২৭ এপ্রিল ২০১২, শনিবার, ০৬:৪৮:৪৪ অপরাহ্ন
শিরোনাম :
‘ব্রাজিল থেকে জীবন্ত গরু আনা সম্ভব, তবে প্রক্রিয়া জটিল’ খালেদা জিয়ার সঙ্গে মির্জা ফখরুলের ঘন্টাব্যাপী সাক্ষাৎ বিশ্বের প্রতি যুদ্ধকে ‘না’ বলার আহ্বান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ৭ জানুয়ারির সংসদ নির্বাচনে গণতান্ত্রিক ধারাবাহিকতা প্রতিষ্ঠা হয়েছে - হাবিবুল মার্কিন পররাষ্ট্র দফতরের প্রতিবেদন অনুমান ও অপ্রমাণিত অভিযোগ নির্ভর- পররাষ্ট্র মন্ত্রনালয় ইউরোপে ভারতীয় ৫২৭ পণ্যে ক্যান্সার সৃষ্টিকারি উপাদন শনাক্ত বাংলাদেশ ব্যাংকে সাংবাদিকদের প্রবেশে কড়াকড়ি বিএনপির আন্দোলন ঠেকানোই ক্ষমতাসীনদের প্রধান চ্যালেঞ্জ বিএনপিকে মাঠে ফেরাচ্ছে আওয়ামী লীগ উপজেলা নির্বাচন নিয়ে অদৃশ্য চাপে বিএনপি


দেশকে শমী কায়সার
চাইলেই মানুষ সব সময় সবকিছু করতে পারে না
আলমগীর কবির
  • আপডেট করা হয়েছে : ২৭-০৩-২০২৪
চাইলেই মানুষ সব সময় সবকিছু করতে পারে না শমী কায়সার


শমী কায়সার। নব্বই দশকের জনপ্রিয় এই অভিনেত্রী এখন সফল উদ্যোক্তা। ই-কমার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের সভাপতি। পাশাপাশি তিনি এখন রাজনীতিতেও বেশ সক্রিয়। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ থেকে নির্বাচন করতে ফরম উঠিয়েছিলেন। এসব নিয়ে কথা বলেছেন নিউইয়র্ক থেকে প্রকাশিত পাঠকপ্রিয় দেশ পত্রিকার সঙ্গে। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন আলমগীর কবির 

প্রশ্ন: আপনার ক্যারিয়ার ক্যানভাস বেশ বৈচিত্র্যময়। সব কিছু মেনটেইন করেন কি ভাবে?

শমী কায়সার: পরিকল্পনা থাকলে একসঙ্গে অনেক কাজ করতে অসুবিধা হয় না। যখন নিয়মিত নাটক করতাম তখন নানা ধরনের চরিত্রে কাজ করা হতো। এমনও হয়েছে একইদিনে রোমান্স এবং বিরহের নাটকে কাজ করেছি। ওই অভিজ্ঞতাগুলো এখন বাস্তব জীবনে কাজে দেয়। কর্পোরেট জগৎ শোবিজ অঙ্গন থেকে সম্পন্ন ভিন্ন। আবার রাজনৈতিক ময়দানের হিসাব আলাদা। সব কিছু একটি ক্যানভাসে নিয়ে আসা কঠিন, তবে অসম্ভব নয়। 

প্রশ্ন: আপনি তো রাজনৈতিক পরিবারেরই মানুষ। হঠাৎ করে এবার কেন এমপি হওয়ার জন্য মনোনয়ন কিনে ছিলেন?

শমী কায়সার: মনোনয়ন ফরম পূর্ব পরিকল্পনা থেকেই কেনা হয়েছিল। আমার মা এমপি ছিলেন। গত বছর তিনি চলে যাওয়ার পর আমার মনে হয়েছিল ওনার অসমাপ্ত কাজগুলো যেন আমার হাত দিয়ে পূর্ণতা পায়। কিন্তু আমার দল আওয়ামী লীগ অন্যভাবে চিন্তা করেছে। তাই আমার পরিকল্পনায়ও পরিবর্তন এসেছে। তবে আমি মনে করি মানুষের জন্য কাজ এমপি না হয়েও করা যায়। 

প্রশ্ন: আপনি তো ই-কমার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের সভাপতি। গ্রামের উদ্যোক্তাদের নিয়ে কী ভাবছেন? 

শমী কায়সার: দিন দিন জনপ্রিয় হচ্ছে ই-কমার্স ব্যবসা। তবে আমাদের একটা সীমাবদ্ধতা রয়েছে। তা হলো অনলাইন ব্যবসাটা নগর ও শহরকে কেন্দ্র করে গড়ে উঠেছে। পল্লি বা গ্রামে ব্যবসা স্বল্পপরিসরে গড়ে উঠেছে। আমরা রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো (ইপিবি) ও বিজনেস কাউন্সিলের সহায়তায় ই-কমার্স ব্যবসাকে পল্লিতে ছড়িয়ে দিতে চাই। এ জন্য ‘ডিজিটাল পল্লি’ নামে একটি প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে। সেখানে গ্রামের উদ্যোক্তাদের জন্য নানা ধরনের সুযোগের ব্যবস্থা করা হবে।

প্রশ্ন: উদ্যোক্তাদের উন্নয়নে প্রশিক্ষণের গুরুত্ব কী? 

