০২ মে ২০১২, বৃহস্পতিবার, ০১:৫৯:৬ অপরাহ্ন


বিএনপির দাবি কারাগারে মৃত্যু পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড
বিশেষ প্রতিনিধি
  • আপডেট করা হয়েছে : ১৪-০২-২০২৪
বিএনপির দাবি কারাগারে মৃত্যু পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড প্রতীকী ছবি


কারা হেফাজতে বিএনপির একের পর এক নেতার মৃত্যুর ঘটনাকে পরিকল্পিত হত্যাকা- বলে অভিযোগ করেছেন দলটির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। তিনি বলেছেন, ‘প্রতিটি (কারাগারে) মৃত্যু পরিকল্পিত হত্যাকা-।’ তিনি আরো অভিযোগ করে বলেন, ‘গত তিন মাসে কারাগারে নির্যাতনে বিএনপির ১৩ নেতার মৃত্যু হয়েছে। কারাগারে কারাবিধির সব সুযোগ-সুবিধা কেড়ে নিয়ে বন্দি নেতাকর্মীদের ওপর বীভৎস নিপীড়ন চালানো হচ্ছে। তাদের খাওয়ার কষ্ট দেওয়া হচ্ছে, চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে না।’ 

সম্প্রতি রংপুর কারাগারে গঙ্গাচড়া উপজেলার লক্ষ্মীটারী ইউনিয়ন বিএনপির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক মনোয়ারুল ইসলামের মৃত্যু হয়। এর আগে দেশের বিভিন্ন কারাগারে দলটির পরপর কয়েকজন নেতাকর্মীর মৃত্যুর ঘটনায় গত ৯ ফেব্রুয়ারি সকালে রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে রুহুল কবির রিজভী এ অভিযোগ করেন। 

এ সময় রিজভী বলেন, ১৩ জানুয়ারি সুস্থ-সবল রংপুরের গঙ্গাচড়া এলাকায় মনোয়ারুলকে পুলিশ বাসা থেকে তুলে থানায় নিয়ে যায়। এরপর তাকে সেদিন আদালতে না পাঠিয়ে পরের দিন ও রাত পর্যন্ত থানায় আটক রেখে অমানুষিক নির্যাতন করা হয়। তার পুরো পায়ে, পিঠে ও মাথায় আঘাতের গভীর চিহ্ন দেখা গেছে। মনোয়ারুলের বাবা ও ভাই বলেছেন, পুলিশ নির্যাতন চালিয়ে মনোয়ারুলকে বিনা চিকিৎসায় হত্যা করেছে। মনোয়ারুলসহ কারা হেফাজতে মৃত্যুর প্রতিটি ঘটনার আন্তর্জাতিক তদন্তের দাবি জানান রিজভী। 

বিএনপির এই নেতা বলেন, একজনের নির্দেশে বিএনপির নেতাকর্মীদের ওপর নিপীড়নের সব মাত্রা প্রয়োগ করা হচ্ছে। সরকারের সঙ্গে আঁতাত করে নির্বাচনে অংশ নেওয়ায় একই মামলায়, একই ধারায় জামিন মিলেছে শাহজাহান ওমরের, অথচ বিএনপির মহাসচিবসহ হাজার হাজার নেতাকর্মীর জামিন মিলছে না। এটাতে প্রমাণিত হয়, শেখ হাসিনার নির্দেশেই পুলিশ ও আদালত একযোগে কাজ করে যাচ্ছে। 

বিএনপির নেতা রুহুল কবির বলেন, ‘অবৈধ ক্ষমতা দীর্ঘায়িত করতে গত ৭ জানুয়ারির ‘ডামি নির্বাচন’ কণ্টকমুক্ত করার জন্য গুম-খুন-গায়েবি মামলা, গ্রেফতার, নির্যাতন, অগ্নিসংযোগ, বাড়িঘর ভাঙচুরের যে ভয়াবহতা চালিয়েছিল, সেটি এখনো অব্যাহত রেখেছে এ সরকার। নৈরাজ্য আর বিশৃঙ্খলার বৃত্তে মানুষকে বন্দি করা হয়েছে।’ 

আন্তর্জাতিক তদন্তের দাবিতে রিট 

গত কয়েক মাসে কারাগারে নির্যাতন চালিয়ে বিএনপির ১৩ নেতাকর্মীকে হত্যার অভিযোগে আন্তর্জাতিক মানের তদন্ত ও তাদের পরিবারকে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার নির্দেশনা চেয়ে রিট দায়ের করা হয়েছে। গত ১১ ফেব্রুয়ারি রোববার জনস্বার্থে এই রিট করা হয় বলে জানান বিএনপির আইনবিষয়ক সম্পাদক ব্যারিস্টার কায়সার কামাল। ব্যারিস্টার কায়সার কামাল বলেন, ‘কারাগারে থেকে মৃত্যুর দায় রাষ্ট্র ও কারা কর্তৃপক্ষ এড়াতে পারে না। আমরা আবেদনে সংশ্লিষ্ট কারা কর্তৃপক্ষকে আদালতে এসে তাদের অবস্থান ব্যাখ্যা করতে নির্দেশনা চেয়েছি। সেই সঙ্গে মৃত্যুর ঘটনা তদন্ত করতে দেশীয় ও আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থার সমন্বয়ে কমিটি গঠনের নির্দেশনা চেয়েছি। তবে সেখানে যাতে পুলিশ ও কারা কর্তৃপক্ষকে না রাখা হয়।’ ব্যারিস্টার কায়সার আরো বলেন, ‘স্বাধীনতা-উত্তর ইতিহাসে এতো রাজবন্দি এতো দ্রুত মারা যাননি। যেসব রাজবন্দি মারা গেছেন, তারা প্রত্যেকেই সুস্থ অবস্থায় গ্রেফতার হয়েছিলেন।’

শেয়ার করুন