০৫ ডিসেম্বর ২০২৫, শুক্রবার, ১০:১০:৪৮ অপরাহ্ন
শিরোনাম :
স্ন্যাপ সুবিধা ফিরলেও কঠোর নিয়মে বিপাকে ৪০ মিলিয়ন মানুষ মসজিদে ধারাবাহিক হামলা, উদ্বেগে মুসলিম সম্প্রদায় ফেব্রুয়ারি ১ থেকে রিয়েল আইডি ছাড়া বিমানযাত্রায় লাগবে ৪৫ ডলারের ফি নিউইয়র্কে শীতকালে ঘর গরম রাখার জন্য এনার্জি সহায়তার আবেদন শুরু দারিদ্র্যপীড়িত দেশ থেকে যুক্তরাষ্ট্রে অভিবাসন স্থায়ীভাবে বন্ধের আহ্বান ট্রাম্পের ১৯ দেশের গ্রিনকার্ডধারীদের পুনর্মূল্যায়ন শুরু তারেকের ‘ফেরা ইস্যু’ ঘোলা পানিতে মাছ শিকারে চেষ্টা বিডিআর বিদ্রোহের নৃশংস হত্যাকাণ্ডের কমিশন রিপোর্টে তোলপাড় রাষ্ট্রীয় সর্বোচ্চ মর্যাদায় খালেদা জিয়া ১১ মাসে ২৮ জন বাংলাদেশী ভারতীয় সীমান্ত রক্ষীবাহিনী কর্তৃক নিহত হয়েছে


আলোচনা সভায় নেতৃবৃন্দ
সর্বক্ষেত্রে নারীরা বেশি অবহেলিত
নিজস্ব প্রতিনিধি
  • আপডেট করা হয়েছে : ২৫-১০-২০২৩
সর্বক্ষেত্রে নারীরা বেশি অবহেলিত আলোচনা সভায় মঞ্চে নেতৃবৃন্দ


এএলআরডি’র নির্বাহী পরিচালক শামসুল হুদা বলেছেন, খাদ্য উৎপাদনে পুরুষের থেকে নারীর অংশগ্রহণ এখন অনেক অনেক বৃদ্ধি পেয়েছে। কিন্তু, নারীরা সরকারি সেবা সেভাবে পাচ্ছে না। তারা শ্রম দেয় বেশি কিন্তু মজুরি পান অনেক কম। নারীরা সব থেকে বেশি অবহেলিত। ‘‘ক্ষুধা ও দারিদ্র মুক্ত বাংলাদেশ বিনির্মাণে গ্রামীণ নারী কৃষকের ক্ষমতায়ন অপরিহার্য’’ শীর্ষক তৃণমূলের সংলাপের সভাপতির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। 

শামসুল হুদা আরো বলেন, ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচিত নারী সদস্যদেরকে অর্থ ও অন্যান্য সহায়তা বরাদ্দের ক্ষেত্রে, ক্ষমতা প্রদানের ক্ষেত্রে পুরুষের সমান অধিকার দিতে হবে। সংবিধান অনুযায়ী জনগণকে সর্বাধিক ক্ষমতা দিতে হবে। তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেন, আমরা একটি সুস্থ, সুন্দর বৈষম্য ও সহিংসতা মুক্ত এবং সাম্প্রদায়িকতা মুক্ত সমাজ দেখতে চাই।  

টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রার অন্যতম লক্ষ্য ক্ষুধামুক্তি অর্জনে গ্রামীণ নারী ভূমি কৃষি অধিকার নিশ্চিত করার দাবিতে এএলআরডি রোববার তৃণমূল নারীদের সংলাপের আয়োজন করে। সংলাপে দেশের ২০ টি জেলা থেকে নারী কৃষক, জেলেসহ বিভিন্ন বেসরকারি সংস্থার প্রধানগণ উপস্থিত ছিলেন।

এ সংলাপের স্বাগত বক্তব্যে এএলআরডি’র কর্মসূচি সমন্বয়কারি মং সিং বলেন, বৈষম্যমূলক রাষ্ট্র ও সমাজ ব্যবস্থার কারণে কৃষিব্যবস্থা ধীরে ধীরে নারীর হাত থেকে পুরুষের হাতে চলে গেছে। গুরুত্বপূর্ণ এ উৎপাদনশীল খাতে গ্রামীণ নারীর অবদান অ-আনুষ্ঠানিক অর্থনীতির অংশ। ফলে, নারীর শ্রম অধিকার ও সামাজিক নিরাপত্তা নেই বললেই চলে।

