০৩ মে ২০১২, শুক্রবার, ০৭:১৪:২২ পূর্বাহ্ন


স্টেট ডিপার্টমেন্টের সামনে যুক্তরাষ্ট্র আ.লীগ ও বিএনপির পাল্টাপাল্টি অবস্থান
দেশ রিপোর্ট
  • আপডেট করা হয়েছে : ০১-১১-২০২৩
স্টেট ডিপার্টমেন্টের সামনে যুক্তরাষ্ট্র আ.লীগ ও বিএনপির পাল্টাপাল্টি অবস্থান স্টেট ডিপার্টমেন্টের সামনে যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগ এবং বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের বিক্ষোভ সমাবেশ


অনেক বাংলাদেশের স্টাইলই চালু হয়েছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে। বাংলাদেশে বিএনপি কর্মসূচি দিলে আওয়ামী লীগও কর্মসূচি দেয়। ঠিক একই কায়দায় প্রবাসেরও পাল্টাপাল্টি কর্মসূচি দেওয়া শুরু করেছে যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগ ও যুক্তরাষ্ট্র বিএনপির অঙ্গ সংগঠন। বাংলাদেশে বিএনপির মহাসমাবেশকে সরকারি দল এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনী পন্ড করার প্রতিবাদে যুক্তরাষ্ট্র বিএনপি, নিউইয়র্ক স্টেট বিএনপি, নিউইয়র্ক মহানগর দক্ষিণ এবং উত্তর বিএনপি গত ২৯ অক্টোবর ওয়াশিংটনস্থ স্টেট ডিপার্টমেন্টের সামনে প্রতিবাদ ও বিক্ষোভ সমাবেশের কর্মসূচি ঘোষণা করে। বিএনপির এই কর্মসূচির সঙ্গে ছিল মেরিল্যান্ড, ওয়াশিংটন ও ভার্জিনিয়া বিএনপি। একই দিনে স্টেট ডিপার্টমেন্টের সামনে পাল্টা কর্মসূচি ঘোষণা করে যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগ ও যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের অঙ্গ সংগঠন। যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগ মূলত দুইভাগে বিভক্ত হলেও স্টেট ডিপার্টমেন্টের তারা ঐক্যবদ্ধভাবে কর্মসূচি পালন করে। দুই দলের এই পাল্টাপাল্টি কর্মসূচিকে কোনভাবেই ভালভাবে দেখছে না প্রবাসী বাংলাদেশিরা। তাদের ভাষ্য বাংলাদেশে যে প্রতিহিংসার রাজনীতি শুরু হয়েছে তারা সেই প্রতিহিংসার রাজনীতি প্রবাসে দেখতে চায় না। তারা বলেন, এর ফলে প্রবাসে দেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ হবে। তারা ক্ষোভের সঙ্গে বলেন, পাল্টাপাল্টি কর্মসূচি না দিয়ে আগে-পরে কর্মসূচি দেওয়া ভালো।

যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগ

আন্দোলনের নামে বিএনপি-জামায়াতের সহিংসতা, পুলিশ হত্যা, বাসে অগ্নিসংযোগ এবং নৈরাজ্যের প্রতিবাদে যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগ এবং আওয়ামী লীগের অঙ্গ সংগঠন গত ২৯ অক্টোবর ওয়াশিংটনের স্টেট ডিপার্টমেন্টের সামনে বিক্ষোভ সমাবেশের আয়োজন করে। যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের সভাপতি ড. সিদ্দিকুর রহমান, যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আব্দুস সামাদ আজাদ, সহ-সভাপতি শাসুদ্দিন আজাদ, প্রচার সম্পাদক হাজি এনাম, প্রবাসী কল্যাণ সম্পাদক সোলায়মান আলী, যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুর রহিম বাদশা, যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা ডা. মাসুদুর রহমান, যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক নিজাম চৌধুরী, যুগ্ম সাধারণ সম্পাতক আইরীন পারভীন, সাংগঠনিক সম্পাদক মহিউদ্দিন দেওয়ান, কাজী কয়েস, হিন্দাল কাদির বাপ্পা, শেখ আতিকুল ইসলাম, গজ নবী, জহির মিয়া, জাহাঙ্গীর মিয়া, মোর্শেদা জামান, কৃষিবিদ আশরাফুজ্জামান, মমতাজ শাহনাজ, ইকবাল হোসেন, রায়হান হৃদয়, শেখ জামাল প্রমুখ।

