০৬ জুলাই ২০১২, শনিবার, ০১:৪২:৫৪ অপরাহ্ন


দেশকে অ্যাডভোকেট সুব্রত চৌধুরী
এদের মন-মানসিকতা দিন দিন খারাপের দিকে যাচ্ছে
সৈয়দ মাহবুব মোর্শেদ
  • আপডেট করা হয়েছে : ১৫-০৫-২০২৪
এদের মন-মানসিকতা দিন দিন খারাপের দিকে যাচ্ছে অ্যাডভোকেট সুব্রত চৌধুরী


গণফোরামের একটি অংশের সাধারণ সম্পাদক সিনিয়র অ্যাডভোকেট সুব্রত চৌধুরী বলেছেন, উপজেলা নির্বাচনে অংশ নেবে তাহলে তো সেই অতীতের মতোই হতো। আওয়ামী লীগ ২০১৮ সালের মতোই মরিয়া হয়ে সব কেড়ে নিতো। এদের মন মানসিকতা দিন দিন আরো খারাপের দিকে যাচ্ছে। 

সম্প্রতি অনুষ্ঠিত ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের প্রথম ধাপে ১৩৯ উপজেলায় শান্তি পূর্ণভাবে ভোগ্রহণ শেষ হয়েছে। দু-একটি জায়গায় অপ্রীতিকর ঘটনার খবর পাওয়া গেলেও কোথাও বড় ধরনের সংঘর্ষ ঘটেনি। এর মধ্যে খাগড়াছড়ির লক্ষ্মীছড়ি উপজেলার ফলাফল স্থগিত করা হয়েছে। বাকি ১৩৮টি উপজেলায় বেসরকারিভাবে ফলাফল ঘোষণা করা হয়েছে। বেসরকারি ফলাফলে নির্বাচিত ব্যক্তিদের প্রায় সবাই আওয়ামী লীগের সাবেক ও বর্তমান নেতা। ১৩৮টি উপজেলার মধ্যে ১১৮টিতেই আওয়ামী লীগের নেতারা জয়ী হয়েছেন। বাকি ২০টি উপজেলার মধ্যে আটটিতে বিএনপির বহিষ্কৃত নেতারা, দুটিতে জাতীয় পার্টি (জাপা), দুটিতে জনসংহতি সমিতি ও বাকিগুলোতে নির্দলীয় প্রার্থীরা জয় পেয়েছেন। তবে এই নির্বাচনের আগে আমেরিকা থেকে প্রকাশিত দেশ পত্রিকায় নিজের মতামতকে তুল ধরতে গিয়ে গণফোরামের একটি অংশের সাধারণ সম্পাদক সিনিয়র অ্যাডভোকেট সুব্রত চৌধুরীর সাথে কথা বলেছিলেন আমেরিকা থেকে প্রকাশিত দেশ পত্রিকার বিশেষ প্রতিনিধির সাথে । এতে তিনি বলেছিলেন সব নির্বাচনতো বর্জন করাতো ঠিক হবে না। এতে করে নেতা কর্মীদের পাশাপাশি মানুষের মধ্যে দলের দূরত্ব বেড়ে যাবে। এই সরকারের অধীনে জাতীয় নির্বাচন করা হযনি ঠিক আছে। কিন্ত এগুলিতো স্থানীয় সরকার নির্বাচন। তা-ই এই নির্বাচনে অংশ নেয়া গেলে দলের জন্য ভালো হবে আর-কি। অপজিশন রাজনীতির জন্য এটা পজিটিভ হবে। --ঠিক আছে..। তার এমসন বক্তব্য বা নিজস্ব মতামতটি রাজনৈতিক মহলে বিশেষ করে বিএনপি’র কাছে বেশ উদ্বেগজনক হয়ে দেখা দেয়। দেখা দেয় নানান ধরনের প্রশ্ন। বর্তমানে সে-ই উপজেলা নির্বাচনের একটি পর্বতো শেষ হয়েছে। ফলাফলও ঘোষিত হয়ে গেছো। এখন দেখা যাক গণফোরামের একটি অংশের সাধারণ সম্পাদক সিনিয়র অ্যাডভোকেট সুব্রত চৌধুরী দেশ পত্রিকাকে কি বলেন। সে-ই হিসাবেই তার এই তাৎক্ষণিক মন্তব্যভিত্তিক সাক্ষাৎকারে সিনিয়র অ্যাডভোকেট সুব্রত চৌধুরী এসব কথা বলেন। এটি নিয়েছেন দেশ পত্রিকার বিশেষ প্রতিনিধি সৈয়দ মাহবুব মোর্শেদ। 

