২৭ এপ্রিল ২০১২, শনিবার, ০৭:১৬:২৬ অপরাহ্ন
শিরোনাম :
‘ব্রাজিল থেকে জীবন্ত গরু আনা সম্ভব, তবে প্রক্রিয়া জটিল’ খালেদা জিয়ার সঙ্গে মির্জা ফখরুলের ঘন্টাব্যাপী সাক্ষাৎ বিশ্বের প্রতি যুদ্ধকে ‘না’ বলার আহ্বান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ৭ জানুয়ারির সংসদ নির্বাচনে গণতান্ত্রিক ধারাবাহিকতা প্রতিষ্ঠা হয়েছে - হাবিবুল মার্কিন পররাষ্ট্র দফতরের প্রতিবেদন অনুমান ও অপ্রমাণিত অভিযোগ নির্ভর- পররাষ্ট্র মন্ত্রনালয় ইউরোপে ভারতীয় ৫২৭ পণ্যে ক্যান্সার সৃষ্টিকারি উপাদন শনাক্ত বাংলাদেশ ব্যাংকে সাংবাদিকদের প্রবেশে কড়াকড়ি বিএনপির আন্দোলন ঠেকানোই ক্ষমতাসীনদের প্রধান চ্যালেঞ্জ বিএনপিকে মাঠে ফেরাচ্ছে আওয়ামী লীগ উপজেলা নির্বাচন নিয়ে অদৃশ্য চাপে বিএনপি


গ্রীষ্মে গ্যাস-বিদ্যুৎ সরবরাহে যে চ্যালেঞ্জ
সালেক সুফী
  • আপডেট করা হয়েছে : ০১-০৩-২০২৩
গ্রীষ্মে গ্যাস-বিদ্যুৎ সরবরাহে যে চ্যালেঞ্জ


বিদ্যুৎ সরবরাহে স্বস্তি শেষ হয়েছে, বসন্তের দিনগুলোতে শুরু হয়েছে নিবিড় সেচ কাজ, গ্রীষ্মের সূচনায় আসছে রমজান। বিদ্যুৎ চাহিদা ৯ হাজার মেগাওয়াট থেকে বেড়ে ১৬ হাজার মেগাওয়াট হতে পারে। সঙ্গে বাড়বে গ্যাসের চাহিদা, জ্বালানি চাহিদা। বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতায় ঘাটতি নেই। সঞ্চালন-ব্যবস্থার উন্নয়ন হচ্ছে। কিন্তু সংকট চাহিদামাফিক জ্বালানি সরবরাহে। পুরো ক্ষমতার পায়রা বিদ্যুৎকেন্দ্রের ১ হাজার ২৪৪ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ এখন জাতীয় গ্রিডে আসছে, রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্রের প্রথম ইউনিট থেকে ৬৫০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ সরবরাহ শুরু হয়েছে। এপ্রিল নাগাদ ১ হাজার ৩২০ মেগাওয়াট আসার কথা শোনা যাচ্ছে। এপ্রিলে উৎপাদনে আসার কথা বাঁশখালীতে এস আলম গ্রুপের ১ হাজার ৩২০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎকেন্দ্রের উৎপাদনে আসার কথা। এখন দেখতে হবে গ্রীষ্মের চাহিদামাফিক বিদ্যুৎ চাহিদা নিরবচ্ছিন্নভাবে মিটানো যাবে কি না। 

