২৬ এপ্রিল ২০১২, শুক্রবার, ০৯:১৩:১৩ অপরাহ্ন
শিরোনাম :
‘ব্রাজিল থেকে জীবন্ত গরু আনা সম্ভব, তবে প্রক্রিয়া জটিল’ খালেদা জিয়ার সঙ্গে মির্জা ফখরুলের ঘন্টাব্যাপী সাক্ষাৎ বিশ্বের প্রতি যুদ্ধকে ‘না’ বলার আহ্বান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ৭ জানুয়ারির সংসদ নির্বাচনে গণতান্ত্রিক ধারাবাহিকতা প্রতিষ্ঠা হয়েছে - হাবিবুল মার্কিন পররাষ্ট্র দফতরের প্রতিবেদন অনুমান ও অপ্রমাণিত অভিযোগ নির্ভর- পররাষ্ট্র মন্ত্রনালয় ইউরোপে ভারতীয় ৫২৭ পণ্যে ক্যান্সার সৃষ্টিকারি উপাদন শনাক্ত বাংলাদেশ ব্যাংকে সাংবাদিকদের প্রবেশে কড়াকড়ি বিএনপির আন্দোলন ঠেকানোই ক্ষমতাসীনদের প্রধান চ্যালেঞ্জ বিএনপিকে মাঠে ফেরাচ্ছে আওয়ামী লীগ উপজেলা নির্বাচন নিয়ে অদৃশ্য চাপে বিএনপি


দেশ’র সাথে সাক্ষাতকারে মেজর জেনারেল (অব.) সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম
পৃথিবীর কেউই এদের গণতান্ত্রিক সরকার বলে না
সৈয়দ মাহবুব মোর্শেদ
  • আপডেট করা হয়েছে : ২৩-০৪-২০২২
পৃথিবীর কেউই এদের গণতান্ত্রিক সরকার বলে না কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব.) সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম বীর প্রতীক,ছবি/সংগৃহীত


কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব.) সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম বীর প্রতীক বলেছেন, দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি একটি সঙ্কটের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। যেহেতু যে রাজনৈতিক সরকার ক্ষমতায় আছে তাদের ওপর জনগণের আস্থা নেই। এটাকে বলে আপদকালীন ব্যবস্থা। অর্থ্যাৎ অন্য কোনো ব্যবস্থা না থাকায় দেশের মানুষ, জনগণ এবং আমরা মেনে নিতে বাধ্য হচ্ছি যে আপনি আওয়ামী লীগ, মাননীয়া শেখ হাসিনা দেশ চালাচ্ছেন। দেশেন বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি  সর্ম্পকে জানতে সাপ্তাহিক দেশ’র সাথে এক সাক্ষাতকারে তিনি একথা বলেন। 

ওয়ান-ইলেভেনের জরুরি অবস্থার মধ্যে দেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে বিশেষ এক মুহূর্তে ২০০৭ সালের ৪ ডিসেম্বর ‘পরিবর্তনের জন্য রাজনীতি’ শ্লোগান ধারণ করে বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টি প্রতিষ্ঠা করেন মেজর জেনারেল (অব.) সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম বীর প্রতীক। প্রতিষ্ঠার এক বছরের মাথায় ২০০৮ সালের ২৯ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নেয় বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টি। ওই নির্বাচনে ৩৬টি আসনে প্রতিদ্বন্দিতা করে দলটি। 

দেশের সার্বিক পরিস্থিতি প্রসঙ্গে আলোচনা কালে,তার কাছে জানতে চাওয়া হয়- আপনি কি দেশের বিরাজমান এ সরকারকে গণতান্ত্রিক সরকার বলতে চান না? 


