২৯ মার্চ ২০১২, শুক্রবার, ০৮:০১:৫৯ অপরাহ্ন


পার্কচেস্টার মসজিদের নির্বাচন নিয়ে মামলা
ভালো চোখে দেখছে না সাধারণ মুসল্লীরা
দেশ রিপোর্ট
  • আপডেট করা হয়েছে : ৩০-১১-২০২২
ভালো চোখে দেখছে না সাধারণ মুসল্লীরা


মামলার গ্যাড়াকলে পড়ে পার্কচেস্টার মসজিদের নির্বাচন বন্ধ ঘোষণা করে মাননীয় আদালত। কিন্তু বাস্তবতা হলো এই নির্বাচন ও মামলা নিয়ে সাধারণ মুসল্লীদের মধ্যে ক্ষোভ ও অভিযোগর অন্ত নেই। সাধারণ মুসল্লিদের অনেকেই দেশ প্রতিনিধির সাথে আলাপকালে জানিয়েছেন তুচ্ছ বিষয়কে কেন্দ্র করে যারা মসজিদকে বার বার আদালতে নিয়ে যায় তারা মসজিদের প্রকৃত হিতাকাঙ্খি নয়। আবার যারা ক্ষমতায় থাকার জন্য গঠনতন্ত্র পরিপন্থী কাজ করে তারাও হিতাকাঙ্খি কি না তা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে। ব্রঙ্কসের প্রাচীনতম এই মসজিদ অন্যান্য মসজিদের তুলনায় অনেক পিছিয়ে। কমিটি চাইলে মসজিদকে আরো গণমুখী ও আগামী প্রজন্মের জন্য নির্ভরযোগ্য করা যেতো। চালু করা যেতো যেমন বয়স্ক কোরআন শিক্ষা কেন্দ্র তেমন পূর্ণাঙ্গ একটি ইসলামী স্কুল। কিন্তু সে ব্যাপারে কেউ চিন্তা না করলেও যখনই নির্বাচন আসে তখনই দেখা যায় মামলার গ্যাড়াকলে পড়ে মসজিদটিকে আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হতে হয়। গত কয়েক বছরে শুধু মাত্র মামলা বাবদ এই মসজিদের তহবিল থেকে যে পরিমাল অর্থ ব্যয় হয়েছে এই অর্থ সাশ্রয় করা গেলে সম্ভবত এই মসজিদের জন্য আরো দুটি ভবন ক্রয় করা যেতো। কিন্তু তা না করে কমিটি গঠন নিয়ে অহেতুক বিভেদ বিদ্বেষ কোনভাবে সমর্থন করা যায় না । 

নির্বাচন কমিশনার নজরুল হক এই প্রতিনিধির সাথে আলাপকালে জানান, তিনি কোন ব্যাক্তি কিংবা প্রার্থীকে আদালতে যাওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন মর্মে কোন কোন সংবাদপত্রে যে সংবাদ পরিবেশিত হয়েছে তা সত্য নয়। একটি সুষ্ঠু ও সুন্দর নির্বাচন সম্পন্ন করতে কমিশন সকল প্রস্তুতি গ্রহণ করলেও পরিবেশ ও পরিস্থিতির কারণে সেটা সম্ভব হয়নি। ভোটার লিস্টে নতুন আজীবন সদস্যদের অন্তর্ভুক্তিতে সংবিধান লংঘিত হয়েছে বলে যে অভিযোগ করা হচ্ছে এটা সত্য নয়। অতীতের নির্বাচনে দেখা গেছে ৩০ তারিখের পরে ভোটার হয়ে অনেকে প্রার্থীও হয়েছেন। চাইলে এমন প্রমাণও এখন তিনি দিতে পারবেন। কারণ তখন তিনি কমিশনার হিসাবে দায়িত্ব পালন করেছিলেন।

মসজিদের উপদেষ্টা কমিটির অন্যতম সদস্য আব্দুল হাসিম হাসনু বলেন, মসজিদটি আমাদের বাংলাদেশি কমিউনিটির গর্ব করার মত একটি প্রতিষ্ঠান। প্রতিষ্ঠানটি রক্ষণা-বেক্ষণে সকলের সহযোগিতা প্রয়োজন। মসজিদের ভোটার লিস্ট নিয়ে বিভ্রান্তির সৃষ্টি হলে উপদেষ্টা কমিটি মসজিদের কার্যকরি কমিটিকে একটি জরুরি সাধারণ সভা ডেকে সকলের মতামত নেওয়ার অনুরোধ করেছিলো। কমিটি সাধারণ সভা ডেকেছিলো। আমি নিজেও সেই সভায় উপস্থিত ছিলাম। সাধারণ সভায় তখন কোন বিতর্ক লক্ষ্য করা যায়নি। উভয় প্যানেলের সবাই উপস্থিত হয়ে ঐক্যমত্যের ভিত্তিতে সভা সম্পন্ন হওয়ায় আমরা সবাই খুশি হয়েছিলাম। কিন্তু পরে আমি মামলা দায়েরের সংবাদ পেয়ে দুঃখ পেয়েছি।

পার্কচেস্টার মসজিদের সভাপতি জয়নাল চৌধুরী বলেন, এই মামলার বাদী সাব্বির কাজী ২০১৫ সালের যখন নির্বাচনে প্রার্থী হয়ে সহ সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হয়েছিলেন তখন তিনি কিন্তু মসজিদের আজীবন সদস্য পদগ্রহণ করেছিলেন সেই বছরের অর্থাৎ ২০১৫ সালের  ৩১ আগস্টের পরে। ৩১ আগস্টের পরে আজীবন সদস্য পদ লাভ করে তিনি নিজে যদি স্বয়ং প্রার্থী হতে পারেন, তাহলে অন্যরা কেন ভোটার হতে পারবে না আমার বোধগম্য নয়। উনারা ৩১টি ভোট জমা দিয়েছেন আর আমরা জমা দিয়েছি ৬৪টি। এখন তিনি  যখন দেখেছেন নির্বাচনে জয়ের কোন সম্ভাবনা নেই তখন একটি ভিত্তিহীন অভিযোগ তোলে নির্বাচন থেকে সরে গেলেন। আমরা আইনজীবী নিয়োগ করেছি। আশা করছি ডিসেম্বরের মধ্যেই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।

মামলার বাদী সাব্বির কাজী বলেন, নির্বাচন কমিশন ও উপদেষ্টা কমিটির নিকট থেকে কোন সুবিচার না পাওয়ায় তারা আইনের আশ্রয় নিতে বাধ্য হয়েছেন। আশা করছেন আদালত থেকে সুবিচার পাবেন।

তবে পার্কচেস্টার মসজিদের সাধারণ মুসল্লিদের সাথে আলাপ করে জানা গেছে এই মসজিদ নিয়ে তারা আর কোন বিভেদ দেখতে চান না। সাধারণ মুসল্লিরা চায় বাদী-বিবাদী সবাই এক টেবিলে বসে বিষয়টি মীমাংসা করতে।

উল্লেখ্য, নির্বাচন নিয়ে দায়েরকৃত মামলার শুনানী আগামী ৫ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত হবে।

শেয়ার করুন