০৫ ডিসেম্বর ২০২৫, শুক্রবার, ০২:১৯:২০ অপরাহ্ন
শিরোনাম :
স্ন্যাপ সুবিধা ফিরলেও কঠোর নিয়মে বিপাকে ৪০ মিলিয়ন মানুষ মসজিদে ধারাবাহিক হামলা, উদ্বেগে মুসলিম সম্প্রদায় ফেব্রুয়ারি ১ থেকে রিয়েল আইডি ছাড়া বিমানযাত্রায় লাগবে ৪৫ ডলারের ফি নিউইয়র্কে শীতকালে ঘর গরম রাখার জন্য এনার্জি সহায়তার আবেদন শুরু দারিদ্র্যপীড়িত দেশ থেকে যুক্তরাষ্ট্রে অভিবাসন স্থায়ীভাবে বন্ধের আহ্বান ট্রাম্পের ১৯ দেশের গ্রিনকার্ডধারীদের পুনর্মূল্যায়ন শুরু তারেকের ‘ফেরা ইস্যু’ ঘোলা পানিতে মাছ শিকারে চেষ্টা বিডিআর বিদ্রোহের নৃশংস হত্যাকাণ্ডের কমিশন রিপোর্টে তোলপাড় রাষ্ট্রীয় সর্বোচ্চ মর্যাদায় খালেদা জিয়া ১১ মাসে ২৮ জন বাংলাদেশী ভারতীয় সীমান্ত রক্ষীবাহিনী কর্তৃক নিহত হয়েছে


স্মৃতি কথায় শরীফ নুরুল আম্বিয়া
বাবা বললেন শহরে তুলকালাম আর তুমি ঘরেই বসে আছো?
সৈয়দ মাহবুব মোর্শেদ
  • আপডেট করা হয়েছে : ২১-০২-২০২৪
বাবা বললেন শহরে তুলকালাম আর তুমি ঘরেই বসে আছো? শরীফ নুরুল আম্বিয়া


আমি তখন বাসায় বসা। বাবা অফিস থেকে ঘরে ঢুকেই বললো আমাকে লক্ষ্য করে বললো পুরো শহরে তুলকালাম কান্ড। দেশে এতো কিছু হয়ে যাচ্ছে, আর তুমি এখানে ঘরেই বসে আছো? বাবার এমন কথায় আমার মনে একটা বড়ো ধরণের দাগ কাটলো..।
কলাগুলো জানা গেলো বাংলাদেশ জাসদ সভাপতি শরীফ নুরুল আম্বিয়া কাছে। রাজনীতে আসার নেপথ্যে বলতে গিয়ে তিনি এসব কথা বলেছেন। তার এই ঘটনাটি নিয়েছেন দেশ পত্রিকার বিশেষ প্রতিনিধি সৈয়দ মাহবুব মোর্শেদ।  


বর্তমানে বাংলাদেশ জাসদ’সভাপতি শরীফ নুরুল আম্বিয়া নড়াইল জেলার ভবানীপুরের এক বনেদি পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। পিতা শরীফ আবুল বাশার, মাতা মনোয়ারা বেগম।  ১৯৬৪ সনে তেজগাঁও টেকনিক্যাল হাইস্কুল (বর্তমানে, সাইন্স কলেজ) থেকে এসএসসি ও ১৯৬৬ সনে ঢাকা কলেজ থেকে এইচএসসি পাশ করে ১৯৭০ সনে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় থেকে কেমিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিংএ বিএসসি ডিগ্রী লাভ করেন।


১৯৬৮ সনে পূর্ব পাকিস্তান ছাত্রলীগ এ যোগ দেন তিনি পাকিস্তানের ফৌজি শাসক জেনারেল আয়ুব খানের উচ্ছেদ এবং বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবকে আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা থেকে মুক্ত করার লক্ষ নিয়ে কেন্দ্রীয় ছাত্রসংগ্রাম পরিষদের ১১ দফা আন্দোলনে বলিষ্ঠ ভূমিকা পালন করেন। তার ভুমিকার জন্য অল্প সময়ের ব্যবধানে ছাত্রলীগের স্বাধীনতাপš’ী নেতৃত্বের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে সক্ষম হন এবং স্বাধীন বাংলা বিপ্লবী পরিষদ তথা নিউক্লিয়াস এর কর্মকান্ডে যুক্ত হয়ে পড়েন। ১৯৭০ সনে তিনি ছাত্রলীগ কেন্দ্রীয় সংসদের সহসভাপতি নির্বাচিত হন। ১৯৭০ এর জাতীয় নির্বাচন, ’৭১ এর অসহযোগ আন্দোলনে ছাত্রনেতা হিসেবে বলিষ্ঠ ভূমিকা পালন করেন। ২০১৮ সনের নির্বাচনের পরে সরকার অসহনীয় দূর্নীতিতে জড়িয়ে পড়ে এবং অসা¤প্রদায়িক গণতান্ত্রিক ধারার রাজনীতিতে ১৪ দল অকার্যকর হয়ে পড়লে বাংলাদেশ জাসদ ১৪ দল থেকে বেরিয়ে আসে এবং বর্তমানে প্রগতিশীল ও গণতান্ত্রিক জোট গঠনের প্রচেষ্টারত রয়েছেন। রাজনীতি ছাড়াও বিশ্বশান্তি পরিষদ সহ বেশ কয়েকটি সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনে শরীফ নুরুল আম্বিয়া জড়িত রয়েছেন। তিনি ভারত, নেপাল থাইল্যান্ড চীন জাপান বেলজিয়াম যুক্তরাজ্য যুক্তরাষ্ট্র প্রভৃতি দেশ সফর করেছেন। মননশীল রাজনীতিবিদ শরীফ নুরুল আম্বিয়া অত্যন্ত সৎ ও সাদাসিধে জীবনযাপন পছন্দ করেন। শত ব্যস্ততার মধ্যেও বইপড়া, গান শোনা, খেলা দেখে থাকেন। তিনি ধর্মীয় স¤প্রীতি ও অসা¤প্রদায়িক রাজনীতিতে বিশ্বাসী।  
শরীফ নুরুল আম্বিয়ার রাজনীতিতে আসার নেপথ্যে


