০৫ ডিসেম্বর ২০২৫, শুক্রবার, ১১:০১:১৭ অপরাহ্ন
শিরোনাম :
স্ন্যাপ সুবিধা ফিরলেও কঠোর নিয়মে বিপাকে ৪০ মিলিয়ন মানুষ মসজিদে ধারাবাহিক হামলা, উদ্বেগে মুসলিম সম্প্রদায় ফেব্রুয়ারি ১ থেকে রিয়েল আইডি ছাড়া বিমানযাত্রায় লাগবে ৪৫ ডলারের ফি নিউইয়র্কে শীতকালে ঘর গরম রাখার জন্য এনার্জি সহায়তার আবেদন শুরু দারিদ্র্যপীড়িত দেশ থেকে যুক্তরাষ্ট্রে অভিবাসন স্থায়ীভাবে বন্ধের আহ্বান ট্রাম্পের ১৯ দেশের গ্রিনকার্ডধারীদের পুনর্মূল্যায়ন শুরু তারেকের ‘ফেরা ইস্যু’ ঘোলা পানিতে মাছ শিকারে চেষ্টা বিডিআর বিদ্রোহের নৃশংস হত্যাকাণ্ডের কমিশন রিপোর্টে তোলপাড় রাষ্ট্রীয় সর্বোচ্চ মর্যাদায় খালেদা জিয়া ১১ মাসে ২৮ জন বাংলাদেশী ভারতীয় সীমান্ত রক্ষীবাহিনী কর্তৃক নিহত হয়েছে


জাতীয় সংলাপে পীর সাহেব চরমোনাই
প্রধানমন্ত্রীর ভারত সফরে যেসব চুক্তি হয়েছে তাতে দেশের স্বার্থ নেই
নিজস্ব প্রতিনিধি
  • আপডেট করা হয়েছে : ০৪-০৭-২০২৪
প্রধানমন্ত্রীর ভারত সফরে যেসব চুক্তি হয়েছে তাতে দেশের স্বার্থ নেই


প্রধানমন্ত্রীর সম্প্রতি ভারত সফরে যেসব চুক্তি হয়েছে তাতে দেশের স্বার্থ নেই বলে মন্তব্য করেছেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমীর মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করীম পীর সাহেব চরমোনাই। তিনি বলেন, বর্তমান সরকারের সৃষ্ট নানাবিধ সংকটের মধ্যে প্রধানমন্ত্রীর সর্বশেষ ভারত সফর সংকটকে আরও ঘণীভূত করেছে। যে চুক্তিগুলো করা হয়েছে, তাতে কোনো আওয়ামী লীগারও বাংলাদেশের স্বার্থ দেখাতে পারছে না। পীর সাহেব চরমোনাই বলেন, সংকটের মূলে ডামি নির্বাচনের মাধ্যমে নির্বাচিত ডামি সরকার এবং সরকারকে সহযোগিতাকারী ভারত।


সকল দেশপ্রেমিক ঈমানদার জনতা ঐক্যবদ্ধভাবে আন্দোলন গড়ে তুললে সরকার টিকে থাকতে পারবে না। তিনি বলেন, এত দল, এত জনগণ থাকা সত্বেও আন্দোলন সফল হচ্ছে না। দেশবিরোধী সমঝোতা স্মারক চুক্তি বাংলাদেশের জনগণের কোন কল্যাণ নেই। স্ব-ঘোষিত প্রধানমন্ত্রী নিজেদের কল্যাণের জন্য সব করছে। তিনি বলেন, নিজেদের ব্যক্তি স্বার্থ ভুলে দেশ, ইসলাম ও মানবতার কল্যাণে ঐক্যবদ্ধ হলে এ আন্দোলনকে রুখে দেয়ার সাধ্য কারো নেই।

