১৭ জুলাই ২০২৫, বৃহস্পতিবার, ০৫:৩৭:৩৫ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম :
গোপালগঞ্জ এখন মুজিববাদী সন্ত্রাসীদের আস্তানায় পরিণত হয়েছে- নাহিদ এনসিপি’র মার্চ টু গোপালগঞ্জ কর্মসূচি ঘিরে ব্যাপক সংঘর্ষ চারজন নিহত নিউইয়র্কে ২০ লাখ মানুষ মেডিকেইড ও ৩ লাখ পরিবার স্ন্যাপ সুবিধা হারাবে নতুন ভিসা ফিতে বাংলাদেশিদের খরচ বাড়বে আড়াই গুণ ট্রাম্পের বিরুদ্ধে ২ কোটি ডলার ক্ষতিপূরণ দাবি মাহমুদ খলিলের টেক্সাসের অভিবাসন আইন এসবি ৪ অসাংবিধানিক ঘোষণা ফ্লোরিডার ‘সিনেট বিল ৪-সির কার্যকারিতা বন্ধ করলো যুক্তরাষ্ট্রের সুপ্রিম কোর্ট নতুন নীতি ঘোষণা : ৯ কারণে নাগরিকত্ব হারাতে পারেন জঙ্গিবাদে সতর্ক থাকার মার্কিনী পরামর্শে নানা প্রশ্ন এনসিপিসহ ১৪৪ নিবন্ধন প্রত্যাশী দলের তথ্যে ঘাটতি


লস অ্যাঞ্জেলেসের সাংচুয়ারি সিটি নীতির বিরুদ্ধে মামলা
দেশ রিপোর্ট
  • আপডেট করা হয়েছে : ০২-০৭-২০২৫
লস অ্যাঞ্জেলেসের সাংচুয়ারি সিটি নীতির বিরুদ্ধে মামলা মামলার পর লস অ্যাঞ্জেলেস সিটি হলের বাইরে বিক্ষোভ


ট্রাম্প প্রশাসন গত ৩০ জুন ক্যালিফোর্নিয়ার ফেডারেল কোর্টে লস অ্যাঞ্জেলেস সিটির বিরুদ্ধে একটি মামলা দায়ের করেছে। মামলায় শহরটির ‘সাংচুয়ারি সিটি’ নীতিমালাকে চ্যালেঞ্জ করে বলা হয়েছে, এই নীতিমালা ইচ্ছাকৃতভাবে ফেডারেল ইমিগ্রেশন আইন বাস্তবায়নে বাধা সৃষ্টি করছে এবং ফেডারেল আইনপ্রয়োগকারী সংস্থাগুলোর সঙ্গে বৈষম্যমূলক আচরণ করছে। প্রশাসনের অভিযোগ, লস অ্যাঞ্জেলেসের এই নীতিগুলো যুক্তরাষ্ট্রের অভিবাসন ব্যবস্থার বিরুদ্ধে কাজ করছে এবং সংবিধানের সার্বভৌমত্ব ধারা লঙ্ঘন করছে।

যুক্তরাষ্ট্রের অ্যাটর্নি জেনারেল পাম বন্ডি এক বিবৃতিতে বলেন, সাংচুয়ারি নীতিমালাই লস অ্যাঞ্জেলেসে সাম্প্রতিক সহিংসতা, বিশৃঙ্খলা ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ওপর হামলার মূল কারণ। যারা অবৈধ অভিবাসীদের আমেরিকান নাগরিকদের চেয়ে অগ্রাধিকার দেয়, তারা দেশের আইন ব্যবস্থাকে দুর্বল করছে। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের অধীনে এই নীতি আর চলবে না। প্রশাসনের দাবি, ওবামা প্রশাসনের ‘ওপেন বর্ডার’ নীতির কারণে কয়েক মিলিয়ন অবৈধ অভিবাসী দেশে প্রবেশ করেছে এবং ট্রাম্প সেই নীতি পাল্টানোর অঙ্গীকার করেই নির্বাচিত হন।