‘ছাত্র জীবনে বিশেষ করে ঢাকা কলেজে পড়ার সময়ে কানে সব সময় ভাসতো বিভিন্ন ধরণের রাজনৈতিক বক্তব্য দাবি-দাওয়ার কথা। আমোদের আশে পাশে সর্বস্তরের জনগণই বলতো পশ্চিম পাকিস্তান আমাদের শোষণ করছে। বঞ্চনার কথা শুনতাম। বলা হতো পাকিস্তানিরা আমাদের অনেক কিছু থেকে বঞ্চিত করছে। একটা বঞ্চনার অনুভব ছিল। আমরা এই পূর্ব পাকিস্তান থেকে কাগজ তৈরি করি তা আবার করাচিতে যায়। সেখান থেকে আবার ফেরত হয়ে এখানে আসে। আমরা যারা লেখা পড়া করছিলাম তারাতো সব সময় আতঙ্কে কারো কারো মনে হতাশা লাগতো আমরা শিক্ষা জীবন শেষ করে চাকরি পাবো কি-না? সব-ইতো পাকিস্তানিরা কন্ট্রোল করে। ঠিক এমন হতাশার মূহুর্তে বঙ্গবন্ধু যখন ৬দফা দেন। তখন এই ছয় দফা আমাদের আকৃষ্ট করে। আর আমাদের পরিবারেরতো একটা রাজনতিক আবহ ছিলোই। মনে পড়ে দিনটি ছিল ৭ জুন।


হরতাল ডাকা হয়। আমি তখন বাসায় বসা। বাবা অফিস থেকে ঘরে ঢুকেই বললো আমাকে লক্ষ্য করে বললো পুরো শহরে তুলকালাম কান্ড। দেশে এতো কিছু হয়ে যাচ্ছে, আর তুমি এখানে ঘরেই বসে আছো? বাবার এমন কথায় আমার মনে একটা বড়ো ধরণের দাগ কাটলো..। আমি জামা কাপড় পড়ে আর কেডসটা পরে হাটতে হাটতে ঢাকা কলেজের দিকে চলে আসলাম। সময়টা ঠিক বিকাল চারটা হবে। হরতালসহ যা কর্মসূচি তা-তো দেখা যাচ্ছে পালন হয়েই গেছে। যাক ঢাকা কলেজের সামনে গিয়ে দেখি মানুষের জটলা, সমস্ত ঢাকা শহরের মানুষ কিন্ত রাস্তায়। আমি ৭ জুনের হরতালের কথা বলছি। আমিতো ছাত্র লীগ করি নাই। মনে মনে একটা কথা হরতাল কোনো হলো? হরতাল কি? কিন্তু ছয় দফা তো সবারই। আমার আব্বার বাবা অথ্যাৎ আমার দাদার নাম ছিল ওলিউর রহমান মুন্সি। ওলিয়ার রহমান মুন্সি বেংগল লেজিস্লেটিভ এসেম্বলির সদস্য ছিলেন। 


উনি প্রথমে কংগ্রেসের সংগে সম্পৃক্ত ছিলেন, পরে শেরে বাংলার প্রজা কৃষক পার্টিতে যোগ দেন।  উনি আমার আব্বার মামা ছিলেন।(উল্লেখ্য, তখন করদাতারা ভোট দিত) সেই সুবাদে পরিবার রাজনৈতিক ভাবে সচেতন ছিল। তবে বাবা সরাসরি রাজনীতি করতেন না। শুনিনি তেমন। আমার আব্বা মরহুম আবুল বাশার কখনো ছাত্রলীগ করতেন না। করার সুযোগ ছিল না। উনি সম্ভবত ১৯৩৭ সনে বিএ পাশ করেছেন কোলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে। মীর্জাপুরে ছিল আমার দাদির বাড়ি। আসলে তদানিন্তন ব্রিটিশ ভারতের এখানে যে রাজনৈতিক পরিমন্ডল ছিল তাতে আমাদের পরিবার সম্পৃক্ত ছিল। সে-টাই সম্ভবত আমার মনে কাজ করেছে। সেদিক থেকে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে আমার সায় ছিল। আমি ছাত্র লীগে যোগ দিয়েছি । ’

শেয়ার করুন