নিউইয়র্কের টাইমস স্কয়ারে ১৪৩২ বাংলা বর্ষবরণের ঘোষণা দিয়েছে এনআরবি ওয়ার্ল্ড ওয়াইড। গত ২২ ফেব্রুয়ারি সন্ধ্যায় জ্যাকসন হাইটসের জুইশ সেন্টারে এবারের আয়োজনের উদ্বোধন ঘোষণা করেন প্রথিতযশা শিল্পী রথীন্দ্রনাথ রায়। ২০২৫-এর ১২ এপ্রিল টাইমস স্কয়ার এবং ১৩ এপ্রিল জ্যাকসন হাইটসের ডাইভারসিটি প্লাজায় দুদিনের আয়োজনে বাংলা নতুন বছরকে বরণ করা হবে। এনআরবি ওয়ার্ল্ড ওয়াইডের প্রধান বিশ্বজিত সাহার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত বাংলা বর্ষবরণ ঘোষণা অনুষ্ঠানে স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের কণ্ঠযোদ্ধা রথীন্দ্রনাথ রায়কে আহ্বায়ক এবং অভিনেত্রী লুৎফুন্নাহার লতা এবং নৃত্যশিল্পী লায়লা হাসানকে শুভেচ্ছা দূত করা হয়। এরপর রথীন্দ্রনাথ রায়ের নেতৃত্বে তিনটি দেশাত্মবোধক গান পারিবেশনের মাধ্যমে অনুষ্ঠানের সমাপ্তি ঘোষণা করা হয়।
এর আগে ২২ জানুয়ারি নিউইয়র্ক স্টেটের সর্বোচ্চ আইনপ্রণয়নকারী সংস্থা স্টেট সিনেট সর্বসম্মত সিদ্ধান্তে পহেলা বৈশাখকে এই অঙ্গরাজ্যের বাংলা নববর্ষ হিসেবে স্বীকৃতি প্রদান করে। নিউইয়র্ক অঙ্গরাজ্যের সাংস্কৃতিক বৈচিত্র্যের স্বীকৃতি হিসেবে ও এই রাজ্যে বসবাসরত বিভিন্ন সম্প্রদায়ের মধ্যে সম্প্রীতি দৃঢ় করার লক্ষ্যেই এই সিদ্ধান্ত গৃহীত হলো। পহেলা বৈশাখ বাঙালির জীবনে অতি গুরুত্বপূর্ণ সে কথা উল্লেখ করে সিদ্ধান্তটিতে বলা হয়, প্রতি বছরই বিপুল সমারোহে এই দিনটি উদ্যাপিত হয়ে থাকে। ২০২২ সাল থেকে দিবসটি নিউইয়র্কের টাইমস স্কয়ারে আনুষ্ঠানিকভাবে উদযাপিত হয়ে আসছে। এতে উল্লেখ করা হয়, প্রবাসে বাংলা নববর্ষ উদ্যাপনে ও বাংলা ভাষা ও সংস্কৃতির প্রসারে নিউইয়র্কের মুক্তধারা ফাউন্ডেশনের গুরুত্বপূর্ণ অবদান রয়েছে।
সিদ্ধান্তে বলা হয়, নিউইয়র্ক স্টেট বিশ্বব্যাপী বাংলা ভাষাভাষী মানুষের গৌরবময় সাফল্যের, বিশেষত এই রাজ্যে বসবাসরত বাঙালিদের অব্যাহত অবদানের স্বীকৃতি জানিয়ে ১৪ এপ্রিল পহেলা বৈশাখকে এই রাজ্যে বাংলা নববর্ষ হিসেবে ঘোষণার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
এই সিদ্ধান্তে নিউইয়র্ক স্টেট সিনেটর আমেরিকায় বিশেষ অবদানের জন্য শিকাগো টাওয়ারখ্যাত প্রকৌশলী এফ আর খান, লিভিং দ্য ওয়ার্ল্ড বিহাইন্ড খ্যাত রুমানা আনম, লেখক ঝুম্পা লাহিড়ী, অমিতাভ ঘোষ, ইকবাল কাদির, ইউটিউবের কো ফাউন্ডার জাওয়েদ করিম, খান একাডেমির ফাউন্ডার সালমান খান, ওমর ইশরাকসহ কৃতী বাঙালিদের নাম বিশেষভাবে উল্লেখ করা হয়।
মুক্তধারা ফাউন্ডেশনের ফাউন্ডার ও সিইও বিশ্বজিত সাহার উদ্যোগে সিনেটর লুইস সুপেরভাদা সিনেটে প্রস্তাবনাটি তুলে ধরেন। গত ২২ জানুয়ারি এটি গৃহীত হয়। বিশ্বজিত সাহার সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, বাংলাদেশ ও পশ্চিমবঙ্গের বাইরে যে বিশ্ববাঙালি রয়েছে এই স্বীকৃতি সবাইকে উজ্জীবিত ও গৌরবান্বিত করবে। উল্লেখ্য, এনআরবি ওয়ার্ল্ড ওয়াইডের উদ্যোগে গত ২০২৩ সাল থেকে টাইমস স্কয়ারে বিশ্ববাঙালিরা বাংলা বর্ষবরণ করে আসছে।
বাংলা নববর্ষের ইতিহাস উল্লেখ করে এই সিদ্ধান্তে বলা হয়, ভারতের মুঘল সাম্রাজ্যে পহেলা বৈশাখ উদ্যাপনের সূচনা। বর্তমানে বাংলাদেশ ছাড়াও এশিয়ার বিভিন্না দেশে, যেমন লাওস, ভিয়েতনাম, কম্বোডিয়া, থাইল্যান্ডসহ ভারতের বিভিন্ন অঞ্চলে একই সময়ে নববর্ষ উদ্যাপিত হয়ে থাকে। বাংলা ভাষায় কথা বলেন এমন অভিবাসীর কথা উল্লেখ করে এতে বলা হয়, বাংলাদেশ ও পশ্চিম বাংলা থেকে আগত বিপুলসংখ্যক অভিবাসী এই রাজ্যে নানাভাবে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখে যাচ্ছেন।