২৬ এপ্রিল ২০১২, শুক্রবার, ০৭:২২:০৪ অপরাহ্ন
শিরোনাম :
‘ব্রাজিল থেকে জীবন্ত গরু আনা সম্ভব, তবে প্রক্রিয়া জটিল’ খালেদা জিয়ার সঙ্গে মির্জা ফখরুলের ঘন্টাব্যাপী সাক্ষাৎ বিশ্বের প্রতি যুদ্ধকে ‘না’ বলার আহ্বান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ৭ জানুয়ারির সংসদ নির্বাচনে গণতান্ত্রিক ধারাবাহিকতা প্রতিষ্ঠা হয়েছে - হাবিবুল মার্কিন পররাষ্ট্র দফতরের প্রতিবেদন অনুমান ও অপ্রমাণিত অভিযোগ নির্ভর- পররাষ্ট্র মন্ত্রনালয় ইউরোপে ভারতীয় ৫২৭ পণ্যে ক্যান্সার সৃষ্টিকারি উপাদন শনাক্ত বাংলাদেশ ব্যাংকে সাংবাদিকদের প্রবেশে কড়াকড়ি বিএনপির আন্দোলন ঠেকানোই ক্ষমতাসীনদের প্রধান চ্যালেঞ্জ বিএনপিকে মাঠে ফেরাচ্ছে আওয়ামী লীগ উপজেলা নির্বাচন নিয়ে অদৃশ্য চাপে বিএনপি


ট্রাম্পের ফ্লোরিডার বাড়ি থেকে স্পর্শকাতর নথি জব্দ
দেশ রিপোর্ট
  • আপডেট করা হয়েছে : ১৮-০৮-২০২২
ট্রাম্পের ফ্লোরিডার বাড়ি থেকে স্পর্শকাতর নথি জব্দ


সাবেক আমেরিকান প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ফ্লোরিডার বাড়ি থেকে মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থা এফবিআই সর্বোচ্চ গোপনীয় নথিপত্র জব্দ করেছে বলে জানা যাচ্ছে। এফবিআই এজেন্টরা ১১ সেট নথিপত্র সরিয়ে নিয়েছেন। যেগুলির মধ্যে কিছু নথি ঞঝ/ঝঈও বলে চিহ্নিত করা। এর অর্থ হলো এসব দলিলপত্রে এমন সব তথ্য আছে, যা আমেরিকার জাতীয় নিরাপত্তার জন্য নজিরবিহীন গুরুতর ক্ষতির কারণ হতে পারে।

ডোনাল্ড ট্রাম্প কোনোরকম অন্যায় কাজ করার কথা অস্বীকার করেছেন এবং বলেছেন এসব নথি গোপনীয় বলে যে তকমা ছিল তা তুলে নেয়া হয়েছিল। এই প্রথম আমেরিকার কোনো সাবেক প্রেসিডেন্টের বাড়িতে অপরাধ তদন্তে অভিযান চালানো হয়েছে। তার বাড়ি থেকে যেসব নথিপত্র জব্দ করা হয়েছে তার একটি তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে ১২ আগস্ট বিকালে। এর আগে একজন বিচারক সাত পৃষ্ঠার একটি নথি প্রকাশ করেন, যার মধ্যে ছিল ফ্লোরিডার পাম বিচে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের বাসভবন মার-এ-লাগোতে তল্লাশি চালানোর জন্য একটি পরোয়ানার অনুমোদনপত্র।

এতে বলা হয় ৮ আগস্ট তার বাড়ি থেকে বিশটির বেশি বাক্সভর্তি কাগজপত্র জব্দ করা হয়েছে। এসব বাক্সে ছিল ফটোর একটি অ্যালবাম, হাতে লেখা একটি নোট, ‘ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট’ সম্পর্কে কিছু তথ্য এবং ট্রাম্পের দীর্ঘদিনের ঘনিষ্ঠ মিত্র রজার স্টোনের পক্ষ হয়ে লেখা একটি ক্ষমা প্রদর্শনের চিঠি।

সর্বোচ্চ গোপনীয় (টপ সিক্রেট) বলে চিহ্নিত নথিপত্রের চারটি ফাইল ছাড়া আরো জব্দ করা কাগজপত্রের মধ্যে রয়েছে তিন সেট ‘অতি গোপন দলিল’ (সিক্রেট ডকুমেন্টস) এবং আরো তিন সেট অপেক্ষাকৃত নিচু স্তরের ‘গোপনীয়’ (কনফিডেনশিয়াল) দলিল।