দেশ: উপজেলা নির্বাচনের একটি ধাপতো শেষ হয়ে গেলো। এই নির্বাচনের আগে এনিয়ে একটি আপনার ব্যক্তিগত অভিমত পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছিল। এতে আপনিতো বলেছিলেন সব নির্বাচনতো বর্জন করা তো ঠিক হবে না। ধারণা করেছিলেন আগে যেমন ভোট ধরে বেধে নিয়ে যেতে পারতো সেটা হয়তো উপজেলা নির্বাচনের ক্ষেত্রে হবে না। বলেছিলেন নির্বাচনের পরিবেশটা একটু পাল্টে গেছে। এর আগে প্রথমেতো সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে অপজিশন একের পর এক জয়লাভ করেছিলো না? পরে তো আর দাঁড়াতেই দেয়নি। সব আসন নিয়ে চলে গেলো..এইবার আর পারবে না। কিন্তু এই উপজেলা নির্বাচনের এক ধাপ শেষ হওয়ার পর আপনার মত কি?

অ্যাডভোকেট সুব্রত চৌধুরী : না, না (উদ্বেগের সাথে মাথা নেড়ে)। আমি যেটা ভাবছিলাম যে এরা উপজেলা নির্বাচন নিয়ে এত্তো বড়ো ঝুঁকি নেবে না ক্ষমতাসীনরা। মানে কারচুপি বা জোর জবরদস্তি যা বলেন আর কি তা করবে না। পরে দেখলাম বিরোধী দল যদি বলতো যে তারা নির্বাচনে অংশ নেবে, মানে উপজেলা নির্বাচনে অংশ নেবে তাহলে তো সেই অতীতের মতোই হতো। আওয়ামী লীগ ২০১৮ সালের মতোই মরিয়া হয়ে সব কেড়ে নিতো। 

দেশ: তাহলে কি বলেন আওয়ামী লীগের কোনো পরিবর্তন হয়নি?

অ্যাডভোকেট সুব্রত চৌধুরী : না না মোটেই না। এদের মন মানসিকতা দিন দিন আরো খারাপের দিকে যাচ্ছে। 

দেশ: এর কারণ কি? আওয়ামী লীগের মতো একটি ঐতিহ্যবাহী গণতান্ত্রিক দল কেনো এগুলো করছে? 

অ্যাডভোকেট সুব্রত চৌধুরী : ক্ষমতা হারানোর ভয়ে..এরা ভীত-সন্ত্রস্ত হয়ে গেছে। তাদের ধারণা ক্ষমতা না থাকা মানে আওয়ামী লীগ নিশ্চিহ্ন হয়ে যাওয়া। 

দেশ: দলটি মনে করে তারা জনগণের কাছে অনেক জনপ্রিয়। তাদের জনপ্রিয়তার কাছে বিএনপি বা অন্য কোনো বিরোধী দল কিছুই না। তার উপরে আওয়ামী লীগের নেতারা মনে করেন তারা দেশের অনেক উন্নয়ন করেছে। সে-ই উন্নয়ন ধরে রাখাতেই তাদের ক্ষমতায় থাকতে হবেই..বিষয়টি কি এরকম? মানে দেশ বাঁচাতেই আওয়ামী লীগ...

অ্যাডভোকেট সুব্রত চৌধুরী : না না এগুলো কিছুতেই কাজ হবে না। কারণ উনারা মানুষেন মন জয় করতে পারেনি। 

দেশ: আপনি কি মনে করে আপনারাসহ যারা বিরোধী দলের আছেন তারা জনগণের মন জয় করেছেন?

অ্যাডভোকেট সুব্রত চৌধুরী : আরে জয় তো করেছেই। তা না হলে একটা নিরব বিপ্লব কি করে হয়ে যায়। সরকারের অদূরর্শিতার কারণেই তো এখন জনগণ মুখ ঘুরিয়ে ফেলছে তাদের প্রতি..কি আর বলবো। 

দেশ: আপনি একজন রাজনীতিবিদ..দেশের রাজনীতিতে এধরনের অবস্থা কি ভালো?

অ্যাডভোকেট সুব্রত চৌধুরী : আরে না ভালো আর কি হলো? পুরো দেশটাকেই তো দ্বিখণ্ডিত করে ফেলেছে। আমরা চেয়েছিলাম জাতীয়ভাবে ঐক্যবদ্ধ হই। সেটা আর হবে না ..আর কি..সেটাকে আরো বাড়াচ্ছে আরকি..। 

দেশ: না আমি বলতে চাইছি যে এই যে ভোট বিমুখ হয়ে যাচ্ছে একটা জাতি এটা কি ভালো? 

অ্যাডভোকেট সুব্রত চৌধুরী : না না এটাতো অবশ্যই খারাপ। আর একারণে এখানে নানান ধরনের শক্তির উত্থান হবে। অপশক্তি বলি.. মৌলবাদি জঙ্গীবাদি শক্তি মাথাচাড়া দিয়ে উঠবে। 

শেয়ার করুন