২৮ এপ্রিল ২০১২, রবিবার, ০১:৩৮:১৩ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম :
‘শেরে বাংলা আপাদমস্তক একজন পারফেক্ট বাঙালি ছিলেন’ বিএনপির বহিস্কৃতদের জন্য সুখবর! মে দিবসে নয়পল্টনে বিএনপির শ্রমিক সমাবেশ উপজেলা নির্বাচনে অংশ নেয়ার জের, বিএনপির বহিস্কার ৭৬ থাইল্যান্ডের ব্যবসায়ীদের বাংলাদেশে বিনিয়োগে পররাষ্ট্রমন্ত্রীর আহ্বান ‘ব্রাজিল থেকে জীবন্ত গরু আনা সম্ভব, তবে প্রক্রিয়া জটিল’ খালেদা জিয়ার সঙ্গে মির্জা ফখরুলের ঘন্টাব্যাপী সাক্ষাৎ বিশ্বের প্রতি যুদ্ধকে ‘না’ বলার আহ্বান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ৭ জানুয়ারির সংসদ নির্বাচনে গণতান্ত্রিক ধারাবাহিকতা প্রতিষ্ঠা হয়েছে - হাবিবুল মার্কিন পররাষ্ট্র দফতরের প্রতিবেদন অনুমান ও অপ্রমাণিত অভিযোগ নির্ভর- পররাষ্ট্র মন্ত্রনালয়


সীমান্তে বাইডেন প্রশাসনের কড়াকড়ি আরোপ
প্রতি মাসে ৩০ হাজার লোককে বৈধ প্রবেশাধিকার দেয়া হবে
মঈনুদ্দীন নাসের
  • আপডেট করা হয়েছে : ১১-০১-২০২৩
প্রতি মাসে ৩০ হাজার লোককে বৈধ প্রবেশাধিকার দেয়া হবে


বর্তমান বাইডেন প্রশাসন অবৈধ পন্থায় সীমান্ত অতিক্রম বন্ধ করার দৃঢ় পদক্ষেপ নিয়েছে। যারা অবৈধ পন্থায় আমেরিকায় প্রবেশ করবে, তাদের যথাশীঘ্রই ফেরত পাঠানোর ব্যবস্থা করা হবে বলে গত বৃহস্পতিবার তার বক্তব্যে পরিষ্কারভাবে উল্লেখ করেছেন। বলেছেন, কিউবান, হাইতিয়ান, নিকারাগুয়ান ও ভেনেজুয়েলান, যারা যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশের চেষ্টা করছেন, তাদেরকে সাথে সাথে ফেরত পাঠানো হবে আমেরিকার বাইরে। এই সরকারি-ব্যবস্থা ইমিগ্রেশন বিধিতে ব্যাপক পরিবর্তন আনবে আর ট্রাম্পের পাবলিক হেলথ আইনে যদি সুপ্রিম কোর্ট ইতিরেখা টেনে দেয়, তারপরও এই পরিবর্তন বলবত থাকবে। অর্থাৎ আশ্রয়প্রার্থীদের ফিরিয়ে দেয়া হবে। প্রেসিডেন্ট বাইডেন বলেছেন, ‘সীমান্তে কোনোভাবেই আসবে না, সীমান্তে দেখা দেবে না। যেখানে আছো, সেখানে থাকো এবং সেখান থেকেই আবেদন দাও। এই ঘোষণা তার টেক্সাসের এল পাসোতে সফরের পূর্বেই দেয়া ঘোষণা। সোমবার, মঙ্গলবার তিনি মেক্সিকো শহরে যান। সেখানে উত্তর আমেরিকায় নেতাদের সাথে মিলিত হন। হোমল্যান্ড সিকিউরিটি কর্মকর্তারা বলেন, তারা অ্যাসাইলাম আবেদন বাতিল করে দেবেন তাদের, যারা বৈধপথে না এসে অবৈধ পথ ধরে অ্যাসাইলাম চেয়েছেন এবং যারা যে দেশের মধ্য দিয়ে এসেছেন, সে দেশে অ্যাসাইলাম না চেয়ে সরাসরি আমেরিকায় এসে অ্যাসাইলাম চেয়েছেন, তাদের ফেরত পাঠানো হবে। 

এই ব্যবস্থার পরিবর্তে আমেরিকা প্রতি মাসে উপরোল্লিখিত চার দেশ থেকে ৩০ হাজার লোক গ্রহণ করবে আর আগামী ২ বছর পর্যন্ত তা চলবে। তাদের বৈধভাবে  এদেশে কাজের সুযোগ দেবে। তাদের অবশ্য বৈধভাবে আসতে হবে, যোগ্য স্পন্সর থাকতে হবে। নিজেদের প্রবেশযোগ্য প্রমাণ করতে হবে এবং তাদের ব্যাকগ্রাউন্ড চেকিং অবশ্যই পাস করতে হবে। সম্প্রতি এই চার দেশ থেকে সীমান্ত অতিক্রম বেড়েছে আর তাদের স্বদেশে ফেরত পাঠানোর কোনো সঠিক পথ নেই।

