২৫ এপ্রিল ২০১২, বৃহস্পতিবার, ০১:০৮:৪২ পূর্বাহ্ন


স্মার্ট বাংলাদেশ একটি প্রযুক্তিনির্ভর সমাজ প্রতিষ্ঠায় সহায়তা করবে
দেশ রিপোর্ট
  • আপডেট করা হয়েছে : ১৫-০৩-২০২৩
স্মার্ট বাংলাদেশ একটি প্রযুক্তিনির্ভর সমাজ প্রতিষ্ঠায় সহায়তা করবে জাতিসংঘে বক্তব্য রাখছেন প্রতিমন্ত্রী ফজিলাতুন নেসা ইন্দিরা


প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সম্প্রতি ’স্মার্ট বাংলাদেশ’ নামে একটি দূরদর্শী অভিযাত্রা শুরু করেছেন। এই অভিযান তথ্যপ্রযুক্তি খাতে নারীদের সমান অংশগ্রহণ নিশ্চিতকরণের মাধ্যমে ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে একটি উন্নত ও সমৃদ্ধ দেশে রূপান্তরের স্বপ্ন বাস্তবায়নে সহায়তা করবে’। গত ৯ মার্চ নিউইয়র্কস্থ জাতিসংঘ সদর দপ্তরে কমিশন অন দ্য স্ট্যাটাস অব উইমেনের ৬৭তম চলমান অধিবেশনের সাধারণ বিতর্কে এমন মন্তব্য করেন মহিলা ও শিশুবিষয়ক প্রতিমন্ত্রী ফজিলাতুন নেসা ইন্দিরা এমপি।

সিডো এবং বেইজিং প্ল্যাটফর্ম ফর অ্যাকশনের প্রতি বাংলাদেশের প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করে প্রতিমন্ত্রী বলেন যে, প্রধানমন্ত্রীর ঐন্দ্রজালিক নেতৃত্বে বাংলাদেশ সরকার নারীর ক্ষমতায়নের জন্য বেশ কয়েকটি অত্যন্ত কার্যকর প্রকল্প গ্রহণ ও বাস্তবায়ন করেছে। তন্মধ্যে দেশের তৃণমূল পর্যায়ে গ্রামঢু নারী উদ্যোক্তাদের সম্ভাবনাকে কাজে লাগাতে প্রায় পাঁচ হাজার ডিজিটাল সেন্টার প্রতিষ্ঠা; দেশের অধিকাংশ জেলাগুলোতে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, কারিগরি ও ভোকেশনাল ইনস্টিটিউট প্রতিষ্ঠা; প্রান্তিক নারীদের ডিজিটাল আর্থিক সেবার জন্য নারী নেতৃত্বাধীন এজেন্ট নেটওয়ার্ক ’সাথী’ প্রর্তনসহ অন্যান্য বেশকিছু তথ্যপ্রযুক্তি নির্ভর প্রকল্পের কথা উল্লেখ করেন প্রতিমন্ত্রী। তিনি আরো উল্লেখ করেন যে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নারীর ক্ষমতায়নে অসামান্য অবদানের জন্য গ্লোবাল উইমেনস লিডারশিপ, প্ল্যানেট ৫০-৫০ চ্যাম্পিয়ন এবং এজেন্ট অব চেঞ্জ অ্যাওয়ার্ডে ভূষিত হয়েছেন।

বক্তব্যে নারীর ক্ষমতায়নের জন্য প্রয়োজনীয় প্রযুক্তিগত উদ্ভাবন এবং প্রযুক্তিগত শিক্ষা গ্রহণের ক্ষেত্রে মূল প্রতিবন্ধকতাগুলি চিহ্নিত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের ওপর জোর প্রদান করেন প্রতিমন্ত্রী। তাছাড়া তথ্যপ্রযুক্তি খাতে লিঙ্গ সমতা নিশ্চিত করতে সক্ষমতা বৃদ্ধি এবং প্রযুক্তি হস্তান্তরের মাধ্যমে আন্তর্জাতিক সহযোগিতা আরো জোরদার করার আহ্বান জানান প্রতিমন্ত্রী ফজিলাতুন নেসা ইন্দিরা।

প্রতিমন্ত্রী সাধারণ বিতর্কের আগে আফগান নারী এবং মানবাধিকার বিষয়ক মার্কিন বিশেষ দূত রিনা আমিরির সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক করেন এবং নিউইয়র্কে সফররত প্রতিনিধিদের জন্য সৌদি আরবের স্থায়ী মিশন কর্তৃক আয়োজিত একটি অনুষ্ঠানে যোগদান করেন।


কনস্যুলেট অফিস পরিদর্শনে প্রতিমন্ত্রী ফজিলাতুন নেসা

বাংলাদেশ সরকারের মহিলা ও শিশু বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী ফজিলাতুন নেসা ইন্দিরা এমপি গত ১০ মার্চ নিউইয়র্কস্থ বাংলাদেশ কনস্যুলেট অফিস পরিদর্শন করেন। কন্স্যাল জেনারেল ড. মোহাম্মদ মনিরুল ইসলাম কনস্যুলেটের অন্যান্য কর্মকর্তা ও কর্মচারীসহ তাকে স্বাগত জানান।