মেঘনাঘাটে বাংলাদেশের সামিট গ্রুপ, জাপানের জারা যৌথ উদ্যোগে নির্মিত ৪৫০ মেগাওয়াট গ্যাসভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র এপ্রিল ২০২৩ উৎপাদনে আসার জন্য প্রস্তুত। একই স্থানে ভারতের রিলায়েন্স গ্রুপ নির্মিত ৭৫০ মেগাওয়াট ক্ষমতার গ্যাসভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র অচিরেই প্রস্তুত হয়ে যাবে। আছে ইউনিক গ্রুপের ৪৫০ মেগাওয়াট ক্ষমতার আরেকটি কেন্দ্র। প্রায় ৩০০ মিলিয়ন গ্যাস প্রয়োজন শুধু মেঘনাঘাট এলাকায়। গ্যাস থাকুক বা নাই-বা থাকুক পেট্রোবাংলা গ্যাস সরবরাহের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। এই অঞ্চলে গ্যাস সরবরাহের জন্য ৪২ ইঞ্চি বাসের একটি পাইপলাইন নির্মাণের এখন প্রাথমিক পর্যায়ে। অতিরিক্ত গ্যাস পাওয়া গেলে বাখরাবাদ গ্যাস হাব থেকে ডেমরা এবং সিদ্ধিরগঞ্জ পর্যন্ত নির্মিত গ্যাস সঞ্চালন পাইপলাইন দিয়ে গ্যাস সরবরাহ করা যাবে তিনটির দুটি বিদ্যুৎকেন্দ্রে।  প্রশ্ন কোথা থেকে আসবে অতিরিক্ত গ্যাস? প্রতিদিন ৩ হাজার মিলিয়ন হারে গ্যাস সরবরাহ করেও বর্তমান চাহিদা মেটানো যাবে না।

এমতাবস্থায় ভরসা আমদানিকৃত কয়লা বিদ্যুৎকেন্দ্র এবং তরল জ্বালানিভিত্তিক রেন্টাল কেন্দ্রগুলো। পিডিবি চায় ১ হাজার ৩০০ মিলিয়ন গ্যাস পেট্রোবাংলা হয়তো দিতে পারবে ১ হাজার ১০০ মিলিয়ন ঘনফুট প্রতিদিন। গ্যাস থেকে ৭ হাজার মেগাওয়াট উৎপাদন করতে জ্বালানি দক্ষ বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলো উৎপাদনে রাখতে হবে। স্পট মার্কেট থেকে মাসে অন্তত দুটি কার্গো এলএনজি আমদানি করার জন্য পর্যাপ্ত ডলার বরাদ্দ দিতে হবে। কয়লা থেকে অন্তত ৩ হাজার ৫০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য কয়লা আমদানির ডলার থাকতে হবে। ১ হাজার ১৬০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ আমদানির জন্য ডলার লাগবে। একই সঙ্গে তরল জ্বালানিনির্ভর রেন্টাল প্ল্যান্ট থেকেও পিক সময়ে ৫ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ প্রয়োজন হবে। তবে এখানেও তরল জ্বালানি আমদানির জন্য দলের প্রয়োজন।  আইপিপিগুলোকেই ডলারে মূল্য পরিশোধ করতে হবে। জানি না সরকার প্রয়োজনীয় বৈদেশিক মুদ্রা সরবরাহ করতে পারবে কি না?

এদিকে নতুন করে ক্রেজ শুরু হয়েছে সৌরবিদ্যুৎ উৎপাদন নিয়ে। এখনো কিন্তু সৌরবিদ্যুৎসহ নবায়নযোগ্য বিদ্যুৎ উৎপাদন নিয়ে যথাযথ নীতিমালা গ্রহণ করা হয়নি। সরকার ২০১০ থেকে সঠিক নীতিমালা প্রণয়ন করে এগুলো ইতিমধ্যে অন্তত ১ হাজার ৫০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ আসতো নবায়নযোগ্য জ্বালানি থেকে। ২০২৩ নির্বাচনের বছর। সরকার বারবার জ্বালানি বিদ্যুতের দাম বাড়িয়ে নিজেদের ব্যর্থতার দায় ভোক্তাদের ওপর চাপিয়ে দিচ্ছে। নিজেদের জ্বালানি উত্তোলনে ব্যর্থতা বর্তমান সংকটের জন্য দায়ী বলাই বাহুল্য।  দেখা যাক, সরকার কীভাবে পরিস্থিতি সামাল দেয়।

শেয়ার করুন