২৭ এপ্রিল ২০১২, শনিবার, ০৫:২৭:৩৩ অপরাহ্ন
শিরোনাম :
‘ব্রাজিল থেকে জীবন্ত গরু আনা সম্ভব, তবে প্রক্রিয়া জটিল’ খালেদা জিয়ার সঙ্গে মির্জা ফখরুলের ঘন্টাব্যাপী সাক্ষাৎ বিশ্বের প্রতি যুদ্ধকে ‘না’ বলার আহ্বান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ৭ জানুয়ারির সংসদ নির্বাচনে গণতান্ত্রিক ধারাবাহিকতা প্রতিষ্ঠা হয়েছে - হাবিবুল মার্কিন পররাষ্ট্র দফতরের প্রতিবেদন অনুমান ও অপ্রমাণিত অভিযোগ নির্ভর- পররাষ্ট্র মন্ত্রনালয় ইউরোপে ভারতীয় ৫২৭ পণ্যে ক্যান্সার সৃষ্টিকারি উপাদন শনাক্ত বাংলাদেশ ব্যাংকে সাংবাদিকদের প্রবেশে কড়াকড়ি বিএনপির আন্দোলন ঠেকানোই ক্ষমতাসীনদের প্রধান চ্যালেঞ্জ বিএনপিকে মাঠে ফেরাচ্ছে আওয়ামী লীগ উপজেলা নির্বাচন নিয়ে অদৃশ্য চাপে বিএনপি


জাতীয় পার্টির ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন
বিশেষ প্রতিনিধি
  • আপডেট করা হয়েছে : ০৩-০৮-২০২২
জাতীয় পার্টির ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন


ক্ষমতায় থাকা আওয়ামী লীগের দীর্ঘদিনের সঙ্গী জাতীয় পার্টি। দুদলের সখ্য অনেক। একে অপরের কষ্টটা বোঝে। বড় কথা দীর্ঘদিন ক্ষমতায় থাকা আওয়ামী লীগের ছায়াতলে দলটি। তাই নেতাকর্মীরা বেশ নিরাপদ। বেশ সুযোগ-সুবিধাও পাচ্ছে। একই জোটে থেকে নির্বাচনে পাস করে সমঝোতার বিরোধীদলে বসেছে জাতীয় পার্টি। এটা মন্দ নয়, কখনো ক্ষমতার প্রভাব, কখনো বিরোধী বিরোধী ভাব। 

কিন্তু ইদানীংকালে বিশেষ করে দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচনকে কেন্দ্র করে একটু বিরোধী বিরোধী ভাব দেখানোর প্রাণন্ত চেষ্টা করছে। যদিও এটা সাধারণ মানুষের বুঝতে বাকি থাকে না। তবুও সরকারের বিগ প্ল্যান অনুসারে সংসদে বিরোধীদলের ভূমিকা পালন করা থাকা দল কি করে সরকারের সঙ্গে সুর মেলাবে? তাইতো বিভিন্ন ইস্যুতে প্রায়ই কথা বলতে দেখা যায় জাতীয় পার্টির শীর্ষনেতাদের, যা অনেকটাই বিএনপির দাবি-দাওয়ার সঙ্গে মিল। আবার কিছু কিছু সময়ে সরকারের পক্ষেই তাদের অবস্থান নিতে দেখা যায়। বিশেষ করে নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীন নির্বাচন। এখানে তারা আওয়ামী লীগের নীতির সঙ্গে একমত। নিয়োগ পাওয়া হাবিবুল আউয়ালের নেতৃত্বাধীন ইসিতেই তাদের আস্থা বলে জানান দিয়েছে। আবার ইভিএমের ব্যাপারে তাদের দ্বিমত প্রকাশ করছে। এমনকি যে ভোটের মাধ্যমে পাস করে তারা আজ সংসদে। সে ভোটকেও প্রশ্নবিদ্ধ করতে ছাড়ছে না। 

