৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫, শুক্রবার, ০৭:৩৫:০৮ পূর্বাহ্ন


সিদ্ধেশ্বরী বালক উচ্চ বিদ্যালয়ের সাবেক ছাত্রদের পুনর্মিলনী
দেশ রিপোর্ট
  • আপডেট করা হয়েছে : ০৯-০৮-২০২৩
সিদ্ধেশ্বরী বালক উচ্চ বিদ্যালয়ের সাবেক ছাত্রদের পুনর্মিলনী পুনর্মিলনীতে অংশগ্রহণকারীরা


গত ২৯ জুলাই নিউইয়র্কের হিলসাইড এভিনিউ’র একটি রেস্টুরেন্টে এই প্রথমবারের মতো ’ফেলে আসা দিনগুলি ডাকে পিছনে’ শীর্ষক ঢাকার ঐতিহ্যবাহী সিদ্ধেশ্বরী বালক উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রাক্তন ছাত্রদের এক পুনর্মিলনী উৎসব অনুষ্ঠিত হলো। নানা ব্যাচের নানা বয়সের সাবেক ছাত্রদের সক্রিয় অংশগ্রহণে মুখর হয়ে উঠেছিল এই প্রাণের মেলা। উপস্থিত শিক্ষার্থীদের মধ্যে সবচেয়ে প্রবীণ ১৯৬৫ (ম্যাট্রিক) ব্যাচের ডাক্তার শামশুদ্দৌলা এবং সর্বকনিষ্ঠ ব্যাচ হিসেবে উপস্থিত ছিল ১৯৮৪ সালের এসএসসি পরীক্ষায় অবতীর্ণ শিক্ষার্থীরা।

পপ সম্রাট বীর মুক্তিযোদ্ধা আজম খান ছিলেন এই স্কুলের শিক্ষার্থী। আমাদের মুক্তির সংগ্রাম ও মহান মুক্তিযুদ্ধে এই স্কুলের ছাত্র শিক্ষকদের রয়েছে গৌরবোজ্জ্বল ভূমিকা। লেখাপড়ার পাশাপাশি নানান খেলাধুলা, ফুটবল, দাবা, ক্রিকেট, শরীর চর্চা, এবং স্কাউটিং-এও উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রয়েছে সিদ্ধেশ্বরী বালক উচ্চ বিদ্যালয়ের। 

১৯৭৪ ব্যাচের শিক্ষার্থী আশরাফুল হাসান বুলবুল চমৎকার উপস্থাপনার মাধ্যমে শুরু হয় অনুষ্ঠান। সন্ধ্যা ছয়টা থেকে রাত প্রায় বারোটা পর্যন্ত চলমান এই উৎসব শুরু হয় পবিত্র কোরআন থেকে তেলাওয়াত ও গীতা পাঠের মাধ্যমে। এরপর উপস্থিত সবাই ’আমার সোনার বাংলা আমি তোমায় ভালোবাসি’- জাতীয় সংগীতের সঙ্গে কণ্ঠ মেলান। এই দূর প্রবাসে, স্বদেশের মাটি থেকে বহুদূরে- এই সংগীতের মূচ্ছর্ণা আবেগ আপ্লুত করে তোলে উপস্থিত সকলকে। অনুষ্ঠানের আহ্বায়ক বর্ণনা করেন এই পুনর্মিলনী অনুষ্ঠান আয়োজনের প্রস্তুতিমূলক কর্মকান্ড এবং বাস্তবায়নের কথা। 

১৯৮৪ ব্যাচের শিক্ষার্থী তৌহীদ রেজা নুরের উপস্থাপনায় অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণকারী সকলের উপস্থিতি স্মৃতিময় করে রাখতে বিভিন্ন ব্যাচের শিক্ষার্থীদের ফটোসেশন শেষে কেক কাটা হয়। এত দিন পরে নানা জনের সাথে দেখা হওয়ায় মিলনায়তনে এক নষ্টালজিক আবহ তৈরি হয়।

তৌহীদ রেজা নূরের চমৎকার সঞ্চালনায় একে একে বিভিন্ন ব্যাচের প্রতিনিধিরা স্কুলকে ঘিরে তাঁদের স্মৃতিচারণ এবং স্কুলের ভবিষ্যত নিয়ে ভাবনা শেয়ার করেন। সবাই নিমগ্ন হয় পুরানো সেই দিনের কথায়। স্মৃতিচারণের এক ফাঁকে চা-চক্রের বিরতি দেয়া হলে কানেক্টিকাট থেকে আসা ১৯৮১ ব্যাচের মাহবুব আলম নাজমীর (জুবায়ের) ভরাট কন্ঠে নানা ধরনের গান পরিবেশন করেন।

স্মৃতিচারণ করেন সর্বজনাব ডাক্তার শামশুদ্দৌলা, শামীম রেজা নূর, কামাল আহমেদ মুক্তা, আবুল ফারুক, আলমাসুর রহমান, সেলিম রেজা নূর, ঢাকা থেকে আগত ইঞ্জিনিয়ার মাহমুদুল হাসান, কাশেম চৌধুরী, জাইদুর রহমান, আতাহিয়া ইসলাম কাইয়ুম, মোহাম্মদ আতিকুর রহমান লাকী, মোঃ আফসার হোসেন মুন্না, মোহাম্মদ আলম হ্যাপী, সুদীপ কুমার দাস, ইমতিয়াজ চৌধুরী, সাঈদ প্রমুখ। যুগ্ম আহবায়ক শাকিল খান এবং মোঃ জালালউদ্দীন আহমেদ সোহেলের তত্ত্বাবধানে নৈশভোজ পরিবেশিত হয়। নৈশ ভোজের পরেও অনুষ্ঠান এগিয়ে চলে স্মৃতিচারণ, গান, কবিতা আবৃত্তিসহ বহুদিন পরে দেখা হওয়া সিনিয়র-জুনিয়রদের একান্ত আলাপচারিতার মধ্য দিয়ে।

সবশেষে মনোজ্ঞ, উপভোগ্য এই প্রাণের মেলার আহ্বায়ক মোহাম্মদ আহমেদ স্বপন সবাইকে উপস্থিত হয়ে এই পূণর্মিলনী উৎসবকে স্বার্থক করে তুলবার জন্য আন্তরিক ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন এবং এ বছরই একটি বনভোজন আয়োজনের প্রস্তাব করেন। এখন থেকে প্রতিবছর এ ধরনের উৎসব আয়োজন অব্যাহত রাখার আশাবাদ ব্যক্ত করে অনুষ্ঠানের সমাপ্তি ঘোষণা করেন তিনি।

শেয়ার করুন