নিউইয়র্ক সিটির মেয়র নির্বাচিত জোহরান মামদানি ম্যানহাটনে গভর্নর ক্যাথি হোচুলের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাতে মিলিত হন
নিউইয়র্ক সিটিতে নতুন মেয়র হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণের আগেই সম্ভাব্য ফেডারেল পদক্ষেপের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছেন মেয়র-ইলেক্ট জোহরান মামদানি ও গভর্নর ক্যাথি হোচুল। আসন্ন ১ জানুয়ারি মামদানি শপথ গ্রহণের আগেই প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প নিউইয়র্কের প্রতি শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিতে পারেন-এমন আশঙ্কা থেকেই গত ১৩ নভেম্বর দুজনের মধ্যে বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। গত কয়েক মাস ধরে ট্রাম্প বারবার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন যে, মেয়র হিসেবে মামদানি নির্বাচিত হলে তিনি নিউইয়র্কের ফেডারেল তহবিল কমিয়ে দেবেন, শহরে আইসিইয়ের উপস্থিতি বাড়াবেন অথবা ন্যাশনাল গার্ড মোতায়েন করতে পারেন। মামদানিকে তিনি প্রকাশ্যে ‘কমিউনিস্ট’ আখ্যা দিয়ে বলেছেন, তার বামঘেঁষা নীতি নিউইয়র্ককে ঝুঁকির মুখে ফেলবে।
ট্রাম্প গত অক্টোবর মাসে হোয়াইট হাউসে এক বক্তব্যে বলেন, আমি নিউইয়র্কে বেশি অর্থ পাঠাবো না। আমরা আমাদের মহান শহরকে নষ্ট হতে দেব না। ৩০ দিনের মধ্যে আমরা অপরাধ কমিয়ে শহরকে পরিষ্কার করবো। তিনি আরো দাবি করেন যে, ওয়াশিংটন ডিসিতে একই কাজ ১২ দিনে করা হয়েছে এবং শিকাগোতেও অগ্রগতি চলছে। মামদানির ৪ নভেম্বরের নির্বাচনী জয়ের পর ট্রাম্প কিছুটা নরম অবস্থান নিলেও তার বক্তব্যে অনিশ্চয়তার ছায়া রয়ে গেছে। গত সপ্তাহে তিনি বলেন, আশা করি নিউইয়র্কের জন্য বিষয়টা ভালোই হবে, তাকে (মামদানি) একটু সাহায্যও করতে পারি।
গভর্নর হোচুল বৃহস্পতিবার ম্যানহাটনে তার মধ্যমণি অফিসে মামদানিকে আমন্ত্রণ জানান। সেখানে তারা ফেডারেল সরকার নিউইয়র্কে আইসিই বা ন্যাশনাল গার্ড পাঠাতে পারে-এমন সম্ভাবনা নিয়ে আলোচনা করেন। মামদানির ট্রানজিশন টিম জানায়, গভর্নর ও মেয়র-ইলেক্ট একমত হয়েছেন যে নিউইয়র্ক ইতিমধ্যেই নিরাপদ। ফেডারেল বাহিনী পাঠানো জননিরাপত্তা বাড়াবে না। বরং অপরাধ কমার ধারাবাহিকতা ও সাবওয়ে নিরাপত্তায় রাজ্যের বিনিয়োগই বেশি কার্যকর।
নিউইয়র্কে গত কয়েক মাস ধরে আইসিই অভিবাসী ধরপাকড় চালাচ্ছে। তবে শিকাগোর মতো তীব্র মুখোমুখি পরিস্থিতি এখানে এখনো দেখা যায়নি। বৈঠকটি প্রায় এক ঘণ্টা স্থায়ী হয়। প্রস্তুতি পরিকল্পনার নির্দিষ্ট বিবরণ প্রকাশ করা হয়নি। তবে পলিটিকোর এক প্রতিবেদন বলছে, ট্রাম্প প্রশাসনের সম্ভাব্য পদক্ষেপের নানা পরিস্থিতি বিবেচনায় গত কয়েক সপ্তাহ ধরে হোচুল ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দ ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে বৈঠক করে আসছেন। ব্যবসায়িক নেতাদের দিয়ে ট্রাম্পকে বার্তা দেওয়া-নিউইয়র্কে সৈন্য মোতায়েন করা হবে সম্পদের অপচয়-এটিও এসব বৈঠকের মূল উদ্দেশ্যের একটি।
এদিকে, মামদানি ও হোচুলের বৈঠকে শিশু যত্ন, শহরের বাজেট ইস্যুসহ অন্যান্য নগর-গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে আলোচনা করা হয়। মামদানি জানান, তিনি আগামী ১ জানুয়ারি দায়িত্ব গ্রহণের আগে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের সঙ্গে কথা বলার পরিকল্পনা করছেন। বিদায়ী মেয়র এরিক অ্যাডামসের বিপরীতে, ট্রাম্প প্রশাসনের ‘ম্যাস ডিপোর্টেশন’ নীতির বিরুদ্ধে তিনি লড়াই চালিয়ে যাওয়ার অঙ্গীকার করেছেন।