পদ্মা সেতু বাস্তবায়নকে বিএনপি ও তার জোটের দলরা বলছে এ প্রজেক্ট করতে যে পরিমাণ অর্থ খরচা হয়েছে সেটা অস্বাভাবিক। বিএনপির দাবি ১০ হাজার টাকার কোটি টাকার পদ্মা ত্রিশ হাজার কোটি টাকা ছাড়িয়ে যাওয়া মানে এখানে মেগা দুর্নীতি হয়েছে। সেখানে জাতীয়পার্টির এ ব্যাপারে কোনো মন্তব্য নেই। বিদ্যুৎখাত নিয়ে বিএনপি ও নিরপেক্ষভাবে কথা বলা এক্সপার্টরাও প্রশ্ন তুলেছে। তারা বলছে একসময় শতভাগ বিদ্যুৎ পাওয়ার উৎসব করার পর আজ লোডশেডিং সেটাও সেন্ট্রাল থেকে ঘোষণা দিয়ে রোটেশন করে। তাহলে সে বিদ্যুৎ গেল কই। বিএনপি এমন দাবি করছে। রাস্তায় নেমে এর প্রতিবাদ করছে। মানুষ তাদের সঙ্গে একাত্মতাও প্রকাশ করছে। সেখানে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান ও সংসদে বিরোধীদলীয় উপনেতা জিএম কাদের বলেছেন, বিদ্যুৎখাতের দুর্নীতি রুখতে হবে, যা অনেকটাই গা বাঁচানো। দায়িত্বশীল কথা না, বিরোধীদলীয় নেতা হিসেবে। 

দেশের অর্থনীতির ব্যাপারে রিজার্ভ কমে যাওয়া থেকে শুরু করে যেসকল বিষয় নিয়ে সরকারও উদ্বিগ্ন এবং রিজার্ভের অবস্থা নাজুক পর্যায়ে গিয়েছে বিধায়, আইএমএফের লোনের আবেদন করেছে পরিস্থিতি সামাল দিতে। সেখানে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান বা নেতাদের সুস্পষ্ট কোনো বক্তব্য নেই। পার্টি চেয়ারম্যান জিএম কাদের গা-বাঁচানো বক্তব্য ‘ঋণের দায়ে বাংলাদেশ শ্রীলঙ্কার মতো দেউলিয়া হতে পারে। দেশের ঋণের পরিমাণ ১৬ লাখ কোটি টাকা। আগামীতে সুদসহ এই ঋণ পরিশোধ করতে হবে। তখন দেশের অবস্থা ভয়াবহ হতে পারে।

নির্বাচনে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনে (ইভিএম) প্রধান বিরোধীদল জাতীয় পার্টির আস্থা নেই বলে জানিয়েছেন পার্টির (জাপা) মহাসচিব মুজিবুল হক। ইসির সঙ্গে সংলাপে এমন বক্তব্য দেন দলটির মহাসচিব মুজিবুল হক। 

এসময় (সংলাপে) দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ইভিএম ব্যবহারের ঘোর বিরোধিতা করে দলটির মহাসচিব মুজিবুল হক সিইসিকে বলেন, ‘ইভিএমে আমাদের আস্থা নেই। ব্যক্তিগতভাবে আমারও এতে কোনো আস্থা নেই। মানুষ মনে করে, ইভিএমে ভোট পাল্টে দেয়া হলে কিছু করার নেই। কারণ ফল রিচেক (পুনর্মূল্যায়ন) করা যায় না।’ জাতীয় সংসদে প্রধান বিরোধীদলের দায়িত্বে থাকা দলটি মনে করে, ভোটের আগের রাতে কেন্দ্রে ব্যালট পেপার পাঠালে কারচুপি হয়।

এ বিষয়ে ইসিকে মজিবুল হক বলেন, ‘রাতে কিন্তু কাজটা (ভোট দেয়া) হয়। হয় মানে কী, আমরাই করাইছি, কী বলবো, এটা হয়।’

সব মিলিয়ে একসময় হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদের নেতৃত্বাধীন দলটি দীর্ঘদিন বাংলাদেশ সরকারের থাকা দলটির অবস্থান ক্লিয়ার নয়। কখনো তারা সরকারের সঙ্গে একই সুরে সুর মিলিয়ে কথা বলে। কখনো কখনো একটু-আধটু বিরোধী দলের ভূমিকায়। তবে দেশে বর্তমান যে ক্রাইসিস বিদ্যমান এ বিষয়গুলো তাদেরকে খুব একটা সোচ্চার হতে দেখা যায়না। ইনডোর বক্তব্যের মধ্যেই অনেকটা সীমাবদ্ধ। জনগণের প্রতিনিধি জনগণের স্বার্থে রাস্তায় নেমে প্রতিবাদ বা দাবি এগুলোতে নেই জাতীয় পার্টি। এ নিয়ে খোদ জাতীয় পার্টির ভেতরেও অসন্তোষ। নিজেদের অবস্থান ক্লিয়ার করার দাবি তাদের। নতুবা দ্বাদশ নির্বাচনে তারা কোনোভূমিকা নিয়ে জনগণের কাছে ভোট চাইতে যাবে, সেটা নিয়ে দুশ্চিন্তা এখনই তাদের। 


শেয়ার করুন