২৯ এপ্রিল ২০১২, সোমবার, ০৪:২০:৪৩ পূর্বাহ্ন


দেশকে এসডি রুবেল
প্রথম দিকে পরিবর্তনটা বুঝতে পারিনি
আলমগীর কবির
  • আপডেট করা হয়েছে : ০৪-১০-২০২৩
প্রথম দিকে পরিবর্তনটা বুঝতে পারিনি শিল্পী এসডি রুবেল


এসডি রুবেল। জনপ্রিয় গায়ক। তার গাওয়া অসংখ্য গান মানুষের মুখে মুখে। সংগীত ক্যারিয়ারে শীর্ষস্থানে থাকাবস্থাতে ২০১১ সালে অভিনয়েও নাম লেখান। তবে এখানে তিনি গানের মতো সফলতা পাননি। তবুও তিনি অভিনয় ভালোবেসেছেন মন থেকে। সেই ধারবাহিকতায় গত ২৯ সেপ্টেম্বর  শুক্রবার মুক্তি পেয়েছে তার পরিচালিত ও অভিনীত নতুন ছবি ‘বৃদ্ধাশ্রম’। এ নিয়ে তিনি কথা বলেছেন নিউইয়র্ক থেকে প্রকাশিত পাঠকপ্রিয় দেশ পত্রিকার সঙ্গে। সাক্ষাতকার নিয়েছেন আলমগীর কবির  

প্রশ্ন: আপনি দেশের সফল সঙ্গীতশিল্পী। কিন্তু অভিনয়ে যুক্ত হওয়ার পর দুই অঙ্গনেই আপনার জনপ্রিয়তার ভাটা পড়েছে। এর কারণ কি বলে মনে করেন আপনি?

এসডি রুবেল: আসলে আমার জনপ্রিয়তায় ভাটা পড়েছে মন্তব্যটা ঠিক নয়। ২০১১ সালে অভিনয়ে যুক্ত হয়েছি। তার আগে শুধু গান করতাম। কিন্তু সবকিছু হঠাৎ ডিজিটালাইজেশনের কারণে গান, সিনেমা, নাটক সব কিছুতে দর্শক কমে গিয়েছিল। আমরা প্রথম দিকে পরিবর্তনটা বুঝতে পারিনি বলে এমনটা হয়েছে।

প্রশ্ন: সংগীত ক্যারিয়ারে কিছুটা ভাটা পড়েছে এটা তো মানবেন। 

এসডি রুবেল: ‘বাংলাদেশের অডিও সেক্টরে পুরুষ শিল্পীদের মধ্যে এখনও সর্বোচ্চ গান যাদের, তাদের মধ্যে আমি অন্যতম একজন। প্রায় ১৪’শ থেকে সাড়ে ১৪’শ গান করেছি। যেটা বাংলাদেশের অডিও সেক্টরে পুরুষ কণ্ঠশিল্পীদের মধ্যে আর হবে কিনা, আমি সন্দিহান। আমার পৌনে চারশো অ্যালবাম রয়েছে। এটাকে যদি পপুলারিটি হিসেবে কাউন্ট করি, তাহলে আমি মনে করি সবচেয়ে জনপ্রিয় শিল্পীও আমি। কারণ, আমার সর্বাধিক গান। বিভিন্ন প্রযোজনা সংস্থা থেকে বেরিয়েছে। এই গানগুলোর জন্য তাদের সম্মানি দিতে হয়েছে। সেই হিসেবে মনে করি, বাংলাদেশে আমিতো মোস্ট পপুলার।

প্রশ্ন: নতুন সিনেমা মুক্তি পেল অনুভূতি কেমন? 

