২৮ এপ্রিল ২০১২, রবিবার, ১০:৫৬:২৩ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম :
‘শেরে বাংলা আপাদমস্তক একজন পারফেক্ট বাঙালি ছিলেন’ বিএনপির বহিস্কৃতদের জন্য সুখবর! মে দিবসে নয়পল্টনে বিএনপির শ্রমিক সমাবেশ উপজেলা নির্বাচনে অংশ নেয়ার জের, বিএনপির বহিস্কার ৭৬ থাইল্যান্ডের ব্যবসায়ীদের বাংলাদেশে বিনিয়োগে পররাষ্ট্রমন্ত্রীর আহ্বান ‘ব্রাজিল থেকে জীবন্ত গরু আনা সম্ভব, তবে প্রক্রিয়া জটিল’ খালেদা জিয়ার সঙ্গে মির্জা ফখরুলের ঘন্টাব্যাপী সাক্ষাৎ বিশ্বের প্রতি যুদ্ধকে ‘না’ বলার আহ্বান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ৭ জানুয়ারির সংসদ নির্বাচনে গণতান্ত্রিক ধারাবাহিকতা প্রতিষ্ঠা হয়েছে - হাবিবুল মার্কিন পররাষ্ট্র দফতরের প্রতিবেদন অনুমান ও অপ্রমাণিত অভিযোগ নির্ভর- পররাষ্ট্র মন্ত্রনালয়


প্রথম ম্যাচে হেরে গেছে তামিম সাকিবরা
উত্তাপ ছড়াচ্ছে ইংল্যান্ড সিরিজ
সালেক সুফী
  • আপডেট করা হয়েছে : ০২-০৩-২০২৩
উত্তাপ ছড়াচ্ছে ইংল্যান্ড সিরিজ সেঞ্চুরীর পর ডেভিড মালান /ছবি সংগৃহীত


নিজেদের অভয় অরণ্যে তীব্র লড়াইয়ের পর লায়ন্সের কাছে হেরে গেলো টীম টাইগার্স। এ হারে সিরিজের উত্তাপ বেড়ে গেছে। কারন হোমে হেরে যাওয়ার অভ্যাসটা নেই বললেই চলে। সিরিজ মানেই জিতে যাওয়ার একটা কালচার তৈরী করে ফেলেছে টিম বাংলাদেশ। কিন্তু ইংল্যান্ডের সাথে তিন ম্যাচ ওয়ানডে সিরিজের প্রথম ম্যাচে হেরে কোনঠাসায় স্বাগতিকরা। মিরপুর শেরেবাংলার উইকেটে বাউন্স ছিল,ছিল টার্ন। সফরকারী দলে ছিল মার্ক ঊড, জোফরা আর্চার ,ক্রিস ওকসের মতো গতিময় বোলার , আদিল রাশিদ আর মঈন আলীর মত অভিজ্ঞ স্পিনার। 

টস জয় করে বাংলাদেশ তরুণ শান্ত (৫৮) আর অভিজ্ঞ রিয়াদের (৩১) লড়াকু ব্যাটিং ভর করে ২০৯ রানের মামুলি সংগ্রহ করেছিল। সেই মামুলি পুঁজি নিয়েই তুমুল লড়াই করলো বেঙ্গল টাইগার্স। সেয়ানে সেয়ানে লড়াই করা সেই ম্যাচে ডেভিড মালানের একক কৃতিত্বে ( ১১৪*) ৮ বল বাকি থাকতে ৩ উইকেটে জয় পেলো ইংল্যান্ড। টাইগার্স অনুরাগীদের হৃদয় ভাঙা এই ম্যাচটি থেকে হতাশ হবার কিছু নেই। অনেক কিছুই ছিল শিক্ষণীয়। যদি বাংলাদেশ ৫০ ওভার ব্যাটিং করে আরো ২০ রান যোগ করতে পারতো জয় আরো কঠিন হতো সফরকারীদের।

দ্বিপাক্ষিক সিরিজে বাংলাদেশ কখনো জয় পায়নি ইংল্যান্ড দলের বিরুদ্ধে। জিতেছে দেশে এবং বিদেশে ওডিআই ম্যাচ। ২০১১ এবং ২০১৫ বিশ্ব কাপেও জয়ী হয়েছে। এবার ঘরের মাঠে এসেছে সুযোগ। লড়াই করে প্রথম ম্যাচটি হারলেও ঢাকায় আজ বাদে কাল আরো একটি আর চট্টগ্রামে আছে একটি ম্যাচ। হতাশ না হয়ে নিজেদের সেরাটি দিলে সিরিজ জয় এখনো আওতার বাইরে নয় বাংলাদেশ দলের। 