মূল উপস্থাপনায় সানজিদা খান রিপা, প্রোগ্রাম ম্যানেজার এএলআরডি বলেন, টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রার অন্যতম প্রধান লক্ষ্য ক্ষুধামুক্তি। ২০৩০ সালের মধ্যে ক্ষুধামুক্ত বাংলাদেশ গড়ে তুলতে হলে নারী কৃষকদের কৃষি বিষয়ক সরকারি পৃষ্ঠপোষতা বৃদ্ধির পাশাপাশি খাসজমি বিতরণ করা প্রয়োজন। এই লক্ষ্যমাত্রার ২.৩ সূচকে খাদ্য উৎপাদনকারী, বিশেষ করে নারী, আদিবাসী জনগোষ্ঠী, পারিবারিক কৃষক, মৎস্যচাষী সকলের উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধিতে ভূমিসহ অন্যান্য উৎপাদনশীল সম্পদ ও উপকরণ, বিপণন ইত্যাদি ক্ষেত্রে সমান সুযোগ নিশ্চিত করা। কিন্তু, বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থার পরিসংখ্যানে জানতে পারি বাংলাদেশে অপুষ্টির কারণে ১২ থেকে ৪৯ বছর বয়সী নারীদের ১২ শতাংশের বয়স এবং উচ্চতার তুলনায় ওজন অনেক কম। পাঁচ বছরের কম বয়সী ৪.৪ মিলিয়ন শিশু খর্বাকায়। এবং ৫২.৭ মিলিয়ন মানুষ বিভিন্নমাত্রার খাদ্য নিরাপত্তাহীনতার সম্মুখীন। এছাড়াও, কৃষি উৎপাদনশীলতার সাথে যুক্ত নারীরা পুরুষের সমান সুযোগ সুবিধা পাচ্ছে না। গ্রামীণ নারীদের ১৩ ভাগেরও কম নারীর নিজের নামে বৈধ ভূমি আছে।

চলনবিল অঞ্চল থেকে আগত প্রতিনিধি মঞ্জুর হোসেন বলেন, সরকার ভূমিহীনদের জন্য ঘর তৈরি করে দিচ্ছেন কিন্তু সেখানে নারীর সংখ্যা পুরুষের তুলনায় খুবই কম। ইউনিয়ন পর্যায়ে নারী সদস্যদের জন্য বরাদ্দ পুরুষ সদস্যদের তুলনায় খুবই নিতান্ত। অথচ নারীরা ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য নির্বাচিত হওয়ার জন্য তিনটি এলাকা নিয়ে তাদের নির্বাচন করতে হয়।

রাঙ্গামাটির নারী কৃষক নিহারিকা চাকমা বলেন, “মেয়ে বলে আমাদের দাম দেয় না মানুষ। আমরা তো অনেক বেশি কাজ করি। ভোর বেলায় পাহাড়ে চলে যাই, পুরুষদের আগেই যাই। কিন্তু মজুরি একরকম পাই না। দূর্গম পাহাড়ে ফসল উৎপাদন করে আবার তা বয়ে আনি আমরা বাজারে। আমাদের সরকারি কোন সাহায্য দেয়া হয় না।”

মধুপুর থেকে আগত নারী কৃষক ত্রিফলা চিরান বলেন, “আমরা সারাদিন ঘরে এবং মাঠে দুই জায়গাতেই কাজ করি। কিন্তু, আমরা গারো নারীরা কৃষি কার্ড এবং প্রশিক্ষণ খুবই কম পেয়েছি।”

মুক্তাগাছা ময়মনসিংহ থেকে নারী কৃষক মমতাজ বেগম বলেন, “আমরা বিভিন্ন সবজি চাষ করি। আমার স্বামী নেই। তাই আমিই আমার সবজি বাজারে নিয়ে যাই বিক্রি করতে। বাজারে দেখি পুরুষরা বেশি দামে বিক্রি করে। আমাকে দাম দিতে চায় না। কম টাকা দেয়।”

শেয়ার করুন