২৯ অক্টোবর ২০২৫, বুধবার, ১১:০২:৫১ অপরাহ্ন


ছেলেকে বাঁচাতে প্রাণ দিয়েছিলেন মা
বাংলাদেশী সাবরিনার খুনি জেমসের বিচার শুরু
দেশ রিপোর্ট
  • আপডেট করা হয়েছে : ২৯-১০-২০২৫
বাংলাদেশী সাবরিনার খুনি জেমসের বিচার শুরু খুনি শেইন জেমস জুনিয়র এবং স্বামী-সন্তানের সাথে সাবরিনা


টেক্সাসের অস্টিনে ২০২৩ সালের ডিসেম্বর মাসে সংঘটিত ভয়াবহ গণহত্যায় বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত সাবরিনা রহমানসহ ৬ জনের মৃত্যু হয়। ছেলের জীবন বাঁচাতে গিয়ে গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হয়েছিলেন বাংলাদেশি মা সাবরিনা রহমান। ঘটনাটি ঘটে সাউথ অস্টিনে সেডুইন রাইফে এলাকায়। জানা গেছে, দেড় বছরের ছেল ইব্রাহিমকে নিয়ে স্টলারে নিয়ে রাস্তায় হাঁটার সময় বন্দুক হামলার শিকার হন মা সাবরিনা রহমান। মামলার প্রধান অভিযুক্ত শেইন জেমস জুনিয়রকে অবশেষে বিচারযোগ্য ঘোষণা করেছে আদালত। গত ২৩ অক্টোবর বৃহস্পতিবার ট্রাভিস কাউন্টির ক্রিমিনাল কোর্টের বিচারক জানান যে, মানসিক পুনর্বাসনের পর জেমস এখন বিচার প্রক্রিয়ায় অংশ নেওয়ার মতো মানসিকভাবে সক্ষম বা “কম্পিটেন্ট টু স্ট্যান্ড ট্রায়াল”।

খুনি শেইন জেমস জুনিয়রের আইনজীবী ২০২৪ সালের নভেম্বরে আদালতে মানসিকভাবে অসুস্থ বলে মামলা থেকে অব্যহতি দেয়ার আবেদনের পর মামলাটি সাময়িক স্থগিত হয়ে যায়। আদালত আসামিকে মানসিকভাবে অসুস্থ কি না তা পরীক্ষার জন্য হাসপাতালে প্রেরণ করেন। মানসিক অবস্থা মূল্যায়নের পর আদালত তাঁকে বিচার অযোগ্য ঘোষণা করে। তখন তাঁকে টেক্সাস স্টেট হাসপাতালে পাঠানো হয় চিকিৎসার জন্য। প্রায় আট মাস চিকিৎসা শেষে আদালতের নতুন মূল্যায়নে দেখা যায়, জেমস এখন যথেষ্ট স্থিতিশীল এবং নিজের আইনজীবী ও আদালতের সঙ্গে যোগাযোগ করতে সক্ষম। এর ফলে তাঁকে পুনরায় বিচার প্রক্রিয়ায় ফিরিয়ে আনার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এই ঘোষণার ফলে মামলাটি পুনরায় ট্রাভিস কাউন্টির ১৪৭তম ক্রিমিনাল ডিস্ট্রিক্ট কোর্টে পাঠানো হয়েছে, যেখানে বিচারিক প্রক্রিয়ার পরবর্তী ধাপগুলো সম্পন্ন হবে বলে জানিয়েছে ট্রাভিস কাউন্টি জেলা অ্যাটর্নির কার্যালয়।

অভিযুক্ত শেইন জেমস জুনিয়র ২০২৩ সালের ৫ ডিসেম্বর টেক্সাসের অস্টিনে এক ভয়াবহ সহিংসতা চালান। তদন্ত অনুযায়ী, তিনি প্রথমে সান অ্যান্টোনিওর কাছে বেক্সার কাউন্টিতে নিজের বাবা-মা ফিলিস জেমস (৫৫) ও শেইন জেমস সিনিয়র (৫৬)কে হত্যা করেন। এরপর তিনি গাড়ি চালিয়ে অস্টিনে আসেন এবং একাধিক জায়গায় হামলা চালিয়ে আরও চারজনকে হত্যা করেন, যাদের মধ্যে ছিলেন বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত সাবরিনা রহমান (২৪), তাঁর প্রতিবেশী ইমানুয়েল পপ বা (৩২) এবং লরেন ও ক্যাথেরিন শর্ট নামের দুই বোন। এই হামলায় একাধিক ব্যক্তি আহত হন এবং দুইজন পুলিশ কর্মকর্তাও গুলিবিদ্ধ হন।

প্রসিকিউটরদের মতে, যেহেতু শেইন জেমসের বিরুদ্ধে অভিযোগগুলো ক্যাপিটাল মার্ডার অর্থাৎ একাধিক হত্যাকাণ্ডের, তাই তিনি দোষী প্রমাণিত হলে মৃত্যুদণ্ড বা আজীবন কারাদণ্ডের মুখোমুখি হতে পারেন। এখনও পর্যন্ত কোনো আনুষ্ঠানিক বিচার তারিখ ঘোষণা করা হয়নি। ট্রাভিস কাউন্টির জেলা অ্যাটর্নির দপ্তর জানিয়েছে, সব পক্ষ ভবিষ্যৎ আদালত বৈঠকে বিচার শুরুর তারিখ নিয়ে আলোচনা করবে। আইন বিশেষজ্ঞদের ধারণা, প্রি-ট্রায়াল আবেদন, প্রমাণ যাচাই, সাক্ষ্য-প্রস্তুতি এবং স্যানিটি শুনানির কারণে পুরো প্রক্রিয়া আরও দীর্ঘ হতে পারে।

শেয়ার করুন