১৮ জুন ২০১২, মঙ্গলবার, ০৮:০০:৪৬ অপরাহ্ন


জ্যামাইকা বাংলাদেশ ফ্রেন্ডস সোসাইটি
বাংলা উৎসবে বাঙালিয়ানার জয়গান
দেশ রিপোর্ট
  • আপডেট করা হয়েছে : ১২-০৬-২০২৪
বাংলা উৎসবে বাঙালিয়ানার জয়গান বক্তব্য রাখছেন প্রধান অতিথি শাহ নেওয়াজ


জ্যামাইকা বাংলাদেশ ফ্রেন্ডস সোসাইটি। বাংলাদেশি কমিউনিটি বিনির্মাণে এই সংগঠনের ব্যাপাক ভূমিকা রয়েছে। প্রতিষ্ঠার পর থেকেই জ্যামাইকা বাংলাদেশিদের সুখ-দুঃখে সব সময় পাশে ছিল এবং আছে। এই আদর্শিক সংগঠনের আয়োজন থাকে সারা বছরই। তবে তাদের আয়োজনগুলোর মধ্যে অন্যতম হচ্ছে বৈশাখী উৎসব। এই উৎসবকে তারা বর্ণির আয়োজনে বাঙালিয়ানায় বরণ করে নেয়। এবারও তার ব্যতিক্রম ছিল না। তবে এবার বাড়তি আয়োজন ছিল। পান্তা-ইলিশ এবং র‌্যালির সঙ্গে ছিল বাংলা উৎসব। মেলা মানেই বাঙালির আমেজ, ঐতিহ্যের স্মারক এবং হৃদয়ের স্পন্দন। এবার মেলার সঙ্গে যোগ হয়েছে উৎসব। পান্তা-ইলিশ, র‌্যালি, মেলা, উৎসব এবং সাংস্কৃতিক পরিবেশনা। আরো ছিল কমিউনিটির গণ্যমান্য ব্যক্তি এবং প্রতিষ্ঠানকে সম্মাননা প্রদান। জ্যামাইকা বাংলাদেশ ফ্রেন্ডস সোসাইটির অনুষ্ঠান মানে অন্যের চেয়ে ভিন্ন কিছু। সবার বাড়তি পাওনা। কী অনুষ্ঠানে, কী অতিথেয়তা, কী পরিবেশনা-সবই থাকে চমৎকার। যেন হৃদয়ের আলতো ছোঁয়া। প্রাণের আমেজ। যোগ্য নেতৃত্ব এবং সৌহার্দ্য-সম্প্রীতি থাকলে কঠিন পাহাড়ও অতিক্রম অসম্ভব নয়। যার জ্বলন্ত উদাহরণ জ্যামাইকা বাংলাদেশ ফ্রেন্ডস সোসাইটি। তারা যেন একে অন্যের হরিহর আত্মা, হৃৎপিন্ডের স্পন্দন। যে সংগঠনের কর্মকর্তাদের মধ্যে এতো চমৎকার সম্পর্ক। তাদের অনুষ্ঠান মানুষের মন জয় করবে না, তাতো হতেই পারে না। আবহাওয়া ছিল চমৎকার, পরিবেশও ছিল চমৎকার। সবকিছুই যেন সোনায় সোহাগা। বলছিলাম জ্যামাইকা বাংলাদেশ ফ্রেন্ডস সোসাইটি আয়োজিত বাংলা উৎসবের কথা। অনুষ্ঠানটি গত ৯ জুন জ্যামাইকার ১৬৫-৬৫, ৮৪ অ্যাভিনিউয়ে অনুষ্ঠিত হয়। বাংলা উৎসবকে কেন্দ্র করে একটি আহ্বায়ক কমিটিও গঠন করা হয়। যোগ্য সভাপতি ফখরুল ইসলাম দেলোয়ার, সাধারণ সম্পাদক জে মোল্লা সানি, সঙ্গে ছিলেন ভারপ্রাপ্ত সভাপতির দায়িত্বে এ এফ মিসবাউজ্জামান, আহ্বায়ক বিলাল চৌধুরী ও সদস্য সচিব রিজু মোহাম্মদ। সব সময় সহযোগিতায় ছিলেন কার্যকরি কমিটির অন্যান্য সদস্য এবং উপদেষ্টা পরিষদের সদস্যরা। এই বাংলা উৎসবে উপস্থাপন করা হয়েছে বাংলাদেশকে। বাংলাদেশের ঐতিহ্য এবং সংস্কৃতিকে। বাংলা উৎসবে ছিল নিউইয়র্কের পুরো বাংলাদেশি কমিউনিটি। ছিলেন গণ্যমান্য ব্যক্তি, মূলধারার রাজনীতিবিদ, ব্যবসায়ী এবং সর্বস্তরের লোকজন।

