২৯ মার্চ ২০১২, শুক্রবার, ০৮:০৩:৩৫ অপরাহ্ন


এনজিওদের কাজে ব্যাঘাত ঘটছে
বিশেষ প্রতিনিধি
  • আপডেট করা হয়েছে : ২৮-০৯-২০২২
এনজিওদের কাজে ব্যাঘাত ঘটছে


এএলআরডি’র নির্বাহী পরিচালক শামসুল হুদা অভিযোগ করেছেন, বিভিন্ন সময়ে সরকার কর্তৃক নানাবিধ আইন প্রণয়ন ও পরিপত্র জারির ফলে এনজিও-দের কাজে ব্যাঘাত ঘটছে। যা এসডিজি পূরণের পথকে আরও অমসৃণ করে তুলছে। ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির নসরুল হামিদ মিলনায়তনে “বালু-পাথর উত্তোলন ও দখল-দূষণে নদ-নদীর বিদ্যমান জীর্নদশা এবং পরিবেশ সংকট” বিষয়ক একটি গোলটেবিল আলোচনায় এসব কথা বলেন তিনি।

শামসুল হুদা আরো বলেন, এসডিজি বাস্তবায়নের লক্ষ্যে নদ-নদী-পরিবেশ সুরক্ষা, প্রান্তিক মানুষের অধিকার রক্ষার মাধ্যমে এনজিওগুলো সরকারকে সহযোগিতায় কাজ করছে। কিন্তু বিভিন্ন সময়ে সরকার কর্তৃক নানাবিধ আইন প্রণয়ন ও পরিপত্র জারি করা হচ্ছে। এতে করে নদ-নদী-পরিবেশ সুরক্ষা, প্রান্তিক মানুষের অধিকার রক্ষার মত কাজগুলি এনজিও-দের পক্ষে সম্ভব হচ্ছে না। তিনি বলেন, সরকারের এধরনের কর্মকাণ্ড এসডিজি পূরণের লক্ষ্যমাত্রা অর্জন বাধা প্রাপ্ত হবে। তিনি বলেন, নদ-নদী রক্ষায় আমাদের ঐক্যবদ্ধ, গতিশীল ও সক্রিয় হতে হবে।

বেলার নির্বাহী প্রধান ও পরিবেশবিদ সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন, নদ-নদী রক্ষায় আমাদের ঐক্যবদ্ধ, গতিশীল ও সক্রিয় হতে হবে। বর্তমান ও ভবিষ্যত প্রজন্মের জন্য নদীকে রক্ষা করা রাষ্ট্রের সাংবিধানিক দায়িত্ব। দখল দূষণের পাশাপাশি নদী থেকে বালু-পাথর উত্তোলন এখন সহ্যের বাইরে চলে গিয়েছে। উচ্চ আদালতের রায় থাকা সত্ত্বেও সরকার তা বাস্তবায়ন করছে না। কেবল দৃশ্যমান উন্নয়ন নয়, দেশের বর্তমান ও ভবিষ্যত প্রজন্মের জন্য নদ-নদী রক্ষা করা রাষ্ট্রের সাংবিধানিক দায়িত্ব।

বিশ^ নদী দিবস- ২০২২ পালন উপলক্ষে জাতীয় পর্যায়ে কর্মরত ৭ টি অধিকার ভিত্তিক বেসরকারি সংস্থার (বেলা, নিজেরা করি, এএলআরডি, নাগরিক উদ্যোগ, সিসিডিবি, ইনসিডিন বাংলাদেশ, এবং বিএনপিএস) সমন্বয়ে গঠিত পানি অধিকার ফোরাম, এএলআরডি ও বেলা’র যৌথ উদ্যোগে এ আলোচনা সভাটি আয়োজিত হয়।

বাংলাদেশের নদ-নদী থেকে বালু পাথর উত্তোলনের সার্বিক চিত্র ও আইনী দিক নিয়ে বিষয়ভিত্তিক উপস্থাপনা ছিলো  সৈয়দা রিজওয়ানা হাসানের। উপস্থাপনায় তিনি বলেন, বালুর চাহিদা বেড়েই চলেছে, কিন্তু এই চাহিদা কিভাবে মেটাবে সেই পরিকল্পনা সরকারের নেই। পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতে ৫ একরের বেশি বালু মহাল থাকলে সেখানে পরিবেশগত প্রভাব নিরূপন করতে হয়। কিন্তু আমাদের দেশে বাস্তবে ৫ একর হলে তা আরও কমিয়ে দেখানো হয় কাগজে কলমে। সবশেষে তিনি বলেন, পরিবেশ উন্নয়নের কাছে মাথা নত করবে না, উন্নয়নকে পরিবেশের কাছে মাথা নত করতে হবে।

জাকির হোসেন, প্রধান নির্বাহী, নাগরিক উদ্যোগ বলেন, আমাদের কর্মকা- নদী বিরোধী। অর্থনৈতিক বিবেচনায় আমরা পরিবেশ তথা নদ-নদীর অনেক বেশি ক্ষতি করছি। আমাদের আইনগত ও প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামো থাকলেও নদী সুরক্ষায় প্রকৃত উদ্যোগ গ্রহণ করছে না।

বেগম রোকেয়া বিশ^বিদ্যালয়ের অধ্যাপক তুহিন ওয়াদুদ বলেন, লালমনিরহাটে তিস্তা ব্যারেজের কাছেই  বালু উত্তোলনের ফলে ৩২ শত একর ধানী জমি নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে। “নদী দখলদারদের শাস্তি নিশ্চিত ও ক্ষতিপূরণ আদায় করতে হবে”, তিনি বলেন। 

বরেন্দ্র অঞ্চলের নদী আন্দোলনের সাথে যুক্ত উন্নয়নকর্মী আফজাল হোসেন বলেন, রাজশাহীর খিদিরপুরে বালু পদ্মা নদী থেকে বালু উত্তোলনের ফলে ধানী জমি ভরাট হয়ে যাচ্ছে। নদী পাড়ের মানুষদের সংগঠিত করে সক্রিয় আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে। 

সাংবাদিক অলিউর রহমান বলেন যে কর্নফুলী কালুরঘাট এলাকায় একশটির বেশি ড্রেজার মেশিন দিয়ে বালু উত্তোলন করা হচ্ছে। ড্রেজার মেশিনের সাথে ধাক্কা খেয়ে হালদা নদীর ডলফিনগুলো মারা যাচ্ছে। এ বছর হালদা নদীতে মা মাছ কোন ডিম ছাড়েনি। হালদা নদীর মোহনায় নোয়াপাড়া এলাকায় প্রতিদিন ৮ থেকে ১০ কোটি টাকার বালু উত্তোলন করা হয়।

শেয়ার করুন