শমী কায়সার: শিক্ষা ও প্রশিক্ষণের মাধ্যমে উদ্যোক্তাদের দক্ষতা বৃদ্ধি পায়। যার প্রভাব পড়ে ব্যবসায়। এ জন্য আমরা প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষার পাশাপাশি নতুন উদ্যোক্তা সৃষ্টি করতে বিভিন্ন ধরনের কর্মশালা ও শিক্ষামূলক কর্মসূচি পালন করে থাকি। বিশেষ করে আগামী দিনে প্রযুক্তির উন্নয়নের কথা ভেবে সব ধরনের প্রস্তুতি গ্রহণের প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। এ জন্য সদস্যদের ডিজিটাল লিটারেসিতে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি এনবিআরের ভ্যাট, ট্যাক্স ও ব্যাংকিং ইস্যুতে প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে। আর ব্যবসা পরিচালনায় দক্ষতা বৃদ্ধির জন্য সব উদ্যোগ অব্যাহত রয়েছে। এসব কাজ আমরা বিজনেস সাপোর্ট সেন্টারের মাধ্যমে করতে চাই। সদস্যদের নানা সমস্যা সমাধানের জন্য মেম্বারশিপ সাপোর্ট সেন্টার করারও পরিকল্পনা রয়েছে।

প্রশ্ন: ই-ক্যাবের উন্নয়নে পরিকল্পনা কী? 

শমী কায়সার: ই-ক্যাব এখন একটি বড় সংগঠন। প্রথম দিকে এ সমিতির সদস্য ছিল মাত্র ৫০ জন। এখন সদস্যসংখ্যা ১ হাজার ৮০০ ছাড়িয়েছে। আমি ই-ক্যাবের হয়ে এফবিসিসিআইয়ের পরিচালক পদ অলংকৃত করছি। করোনাভাইরাস সংক্রমণের সময় শিল্পটির প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৭০ থেকে ৮০ শতাংশ। এখন এই খাতের বাজার প্রায় ২৫ হাজার কোটি টাকার। আমরা সদস্যদের জন্য বিশ্ববাজারে প্রবেশে যাবতীয় সহযোগিতার উদ্যোগ নিয়েছি। বিশেষ করে ক্রস বর্ডার ব্যবসা প্রসারে সদস্যদের পাশে থাকবে ই-ক্যাব।

প্রশ্ন: নারী উদ্যোক্তাদের জন্য বিশেষ কী করছেন? 

শমী কায়সার: নারীদের জন্য আমরা কিছু নীতিমালায় পরিবর্তন আনতে যাচ্ছি। কেন্দ্রীয় অভিযোগ ব্যবস্থাপনা সেল গঠনের কাজ চলছে। এর মূল কাঠামো এটুআইয়ের তৈরি, যা বাস্তবায়ন করছে সরকার। ই-ক্যাব তাতে সহায়তা করছে। এ ছাড়া অটোমেশন ও স্বচ্ছতা বাড়াতে এস্ক্রো সিস্টেমের কাজ চলছে। এর ফুল অটোমেশনের কাজ করছে এটুআই। এটি বাস্তবায়ন করা গেলে অর্থের লেনদেনের ক্ষেত্রে স্বচ্ছতা থাকবে। 

প্রশ্ন: শোবিজ অঙ্গনে আপনি বেশ জনপ্রিয়। কিন্তু নাটক থেকে দূরে কেন?

শমী কায়সার: নাটক থেকে তো আমি অনেক দিন ধরেই দূরে। এর অনেকগুলো কারণের একটি ছিল অভিমান। মানুষ যেমন জীবনে অনেক কিছু পায়, তেমন না পাওয়ার কষ্টও থাকে। নানা ধরনের অভিমানও থাকে। আমি অভিনয় দিয়ে নিজের জায়গা কষ্ট করে অর্জন করেছিলাম। কোনো রাজনৈতিক দলের সাহায্যে পাইনি বা কেউ গড়ে দেয়নি। যখন বিএনপি সরকার ক্ষমতায় আসল, আমার সব নাটক ব্যান্ড করে দিল, চালালো না। সংস্কৃতি চর্চার সঙ্গে রাজনৈতিক চিন্তা ভাবনার দ্বন্দ্ব থাকতেই পারে। কিন্তু এমন নোংরাভাবে কাজটা করল বিএনপি! আমার পরিবার মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী। বঙ্গবন্ধুর আদর্শকে আমি ধারণ করি। সে কারণেই ব্যক্তি শমী কায়সারের উপর ওই নিষেধাজ্ঞা এসেছিল।

প্রশ্ন: কিন্তু গত ১৫ বছরের বেশি সময় ধরে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায়। এই সময়টায় নতুন করে অভিনয়ে ব্যস্ত হলেন না কেন?

শমী কায়সার: চাইলেই মানুষ সব সময় সবকিছু পারে না। আমি যে সময় ফেলে এসেছি সেখান থেকে ঘুরে দাঁড়ানো অনেক কঠিন। তাছাড়া আমি দীর্ঘ বিরতির কারণে অন্য ব্যবসায় সম্পৃক্ত হয়ে পড়ায় নতুন করে অভিনয়ে মনোযোগ দিতে পারিনি। তবে মাঝে মধ্যে কিছু কাজতো করি।

শেয়ার করুন