বুধবার সকালে রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবের আব্দুস সালাম হলে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের উদ্যোগে আয়োজিত জাতীয় সংকট নিরসনে জাতীয় সংলাপে রাজনৈতিক দল, শি¶াবিদ, সাংবাদিক ও বিভিন্ন পেশাজীবী প্রতিনিধিদের সাথে জাতীয় সংলাপে লিখিত বক্তব্যে দলের আমীর মুফতী সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করীম পীর সাহেব চরমোনাই এসব কথা বলেন।  দলের যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা গাজী আতাউর রহমানের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত সংলাপে বক্তব্য রাখেন, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান, ইসলামী আন্দোলনের সিনিয়র নায়েবে আমীর মুফতী সৈয়দ মুহাম্মদ ফয়জুল করীম শায়খে চরমোনাই, মহাসচিব অধ্যক্ষ হাফেজ মাওলানা ইউনুছ আহমাদ, প্রেসিডিয়াম সদস্য অধ্যাপক আশরাফ আলী আকন, জাতীয় পার্টি (কাজী জাফর) চেয়ারম্যান মোস্তফা জামাল হায়দার, নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক কমরেড সাইফুল হক, গণফোরাম সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট সুব্রত চৌধুরী, বিশিষ্ট রাজনৈতিক বিশ্লেষক কর্ণেল অব. আব্দুল হক,বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট জয়নাল আবেদীন, খেলাফত মজলিসের নায়েবে আমীর মাওলানা আহমদ আলী কাসেমী, বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলনের নায়েবে আমীর মাওলানা মুজিবুর রহমান হামিদী, গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নূর, এবি পার্টির মহাসচিব মজিবুর রহমান মঞ্জু, গণঅধিকার পরিষদের যগ্ম আহ্বায়ক কর্ণেল অব. মিয়া মশিউজ্জামান, বাংলাদেশ মুসলিম লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য আতিকুল ইসলাম,  বাংলাদেশ নেজামে ইসলাম পার্টির মহাসচিব মুফতী আব্দুল কাইয়ূম নেজামী,  ঢাবি’র প্রফেসর আরিফুল ইসলাম অপু, ডেমোক্রেটিক পিপলস পার্টির সেক্রেটারী জেনারেল প্রফেসর হারুনুর রশিদ, ঢাবি’ আইন বিভাগের প্রফেসর নকীব নাসরুল্লাহ, সম্মিলিত ওলামা মাশায়েখ পরিষদের সভাপতি ড. মাওলানা খলিলুর রহমান মাদানী, ডেইলি নিউ নেশনের সাবেক সম্পাদক প্রবীণ সাংবাদিক মোস্তফা কামাল, ইসলামিক বুদ্ধিজীবী ফ্রন্টের আহ্বায়ক ইঞ্জিনিয়ার আব্দুল হান্নান আল-হাদী। ইসলামী আন্দোলনের শীর্ষ নেতৃবৃন্দের উপস্থিত ছিলেন খন্দকার গোলাম মাওলা, মুহাম্মদ আমিনুল ইসলাম, ইঞ্জিনিয়ার আশরাফুল আলম, মাওলানা শেখ ফজলে বারী মাসউদ, মাওলানা ইমতিয়াজ আলম, কেএম আতিকুর রহমান, আহমদ আবদুল কাইয়ূমসহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ।


চরমোনাই পীর বলেন, ভারতের সঙ্গে কানেক্টিভিটির নামে যা করা হয়েছে, তার উদ্দেশ্য ও লক্ষ্য সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রীর ভাষায় পরিস্কার হয়েছে; ‘বাজার-টাজার করতে যাওয়া ও ভারতে চিকিৎসা নিতে যাওয়া’ এর মূল লক্ষ্য। একটি স্বাধীন ও সার্বভৌম দেশের স্বকীয়তাবোধ আছে এমন কারো পক্ষে ‘বাজার-টাজার করতে যাওয়া ও চিকিৎসা নিতে যাওয়া’র জন্য অন্য দেশের সাথে চুক্তি করা সম্ভব না। কারণ, এতে যে দেশের চিকিৎসা খাত, পর্যটন খাত, অভ্যন্তরীণ ব্যবসা খাত ক্ষতিগ্রস্ত হয় তা সহজেই অনুমেয়। সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রীর এই কথার সাথে যখন প্রধানমন্ত্রী সীমানা বিহীন ইউরোপের দৃষ্টান্ত দেখান তখন সীমানা ও স্বাধীনতা নিয়ে আমরা শঙ্কিত না হয়ে পারি না।


পীর সাহেব চরমোনাই আরও বলেন, বিদ্যুৎখাতের পরিকল্পনাহীনতা, স্বেচ্ছাচারিতা, দুর্নীতি ও খামখেয়ালিপনা সর্বশেষ দেখা গেলো নেপাল থেকে বিদ্যুৎ আনার চুক্তি থেকে। ভারতের গ্রিড ব্যবহার, ভারতকে দুই ধরণের মাসুল দিয়ে আনা এই বিদ্যুৎ বিদ্যুৎ খাতকে অনিরাপদ ও ভারতনির্ভর করবে। কম দামের যুক্তি দিয়ে বিদ্যুৎ আনা হচ্ছে, অথচ সবার আপত্তি উপেক্ষা করে দেশে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপন করা হয়েছিলো। কুইক রেন্টাল বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্রের নামে যে যুক্তিতে, যেভাবে ও যে পরিমাণ ক্যাপাসিটি চার্জ দেওয়া হয় তাকে মগের মুল্লুকি ছাড়া আর কিছু বলার নাই।


