২৭ এপ্রিল ২০১২, শনিবার, ০২:৩৩:৪৯ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম :
‘ব্রাজিল থেকে জীবন্ত গরু আনা সম্ভব, তবে প্রক্রিয়া জটিল’ খালেদা জিয়ার সঙ্গে মির্জা ফখরুলের ঘন্টাব্যাপী সাক্ষাৎ বিশ্বের প্রতি যুদ্ধকে ‘না’ বলার আহ্বান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ৭ জানুয়ারির সংসদ নির্বাচনে গণতান্ত্রিক ধারাবাহিকতা প্রতিষ্ঠা হয়েছে - হাবিবুল মার্কিন পররাষ্ট্র দফতরের প্রতিবেদন অনুমান ও অপ্রমাণিত অভিযোগ নির্ভর- পররাষ্ট্র মন্ত্রনালয় ইউরোপে ভারতীয় ৫২৭ পণ্যে ক্যান্সার সৃষ্টিকারি উপাদন শনাক্ত বাংলাদেশ ব্যাংকে সাংবাদিকদের প্রবেশে কড়াকড়ি বিএনপির আন্দোলন ঠেকানোই ক্ষমতাসীনদের প্রধান চ্যালেঞ্জ বিএনপিকে মাঠে ফেরাচ্ছে আওয়ামী লীগ উপজেলা নির্বাচন নিয়ে অদৃশ্য চাপে বিএনপি


বিদেশে রাজনৈতিক সংঘাত লজ্জাজনক
সালেক সুফি
  • আপডেট করা হয়েছে : ১০-০৫-২০২৩
বিদেশে রাজনৈতিক সংঘাত লজ্জাজনক যুক্তরাষ্ট্রে বিএনপি-আওয়ামী লীগ মারামারি


বাংলাদেশ প্রধানমন্ত্রীর যুক্তরাষ্ট্র সফরে প্রবাসী আওয়ামী লীগ এবং বিএনপি কর্মীরা ওয়াশিংটনে বিশ্বব্যাংক ও হোটেলের সামনে সংঘর্ষে লিপ্ত হয়েছে। উভয় পক্ষের কয়েকজন আহত হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র পুলিশের তড়িৎ ব্যবস্থা গ্রহণ করায় সংঘর্ষ ব্যাপ্তি লাভ করেনি। দুটি প্রতিদ্বন্দ্বী দল প্রধানমন্ত্রীর সফর নিয়ে বেশ কিছুদিন আগে থেকেই নিজেদের পরিকল্পনা ঘোষণা করেছিল। অবশ্য এ কালচার নতুন কিছু নয়। এটা হয়ে আসছে দীর্ঘদিন থেকেই। তবে সেটা ছিল অনেকাংশে প্রতিবাদ, কালো পতাকা প্রদর্শন, ব্যানার ফেস্টুন নিয়ে দাঁড়িয়ে প্রতিবাদ করার মত কর্মসূচির মধ্যদিয়ে। কিন্তু এবার ভিন্নমাত্রায় চলে গেছে এ প্রতিবাদ। সংঘাত সৃষ্টি। 

দুই পক্ষের মধ্যে ব্যাপক মারামারি এটা কতটা শোভনীয় হয়েছে, সেটা নিয়ে চারদিকে আলোচনার টেবিল সরব। গণতান্ত্রিক দেশে ব্যক্তি বা গোষ্ঠীর ভিন্নমত থাকতেই পারে। শান্তিপূর্ণ সমাবেশে দোষের কিছু নেই। কিন্তু বাংলাদেশ ছাড়া দুনিয়ার খুব কম দেশ তাদের সরকার প্রধানের বিদেশ সফরকালে নিজেদের মধ্যে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে দেশের ভাবমূর্তিতে কালিমালিপ্ত করেছে এটা রেয়ার। এই সংঘর্ষের মাধ্যমে বিদেশিদের বাংলাদেশ সম্পর্কে কি ইঙ্গিত দিলো দেশের প্রধান দুটি রাজনৈতিক দল? 