জেনারেল (অব.) সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম বলেন, আমি কোনো এমনকি পৃথিবীর কেউই এ সরকারকে  গণতান্ত্রিক সরকার বলে না। সরকারের নিজেদের লোক ছাড়া অন্য কেউই গণতান্ত্রিক সরকার বলে না। দেশ বাসীসহ এমনকি সাংবাদিক মাহবুব মোর্শেদও (দেশ পত্রিকার বিশেষ প্রতিনিধি সৈয়দ মাহবুব মোর্শেদকে উদ্দেশ্য করে) বলবে না এটা গণতান্ত্রিক সরকার। এরা নির্বাচন বিহীন সরকার।  


কিন্তু দেশবাসীর মধ্যে এসরকারের বিরুদ্ধে কি জোড়ালো কোনো প্রতিবাদ জনগণের মধ্যে দেখা দিয়েছে। এসরকারকে জনগণ কি মেনে নিচ্ছে না? তাহলে তারা ক্ষমতায় কিভাবে?  


জেনারেল (অব.) সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম বলেন, মেনে নিচ্ছি কারণ আমাদের কাছে কোনো বিকল্প নেই। সঙ্কট হলো যে এ রাজনৈতিক ক্ষমতাসীন সরকারের আস্থা নেই,জণসমর্থণ নেই। সঙ্কটের অপর সমস্যা হলো বিরোধী শিবির অগোছালো ও নেতৃত্বে সঙ্কটের ভুগছে। ২০ দলীয় জোটের প্রধান শরিক চেয়ারম্যানের (খালেদা জিয়া) অসুস্থতার পাশাপাশি বন্দী থাকার কারণে নেতৃত্ব দিতে পারছেন না। ভারপ্রাপ্ত নেতা লন্ডনে আটকে থাকার কারণে নেতৃত্ব দিতে পারছেন না। অতএব বাংলাদেশের মানুষ বিরোধী শিবিরে নতুন নেতৃত্ব আশা করে। 

দেশের বর্তমান এ পরিস্থিতির জন্য দায়ী কে? কাকে দায়ী করবেন আপনি? এ জন্য আপনি বা আপনার দল বা রাজনৈতিক দল কী দায় এড়াতে পারে? 


সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম বলেন, এ পরিস্থিতির জন্য কোনো ব্যক্তিকে দায়ী করা যাবে না। এ পরিস্থিতির জন্য সমষ্টিগতভাবে সবাই দায়ী। আওয়ামী লীগও দায়ী,২০ দলীয় জোটও দায়ী। বিএনপিও দায়ি। জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট নামে যে যন্ত্রণা ছিল, সেটিও। ২০১২ সালের ১৮ এপ্রিল বিএনপির নেতৃত্বে ১৮ দলীয় জোট গঠন করা হলে এর সাথে সঙ্গে যুক্ত হয় সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিমের কল্যাণ পার্টি।


কিন্তু এ সরকারের বিরুদ্ধে জনগণ কেনো ফুঁসে উঠছে না? আন্দোলনে ঝাঁপিয়ে পড়ছে না? আপনিসহ বিরোধী দলের কারো আহবানে তারা সাড়া দিচ্ছে না। সরকার পতনের আন্দোলনে রাজনীতিবিদদের কথা সাড়া দিচ্ছে না কোনো? আপনাদের সাথে নেই কেনো জনগণ? 


জেনারেল (অব.) সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম বলেন, রাজনীতিবিদদের কথা সাড়া দিচ্ছে না কারণ বিএনপি’র চার লাখ কর্মীর বিরুদ্ধে মামলা আছে। জামায়াতের দু’লাখ কর্মীরা বিরুদ্ধে মামলা। এ মামলা থেকে বের হবার কোনো রাস্তা নেই। এছাড়া গত ১৪ বছর অত্যন্ত কৌশলে পরিশ্রম করে বর্তমান রাজনৈতিক সরকার বিরোধী শিবিরকে জালের মধ্যে আটকে ফেলেছে। বিরোধী শিবিরের দুরদর্শীতার অভাবে ধীরে ধীরে সরকার কর্তক পাতানো জালের মধ্যে ঢুকে গেছে। 


