১৭ ডিসেম্বর ২০২৫, বুধবার, ১১:২৭:৫০ অপরাহ্ন


দাগনভূঁইয়া ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের নির্বাচনে শামীম-সুমন প্যানেলের নিঙ্কুশ বিজয়
দেশ রিপোর্ট
  • আপডেট করা হয়েছে : ১৭-১২-২০২৫
দাগনভূঁইয়া ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের নির্বাচনে শামীম-সুমন প্যানেলের নিঙ্কুশ বিজয় নবনির্বাচিত সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক


প্রায় ১০ বছর পর নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয় প্রবাসের অন্যতম আঞ্চলিক সংগঠন দাগনভূঁইয়া ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের। বৃষ্টি ও বরফস্নাত প্রচণ্ড ঠান্ডার মধ্যেও ভোটারদের মধ্যে উৎসাহ-উদ্দীপনার যেন কোন কমতি ছিল না। নির্বাচনটি অনুষ্ঠিত হয় গত ১৪ ডিসেম্বর ওজনপার্কের পিএস ২১৪ স্কুলের অডিটোরিয়ামে। গত ১৪ ডিসেম্বর ছিল এই মৌসুমের প্রথম স্নো পড়ার দিন। সেই ছিল প্রচণ্ড ঠান্ডা। কিন্তু নির্বাচন কমিশন তো আগেই নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করেছিলেন। তারা তো তখন জানতেন না, এই দুর্গতি বা কষ্ট তাদের জন্য অপেক্ষা করছে। ভোটাররাও কষ্ট পেয়েছেন। প্রার্থী আর সমর্থকদের অবস্থা তো একেবারেই কাহিল। কারণ তাদের গাড়ি করে ভোটারদের বাড়ি থেকে নিয়ে আসতে হয়েছে, দিয়ে আসতে হয়েছে। ভাগ্য তাদের ভাল যে স্নো পড়া সকালেই শেষ হয়ে গিয়েছিল। কিন্তু ঠান্ডা ছিল বিদ্ধমান। দুপুর থেকে সূর্য মামার উঁকি ঝুঁকিতে ভোটারা ভোটকেন্দ্রে আসতে থাকেন। কমিশনার, প্রার্থী এবং সমর্থকদের মুখে ফিরে আসে হাসি। সেই যাই হোক সকাল ৯টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত ভোট গ্রহণ করা হয়। ১ হাজার ২৬৪টি ভোটারের মধ্যে ৯৫৪ জন ভোটার তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করেন। অনেস্ট ব্যালট’র মাধ্যমে এ ভোট গ্রহণ করা হয়। নির্বাচনে দুটো প্যানেল প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে। একটি প্যানেল ছিল শামীম-সুমন প্যানেল, আরেকটি প্যানেল ছিল কবীর-শামীম প্যানেল।

ভোট সুন্দর এবং সুষ্ঠু হয়েছে। তবে ভোটার তালিকা নিয়ে ক্ষোভ ছিল কোনো কোনো প্রার্থী এবং প্যানেলের। কেউ কেউ বলেছেন, ভোটা তালিকা নিয়ে সমস্যার কারণে আমরা ভোটের আগের রাতেও সন্দিহান ছিলাম, ভোট করবো, কি করবো না। তারপরও দাগনভূঁইয়ার মানুষের কথা, সংগঠনের কথা চিন্তা করে আমরা নির্বাচন করেছি এবং নির্বাচনের ফলাফল মেনে নিয়েছি। তবে প্রচার প্রচারণায় যেভাবে ব্যক্তিগত বিষয় নিয়ে সমালোচনা করা হয়েছে, তা যৌক্তিক ছিল না। ভোট শেষে আমরা সবাই এক। আগামীতে যেন বিষয়গুলো সবার মনে থাকে।

সারাদিন ভোটগ্রহণ এবং গণনা শেষে প্রধান নির্বাচন কমিশনার শাহজাহান কবির নির্বাচনে বেসরকারি ফলাফল ঘোষণা করেন। এ সময় নির্বাচন কমিশনের সদস্য রফিকুল ইসলাম ভূঁইয়া, কাজী হোসাইন, ফয়েজ উল্যাহ মামুন, কফিল উদ্দিন, উভয় প্যানেলের সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী, তাদের সমর্থক এবং কম্যুনিটির সর্বস্তরের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

ফলাফল ঘোষণা পূর্বে নির্বাচন কমিশনের সদস্য, সভাপতি প্রার্থী মোহাম্মদ কবির রাজ্জাক, রেজাউল হক শামীম, সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী শামীম মাহমুদ, গোলাম সারওয়ার সুমন, বাংলাদেশ সোসাইটির সাবেক সভাপতি আব্দুর রব মিয়া, বৃহত্তর নোয়াখালী সোসাইটির নবনির্বাচিত সভাপতি জাহিদ মিন্টু, নবনির্বাচিত সাধারণ সম্পাদক মাইনুদ্দীন পিন্টু, রফিকুল ইসলাম ভূঁইয়া, বৃহত্তর নোয়াখালী সোসাইটির সহ-সভাপতি তাজু মিয়া, শহীদ উল্যাহ কায়ছার, মুহাম্মদ বেলাল, কবির রাজ্জাক প্রমুখ।