মামলার বিবরণে বলা হয়েছে, লস অ্যাঞ্জেলেসের নীতিমালার ফলে ফেডারেল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে তথ্য শেয়ার বন্ধ করা হয়েছে, ইমিগ্রেশন সংক্রান্ত প্রশাসনিক ওয়ারেন্টে সহযোগিতা নিষিদ্ধ করা হয়েছে এবং ফেডারেল এজেন্টদের কারাগারে প্রবেশাধিকার অস্বীকার করা হয়েছে। অথচ একই সঙ্গে অন্যান্য ফেডারেল সংস্থাকে এ ধরনের সুযোগ দেওয়া হয়েছে। 

বিচার মন্ত্রণালয়ের মতে, এসব ব্যবস্থাপনা ফেডারেল আইনকে কার্যকরভাবে বাধাগ্রস্ত করার উদ্দেশ্যেই নেওয়া হয়েছে। আরো বলা হয়েছে, এই নীতিমালার কারণে ২০২৫ সালের ৬ জুনের পর থেকে লস অ্যাঞ্জেলেসে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি মারাত্মকভাবে অবনতি ঘটে। শহরে ব্যাপক বিক্ষোভ, দাঙ্গা, লুটপাট এবং সহিংসতার ঘটনা ঘটে, যার জেরে ন্যাশনাল গার্ড ও মার্কিন মেরিন বাহিনী মোতায়েন করতে হয়। ট্রাম্প প্রশাসন এসব ঘটনাকে শহরের ‘অবৈধ অভিবাসনপন্থী’ অবস্থানের ফলাফল বলে অভিহিত করেছে।

প্রসঙ্গত, ট্রাম্প ২০২৪ সালের নির্বাচনী প্রচারে অবৈধ অভিবাসীদের বহিষ্কারের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। মামলায় দাবি করা হয়েছে, লস অ্যাঞ্জেলেস শহরের নীতিমালা সেই জনমতের পরিপন্থী। শহরটি ২০২৪ সালের ডিসেম্বরে ‘সাংচুয়ারি’ নীতি আনুষ্ঠানিকভাবে কার্যকর করে, যা প্রশাসনের মতে ফেডারেল আইনের সঙ্গে সাংঘর্ষিক।

বিচার মন্ত্রণালয় আদালতের কাছে অনুরোধ করেছে, লস অ্যাঞ্জেলেসের এই নীতিমালাকে অসাংবিধানিক ঘোষণা করা হোক এবং এর বাস্তবায়ন স্থগিত করা হোক। পাশাপাশি তারা অভিবাসন বাস্তবায়নে ফেডারেল সরকারের সর্বোচ্চ কর্তৃত্ব পুনঃপ্রতিষ্ঠার দাবি জানিয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের অ্যাটর্নি বিল অ্যাসাইলাম মামলার পক্ষে বলেন, শহরের এই আচরণ ইচ্ছাকৃতভাবে ফেডারেল ইমিগ্রেশন আইনের প্রয়োগে বাধা সৃষ্টি করছে।

মামলার প্রেক্ষাপটে লস অ্যাঞ্জেলেসে ট্রাম্প প্রশাসনের বিতাড়ন নীতির বিরুদ্ধে ব্যাপক গণবিক্ষোভ হয়। গভর্নর গ্যাভিন নিউসাম ও মেয়র কারেন ব্যাস প্রশাসনের কঠোর ইমিগ্রেশন নীতির কড়া সমালোচনা করেন। এছাড়া জাতীয় নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ন্যাশনাল গার্ড মোতায়েন নিয়ে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ও গভর্নর নিউসামের মধ্যে প্রকাশ্য দ্বন্দ্বও তৈরি হয়েছে। এর আগেও অ্যাটর্নি জেনারেল বন্ডি নিউইয়র্ক সিটির ‘সাংচুয়ারি’ নীতিমালার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন, যা প্রমাণ করে যে ট্রাম্প প্রশাসন অভিবাসন ইস্যুতে আগ্রাসী কৌশল নিচ্ছে। মেয়র কারেন ব্যাসের দফতর থেকে এ বিষয়ে এখনো কোনো আনুষ্ঠানিক মন্তব্য পাওয়া যায়নি।

শেয়ার করুন