এসডি রুবেল:  এ অনুভূতি কোনোভাবে বলে বোঝানো যাবে না। জয়দেবপুরে উল্কা প্রেক্ষাগৃহে ‘বৃদ্ধাশ্রম’ দেখেছি। খেয়াল করে দেখেছি, অনেকে মুগ্ধ হয়ে সিনেমাটি দেখেছেন। নিজের বানানো সিনেমা পর্দায় দেখছি, তা নিয়ে দর্শক নানা মন্তব্য করছেন-এ দৃশ্য তা ভোলার নয়। 

প্রশ্ন: দর্শক প্রতিক্রিয়া কেমন পাচ্ছেন?

এসডি রুবেল:  দর্শকের প্রতিক্রিয়া জানার জন্য সিনেমাটি মুক্তির পর পরই হলে হলে ঘুরছি। প্রথম দিনই গরম উপেক্ষা করে দর্শক সিনেমাটি দেখেছেন। বিশেষ করে সন্ধ্যার শোতে দ্বিগুণ দর্শক হয়েছে। মাসের শেষ। মানুষের হাতে পয়সা কম। এর পরও দর্শক হলে ভিড় করছেন– এটি আশাব্যঞ্জক।

 প্রশ্ন: মুক্তিতে এতো বিলম্ব হলো কেন?

এসডি রুবেল:  ২০২০ সালে যখন সেন্সর সনদ পেলাম, তখন দেশের করোনার প্রাদুর্ভাব দেখা দিয়েছিল। আড়াই বছর সিনেমা হল বন্ধ ছিল। করোনা কমলে জমে থাকা সিনেমাগুলো একে একে মুক্তি পেতে শুরু করে। তখন চাইলেই মুক্তির তারিখ নেওয়া মুশকিল ছিল। এর পর বিদেশি ভাষার সিনেমা আমদানি শুরু হলো। ‘পাঠান’-এর সঙ্গে সিনেমা মুক্তি দিয়ে ব্যবসায়িক ঝুঁকি নিতে চাইনি। সবকিছু মিলিয়ে এর মুক্তি পিছিয়েছে। সংগীতশিল্পী হিসেবেই আপনার পরিচিতি।

প্রশ্ন: কোন ভাবনা থেকে চলচ্চিত্র পরিচালনায় এসেছেন?

এসডি রুবেল:  সংগীত ও চলচ্চিত্র ওতপ্রোতভাবে জড়িত। চলচ্চিত্রের মধ্যে গান, মিউজিক ডিরেকশন, ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিক, আর আর, সাউন্ড মিক্সিং থাকে। এগুলো সবই সংগীতশিল্পী ও সংগীত পরিচালকদের কাজ। এসব কাজের মধ্যেই আমি আছি। একসময় আমি থিয়েটারে অভিনয় করেছি। তা ছাড়া প্রায়ই বিজ্ঞাপন, ডকুড্রামা, নাটিকা তৈরি করি। এটি আমার নিত্যনৈমিত্তিক কাজেরই অংশ। সেখান থেকে সামাজিক অবক্ষয়ের বিরুদ্ধে অবস্থান নিতেই নির্মাণে এসেছি। সিনেমাটির মাধ্যমে সামাজিক বার্তা দিতে চেয়েছি। প্রথম সিনেমায় প্রেমের অনুভূতি পর্দায় তুলে ধরেছি।

প্রশ্ন:  নতুন গানের কী খবর?

এসডি রুবেল:  প্রতি মাসেই এসডি রুবেল ফাউন্ডেশন থেকে নতুন গান প্রকাশ করছি। বৃদ্ধাশ্রমে আমার তিনটি গান আছে। নতুন চলচ্চিত্রের গানের ব্যাপারে কথাবার্তা চলছে। দর্শকের উদ্দেশে কিছু বলার আছে? গানে যে রকম কোয়ালিটি ধরে রেখেছি, তেমনি চলচ্চিত্র নির্মাণ কিংবা অভিনয়ে সেই কোয়ালিটিই পাবেন। আপনারা ভরসা রাখুন। সামনে আরও ভালো কিছু কাজ নিয়ে আসছি। আপনারা বাংলা সিনেমার সঙ্গেই থাকুন।

শেয়ার করুন