০৫ মে ২০১২, রবিবার, ০১:৩৬:৩৮ পূর্বাহ্ন


টেক্সাসের বিরুদ্ধে বিচার বিভাগের মামলা
দেশ রিপোর্ট
  • আপডেট করা হয়েছে : ১০-০১-২০২৪
টেক্সাসের বিরুদ্ধে বিচার বিভাগের মামলা অভিবাসীদের ব্যাপারে টেক্সাসের বিরুদ্ধে আমেরিকার বিচার বিভাগের মামলা


যুক্তরাষ্ট্রের বিচার বিভাগ গত ৩ জানুয়ারি বুধবার ইউএস ওয়েস্টার্ন ডিস্ট্রিক্ট কোর্ট অব টেক্সাসে সিনেট বিল ৪ নামে পাশকৃত নতুন ইমিগ্রেশনবিরোধী আইনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছে। নতুন এই আইনে টেক্সাস স্টেট পুলিশকে অবৈধভাবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশকারী অভিবাসীদের গ্রেফতার করার অনুমতি দেওয়া হয়েছে। গত মাসে টেক্সাস গভর্নর গ্রেগ অ্যাবট এই আইনে স্বাক্ষর করেন। যা অভিবাসন সংক্রান্ত মার্কিন সরকারের কর্তৃত্বের জন্য একটি বড় চ্যালেঞ্জ। এই আইনে টেক্সাসের যেকোনো জায়গায় পুলিশকে বা স্টেটের আইন প্রয়োগকারী বাহিনীকে অবৈধভাবে প্রবেশের অভিযোগে অভিবাসীদের গ্রেফতার করার অনুমতি দেওয়ার পাশাপাশি স্টেটের বিচারকদের অবৈধ অভিবাসীদের বহিষ্কার করার আদেশ দেয়া হয়। চলতি মাসে এই বিতর্কিত আইনটি কার্যকর হওয়ার কথা রয়েছে। 

প্রেসিডেন্ট বাইডেন প্রসাশন আদালতকে বলেছে, টেক্সাস তার নিজস্ব অভিবাসন ব্যবস্থা চালাতে পারে না। এটি মূলত ফেডারেল সরকারের কর্তৃত্বের ওপর একচেটিয়া হস্তক্ষেপ। নতুন এই আইন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অভিবাসন কার্যক্রম এবং কার্যধারাকে চ্যালেঞ্জ করে এবং বৈদেশিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে হস্তক্ষেপ করে। সেই সঙ্গে ফেডারেল ও স্টেট আইনের ধারাকে লঙ্ঘন করে এবং অধিকাংশ ক্ষেত্রে রাষ্ট্রীয় আইনকে অগ্রাহ্য করে। বিচার বিভাগের মামলায় টেক্সাসের আইনকে অসাংবিধানিক ঘোষণা করতে আবেদন করা হয়েছে।

আইন ও সংবিধান বিশেষজ্ঞরা বলছেন, টেক্সাসের নতুন আইন ২০১০ সালের অ্যারিজোনা স্টেটে পাস করা আইনটির মতো আরেকটি আইন। যা মার্কিন সুপ্রিম কোর্ট দ্বারা আংশিকভাবে বাতিল করা হয়েছিল। অ্যারিজোনার সেই আইনেও অবৈধ অভিবাসীদের আইনগত মর্যাদা ছাড়াই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে থাকাকে রাষ্ট্রীয় অপরাধে গণ্য করা হয়েছিল এবং পুলিশকে আইনপ্রয়োগের ক্ষমতা দিয়েছিল। ২০১২ সালে সুপ্রিম কোর্টের এক রায়ে নিশ্চিত করেছে যে অভিবাসনের ক্ষেত্রে শুধু ফেডারেল সরকারেরই এখতিয়ার।

টেক্সাসের নতুন অভিবাসন পরিকল্পনা নিয়ে ফেডারেল সরকার ও রিপাবলিকান গভর্নর গ্রেগ অ্যাবটের সঙ্গে বর্তমানে চরম বিরোধ চলছে। এছাড়া অবৈধ অভিবাসীদের বহনকারী বাস এবং বিমানগুলোকে রিপাবলিকান গভর্নর গ্রেগ টেক্সাস প্রবেশের সঙ্গে সঙ্গেই ডেমোক্র্যাট নিয়ন্ত্রিত স্টেট নিউইয়র্ক, শিকাগোসহ অন্যান্য স্টেটে পাঠিয়ে দিচ্ছেন।

উল্লেখ্য, এর আগে টেক্সাস টেস্ট অবৈধদের যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ ঠেকাতে সীমান্তে এবং নদীতে কাটা তারের বেড়া তৈরি করেছিল। এর বিরুদ্ধও বাইডেন প্রশাসন মামলাও করেছিল। ইতিমধ্যেই সেই মামলায় নিম্ন আদালত কাটা তারের বেড়া সরানোর নির্দেশ দিয়েছে। অন্যদিকে গত ৩ জানুয়ারি বুধবার হাউস স্পিকার মাইক জনসন প্রায় ৬০ জন রিপাবলিকান কংগ্রেসম্যানকে নিয়ে টেক্সাসের সীমান্ত শহর ঈগল পাস পরিদর্শন করেছেন। জনসন বলেন, আমেরিকার দক্ষিণ সীমান্তে অবৈধ অভিবাসীদের প্রবেশ গত ডিসেম্বরের কয়েক দিনে ১০ হাজার ছাড়িয়েছে। যে সংখ্যাটিকে মার্কিন কাস্টমস অ্যান্ড বর্ডার পেট্রোল কমিশনার ট্রয় মিলার ‘অভূতপূর্ব’ বলেছেন, যা বাইডেন প্রশাসনের পাগলামি ছাড়া আর কিছুই না। জনসন বলেন, তিনি সীমান্ত নীতির জন্য আরো কঠোর উদ্যোগ নেবেন। প্রেসিডেন্ট বাইডেন সীমান্তে অভিবাসীদের ঢল বন্ধে ব্যবস্থা না নিলে প্রয়োজনে ইউক্রেনের জন্য অর্থায়ন বিল পাস করবেন না। 

মেক্সিকো হয়ে সীমান্তে মালবাহী ট্রেনে চড়ে বিপুলসংখ্যক অভিবাসী প্রতিদিন সীমান্তে আসছেন। ইউএস বর্ডার কর্তৃপক্ষ গত মাসে পাঁচ দিনের জন্য ঈগল পাস এবং এল পাসোতে কার্গো রেল ক্রসিং বন্ধ করে দিয়েছিল। এই সপ্তাহে আবারও ঈগল পাসের একটি সেতু এবং সান দিয়েগো এবং অ্যারিজোনার অন্যান্য ক্রসিংগুলোতেও সম্পূর্ণ অপারেশন পুনরায় শুরু হয়েছে, যা সাময়িকভাবে বন্ধ ছিল।

শেয়ার করুন