২ মে মিজোরামের আইজাওয়ালের লেংপুই বিমানবন্দরে দুই মার্কিন নাগরিককে আটক করা হয়। গত ৩ মে তাদের দিল্লিতে ফেরত পাঠানো হয়েছে। ৩ মে দ্য হিন্দুকে একজন ঊর্ধ্বতন সরকারি কর্মকর্তা বলেন, বাওম সম্প্রদায়ের শরণার্থী শিবির পরিদর্শন করতে তারা দু’জন মিজোরামে এসেছিলেন। গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর কাছে তথ্য ছিল যে, পর্যটন ভিসায় ভারতে থাকা দুই বাংলাদেশি বংশোদ্ভূতসহ চারজন মার্কিন নাগরিক ২ মে আইজলে পৌঁছাবেন। সংস্থাগুলো সন্দেহ করে যে, বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত মার্কিন নাগরিকরা চট্টগ্রামে কুকি-চিন ন্যাশনাল ফ্রন্টের সূচনাকালে এর গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলেন। একজন ঊর্ধ্বতন সরকারি কর্মকর্তা জানিয়েছেন, ২০২২ সাল থেকে বাংলাদেশের পার্বত্য চট্টগ্রাম এলাকা থেকে ভারতে পালিয়ে আসা বাওম সম্প্রদায়ের বেশ কয়েকজন সদস্য মিজোরামে আশ্রয় নিয়েছেন। বিদ্রোহী গোষ্ঠী কুকি-চিন ন্যাশনাল আর্মি (কেএনএ)-এর বিরুদ্ধে বাংলাদেশি সেনাবাহিনীর সামরিক অভিযানের পর তারা আশ্রয় নিতে শুরু করে। আটক হওয়া মার্কিন নাগরিকরা (নাম গোপন রাখা হয়েছে) টিয়ার ফান্ডের সঙ্গে যুক্ত বলে জানা গেছে। এটি এমন একটি সংস্থা যা ৫০টিরও বেশি দেশের স্থানীয় গির্জা এবং খ্রিস্টান সংগঠনগুলোর সঙ্গে কাজ করে। চিন, কুকি-জো এবং বাওমরা জাতিগতভাবে মিজোদের সঙ্গে সম্পর্কিত। ওই কর্মকর্তা বলেন, ‘ওই মার্কিন নাগরিকদের কারওরই রাজ্যে প্রবেশের জন্য প্রটেক্টেড এরিয়া পারমিট ছিল না। প্রতিবেশী দেশগুলো থেকে অনুপ্রবেশের ফলে ক্রমবর্ধমান নিরাপত্তা উদ্বেগের মধ্যে বিদেশিদের চলাচল পর্যবেক্ষণের জন্য ২০২৪ সালের ১৭ ডিসেম্বর ভারতের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় মণিপুর, নাগাল্যান্ড এবং মিজোরামে সুরক্ষিত এলাকা শাসন পুনঃপ্রবর্তন করে। ১৪ বছর পর শিথিলতা প্রত্যাহার করা হয়েছে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নির্দেশিকা অনুসারে, ভ্রমণের ন্যায্যতা প্রমাণ করতে না পারলে কোনো বিদেশিকে সংরক্ষিত এলাকা পরিদর্শনে করতে দেওয়া হয় না। কর্মকর্তা বলেন, আমেরিকান নাগরিকরা বাংলাদেশের চট্টগ্রাম অঞ্চলে বেশ কয়েকটি বেসরকারি সংস্থার সঙ্গেও কাজ করেছেন, যা তাদের মিজোরাম সফরের উদ্দেশ্য নিয়ে সন্দেহ তৈরি করে। মার্চের শুরুতে মিজোরামের মুখ্যমন্ত্রী লালদুহোমা ইঙ্গিত দিয়েছিলেন, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধে অংশগ্রহণকারী পশ্চিমা ভাড়াটে সৈন্যরা মিয়ানমারের গৃহযুদ্ধে অংশগ্রহণের জন্য তার রাজ্যকে পথ হিসেবে ব্যবহার করতে পারে। এরপর ২১ এপ্রিল লেংপুই বিমানবন্দরের নিরাপত্তার দায়িত্ব সেন্ট্রাল ইন্ডাস্ট্রিয়াল সিকিউরিটি ফোর্স (সিআইএসএফ)-এর কাছে হস্তান্তর করা হয়।