তাছাড়া অনুষ্ঠানও ছিল অভূতপূর্ণ। শুরু দুপুরে জ্যামাইকার ক্যাপ্টেন টিলি পার্কে। ভারপ্রাপ্ত সভাপতি এ এফ মিসবাউজ্জমানের সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক জে মোল্লা সানির পরিচালনায় অনুষ্ঠানে অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ডেমোক্রেটিক লিডার অ্যার্ট লার্জ অ্যাটর্নি মঈন চৌধুরী, বাংলাদেশ সোসাইটির সাধারণ সম্পাদক রুহুল আমিন সিদ্দিকী। পান্তা-ইলিশের উদ্বোধন করেন অ্যাটর্নি মঈন চৌধুরী। এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন সংগঠনের নেতৃবৃন্দ ও উপদেষ্টারা। পান্তা-ইলিশ পর্বে প্রায় পাঁচ শতাধিক লোককে খাবার সরবরাহ করা হয়। পান্তা-ইলিশ শেষে র‌্যালি যোগে বাঙালি পোশাক এবং বাঙালি সাজে বাংলা উৎসবে অংশগ্রহণ করেন। বাংলা উৎসবে সভাপতিত্ব করেন সভাপতি ফখরুল ইসলাম দেলোয়ার এবং ভারপ্রাপ্ত সভাপতি এ এফ মিসবাহউজ্জামান। সাধারণ সম্পাদক জে মোল্লা সানি, আহ্বায়ক বিলাল চৌধুরী এবং সোনিয়ার পরিচালনায় বাংলা উৎসবে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন গোল্ডেন এজ হোম কেয়ারের প্রেসিডেন্ট ও সাপ্তাহিক আজকাল সম্পাদক শাহ নেওয়াজ। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন নিউইয়র্কস্থ বাংলাদেশ কনস্যুলেটের কনসাল জেনারেল মোহাম্মদ নাজমুল হুদা, বাংলাদেশ সোসাইটির সভাপতি আব্দুর রব মিয়া, সাধারণ সম্পাদক রুহুল আমিন সিদ্দিকী, কাউন্সিলম্যান জিম জিনারো, বিশিষ্ট ব্যবসায়ী তোফায়েল চৌধুরী লিটন, বিশিষ্ট ব্যবসায়ী নূরুল আজিম, বিশিষ্ট ব্যবসায়ী শাহ জে. চৌধুরী, সিপিএ জাকির চৌধুরী, খলিল বিরিয়ানির প্রেসিডেন্ট খলিলুর রহমান, ডিস্ট্রিক্ট লিডার অ্যাট লার্জ অ্যাটর্নি মঈন চৌধুরী, ইমিগ্র্যান্ট এল্ডার হোম কেয়ারের প্রেসিডেন্ট গিয়াস আহমেদ, বিশিষ্ট রিয়েলেটর আকিব হোসেন, শাহাদত বক্স, কাজী হোসেন বাবলু, বিশিষ্ট ব্যবসায়ী সাজ্জাদ হোসাইন, কাজী শাখাওয়াত হোসেন আজম, আহসান হাবিব, বীর মুক্তিযোদ্ধা এ কে এম ফজলুল হক, আমিনুর রশিদ বাবু, বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির অন্যতম সদস্য জিল্লুর রহমান জিল্লু, এবাদ চৌধুরী, বিশিষ্ট ব্যবসায়ী এম আইন খান সুলতান, বাংলাদেশ সোসাইটির সাবেক সাধারণ সম্পাদক আতাউর রহমান সেলিম, বাংলাদেশ সোসাইটির সহ-সভাপতি ফারুক চৌধুরী, সহ-সাধারণ সম্পাদক আমিনুল ইসলাম চৌধুরী, কার্যকরি সদস্য সাদী মিন্টু, সাবেক কোষাধ্যক্ষ মোহাম্মদ আলী, সংগঠনের প্রধান উপদেষ্টা এ বি এম ওসমান গনি, কমিউনিটি বোর্ড মেম্বার আহসান হাবিব, কবি হুমায়ুন কবীর ঢালি, তারিকুল ইসলাম মিঠু, ওয়ার্ল্ড হিউম্যান রাইটসের প্রেসিডেন্ট শাহ শহীদুল হক, উপদেষ্টা ডা. ওয়াজেদ এ খান, রেজাউল করিম চৌধুরী, অধ্যাপিকা হুসনে আরা বেগম, মোহাম্মদ সাদেক, ফরিদ আলম, কামরুজ্জামান কামরুল প্রমুখ।