এ থেকে বের হতে পারছে না। জনগণের সামনে অনেক সমস্যা,জীবনের ভয়। মৃত্যু ও গুম হয়ে যাবার ভয়। আছে সন্তান-আপনজন হারানোর ভয়। বাড়িতে আগুন লাগানো ভয়- ইত্যাদি কারণে  জনগণ চাইলেই ফুঁসে উঠতে পারবে না। ফুঁসে উঠতে তারাতো গত ১৪ বা ১৫ বছর চেষ্টা করেছে। যেহেতু বিফল হয়েছে...। 


এব্যাপারে ইংরেজিতে একটি কথা আছে যার বাংলায় অর্থ হলো, ‘যখন কোনো কিছুতে সফলতা আসে, তখন অনেক লোক এর কৃতিত্ব দাবি করে। কিন্তু ব্যার্থতার দায় কেহই নিতে চায় না।’ 

কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে, এরশাদ বিরোধী আন্দোলনে মানুষ মাঠে নেমেছিল ভয় ভীতি উপেক্ষা করে। রক্ত চক্ষু উপেক্ষা করে রাজপথে গণতন্ত্রের সংগ্রামে ঝাঁপিয়ে পড়ে এদেশেরই জনগণ। এখন বর্তমানে তেমনটি হচ্ছে না কেনো ? তাহলে কি ধরে নেবো ভয়ে ভীত-সন্ত্রস্ত হয়ে ঘরোয়া রাজনীতি বাস্তবায়নের পথ বেছে নিয়েছে রাজনৈতিক দলগুলি?


জেনারেল (অব.) সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম বলেন, আপনার প্রশ্নের সঙ্গে দ্বি-মত পোষণ করি। কঠোর ও গভীর এবং ব্যাপকভাবে ভাবে দ্বিমত পোষণ করি। এরশাদের (সাবেক প্রেসিডেন্ট) আমলে দুর্নীতি ছিল সিমের বিচির মত। এখন দুর্নীতি হলো কুমির এবং হাঙ্গর। এরশাদ আমলে স্বৈরাচার এবং অত্যাচার ছিল রিকশার চাকার চাপ। আর এখন হচ্ছে সরাসরি ১৬ টন গাড়ির চাপের মতো। 


 অতএব বর্তমানের সাথে এরশাদ আমলের মেলানো মুশকিল। এরশাদ আমলে মোবাইল ছিল না। মেনুয়েল ছিল সব পদ্ধতি। তখণ ডিজিটাল সিকিউরিটি এ্যাক্ট ছিল না। তখন এতো অনলাইন পেপার পত্রিকা ছিল না। মোবাইলে সাংবাদিক মাহববু মোর্শেদ ইন্টারভিউ নেবে তার বন্দোবস্ত ছিল না। 

এরপর তার তার কাছে জানতে চাওয়া হয় এধরণের পরিস্থিতি থেকে উত্তরনের জন্য আপনি কি করতে বলেন? দেশের জনগণ বা রাজনৈতিক দলকে? 


জেনারেল (অব.) সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিমের কাছে, দেশবাসিকে তো আমরা কিছু বলতে পারবো না। তারা নিজেরাই কষ্টে। আর আমরা তাদের কষ্টের অংশিদার। বাংলাদেশ কল্যান পার্টি এবং জেনারেল  সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম কামণা করে- দেশে নতুন নেতৃত্বকে উঠে আসতে হবে। জনগণের এমন কষ্টের দিন মোমবানি জ¦ালাতে হবে। আশার আলো জ¦ালাতে হবে। 


আমি এ নিয়ে চিন্তিত যে মাননীয়া দেশনেত্রী খালেদা জিয়া অসুস্থতা বশতঃ যদি উনি ইন্তেকাল করেন তখন বিরোধী শিবিরে নেতৃত্বে শক্তিশালি অবস্থান নিতে হবে আমাদেরকে। আমি মনে করি, জাতীয়তাবাদী ঘরনার নেতৃত্ব দেশের সামনে কল্যান পার্টি এবং তার সঙ্গী সমমনা দল তথা ন্যাশনাল ডেমোক্রেকিট পার্টি ন্যাশনাল পিপলস পার্টি-আমাদেরকে ভুমিকা রাখতে হবে। 


শেয়ার করুন