এম এ করিম জাহাঙ্গীর, সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুল হাসিব মামুন, জাহাঙ্গীর হোসেন, শামসুল আবেদীন, জহিরুল ইসলাম, কামরুল হীরা, স্টেট আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহীন আজমল, নিউইয়র্ক মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি রফিকুর রহমান, সাধারণ সম্পাদক এমদাদ চৌধুরী, নূরুল আফসার সেন্টু, এন আমিন, নূরুল আমিন বাবু, নুরুল ইসলাম নজরুল, শাখাওয়াত বিশ্বাস, যুক্তরাষ্ট্র স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাবেক সভাপতি নুরুজ্জামান সর্দার, সেবুল মিয়া, নিতাই রায়, রায়হান মাহমুদ, ফিদা হোসেনসহ শতাধিক নেতাকর্মী। এছাড়াও প্রতিবাদ সমাবেশে ওয়াশিংটন আওয়ামী লীগ, মেরিল্যান্ড আওয়ামী লীগ এবং ভার্জিনিয়া আওয়ামী লীগের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।

ড. সিদ্দিকুর রহমান বিএনপি-জামায়াতের হামলায় পুলিশ হত্যার অভিযোগ করে বলেন, হত্যা-ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ, আন্দোলন করে আওয়ামী লীগ সরকারের পতন ঘটানো যাবে না। সরকারের পতন ঘটাতে হলে নির্বাচনের মাধ্যমেই জনগণের ম্যান্ডেট নিতে হবে। তিনি বলেন, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে আর কোন নির্বাচন নয়। শেখ হাসিনা সরকারের উন্নয়ন ধারা অব্যাহত রাখতে তিনি সকলের প্রতি আহ্বান জানান। তিনি আরো বলেন, আজকে আমাদের শান্তি সমাবেশ করার কথা ছিলো। প্রতিবাদ সমাবেশ করার কথা ছিলো না। কিন্তু বিএনপি-জামায়াতের নৈরাজ্যের কারণে আমাদের প্রতিবাদ সমাবেশ করতে হচ্ছে।

অন্য বক্তারা বলেন, মহাসমাবেশের নামে ঢাকায় বিএনপি-জামায়াত পুলিশ হত্যা, ষড়যন্ত্র, অগ্নিসন্ত্রাস-নৈরাজ্যের তীব্র প্রতিবাদ ও নিন্দা জানান। বক্তারা বলেন, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিশ্বেও সফল রাষ্ট্র নায়ক। তার নেতৃত্বে উন্নয়ন, অগ্রযাত্রা অব্যাহত রাখতে এবং স্মার্ট বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে সবাইকে একসঙ্গে কাজ করতে হবে।

যুক্তরাষ্ট্র বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠন

বিএনপির মহাসমাবেশে হামলা, কেন্দ্রীয় নেতাদের গ্রেফতার, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও সরকারি দলের সন্ত্রাসী কর্মকান্ডের প্রতিবাদে যুক্তরাষ্ট্র বিএনপি, নিউইয়র্ক স্টেট বিএনপি, নিউইয়র্ক মহানগর দক্ষিণ বিএনপি, নিউইয়র্ক মহানগর উত্তর বিএনপি গত ৩০ অক্টোবর ওয়াশিংটনে স্টেট ডিপার্টমেন্টের সামনে এক বিক্ষোভ সমাবেশের আয়োজন করে। এই বিক্ষোভ সমাবেশে ওয়াশিংটন বিএনপি, মেরিল্যান্ড বিএনপি, ভাজির্নিয়া বিএনপির ছিলো সহযোগী। বিক্ষোভ সমাবেশে যোগ দেয়ার জন্য নিউইয়র্ক থেকে কয়েক বাস নেয়া হয়। সেই বাসে করেই অধিকাংশ বিক্ষোভকারী অংশগ্রহণ করেন। আবার অনেকে নিজ নিজ গাড়িতে করে বিক্ষোভ সমাবেশে অংশ নেন।