জাতীয় নির্বাচন সামনে রেখে এমনিতেই দেশের মাটিতে সরকারি দল এবং বিরোধী দলগুলো মুখোমুখি অবস্থানে। বিপরীত মেরুতে অবস্থাকারী দুটি রাজনৈতিক শক্তি নিজেদের সমস্যা নিয়ে গেছে বিদেশি শক্তি আর গোষ্ঠীর কাছে। যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা দেশগুলো কূটনৈতিক শিষ্টাচারের সীমানায় দাঁড়িয়ে নানা ইঙ্গিতে বাংলাদেশে অংশগ্রহণমূলক, স্বচ্ছ, বিশ্বাসযোগ্য, নির্বাচনের তাগাদা দিচ্ছে। বিশেষ  করে তারা প্রেক্ষাপট হিসেবে ২০১৪ ও ২০১৮ সনের নির্বাচন দাঁড় করিয়ে এবারের নির্বাচন গ্রহণযোগ্য করার তাগিদ দিচ্ছেন। বর্তমান সরকার পর পর তিন টার্মে ১৫ বছর রাষ্ট্র ক্ষমতায়। বলার অপেক্ষা রাখে না দীর্ঘদিন ক্ষমতায় থাকার ফলে দেশের অর্থনীতি নানা চ্যালেঞ্জ সত্ত্বেও বিশাল পরিবর্তন হয়েছে। দেশে উন্নয়নের মহাযজ্ঞ চলছে। 

নির্বাচন নিয়ে অনেক বিতর্ক আছে, দুর্নীতি, অর্থপাচার নিয়ে অভিযোগ আছে। তবুও খাদ্য নিরাপত্তা, জ্বালানি নিরাপত্তা, অবকাঠামো উন্নয়ন অর্জন নিয়ে সরকার প্রধানের ভূমিকা আন্তর্জাতিক অঙ্গনে প্রশংসা অর্জন করেছে। এমনকি চলমান যুক্তরাষ্ট্র সফরে বিশ্বব্যাংক, আইএমএফ শীর্ষ কর্মকর্তরা বাংলাদেশের অর্জনের প্রশংসা করেছে। বিশ্বব্যাংক বাংলাদেশের অব্যাহত উন্নয়নে অংশীদার হওয়ার ঘোষণা দিয়ে সহজশর্তে ঋণ প্রদানের ঘোষণা দিয়েছে। একইভাবে আইএমএফ অর্থসহায়তার চুক্তি করেছে। সফরকালে যুক্তরাষ্ট্রের সরকারের পক্ষ থেকে দেশের নিরপেক্ষ অবস্থানের ঘোষণা দেওয়া হয়েছে।  

উল্লেখযোগ্য যে ওয়াশিংটন ডিসিতে বিশ্বব্যাংক সদরদপ্তরে বাংলাদেশ বিশ্বব্যাংক পার্টনারশীপ গোল্ডেন জুবিলী (৫০ বছর) আনুষ্ঠানিকভাবে উৎযাপন করা হয়। বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীকে এই উপলক্ষে আমন্ত্রণ জানানো হয়। অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ উন্নয়ন নিয়ে শীর্ষ কর্মকর্তারা বিপুল প্রশংসা করেন। কিন্তু এই অর্জনের অনেকটাই দুটি রাজনৈতিক দলের প্রবাসী একটিভিস্টদের সংঘাতে ম্লান হয়েছে বলা যায়।

রাজনৈতিক বিভেদ থাকবেই। তাই বলে প্রবাসে নিজেদের ঘরোয়া বিষয় নিয়ে দ্বন্দ্ব সংঘাতে জড়িয়ে পড়ে নিজেদের ঝগড়াটে মনোভাব বিদেশিদের সামনে তুলে ধরা সুবিবেচনা প্রসূত নয়। আমি ব্যাক্তিগতভাবে মনে করি প্রবাসীদের দেওয়া সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীর দেওয়া ভাষণের শব্দচয়ন আরো পরিশীলিত হতে পারতো। দেশের ভাবমূর্তি রক্ষার স্বার্থে দেশপ্রেমিক রাজনৈতিক দলগুলো আরো সংযত আচরণ করা উচিত। বিষেশত সবাই যখন গণতন্ত্রের কথা বলে। সবারই মনে রাখা উচিত, অসহিষ্ণুতা কখনো গণতন্ত্রের সঙ্গে মোটেও মানানসই নয়।

শেয়ার করুন