২৯ এপ্রিল ২০১২, সোমবার, ০৬:৪৩:০১ অপরাহ্ন
শিরোনাম :
সরকার ও বেসরকারি উদ্যোগে দরিদ্রমুক্ত দেশ গড়ে উঠবে - আসাদুজ্জামান খান কামাল ৭০ শতাংশ মৃত্যু অসংক্রামক রোগে, বাজেটে বরাদ্দ বৃদ্ধির দাবি ‘বিদেশে দেশবিরোধী অপপ্রচারকারীদের বিরুদ্ধে স্থানীয় আইনে ব্যবস্থা নিন’ ভূল স্বীকার করে সরে দাড়ানোয় একজনের বহিস্কারাদেশ প্রত্যাহার বাফেলোতে সন্ত্রাসীদের গুলিতে দুই বাংলাদেশী নিহত ‘শেরে বাংলা আপাদমস্তক একজন পারফেক্ট বাঙালি ছিলেন’ বিএনপির বহিস্কৃতদের জন্য সুখবর! মে দিবসে নয়পল্টনে বিএনপির শ্রমিক সমাবেশ উপজেলা নির্বাচনে অংশ নেয়ার জের, বিএনপির বহিস্কার ৭৬ থাইল্যান্ডের ব্যবসায়ীদের বাংলাদেশে বিনিয়োগে পররাষ্ট্রমন্ত্রীর আহ্বান


সংবাদ সম্মেলনে সাঁওতাল নেতৃবৃন্দ
সাঁওতালদের জমি ও জীবন রক্ষার দাবি
বিশেষ প্রতিনিধি
  • আপডেট করা হয়েছে : ০৮-০৯-২০২২
সাঁওতালদের জমি ও জীবন রক্ষার দাবি


একজন সংসদ সদস্য এবং তার আত্মীয় স্বজনের কবল থেকে সাঁওতালদের জমি, বসতবাড়ি, জীবন ও সম্মান রক্ষার দাবি জানিয়েছেন দেশের বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দ। 

জাতীয় প্রেসক্লাবের তোফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া মিলনায়তনে সংবাদ সম্মেলন ও পরবর্তীতে প্রেসক্লাবের সামনে এক সংহতি সমাবেশ করে তারা এ দাবি জানান। সংবাদ সম্মেলন ও সংহতি সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন উকিল হেমব্রম। বক্তব্য রাখেন সিপিবির সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স, বাসদ এর সহকারী সাধারণ সম্পাদক রাজেকুজ্জামান রতন, জাতীয় শ্রমিক জোটের সভাপতি ও স্কপ নেতা সাইফুজ্জামান বাদশা, আদিবাসী জাতীয় পরিষদ কেন্দ্রীয় কমিটি সভাপতি রবীন্দ্রনাথ সরেন, চারণ সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের সাধারণ সম্পাদক জাকির হোসেন, সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট এর সভাপতি মুক্তা বাড়ৈ, উদীচীর সাংগঠনিক সম্পাদক আরিফ নুর, খাসিয়া মন্ত্রী রানা সুরং, আদিবাসী ছাত্র পরিষদের সাধারণ সম্পাদক তরুণ মুন্ডা। সমাবেশ পরিচালনা করেন বিশুরাম মুর্মু।

সংবাদ সম্মেলন ও সংহতি সমাবেশে নেতৃবৃন্দ বলেন, দিনাজপুরের নবাবগঞ্জ উপজেলায় স্বপ্নপুরি নামে একটি বিশাল এবং আধুনিক বিনোদনকেন্দ্র গড়ে উঠেছে। প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষ সেখানে আনন্দ করতে যায়। সেখানে পার্ক আছে, বিলাসবহুল হোটেল মোটেল আছে, লেক আছে, নানা ধরনের রাইড আছে। বাইরে থেকে দেখতে অত্যন্ত সুন্দর এবং আকর্ষণীয় এই বিনোদনকেন্দ্র। কিন্তু এই স্বপ্নপুরি যে শত শত সাঁওতালের জীবনের স্বপ্ন ও আশা আকাংখ্যা কেড়ে নিয়েছে তা অনেকেরই অজানা। প্রায় ৩০০ একর জমির উপর প্রতিষ্ঠিত এই বিনোদনকেন্দ্রে সাঁওতাল ও মাহালি সম্প্রদায়ের ৩টি কবরস্থান আছে। একটি কবরস্থানের উপর মেয়র শিবলীর বিলাসবহুল বাড়ি নির্মিত হয়েছে যা প্রতিনিয়ত সাঁওতাল সম্প্রদায়কে কষ্টের অনুভূতিতে আচ্ছন্ন করে রাখে। 

নেতৃবৃন্দ বলেন, পুরো উত্তরাঞ্চল জুড়ে সাঁওতালদের অস্তিত্ব আজ সংকটাপন্ন। পদে পদে নির্যাতন করা হচ্ছে। জাল-জালিয়াতি ও প্রতারণার মাধ্যমে পূর্বপুরুষের জমি-জমা কেড়ে নেয়া হচ্ছে। এলাকা থেকে নির্বাচিত সাংসদ এবং তার আপন চাচা একজন ভূমিদস্যু ও সন্ত্রাসীদের প্রশ্রয়দাতা। তারা দুইজন মিলে বিশাল এক বাহিনী লালন পালন করেন। এদেরকে দিয়ে এহেন কোন অপরাধ কর্ম নেই যা তারা করে না। সাঁওতালদের জমিই শুধু তারা দখল করেননি, বন বিভাগের বিপুল পরিমাণ জমিও তারা আত্মসাৎ করেছে। এই অবস্থায় ভয় এবং আতংক সত্ত্বেও তাদের অধীনস্থ  বাহিনীর কয়েকজনের নামও সংবাদ সম্মেলনে তুলে ধরা হয়।  অভিযোগ করা হয় এদের দ্বারা ৭৭.৬১ একর জমি জবর দখল করে রেখেছে এবং আরও অনেক আদিবাসীর সম্পত্তি গ্রাস  করেছে। এরা প্রতিনিয়ত খুন জখম করার হুমকি দিচ্ছে এবং ভারতে চলে যাওয়ার জন্য নানাভাবে চাপ দিচ্ছে। 

সমাবেশে আদিবাসীরা বলেন, এই পরিস্থিতিতে আমাদের জমি ও জীবন রক্ষার দাবিতে দিনাজপুর থেকে ১। গণেশ হেমরম, পিতা- মৃত জেঠা হেমরম, ২। রবেন মার্ডি, পিতা- মৃত সোনা মার্ডি, ৩। খুকুমনি হেমরম, স্বামী- মৃত কবিরাজ হাঁসদা, ৪। অখিল হেমরম, পিতা- মৃত কেনা হেমরম, ৫। লুইস হাসদা, পিতা- বার্নাবাস হাসদা, ৬। সলেমন মার্ডি, পিতা- মৃত দুখন মার্ডি, সকলের সাং- খালিপপুর, থানা- নবাবগঞ্জ, জেলা- দিনাজপুর জাতীয় প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে আবেদন জানাতে এসেছি। 

অন্যদিকে সমাবেশে নেতৃবৃন্দ বলেন, অসহায় সাঁওতালদের বেদনার কথা আমরা সরকারের কাছে পৌঁছে দিতে চাই এবং সাঁওতালদের জীবন ও জমি-জমার সুরক্ষা এবং অধিকার রক্ষার স্বার্থে বাংলাদেশ সরকার যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন আশা করি।

শেয়ার করুন