 কনস্যুলেটের কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে মহিলা ও শিশু বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী, সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সুযোগ্য কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ আজ আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের প্রায় সব সূচকে বিশ্বের অনেক দেশের তুলনায় এগিয়ে রয়েছে মন্তব্য করে নারীর ক্ষমতায়নে সরকার গৃহিত  বিভিন্ন  পদক্ষেপ ও প্রকল্পের বিষয়ে বিস্তারিত বর্ণনা করেন। বাংলাদেশকে নারীর ক্ষমতায়নের অনন্য দৃষ্টান্ত উল্লেখ করে প্রতিমন্ত্রী জাতিসংঘে শান্তিরক্ষা  মিশনে বাংলাদেশি নারী ব্যাটালিয়নের ভূমিকা ও সাফল্যের কথা তুলে ধরেন। তিনি বাংলাদেশের অগ্রগতি ও অগ্রযাত্রায় নারীদের অবদান উল্লেখ পূর্বক নারীর অধিকার ও নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণে সরকার প্রণীত বিভিন্ন আইন ও সেগুলোর প্রয়োগ ও বাস্তবায়নের উদাহরণ দেন। তিনি যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি আরো উজ্জ্বল করণে এবং বাংলাদেশ যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্ককে আরো গতিশীল ও অর্থবহ করতে  সবার প্রতি আহ্বান জানান। 

এ সময় কনসাল জেনারেল ড. ইসলাম কনস্যুলেট কর্তৃক প্রদত্ত সেবাসমূহ সবিস্তারে বর্ণনা করেন এবং সেগুলো আরো সহজ ও ত্বরান্বিত করতে কনস্যুলেটের প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেন। প্রতিমন্ত্রী কনস্যুলেটের সার্বিক সেবা কার্যক্রমের ওপর সন্তোষ প্রকাশ করেন এবং ভবিষ্যতে এ ধারা অব্যাহত রাখার আহ্বান জানান। 

বাংলাদেশে নারী জাগরণ ও ক্ষমতায়নের অগ্রদূত শেখ হাসিনা: প্রতিমন্ত্রী

জাতির পিতা সংবিধানে নারী অধিকার ও সমতা নিশ্চিত করেছেন। স্বাধীনতা অর্জনের পর জাতির পিতা নারীর ক্ষমতায়ন ও কর্মসংস্থান সৃষ্টি করতে বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করেন। এরই ধারাবাহিকতায় বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশে নারীর আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে প্রয়োজনীয় বিভিন্ন প্রকল্প, কর্মপরিকল্পনা ও উন্নয়ন কার্যক্রম বাস্তবায়ন করছেন। যার ফলে জেন্ডার সমতা অর্জনের মাধ্যমে বাংলাদেশ নারী উন্নয়ন ও নারীর ক্ষমতায়নে বিশ্বে একটি রোল মডেল হিসেবে প্রতিষ্ঠিত। সরকারের নারীবান্ধব উন্নয়ন ও নীতি কৌশল বাস্তবায়নের ফলে গত একযুগে সরকারি, বেসরকারি, আত্মকর্মসংস্থানসহ সব ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য হারে নারীর অংশগ্রহণ বৃদ্ধি পেয়েছে’। গত ৮ মার্চ নিউইয়র্কস্থ জাতিসংঘে বাংলাদেশ স্থায়ী মিশনে আন্তর্জাতিক নারী দিবস উদযাপন উপলক্ষে আয়োজিত এক মতবিনিময় সভায় এসব কথা বলেন মহিলা ও শিশু বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী ফজিলাতুন নেসা ইন্দিরা এমপি।

প্রতিমন্ত্রী ইন্দিরা বলেন, নারীর অর্থনৈতিক ও সামাজিক উন্নয়নকে বেগবান করার লক্ষ্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০১১ সালে ‘জয়িতা’ কার্যক্রমের সূচনা করেন। জয়িতার কার্যক্রম বর্তমানে বিভাগ, জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে ছড়িয়ে পড়েছে এবং দেশব্যাপী নারীবান্ধব একটি বিপণন নেটওয়ার্ক গড়ে উঠেছে। ‘জয়িতা’কে কেন্দ্র করে তৃণমূল পর্যায়ে নারী উদ্যোক্তাদের মাঝে আত্মবিশ্বাস, উৎসাহ ও উদ্দীপনার সৃষ্টি হয়েছে। 

জাতিসংঘের বিভিন্ন ফোরামে নিউইয়র্কস্থ বাংলাদেশ স্থায়ী মিশন বাংলাদেশের নারীর ক্ষমতায়ন ও সমতা বিধানসংক্রান্ত বিভিন্ন কার্যক্রম নিয়মিতভাবে তুলে ধরে। সম্প্রতি জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৭৮তম অধিবেশনে বাংলাদেশ তৃতীয় কমিটির সহসভাপতি নির্বাচিত হয়েছে। এই কমিটি অন্যান্য কার্যক্রমের মধ্যে নারী ও শিশুর অধিকার রক্ষায় কাজ করে থাকে। এ প্রসঙ্গে প্রতিমন্ত্রী বলেন, এই নির্বাচন বাংলাদেশকে জাতিসংঘের নারী ও শিশুবিষয়ক কার্যক্রমে আরো গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখতে সহায়তা করবে। প্রতিমন্ত্রী বহুপাক্ষিক কূটনীতিতে স্থায়ী মিশনের প্রতিনিধিত্বমূলক এসব কার্যক্রমের ভূয়সী প্রশংসা করেন।

বিকালে তিনি আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থার উপমহাপরিচালক ইউগোচি ড্যানিয়েলস্ সঙ্গে একটি দ্বিপাক্ষিক বৈঠক করেন এবং সেখানে তিনি অন্যান্য বিষয়ের মধ্যে নিরাপদ অভিবাসন সংক্রান্ত বিষয়ে আলোচনা করেন।

শেয়ার করুন