২৮ এপ্রিল ২০১২, রবিবার, ৬:৫১:৫৮ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম :
‘শেরে বাংলা আপাদমস্তক একজন পারফেক্ট বাঙালি ছিলেন’ বিএনপির বহিস্কৃতদের জন্য সুখবর! মে দিবসে নয়পল্টনে বিএনপির শ্রমিক সমাবেশ উপজেলা নির্বাচনে অংশ নেয়ার জের, বিএনপির বহিস্কার ৭৬ থাইল্যান্ডের ব্যবসায়ীদের বাংলাদেশে বিনিয়োগে পররাষ্ট্রমন্ত্রীর আহ্বান ‘ব্রাজিল থেকে জীবন্ত গরু আনা সম্ভব, তবে প্রক্রিয়া জটিল’ খালেদা জিয়ার সঙ্গে মির্জা ফখরুলের ঘন্টাব্যাপী সাক্ষাৎ বিশ্বের প্রতি যুদ্ধকে ‘না’ বলার আহ্বান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ৭ জানুয়ারির সংসদ নির্বাচনে গণতান্ত্রিক ধারাবাহিকতা প্রতিষ্ঠা হয়েছে - হাবিবুল মার্কিন পররাষ্ট্র দফতরের প্রতিবেদন অনুমান ও অপ্রমাণিত অভিযোগ নির্ভর- পররাষ্ট্র মন্ত্রনালয়


মান্নার অভিযোগ- সরকার ‘ভোট ধবংসের চক্রান্ত করছে’
বিশেষ প্রতিনিধি
  • আপডেট করা হয়েছে : ০৬-০৭-২০২৩
মান্নার অভিযোগ-  সরকার ‘ভোট ধবংসের চক্রান্ত করছে’


সরকার ‘ভোট ধবংসের চক্রান্ত করছে’ বলে অভিযোগ করেছেন মাহমুদুর রহমান মান্না। বৃহস্পতিবার দুপুরে এক আলোচনা সভায় নাগরিক ঐক্যের সভাপতি এই মন্তব্য করেন।
 
তিনি বলেন, ‘‘ আমরা কিন্তু লড়াই করছি ভোটের জন্যে। ওরা আমাদেরকে বলতে চায় যে, ওরা ভোট চায় না। আর আমরা বলি, আমরাই ভোট চাই, তোরা ভোট ধ্বংস করতে চাস, ভোট এই ১৫ বছরে ধবংস করেছিস। তোদের শায়েস্তা করবার জন্যেই আমাদের এই আন্দোলন। আন্দোলনে জিতবো এবং তারপরে সেরকমভাবে আমরা সমাজও বদলাব।”
 
মান্না বলেন, ‘‘ এমন একট পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে যে, দেশের ৯০ ভাগ লোক  ৯৯ ভাগ লোক সরকার চায়, আন্তর্জাতিকভাবে এই সরকারকে সবাই মনে করে ভোট চোর-ভোট ডাকাত। এজন্য ওরা(যুক্তরাষ্ট্র) বলছে, বাবার আর ডাকাতি করতে পারবে না, আর চুরি করতে পারবে না। আর ও (সরকার) বলছে, এবার দেখেন সবচাইতে ভালো ভোট করবো। কথা বলে খলে… শয়তান লোক, খলের-ছলের অভাব নাই। এই সরকারের মতো খল সরকার… আমরা আমাদের দেশে তো দেখিনি, পাকিস্তানে দেখিনি, ভারত জুড়ে এতোগুলো বছর আমরা ছিলাম সেখানে দেখিনি। পৃথিবীর মধ্যে এরকম দুশ্চরিত্র মিথ্যাবাদ, মিথ্যুক সরকার কম আছে।”
 
২০১১ সালের ৬ জুলাই ত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিলের প্রতিবাদে হরতালে সংসদ ভবনের সামনে ধস্তাধস্তির পর পুলিশের লাঠিপেটায় ততকালীন বিরোধী দলের প্রধান হুইপ জয়নুল আবেদিন ফারুক গুরুতর আহত হন। ওই দিনটি পালনে বৃহস্পতিবার সকালে জাতীয় প্রেসক্লাবে আবদুস সালাম হলে জাতীয়তাবাদী তরুণ দলের উদ্যোগে এই আলোচনা সভা হয়।
 
অনুষ্ঠানে অতিথি সারিতে বসা ছিলেন জয়নুল আবদিন ফারুক।
 
প্রধান অতিথির বক্তব্যে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সেলিমা রহমান বলেন, ‘‘সরকারের পুলিশের কিছু সদস্য যেভাবে জয়নুল আবেদিন ফারুককে যেদিন পেটিয়েছে, এটা তারা সংসদকে পিটিয়েছে, গনতন্ত্রকে পিটিয়েছে। এটা সারা জাতি, গোটা গণতান্ত্রিক বিশ্ব ধিক্কার জানিয়েছে। এই সরকার গণতন্ত্র বিরোধী সরকার, অবৈধ দখলদার সরকার। তাকে হটাতে না পারলে এদেশের অস্তিত্ব বিপন্ন হবে। সেজন্য আমাদের নেতা তারেক রহমান বলেছেন, সকলকে রাজপথে নেমে আসতে হবে।”
 
মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, ‘‘ আজ যদি আওয়ামী লীগ চলে যান, আগামীকাল নতুন সরকার আসে। তারপরেও মরিচের দাম ৭ ‘শ টাকা থাকে তাহলে মানুষ সেই সরকারকে পছন্দ করবে। কেনো মরিচের দাম বাড়লো, কেনো পেঁয়াজের দাম বাড়লো, কেনো চালের দাম এতো বেশি হলো… আমরা তো সবাই বলছি সিন্ডিকেটর কারণে দাম বেড়েছে। ওই সিন্ডিকেট ধরবে না তারা(নতুন সরকার)। ২০০০ হাজার কোটি টাকা বিদেশে পাচার করেছে শেখ হাসিনা বেয়াই… বেয়াইয়ের ভাই বেয়াই হয় না…. যে সরকার আসবে তিনি এই মামলা চালাবেন না বন্ধ করে দেবেন? আমার কথা হলো.. কোনো চোর-বাটপারের ক্ষমা নাই। লড়াইটা হবে। আমি আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে কোনো বিদ্বেষ ছড়াচ্ছি না, আওয়ামী লীগের কোনো নেতার বিরুদ্ধে ব্যক্তিগত বিদ্বেষ নাই। কিন্তু আওয়ামী লীগের হোক, আমার পার্টি নাগরিক ঐক্যের লোক হোক, বিএনপির হোক কেউ যদি জনগনের দুর্ভোগের কারণে তাকে কেউ যদি অত্যাচার করে থাকে, অপরাধ করে থাকে তাহলে তাকে ক্ষমা করা যাবে না।”
 
তিনি বলেন, ‘‘ আমরা ন্যায় ভিত্তিক সমাজ প্রতিষ্ঠা করতে চাই, আমরা জনগনের সরকার প্রতিষ্ঠা করতে চাই, জনগনের দেশ প্রতিষ্ঠা করতে চাই… যেই জায়গায় সামাজিক মর্যাদা থাকবে, মানবিক মূল্যবোধ থাকবে এবং সাম্য থাকবে।  আমরা মানুষে মানুষে সমান, অধিকারে সমান, বাস্তবে সমান এবং সবাই আইনের চোখে সমান থাকব.. এই রকম একটা দেশ করতে চাই। অতএব অনেক বড় দায়িত্ব সমানে আছে।কারণ এই সমাজটা বদলাতে, দেশটা বদলাতে হবে সেই রকম দেশ চাই যেটা সত্যি সত্যি সোনার বাংলা হবে, আমার-আপনার প্রত্যেকের জন্যে আমাদের অধিকার নিশ্চিত করবে….।”
 
বাংলাদেশ গণঅধিকার পরিষদের একাংশের সদস্য সচিব নুরুল হক নূর বলেন, ‘‘ আমরা সমগ্র জাতির সামনে বলছি, শেখ হাসিনা ফ্যাসিবাদের অধিনে গণঅধিকার পরিষদ কিংবা আমরা অংশগ্রহন করবো না। আমরা যা বলেছি, মুখ দিয়ে কথা বলেছি, শেখ হাসিনার অধীনে কোনো নির্বাচনে যাবো না। তারপরে দেখবেন আমাদের পাশে-পাশের কিছু বন্ধুরা ইনিয়ে-বিনিয়ে বিএনপির লোকরা, সরকার  গ্রেফতার করে কেনো… এ করে না কেনো, সেই করে না… এরকম নানা ধরনের কথা তুলে আন্দোলনের মধ্যে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করছে, নিজেদের মধ্যে সন্দেহের সৃষ্টি করছে। দয়া করে আমরা যারা যুগপত আন্দোলনে আছি, আন্দোলনে মানুষ বিভ্রান্ত হয়, আন্দোলন ক্ষতিগ্রস্থ হয়, আমাদের নিজেদের মধ্যে দ্বন্দ্ব তৈরি হয়, বিরোধ তৈরি হয়, এমন কোনো কথা কেউ বলবেন না।”
 
তিনি বলেন, ‘‘ জামায়াতে ইসলামী দীর্ঘদিন রাজপথে আছে। জামায়াতের নেতাদের অনেককে যেভাবে ফাঁসি দিয়েছে, অত্যাচার-নির্যাতন করেছে তাতে আমার মনে হয় না জামায়াত সরকারের ফেবারে কাজ করবে। কিন্তু তারপরেও যদি জামায়াত করে… জামায়াতের কর্মীরা তাদের ক্ষমা করবে না। এই তাদের মৃত নেতাদের, অত্যাচারিত নেতাদের প্রতিশোধের যে শপথ তারা নিয়েছে। আমার কথা হচ্ছে কারা এই আন্দোলনে বন্ধু? সেটা প্রমাণিত হবে রাজপথে।”
 
বিএনপি চলমান আন্দোলনের নেতৃত্ব দিচ্ছে উল্লেখ করে তাকেই ‘এক দফা’র আন্দোলনে কর্মসূচি  দেয়ার আহ্বান জানান নূর।
 
সংগঠনের সভাপতি হুমায়ুন আহমেদ তালুকদারের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক সোহেল রানার সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলালসহ নেতৃবৃন্দ বক্তব্য রাখেন।

শেয়ার করুন