বিক্ষোভ সমাবেশে অতিথি হিসাবে অংশগ্রহণ করেন লন্ডন থেকে আগত বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক আনোয়ার হোসেন খোকন। আরো অংশগ্রহণ করেন কেন্দ্রীয় বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য যথাক্রমে আব্দুল লতিফ সম্রাট, গিয়াস আহমেদ, জিল্লুর রহমান, মিজানুর রহমান মিল্টন ভুইয়া, যুক্তরাষ্ট্র বিএনপির ট্রেজারার জসিম ভূইয়া, নিউইয়র্ক স্টেট বিএনপির আহবায়ক মাওলানা অলিউল্যাহ আতিকুর রহমান, সদস্য সচিব সাইদুর রহমান, নিউইয়র্ক মহানগর দক্ষিণ বিএনপির আহবায়ক হাবিবুর রহমান সেলিম রেজা, সদস্য সচিব বদিউল আলম, নিউইয়র্ক মহানগর উত্তর বিএনপির আহবায়ক আহবাব চৌধুরী খোকন, সদস্য সচিব ফয়েজ চৌধুরী, বিএনপি নেতা আব্দুস সবুর, মোশাররফ হোসেন সবুজ, এবাদ চৌধুরী, যুক্তরাষ্ট্র যুবদলের সভাপতি জাকির এইচ চৌধুরী, যুব দলের আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক আবু সাইদ আহমেদ, কেন্দ্রীয় জাসাস নেতা গোলাম ফারুক শাহীন, কেন্দ্রীয় যুবদলের সাবেক সহ-আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক এম এ বাতেন, জাতীয়তাবাদী স্বেচ্ছাসেবক দলের কেন্দ্রীয় আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক ও যুক্তরাষ্ট্র শাখার সাধারণ সম্পাদক মাকসুদুল হক চৌধুরী, জাতীয়তাবাদী স্বেচ্ছাসেবক দলের কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-আন্তর্জাতিক সম্পাদক সাইফুর খান হারুন, যুক্তরাষ্ট্র জাসাস-এর আহ্বায়ক ইঞ্জিনিয়ার রহমান সায়েম ও সদস্য সচিব জাহাঙ্গীর শহীদ সোহরাওয়ার্দী, মহিলা দল নেত্রী সৈয়দা মাহমুদা শিরিন, দেওয়ান কাউছার প্রমুখ।

সমাবেশে বিএনপির নেতাকর্মীরা শেখ হাসিনার সরকার বিরোধী নানা স্লোগান দেন এবং পদত্যাগ দাবি করে ঢাকায় বিএনপি’র মহাসমাবেশে সরকারদলীয় নেতাকর্মী ও পুলিশি হামলার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান। বক্তারা শেখ হাসিনার সরকারকে একটি স্বৈরাচারী সরকার হিসেবে অ্যাখায়িত করে বলেন, সরকারের পায়ের মাটি সরে গেছে, আওয়ামী লীগের সরকারের জুলুম, নির্যাতন, অত্যাচার, গুম-খুনে দেশের মানুষ অতিষ্ঠ হয়ে আন্দোলনে নেমেছে। শেখ হাসিনার পদত্যাগ আর তত্ত্বাবধায়ক সরকারে অধীনে নির্বাচন ছাড়া বিএনপি’র নেতাকর্মীরা আর ঘরে ফিরে যাবে না। বক্তারা গ্রেফতারকৃত দলীয় নেতাকর্মীদের অবিলম্বে মুক্তি দাবি করেন।

শেয়ার করুন