কাল টস জয় করে স্পোর্টিং উইকেটে ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত নিয়েছিল তামিম। ইংল্যান্ড দলের বোলিং আক্রমণ বিশ্ব সেরা। অনেক দিন পর দলে ফিরে জোফরা আর্চার , মার্ক উডের সঙ্গে গতির ঝড় তুললো। সঙ্গী সিম ,সুইং নিয়ে ক্রিস ওকস। অনেক দিন পর ফিরে এসে অধিনায়ক তামিম স্বভাব সুলভ কিছু দৃষ্টিনন্দন স্ট্রোক্স নিলেও পারলো না ইনফর্ম লিটন দাস (০৭) . বিকশিত নাজমুল শান্তর বাটে ছিল আত্মবিশ্বাস।  ভালো খেলতে থাকা তামিমকে ( ২৩)  তীব্র গতির গুড লেংথ থেকে লাফিয়ে ওঠা বলে ফিরিয়ে দিলো উড।  লড়াই করছিলো শান্ত -মুশফিক জুটি। ১৫০ কিলোমিটার গতিতে সঠিক লেংথে বল করছিলো আর্চার -উড।  সঙ্গে যুক্ত আদিল রশিদের লেগ স্পিন , গুগলি , টপ স্পিন আর মঈন আলীর বা হাতি স্পিন। যুগল স্পিন আক্রমণে মুশফিক (১৬)  ,সাকিব (৮) ঝরে গেলে পথ হারলো বাংলাদেশ। দুজণের আরো একটু রয়ে সয়ে খেলা প্রাসঙ্গিক ছিল. লড়াই করে ৫৮ রানে শান্ত ফিরে যাবার আগে মাহমুদুল্লাহ রিয়াদের ( ৩১) সঙ্গে পঞ্চম উইকেটে ৫৩ রানের জুটি গড়েছিল। শেষ দিকে তাসকিন (১৪) ,তাইজুল (১০) যুদ্ধ করে দলীয় সংগ্রহ ২০৯ নিয়ে যায়। উঁচু মানের ইংলিশ বোলিংয়ের বিরুদ্ধে আরো একটু নিজেদের নিবেদন করে ব্যাটিং করলে ২৩৫-২৪০ রান করা খুব একটা কঠিন ছিল না. সেটি সম্ভব হলে ইংল্যান্ড দলের জয় কঠিন হতো। সফরকারী দলের চার বলার উড (২/৩৪ )। মঈন (২/৩৫) , আর্চার (২/৩৭) , আদিল রশিদ ( ২/৪৭) ছিল সফল বলার। বাংলাদেশ আবারো উপলব্ধি করলো শীর্ষ স্থানীয় দলগুলোর সঙ্গে চোখে চোখ রেখে লড়াই করতে লেগ স্পিন বলার কত প্রয়োজন।

মামুলি সংগ্রহ নিয়েও বাংলাদেশ মুষড়ে পরেনি। প্রথম বলেই সাকিব নিজের বলে জেসন রয়কে ফেরাতে পারতো। যাহোক ওভারের শেষ বলে ফিরিয়েছে রয়কে। এর পর তাসকিন আর সাকিব নিজেদের সেরা নিবেদন করে ইংলিশ দলকে প্রতিটি রানের জন্য সংগ্রাম করতে বাধ্য করেছিল। ফিল সল্ট ,জেমস ভিন্স , জস বাটলার কেউ হালে পানি পেলো না। দুর্যোগ মুহূর্তে রক অফ জিব্রাল্টার হয়ে দাঁড়ালো ডেভিড মালান। ওর একক সংগ্রামী ইনিংস ( ১৪৮ বলে অপরাজিত ১১৪) ইংল্যান্ডকে কোনঠাসা অবস্থান থেকে কৃতিত্বপূণ জয় এনে দিলো। তাইজুল ( ৩/৫৪) , মেরাজ (২/৩৪) ছাড়াও ভালো বোলিং করেছে তাসকিন আর সাকিব। ২১০ টার্গেট পেরুতে সফরকারীদের ৪৮.৪ ওভার খেলতে হয়েছে। মামুলি সংগ্রহ নিয়েও  হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের পর বাংলাদেশের পরাজয় থেকে অনেক কিছুই শিখবার আছে। এমন লড়াকু মনোভাব চায় কোটি কোটি ক্রিকেট অনুরাগী। ম্যাচ জয় করার জন্য ডেভিড মালানকে সাধুবাদ দিবো অকুন্ঠ চিত্তে। 


শেয়ার করুন