০৬ ডিসেম্বর ২০২৫, শনিবার, ০১:০১:৫১ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম :
স্ন্যাপ সুবিধা ফিরলেও কঠোর নিয়মে বিপাকে ৪০ মিলিয়ন মানুষ মসজিদে ধারাবাহিক হামলা, উদ্বেগে মুসলিম সম্প্রদায় ফেব্রুয়ারি ১ থেকে রিয়েল আইডি ছাড়া বিমানযাত্রায় লাগবে ৪৫ ডলারের ফি নিউইয়র্কে শীতকালে ঘর গরম রাখার জন্য এনার্জি সহায়তার আবেদন শুরু দারিদ্র্যপীড়িত দেশ থেকে যুক্তরাষ্ট্রে অভিবাসন স্থায়ীভাবে বন্ধের আহ্বান ট্রাম্পের ১৯ দেশের গ্রিনকার্ডধারীদের পুনর্মূল্যায়ন শুরু তারেকের ‘ফেরা ইস্যু’ ঘোলা পানিতে মাছ শিকারে চেষ্টা বিডিআর বিদ্রোহের নৃশংস হত্যাকাণ্ডের কমিশন রিপোর্টে তোলপাড় রাষ্ট্রীয় সর্বোচ্চ মর্যাদায় খালেদা জিয়া ১১ মাসে ২৮ জন বাংলাদেশী ভারতীয় সীমান্ত রক্ষীবাহিনী কর্তৃক নিহত হয়েছে


ক্ষমতাসীন সরকার দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির হোতা : সিপিবি
বিশেষ প্রতিনিধি
  • আপডেট করা হয়েছে : ২৮-০২-২০২৪
ক্ষমতাসীন সরকার দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির হোতা : সিপিবি সিপিবির বিক্ষোভ সমাবেশ


বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি) কেন্দ্রীয় কমিটি ঘোষিত দেশব্যাপী বিক্ষোভ কর্মসূচিতে নেতৃবৃন্দ বলেছেন, ক্ষমতাসীন সরকার দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির হোতা। অন্যদিকে ধর্ষণের মতো লোমহর্ষক ঘটনায় প্রতিবাদকারীদের দমন করতে সিদ্ধহস্ত। 

ঢাকায় অনুষ্ঠিত জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে গত ২৭ ফেব্রুয়ারি মঙ্গলবার বিক্ষোভ সমাবেশে সিপিবি নেতারা এসব কথা বলেন। সিপিবি কেন্দ্রীয় কমিটি ভোটাধিকার ও গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা, দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ, দুর্নীতি বন্ধ এবং জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে ধর্ষণবিরোধী দেয়ালচিত্র আঁকার দায়ে ছাত্রনেতা অর্মত্য রায় ও ঋদ্ধ অনিন্দ্য গাঙ্গুলীর বহিষ্কারাদেশ ও মামলা প্রত্যাহারের দাবিতে দেশব্যাপী মঙ্গলবার বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করছে। তারই অংশ হিসেবে আজ ঢাকায় এ বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। 

জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে সিপিবি ঢাকা মহানগর দক্ষিণ জেলা কমিটির সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য আক্তার হোসেনের সভাপতিত্বে ও সাইফুল ইসলাম সমীরের পরিচালনায় অনুষ্ঠিত সমাবেশে বক্তব্য রাখেন জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক জলি তালুকদার, সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য মঞ্জুর মঈন, জেলা কমিটির সদস্য আব্দুল কুদ্দুস।

জলি তালুকদার বলেন, ক্ষমতাসীন সরকার দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির হোতা একচেটিয়া গোষ্ঠী, ব্যাংক ডাকাত লুটেরা মাফিয়া ও বিদেশে অর্থপাচারকারীদের পৃষ্ঠপোষক। অন্যদিকে ধর্ষণের মতো লোমহর্ষক ঘটনায় প্রতিবাদকারীদের দমন করতে সিদ্ধহস্ত। তিনি বলেন, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন রাষ্ট্রের ক্ষমতা কেন্দ্রের চরিত্রকে অনুকরণ করে ধর্ষণবিরোধী আন্দোলন দমনের হাতিয়ার হিসেবে বঙ্গবন্ধুকে ব্যবহার করছে। ক্ষমতাসীন দলের ছাত্র সংগঠনের নেতৃবৃন্দ লোমহর্ষক ধর্ষণকাণ্ড ঘটিয়েছে। ধর্ষকদের মদদ দেয়ার অভিযোগ খোদ বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের বিরুদ্ধে। এমনকি শিক্ষাঙ্গনকে নিরাপদ রাখার দায়িত্ব অবহেলার দায়ে প্রশাসনকে অভিযুক্ত করছে শিক্ষার্থীরা। এমন পরিস্থিতিতে বঙ্গবন্ধু উন্মাদনা তৈরির অপচেষ্টা চালিয়ে আন্দোলনের নেতৃবৃন্দকে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিষ্কার ও কারান্তরীণ করার নীলনকশা এঁকেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। তিনি আরও বলেন, লুটপাট-হত্যা-ধর্ষণ ইত্যাদি অপকর্মের ঢাল হিসেবে কখনো উন্নয়ন, কখনো বঙ্গবন্ধু আবার কখনো মুক্তিযুদ্ধের কথা বলা হচ্ছে। ক্ষমতাসীনরা এভাবে নিজেদের অপরাধ আড়াল করার অপরাজনীতি চালিয়ে যাচ্ছে। 

