের কেন দায়িত্ব দিতে হবে? অনেকেই ক্ষোভের সঙ্গে বলেছেন এই সংগঠনকে পকেট সংগঠনে পরিণত করা যাবে না। নেতৃত্বে পরিবর্তন করতে হবে। তা না হলে আগামী দিনে মেলায় মানুষের অংশগ্রহণ আরো কমতে থাকবে।
নিউইয়র্কের ব্রুকলিনে অনুষ্ঠিত হলো বাংলাদেশি বিজনেস অ্যাসোসিয়েশন ইনক্-সিএমবিবিএর ১৫তম পথমেলা। দুপুর ২টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত চলে বর্ণাঢ্য এ আয়োজন। এতে সভাপতিত্ব করেন রফিকুল ইসলাম পাটোয়ারী এবং আহ্বায়কের দায়িত্ব পালন করেন বিশিষ্ট ব্যবসায়ী মামুনুর রশীদ। মেলায় প্রধান অতিথি ছিলেন ব্যবসায়ী শামসুদ্দিন আজাদ, আর বিশেষ অতিথি ছিলেন নিউইয়র্ক সিটির মেয়র প্রার্থী জোহরান মামদানি এবং সিটি কাউন্সিল ওমেন শাহানা হানিফ। আরো উপস্থিত ছিলেন আব্দুর রব চৌধুরী, গোল্ডেন এজ হোম কেয়ারের প্রেসিডেন্ট শাহ নেওয়াজ, সন্দ্বীপ সোসাইটির সভাপতি ফিরো আহমেদ, চট্টগ্রাম সমিতির সাবেক সভাপতি কাজী শাখাওয়াত হোসেন আজম, বাংলাদেশ সোসাইটির সাবেক সাধারণ সম্পাদক ফখরুল আলম, বিশিষ্ট রিয়েল এস্টেট ব্যবসায়ী নূরুল আজিম, আবুল হাসনাত, লেয়াকত আলী, মহিউদ্দীন, শাইমন, আনোয়ারুল আজিম, এসএম ফেরদাউসসহ বহু কমিউনিটি নেতা ও বিশিষ্টজন।
মেলার অন্যতম আকর্ষণ ছিল র্যাফেল ড্র। প্রথম পুরস্কার ছিল একটি নতুন টয়োটা গাড়ি, যা স্পন্সর করেন বিশিষ্ট ব্যবসায়ী আব্দুল কাদের মিয়া। র্যাফেল ড্র শেষে বিজয়ীদের হাতে পুরস্কার তুলে দেওয়া হয়। মেলার আয়োজক রফিকুল ইসলাম পাটোয়ারী বলেন, প্রবাসী বাংলাদেশিদের মনের খোরাক ও আনন্দ দেওয়ার লক্ষ্যেই এই আয়োজন। আমরা আগামী দিনে আরো বড় ও আকর্ষণীয়ভাবে মেলা আয়োজনের চিন্তা-ভাবনা করছি।
মেলায় বিভিন্ন স্টল বসে এবং সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে দেশের এবং প্রবাসের জনপ্রিয় শিল্পীরা সংগীত পরিবেশন করেন।