পীর সাহেব চরমোনাই বলেন, এ সময়ে এসে ট্রানজিট আদতে কোনো রাজনৈতিক ইস্যুই হওয়ার কথা না। কারণ সারাবিশ্বেই উইন-উইন সিচুয়েশনে এটা হচ্ছে। কিন্তু এই সরকার ভারতকে রেল ট্রানজিট দিয়েছে নিজেদের অবৈধ ক্ষমতা টিকিয়ে রাখার পেছনে ভারতের অবদানের প্রতিদান হিসেবে। সেজন্য ট্রানজিট দেওয়ার বিনিময়ে তিনি কোনো কিছু আদায় করতে পারেননি। বরং বলতে গেলে বিনা শর্তে এমনকি প্রায় বিনা মাসুলে ট্রানজিট দেন। এ ধরণের ও চরিত্রের ট্রানজিট প্রদান আমাদেরকে ভাবিয়ে তোলে। নিজেদের সার্বভৌমত্বের ওপরে থাকা অধিকারকে প্রশ্নবিদ্ধ করে।

ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমীর বলেন, নেপাল-ভুটানের সাথে আমাদের বহুল কাঙ্খিত ট্রানজিট না পাওয়া, তিস্তা, গঙ্গার পানি নিয়ে কোনো অগ্রগতি না হওয়া, সীমান্তে মানুষ হত্যা বন্ধ না হওয়া, সেভেন সিস্টারে আমাদের বাণিজ্য সম্ভবনা নষ্ট করা এবং নিজেদের নিরাপত্তা ঝুঁকি, কৌশলগত ভূরাজনীতির নানা জটিলতা সত্যেও যেভাবে ট্রানজিট দেওয়া হয়েছে তাতে বাংলাদেশের স্বাধীন সত্তা নিয়েই প্রশ্ন উঠেছে। কারণ, ভারত সরকার আন্তর্জাতিক চুক্তির ক্ষেত্রে পশ্চিমবাংলাকেও বাংলাদেশের চেয়ে বেশি বিবেচনায় রাখে। বর্তমান সরকার স্বাধীন-স্বার্বভৌম বাংলাদেশকে ভারতের অঙ্গরাজ্য পশ্চিমবাংলার চেয়েও গুরুত্বহীন করে ফেলেছে। অথচ দেশের প্রতি দরদ থাকলে প্রধানমন্ত্রী ভারতের সঙ্গে পানি, সীমান্ত হত্যা, বাণিজ্য ঘাটতি, রোহিঙ্গা ইস্যুর মতো রাজনীতি নিরপেক্ষ ইস্যুগুলো নিয়ে বার্গেইনিং করতে পারতেন।


তিনি আরও বলেন, পানি বন্টন নিয়ে যে যৌথ কমিটি করা হয়েছে তা নিছক সস্তা ও বহুল ব্যবহৃত একটি আইওয়াশ। গঙ্গা, তিস্তা, সিলেটের উজানের নদীসহ ভারত হয়ে প্রবেশ করা সবগুলো নদী থেকে ভারত আন্তর্জাতিক রীতি-নীতি উপেক্ষা করে একতরফা পানি প্রত্যাহার করছে। ফলে দেশের উত্তরাঞ্চল মরুভূমিতে রূপ নিয়েছে। আর সিলেট অঞ্চল বন্যার নগরীতে পরিণত হয়েছে। এ বিষয়ে কার্যকর কোনো কিছু না করে যৌথ কারিগরি কমিটি করা নিম্নস্তরের তামাশা ছাড়া আর কিছু না।


তিনি বলেন, তিস্তা প্রকল্প ভারতের হাতে তুলে দেওয়ার পাঁয়তারা করা হয়েছে। যে ভারতের স্বৈরাচারী পানি নীতির কারণে আজকে তিস্তার এই অবস্থা সেই প্রকল্প ভারতের হাতে তুলে দেওয়া 'শিয়ালকে মুর্গির খামার ইজারা দেওয়া'র মতো। চতুর শিয়ালের মতো ভারতও তার অপকর্মের রাস্তা খোলা রেখেই তিস্তা প্রকল্প নির্মাণ করবে।