প্রধান নির্বাচন কমিশনার শাহজাহান কবির সবাইকে ধন্যবাদ জানান, সুষ্ঠু এবং গ্রহণযোগ্য নির্বাচন করার জন্য। তিনি বলেন, সবার সম্মিলিত সহযোগিতার কারণেই আমাদের পক্ষে নির্বাচন করা সম্ভব হয়েছে। তিনি নির্বাচনী জয়ী এবং পরাজিত প্যানেলেন সব প্রার্থীকে ধন্যবাদ জানান।

বৃহত্তর নোয়াখালী সোসাইটির সভাপতি জাহিদ মিন্টু নির্বাচনে জয়ী প্যানেলকে অভিনন্দন জানিয়ে বলেন, আপনাদের ওপর অর্পিত দায়িত্ব সুষ্ঠুভাবে পালন করবেন। নির্বাচনে যারা পরাজিত হয়েছেন, তাদের সঙ্গে নিয়ে সংগঠন পরিচালনা করবেন। তাতে করে সংগঠনের ভালো হবে।

প্রধান নির্বাচন কমিশনের ঘোষিদ ফলাফল অনুযায়ী শামীম-সুমন প্যানেলের সব প্রার্থী বিজয়ী হন। কবির-শামীম প্যানেলের কেউ জয়লাভ করতে পারেননি। সভাপতি নির্বাচিত হয়েছেন জোউল হক শামীম। তার প্রাপ্ত ভোট ৫৫৪। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী মোহাম্মদ কবীর রাজ্জাক পেয়েছেন ৩৯৩ ভোট। সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট পদে ৫৩৪ ভোট পেয়ে নির্বাচত হয়েছেন মুজিবুর রহমান। পরাজিত প্রার্থী আনোয়ার ই চৌধুরী পেয়েছেন ৪০২ ভোট। সহ-সভাপতি পদে আব্দুস সাত্তার খালেক ৫২৬ ভোটে নির্বাচিত হয়েছেন। তার একমাত্র প্রতিদ্বন্দ্বী শাহাব উদ্দিন আহমে পেয়েছেন ৪০৯ ভোট। সাধারণ সম্পাদক পদে নির্বাচিত হয়েছেন গোলাম সরোয়ার সুমন। তিনি ভোট পেয়েছেন ৫১৯ ভোট। এপদে ৪২৫ ভোট পেয়ে পরাজিত হয়েছেন শামীম মাহমুদ। সহ সাধারণ সম্পাদক পদে শহীদুল আলম নিলয় ৫২১ ভোট পেয়ে নির্বাচিদ হয়েছেন। এ পদে পরাজিত হয়েছেন মোহ. আনোয়ার হোসেন, তিনি পেয়েছেন ৪২১ ভোট। অর্থ সম্পাদক পদে শাহপরান হাসনাত ৫৩৫ ভোটে নির্বাচিত হয়েছে। তার প্রতিদ্বন্দ্বী আনোয়ার হোসেন ৪০১ ভোট পেয়ে পরাজিত হয়েছেন। সহকারী অর্থ সম্পাদক পদে ৫২৬ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন মোয়াজ্জেম হোসেন। তার প্রতিদ্বন্দ্বী আব্দুল্লাহ তামজিদ পেয়েছেন ৪১১ ভোট। সাংগঠনিক সম্পাদক পদে রুবেল আলী ৫৪১ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন। মনির উদ্দিন ৩৯৮ ভোট পেয়ে পরাজিত হয়েছেন। প্রচার সম্পাদক পদে মোশাররফ হোসেন মামুন ৫৫৪ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছে। পরাজিত প্রার্থী মোহাম্মদ হেমাল ৩৮৪ ভোট পেয়ে পরাজিত হয়েছেন। ক্রীড়া সম্পাদক পদে আব্দুল আউয়াল মিন্টু ৫২৭ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন। পরাজিত প্রার্থী হোসেন চৌধুরী পেয়েন ৪১৪ ভোট। কার্যকরি সদস্য পদে নির্বাচিদ হয়েছেন জাকির হোসেন (৫৩৭), মনির আহমেদ (৫৩৭), শহীদুল ইসলাম (৫৩৫), পরাজিত প্রার্থীরা হলেন আমরাফ উদ্দিন (৪০২), মোহাম্মদ এলিয়াস (৪০২) এবং মোহাম্মদ রুবেল (৩৯৪)।

শেয়ার করুন