গুপ্তচর আইন লঙ্ঘনের তদন্ত

তার বিরুদ্ধে জারি করা এই পরোয়ানা থেকে ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে যে, ট্রাম্প দেশটির গুপ্তচর আইন লঙ্ঘন করে থাকতে পারেন কিনা এফবিআই সেটা তদন্ত করে দেখছে। এই আইন অনুযায়ী, জাতীয় নিরাপত্তার জন্য সম্ভাব্য ঝুঁকিপূর্ণ তথ্য নিজের কাছে রাখা বা তা পাচার করা অবৈধ।

গোপনীয় বলে চিহ্নিত যে কোনো নথি বা অন্যান্য জিনিস সরিয়ে নেয়া আইনে নিষিদ্ধ। ট্রাম্প যখন ক্ষমতায় ছিলেন, তখন এই অপরাধে সাজা তিনি আরো কঠোর করেছিলেন। বর্তমানে এই অপরাধে পাঁচ বছর পর্যন্ত কারাদÐের বিধান রয়েছে।

পরোয়ানাতে বলা হয়েছে, ট্রাম্পের ফ্লোরিডার বাড়ি মার-এ-লাগোর ‘৪৫ অফিস’ নামে চিহ্নিত একটি এলাকা এবং সেখানকার গুদাম ঘরগুলোতে তল্লাশি চালানো হয়েছে। ট্রাম্প এবং তার কর্মচারীরা যে ব্যক্তিগত অতিথি ভবনগুলো ব্যবহার করেন, সেগুলোতে কোনো তল্লাশি চালানো হয়নি।

বিচার বিভাগ ১১ আগস্ট আদালতকে তল্লাশি সংক্রান্ত কাগজপত্র সাধারণের জন্য প্রকাশ করে দিতে বলে। কোনো তদন্ত চলাকালীন এ ধরনের পদক্ষেপ খুবই বিরল। তল্লাশি চালানোর জন্য বিচারক অনুমোদন দেন ৫ আগস্ট এবং তল্লাশি চালানো হয় ৮ আগস্ট।

শুক্রবার রাতে ট্রাম্পের কার্যালয় থেকে দেয়া এক বিবৃতিতে আবার বলা হয়েছে যে ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রেসিডেন্ট পদে থাকাকালীন এই নথিগুলোকে আর গোপনীয় রাখা হবে না বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। তার নির্দেশ ছিল ওভাল অফিস থেকে যেসব নথিপত্র সরানো হবে এবং তার বাসভবনে নিয়ে যাওয়া হবে সেগুলো ডি-ক্লাসিফাইড নথি- অর্থাৎ সরকারিভাবে গোপনীয় নয়। কোন নথিকে গোপনীয় বলে চিহ্নিত করা হবে এবং কোন নথিকে এই শ্রেণিতে রাখা হবে না, সেই সিদ্ধান্ত নেবার ক্ষমতা রয়েছে একমাত্র মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টের।

আইনবিশেষজ্ঞরা আমেরিকান মিডিয়াকে বলেছেন ট্রাম্পের অফিস থেকে দেয়া এই যৃক্তি আদালতে ধোপে টিকবে কিনা তা স্পষ্ট নয়। প্রেসিডেন্ট অবশ্যই একটা নথিকে ডিক্লাসিফাইড করতে পারেন, কিন্তু তাকে সেটা করতে হবে প্রক্রিয়া মেনে। তাদের এ জন্য যথাযথ ফরম পূরণ করতে হবে, তাদের নিয়ম অনুযায়ী একটা অনুমোদন দিতে হবে। শুধু তো বললেই হবে না যে আমি এই নথিগুলোর ওপর থেকে গোপনীয়তা তুলে নিচ্ছি। যথাযথ নিয়ম মেনে এই নথিগুলো গোপন না রাখার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছিল কিনা তা স্পষ্ট নয়।

এদিকে ট্রাম্পের একজন মুখপাত্র টেইলর বুডোউইচ এই হানা দেবার পদক্ষেপকে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে অভিহিত করেছেন। ডোনাল্ড ট্রাম্পের রক্ষণশীল মিত্ররাও এর নিন্দা জানিয়ে বলেছেন ট্রাম্প যেহেতু ২০২৪ সালে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে আবার প্রতিদ্ব›িদ্বতা করার কথা বিবেচনা করছেন, তাই তাকে ‘রাজনৈতিকভাবে ঘায়েল’ করার একটা চেষ্টা এটা।


শেয়ার করুন