চরমোনাই পীর বলেন, বাংলাদেশ বরাবরই বিশ্ব মোড়লদের জিওপলিটিক্সের বাইরে নিরাপদ অবস্থান নিয়ে এসেছে। এখন ইন্দো-প্যাসিফিক ইনিশিয়েটিভে বাংলাদেশের অংশগ্রহণ দেশকে বিপদজনক জিওপলিটিক্যাল রাজনীতিতে ফেলে দিতে পারে। ভারতীয় রিজার্ভ ব্যাংক কর্তৃক নিয়ন্ত্রিত ইউপিআই চালুর মাধ্যমে দেশের ব্যাংকিং খাতের নিয়ন্ত্রণ ভারতের হাতে তুলে দেওয়ার পাঁয়তারা করা হয়েছে।


তিনি বলেন, চোরের খনি নিয়ে যাত্রা শুরু করা বাংলাদেশে দুর্নীতি সর্বদাই ইঁদুর হয়ে দেশের উন্নতি ও অগ্রগতির ক্ষতি করেছে। কিন্তু এ সরকার দুর্নীতিকে যেভাবে প্রাতিষ্ঠানিকীকরণ, রাজনীতিকীকরণ করেছে তা কল্পনাতীত। একটা জুলুমবাজ রেজিম তার রেজিম টিকিয়ে রাখার শর্তে পুলিশ প্রধান, সেনা প্রধানসহ আইনশৃংখলা বাহিনীর কর্মকর্তাদেরকে দুর্নীতি করার দায়মুক্ত সুযোগ দিয়েছে। এমন ঘটনা কোনো সভ্য রাষ্ট্রের সভ্য মানুষের পক্ষে সম্ভব না।
চরমোনাই পীর আরও বলেন, শিক্ষা সিলেবাস ও পাঠপুস্তক নিয়ে অনেক কথা আমরা বারংবার বলেছি। জাতিকে নির্লজ্জ, অদক্ষ ও ভুল ইতিহাসে দীক্ষিত করার যে ষড়যন্ত্র করা হয়েছে, শিক্ষা সিলেবাস ও পাঠ্যপুস্তকে তা শিউরে ওঠার মতো।

তিনি বলেন, দ্রব্যমূল্য নিয়ে মানুষের নাভিশ্বাস উঠেছে। অথচ সবাই জানি, এর পেছনে প্রধান কারণ সরকার দলীয়দের সিন্ডিকেট। সরকার তার মাস্তান বাহিনী পোষার জন্য সিন্ডিকেট রক্ষা করে জনতার রক্ত চুষে নিচ্ছে। ব্যাংক খাত, আর্থিক খাত ও বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ নিয়ে যে ছলচাতুরী এই সরকার করে যাচ্ছে, তা বলার ভাষা আমাদের নাই। মিথ্যাকে এভাবে সাজিয়ে-গুছিয়ে বলা যায়, তা এই সরকারকে না দেখলে বিশ্বাস করা যেতো না।


