২০২৪-এ রাটগার্স বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামি কেন্দ্রে ভাঙচুর করার জন্য নিউজার্সির নর্থ প্লেন ফিল্ডের বাসিন্দা জ্যাকব বিচারকে ফেডারেল হেট ক্রাইমের অভিযোগে দোষী সাব্যস্ত হয়ে ছয় মাসের কারাদণ্ড ও এক বছরের প্রবিশন দেওয়া হয়েছে। ২০২৪ সালের ঈদুল ফিতরের দিন রাতের সময় জ্যাকব ইসলামিক সেন্টারে প্রবেশ করে ধর্মীয় সম্পত্তি ধ্বংস করেছিলেন। জ্যাকব বিচারের শাস্তি যুক্তরাষ্ট্রের নিউজার্সি ডিস্ট্রিক্ট কোর্টের জজ সুসান ডি. উইগেনটন এই রায় প্রদান করেন। জ্যাকবের সঙ্গে রাটগার্স বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে কোনো সম্পর্কিত ছিলেন না।
মুসলিম বিদ্বেশের কারণে তিনি ২০২৪ সালের ১০ এপ্রিল ঈদুল ফিতরের আগে রাত ২:৪০টার দিকে সেন্টারে ভাঙচুর করেন। তিনি সেন্টারের ধর্মীয় শিল্পকর্ম, যেমন তুরবা প্রার্থনা পাথর, যেগুলি মুসলিমরা প্রার্থনা করার সময় ব্যবহার করেন এবং কুরআন শরীফের পবিত্র ভাষায় লেখা অন্যান্য সামগ্রী নষ্ট করেন। এছাড়াও তিনি একটি ফিলিস্তিনি পতাকা এবং দানবাক্স চুরি করে নেন। এই ঘটনায় মোট ক্ষতির পরিমাণ আনুমানিক ৪০ হাজার ডলার হিসেবে নির্ধারিত হয়েছে। ভিডিও নজরদারি এবং সেল সাইট ডেটা থেকে জানা গেছে যে জ্যাকব সেন্টারের কাছাকাছি এলাকায় ছিল এবং পরে দানবাক্সটি একটি পার্কে পাওয়া যায়। তিনি সেই সঙ্গে একটি ফিলিস্তিনি পতাকা এবং সেন্টারের দানবাক্সও চুরি করেছিলেন। এই আক্রমণের কারণে মোট ক্ষতির পরিমাণ আনুমানিক ৪০ হাজার ডলার ধরা হয়। এ ঘটনার পর জ্যাকব ফেডারেল কর্তৃপক্ষের কাছে স্বীকার করেছিলেন যে তিনি সেন্টারের কাছাকাছি ছিলেন, তবে ভাঙচুরের কথা অস্বীকার করেছিলেন। তিনি প্রথমে ধর্মীয় প্র্যাকটিসে বাধা দেওয়া এবং ফেডারেল কর্তৃপক্ষকে মিথ্যা তথ্য দেওয়ার অভিযোগে অভিযুক্ত হন।
কেয়ার-নিউজার্সির নির্বাহী পরিচালক সেলাদিন মাকসুত একটি বিবৃতিতে বলেছেন, যদিও এই শাস্তি কিছুটা দায়বদ্ধতা আনে, এটি মনে রাখা গুরুত্বপূর্ণ যে এই আক্রমণের প্রভাব শুধু সম্পত্তির শারীরিক ক্ষতির চেয়েও অনেক বৃহত্তর। ঘৃণার এমন কাজের ফলে যে ভয় এবং ট্রমার সৃষ্টি হয়, তা সহজে পরিমাপ করা যায় না এবং আমাদের সম্প্রদায়ের নিরাপত্তার অনুভূতিতে যে ক্ষতি হয়েছে, তা একদিনে ঠিক করা সম্ভব নয়। তবে আমরা বিচার প্রক্রিয়া থেকে যে পদক্ষেপগুলো নেওয়া হয়েছে তাতে উৎসাহিত এবং আশা করি এই মামলা আমাদের মনে করিয়ে দেবে যে, আমাদের সম্প্রদায়গুলোকে সব ধরনের ঘৃণা ও সহিংসতার বিরুদ্ধে সতর্ক থাকতে হবে। আমরা আইনপ্রয়োগকারী সংস্থা এবং প্রসিকিউটরদের তাদের কার্যকলাপের জন্য দায়বদ্ধতা নিশ্চিত করার জন্য তাদের প্রচেষ্টাকে সাধুবাদ জানাই। শেষ পর্যন্ত এটি শুধু একটি নির্দিষ্ট অপরাধের জন্য বিচার চাওয়া নয়, বরং একটি স্পষ্ট বার্তা প্রেরণ করা যে আমাদের সম্মিলিত মূল্যবোধ, যেমন শ্রদ্ধা, সহনশীলতা এবং অন্তর্ভুক্তি, সর্বদা ঘৃণা এবং বিভাজনের চেয়ে বড় হবে।
জ্যাকবের বিরুদ্ধে রায় ঘৃণামূলক অপরাধের বিরুদ্ধে আইনপ্রণালি ও ন্যায়ের একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। ২০২৪ সালের ঈদুল ফিতরের রাতে রাটগার্স বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামি কেন্দ্রে ভাঙচুরের ঘটনায় তাকে ছয় মাসের কারাদণ্ড ও এক বছরের প্রবিশন দেওয়া হয়েছে, যা ধর্মীয় সম্পত্তি ধ্বংস এবং মুসলিম সম্প্রদায়ের প্রতি ঘৃণামূলক আচরণের বিরুদ্ধে কঠোর প্রতিক্রিয়া। বিচারক সুসান ডি. উইগেনটন এই রায় প্রদান করে, যা শুধু অপরাধীকে শাস্তি দিয়েছে, বরং একটি গুরুত্বপূর্ণ বার্তা পাঠিয়েছে যে, ঘৃণা ও সহিংসতা কখনো সহ্য করা হবে না।