বাইডেন বলেন, ‘এই নতুন পথ নিয়মমাফিক এবং কার্যকর।’

এদিকে আমেরিকায় সিভিল লিবার্টিজ ইউনিয়নের পরিচালক জোনাথন ব্লেজার বলেন, ‘প্রেসিডেন্ট বাইডেন আজ সত্যিকারার্থে স্বীকার করেছেন যে, অ্যাসাইলাম চাওয়া বৈধ অধিকার আর যেসব লোক স্বদেশে নির্যাতনের শিকার হয়ে এসেছেন, তাদের সাথে সদাচার হয়ে কথা বলতে হবে।’ কিন্তু সিভিল লিবার্টিজ ইউনিয়ন সমালোচনা করে বলেন, ‘কিন্তু এই পরিকল্পনা যা তিনি ঘোষণা করেছেন, তাতে প্রশাসনকে বিষাক্ত ইমিগ্রেশন-বিরোধী নীতির সাথে, যা ট্রাম্প আমলে চালু হয়েছে, সম্পৃক্ত করা হয়েছে। তাতে অ্যাসাইলাম প্রটেকশনের সুষ্ঠু ব্যবস্থা করা হয়নি।

প্রেসিডেন্ট বাইডেনের ইমিগ্রেশন প্রস্তাবের প্রধান প্রধান বিষয়সমূহ হচ্ছে- বৈধভাবে প্রবেশের অধিকারকে সম্প্রসারণ করা। চারটি দেশ থেকে মাসে ৩০ হাজার বৈধ মাইগ্র্যান্ট গ্রহণ করা। প্যারোল কর্মসূচিতে একজন আর্থিক স্পন্সর লাগবে। অবৈধভাবে প্রবেশকারীরাই অ্যাসাইলাম আবেদন করতে পারবে না। 

অবৈধভাবে প্রবেশের জন্য কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। তাদের দ্রুত বহিষ্কার করা হবে, তাদের যুক্তরাষ্ট্রে ৫ বছরের জন্য প্রবেশ নিষিদ্ধ করা হবে। আর নতুন বিধিতে যেসব লোক অন্যদেশ ক্রস করার সময় সেখানে অ্যাসাইলাম চায়নি তাদের জরিমানা করা হবে। 

* বর্ডার চেক পয়েন্ট প্রক্রিয়া জোরদার করা হবে। হোমল্যান্ড সিকিউরিটি বিভাগ ও জাস্টিস ডিপার্টমেন্ট নতুন করে সীমান্তে অ্যাসাইলাম অফিসার, ইমিগ্রেশন জাজ ও নতুন টেকনোলজি সংযুক্ত করে মামলার ব্যাকলগ কমানোর ব্যবস্থা করা হবে। 

* রিফিউজি সেটেলমেন্ট বাড়ানো। ২০২৩ ও ২০২৪ সালে ল্যাটিন আমেরিকা ও ক্যারিবিয়ান দেশ থেকে ২০ হাজার রিফিউজি গ্রহণ করা। এই সংখ্যা ২০২২ সালে পশ্চিম গোলার্ধের গৃহীত সংখ্যার তিনগুণ। রিফিউজিদের যথাযথভাবে প্রবেশের যোগ্যতা অর্জন এবং তাদের আবেদন মঞ্জুর হতে হবে। 

বাইডেনের নতুন পলিসি গত দু’বছর ধরে তার সামনে ঝুলে থাকা সমস্যাকে সমাধানের উপায় বলে বর্ণনা করা হয়েছে। তবে এই পরিবর্তন ইমিগ্রেশন পক্ষের প্রচারণা গ্রুপ থেকে সমালোচনার সম্মুখীন হতে পারে। 

ডেমোক্রেট-রিপাবলিকান উভয়ের সমালোচনা

এদিকে প্রেসিডেন্ট বাইডেনের সাথে মাত্র ৩০ হাজার লোকের প্রবেশাধিকার দেয়াকে সমালোচনা করে বিবৃতি দিয়েছেন ডেমোক্রেট দলীয় চার সিনেটর, তারা হলেন- সিনেটর বব মেনেনডেজ (নিউজার্সি) করি বুকার (নিউজার্সি), বেন বে লুজান (নিউ মেক্সিকো) ও আলেক্স পাডিলা (ক্যালিফোর্নিয়া)। তারা বলেন, যখন রিপাবলিকানদের বাধার মুখে দক্ষিণ সীমান্তে ইমিগ্রেশন সমস্যার সমাধান সম্ভব হয়নি, তখন বাইডেন প্রশাসন যে টাইটেল-৪২ ব্যবহারের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তা আমাদের হতাশ করেছে।

অন্যদিকে রিপাবলিকান কংগ্রেসম্যানদের অনেকে প্রতি মাসে ৩০ হাজার লোকের বৈধতা দেয়ার সিদ্ধান্তকে অনেকটা ঢালাও ব্যবস্থা বলে সমালোচনা করেন। তারা এই বৈধতাদানের বিরোধিতা করেন।

শেয়ার করুন