সমাবেশে দলের অন্য নেতারা বলেন, রমজান মাসকে সামনে রেখে এখন থেকেই মজুতদার ও বাজার সিন্ডিকেটের হোতারা জিনিসপত্রের মূল্যবৃদ্ধি শুরু করেছে। সরকার এ বিষয়ে নীরব দর্শকের ভূমিকা পালন করছে। কার্যত দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি ও বাজার সিন্ডিকেটের মাধ্যমে সাধারণ মানুষের জীবনযাত্রা অচল করে দেয়া হয়েছে। সরকার মূল্যবৃদ্ধির পৃষ্ঠপোষক হিসেবে ভূমিকা পালন করছে। 

বক্তারা আরও বলেন, ক্ষমতাসীন সরকারের প্রত্যক্ষ মদদে চরম বাজার নৈরাজ্য, সীমাহীন লুটপাট-অর্থপাচারের মধ্য দিয়ে দেশের অর্থনীতিকে ধ্বংস করা হয়েছে। যার ফলশ্রুতিতে নিত্যপণ্য থেকে শুরু করে জীবনযাপনে প্রয়োজনীয় কোনো কিছুই আর সাধারণ মানুষের ক্রয়সীমার নাগালে নেই। জরুরি ওষুধ, শিশুখাদ্য, ভোজ্য তেল, আমিষ এমনকি অতি সাধারণ শাক-সবজির বাজার পরিকল্পিতভাবে গুটিকয়েক গোষ্ঠীর হাতে জিম্মি করা হয়েছে।

নেতৃবৃন্দ বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংক স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান হিসেবে সমস্ত চরিত্র হারিয়ে লুটেরাদের অর্থের যোগানদাতায় পরিণত হয়েছে। একদিকে ক্ষমতাসীনরা ব্যাংক ও আর্থিক খাতকে শূন্য করেছে, অন্যদিকে কেন্দ্রীয় ব্যাংক নতুন করে অবাধ লুটপাটের ক্ষেত্র তৈরি করতে টাকা ছাপিয়ে মূল্যস্ফীতি বাড়িয়ে দিচ্ছে। সমাবেশ থেকে ভোটাধিকার পুনরুদ্ধার, গণতন্ত্র ও ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার জন্য গণআন্দোলন গড়ে তোলার আহ্বান এবং জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সাথে সংহতি জ্ঞাপন করা হয়। একইসঙ্গে দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি, ব্যাংক ডাকাতি, অর্থপাচারের হোতাদের গণআদালতে বিচারের সম্মুখীন করার ঘোষণা দেন বক্তারা। 

গণতান্ত্রিক বাম ঐক্যের সমাবেশ

এদিকে দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি নিয়ন্ত্রণ, বিদেশে পাচারকৃত অর্থ ফেরত এনে কলকারখানা গড়ে তোলা ও অর্থ পাচারকারীদের শাস্তি নিশ্চিত করার দাবিতে গণতান্ত্রিক বাম ঐক্যের সমাবেশ। গণতান্ত্রিক বাম ঐক্যের উদ্যোগে ২৭ ফেব্রুয়ারি মঙ্গলবার, সকালে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগতি নিয়ন্ত্রণ, বিদেশে পাচারকৃত অর্থ ফেরত এনে কলকারখানা গড়ে তোলা ও অর্থ পাচারকারীদের শাস্তি নিশ্চিত করার দাবিতে সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। গণতান্ত্রিক বাম ঐক্যের সমন্বয়ক ও সোস্যাল ডেমোক্রেটিক পার্টি (এসডিপি)’র আহ্বায়ক আবুল কালাম আজাদের সভাপতিত্বে সমাবেশে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশের সাম্যবাদী দল (এম-এল) এর সাধারণ সম্পাদক হারুন চৌধুরী, প্রগতিশীল গণতান্ত্রিক দল (পিডিপি)’র মহাসচিব হারুন আল রশীদ খাঁন, সমাজতান্ত্রিক মজদুর পার্টির সাধারণ সম্পাদক সামছুল আলম প্রমুখ।

নেতৃবৃন্দ বলেন, নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের ঊর্ধ্বগতির কারণে কৃষক-শ্রমিক-মেহনতি মানুষের নাভিশ্বাস উঠেছে। এর মধ্যেই সরকার বিদ্যুৎ, গ্যাস ও জ্বালানি তেলের দাম বাড়ানোর পায়তারা করছে। ভোটাধিকার হরণকারী এ সরকার ডামি ভোটের মাধ্যমে রাষ্ট্রীয় বাহিনী ও ব্যবসায়ী সিন্ডিকেটের সহযোগিতায় ক্ষমতা ধরে রেখেছে। তাই তারা জনগণ নয়, অসাধু ব্যবসায়ীদের স্বার্থ-রক্ষা করছে। নেতৃবৃন্দ বলেন, দেশের অর্থ বিদেশে পাচারের ফলে দেশের শিল্পকারখানা স্থাপন হচ্ছে না। ফলে বেকারত্ব বৃদ্ধি পাচ্ছে। অবিলম্বে পাচারকৃত অর্থ দেশে এনে পাচারকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির আওতায় আনার দাবি জানান।

শেয়ার করুন