অনুষ্ঠানে কমিউনিটির উন্নয়নে বেশ কয়েকজনকে ক্রেস্ট প্রদান করা হয়। যার মধ্যে অন্যতম শাহ জে চৌধুরী, এ কে এম ফজলুল হক, বিশিষ্ট ব্যবসায়ী বিলাল চৌধুরী, শো টাইমের আলমগীর খান আলম, মোহাম্মদ সাদেক, রিলায়েবল হোম কেয়ার।

অনুষ্ঠানের সাংস্কৃতিক পর্বে সংগীত পরিবেশন করেন বাংলাদেশের নতুন প্রজন্মের ক্রেস্ট মিলা, বাংলাদেশের জনপ্রিয় চিত্রনায়িকা মৌসুমী, চন্দন চৌধুরী, রানো নেওয়াজ, শাহ মাহবুব, আমানত হোসেন আমান, মোস্তফা অনিক রাজ। এছাড়াও নৃত্য পরিবেশন করে নৃত্যাঞ্জলি। শিল্পীদের পরিবেশনা এবং কয়েক হাজার মানুষের উপস্থিতিতে যারা ব্যবসা দিয়েছেন তারাও চুটিয়ে ব্যবসা করেছেন। ব্যতিক্রমী ছিল এই মেলা রাত প্রায় ১০ পর্যন্ত চলে। কেনাকাটা, আনন্দ উৎসব এবং উচ্ছ্বাস প্রকাশ করে তৃপ্তি ঢেকুর তুলতে তুলতে সবাই বাড়ি ফিরেছেন। জয়তু জ্যামাইকায় বাংলাদেশ ফ্রেন্ডস সোসাইটি। অসাধারণ অনুষ্ঠান আয়োজনের জন্য। তবে সিকিউরিটির বাড়াবাড়ি অনেকের কাছে বিরক্তির কারণ হয়েছে। আগামীতে এই ধরনের অনুষ্ঠানে সিকিউরিটি না রাখলে ভালো হয়। অর্থ দিয়ে বেয়াদব আনার কোনো প্রয়োজন নেই। তাকে সুন্দর এবং পরিচ্ছন্ন অনুষ্ঠানের অঙ্গহানি হয়। দৃষ্টিকটু লেগেছে দুই সভাপতির উপস্থিতি, মাইক নিয়ে টানাটানি, কর্মকর্তাদের পঙ্গপালের মত স্টেজে উঠা ও নামা। কারো কারো স্টাচু অব লির্বাটির মত দাঁড়িয়ে থাকা, আহবায়ক ও সদস্য সচিবকে মঞ্চে না দেখা।

শেয়ার করুন