গত সংসদ নির্বাচন নিয়ে তিনি বলেন, বিগত ৩টি জাতীয় নির্বাচনে ক্ষমতাসীনরা কিভাবে জনগণের সঙ্গে প্রতারণা করেছে, রাজনীতিবিদদের সঙ্গে ধোঁকাবাজি করেছে, আমরা সবাই তা জানি। তারা দেশের নির্বাচন ব্যবস্থাকেই শুধু ধ্বংস করেনি বরং দেশের নিয়মতান্ত্রিক রাজনীতিকেই ধ্বংস করে ফেলেছে। যে কারণে দেশের জাতীয় সংসদে পরপর ৩ মেয়াদে কোনো বিরোধী দল নেই। এই নির্মম ও কঠিন বাস্তবতাকে সামনে রেখে আমাদের চুপ থাকার সুযোগ নেই। আমরা সবাই পরিস্থিতি জানি। এই সরকার ফেরাউনি স্টাইলে যে নির্যাতন নিপীড়ন করে তার শিকার আমরা কম-বেশি সবাই। তারপরেও প্রিয় স্বদেশ যখন তার স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব নিয়ে প্রশ্নের মুখে, তখন রুখে দাড়ানো আমাদের সকলের সমান দায়িত্ব। সেই দায়িত্ব পালনে কিভাবে কাজ করা যায়, কিভাবে সকলে ঐক্যবদ্ধ হয়ে দেশদ্রোহী জালিম এই স্বৈরাচারকে উৎখাত করা যায়, তা নিয়ে পরামর্শ করার জন্যই আজকের এই আয়োজন।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান বলেন, সরকার ভারতকে ট্রানজিটের নামে করিডোর দিয়ে দেশকে বিপদে ফেলে দিয়েছে। নেপাল ও ভুটানকে ট্রানজিট দিয়ে বলে সরকার যা বলছে তা ভুয়া। তিনি পীর সাহেব চরমোনাই’র জাতীয় সংলাপের আয়োজনকে প্রশংসনীয় উদ্যোগ বলে আখ্যায়িত করেন। তিনি বলেন, ভারতের সাথে অমীমাংসিত চুক্তির সমাধান না করে নতুন করে করিডোর বাংলাদেশের জন্য দুশ্চিন্তার কারণ। দেশের চিকিৎসাসেবা উন্নত না করে ভারতের সাথে ই-ভিসা চালু করে ভারতে চিকিৎসার জন্য জনগণকে উদ্ধুদ্ধকরণ দেশপ্রেমিকের পরিচয় নয়।  তিনি ভারতের সাথে দাসখতের চুক্তিগুলো জনসম্মুখে প্রকাশের দাবি জানিয়ে বলেন, এগুলো জনতার সামনে প্রকাশ করতে বাধা কোথায়?  তিনি বলেন, সরকারের নিযুক্ত সেনা প্রদান, পুলিশ প্রধান, প্রধান বিচারপতি, এনবিআরের চেয়ারম্যান সবাই দুর্নীতিবাজ। তাহলে এই সরকারও দুর্নীতিগ্রস্ত সরকার তাতে কোন সন্দেহ নেই। নজরুল ইসলাম খান আরো বলেন, সরকার এসকল দুর্নিিতবাজদের নিয়োগ দিয়েছে, এখন দুর্নীতির বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স ঘোষণা করাও সরকারের ব্যর্থতা। তিনি সরকারের বিরুদ্ধে দুর্বার আন্দোলনের কর্মসূচি নিয়ে এগিয়ে যাওয়ার জন্য পীর সাহেব চরমোনাইর প্রতি আহ্বান জানান।


ইসলামী আন্দোলনের নায়েবে আমীর মুফতী ফয়জুল করীম বলেন, ভারতের আশির্বাদপ্রাপ্ত সরকার আওয়ামী লীগ দেশবিক্রির চক্রান্ত করছে। সরকার ভারতকে ১০ বিষয়ে করিডোর দিয়ে দেশের সর্বনাশা বিপদ ডেকে আনছে। তিনি সকল দেশপ্রেমিক জনতাকে ভারতকে ট্রানজিটের নামে করিডোর দেয়ার প্রতিবাদে ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন গড়ে তোলার আহ্বান জানান।


জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান মোস্তফা জামাল হায়দার বলেন, ইসলামী আন্দোলনের আজকের আয়োজন রাজনৈতিক বিবেচনায় অনেক গুরুত্বপূর্ণ। দেশ মহাসংকটে নিপতিত। তিনি দেশ রক্ষায় পীর সাহেব চরমোনাইকে কঠোর আন্দোলনের নেতৃত্ব দেয়ার আহ্বান জানিয়ে বলেন, দেশপ্রেমিক জনতা আপনার সাথে আছে, আপনি এগিয়ে যান।


ইসলামী আন্দোলনের মহাসচিব মাওলানা ইউনুছ আহমাদ বলেন, অবৈধ সরকারের সাবেক পররাষ্ট্র মন্ত্রী আব্দুল মোমেন সাহেব বলেছিলেন, ভারত ও বাংলাদেশ স্বামী-স্ত্রীর মতো। ভারত আছো তো আমরা আছি, ভারত পাশে না  থাকলে আওয়ামী লীগ টিকতে পারতো না ইত্যাদি বক্তব্য আর বর্তমানে সরকারের কর্মকান্ড সম্পূর্ণরূপে ভারতের স্বার্থে। কাজেই এ সরকারকে ভারতের দালাল নয়, ভারতেরই সরকার বলা যায়।


কর্মসূচি : ভারতের সাথে দেশবিরোধী সকল চুক্তি বাতিল এবং চিহ্নিত দূর্নীতিবাজদের গ্রেফতার ও বিচারের দাবীতে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের উদ্যোগে আগামি ৫ জুলাই, ২০২৪ শুক্রবার, সারাদেশে জেলা ও মহানগরে বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করা হবে। ওইদিন ঢাকার বায়তুল মোকাররম মসজিদের উত্তর গেটে সংগঠনের ঢাকা জেলা দক্ষিণ বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করবে।

 

শেয়ার করুন