২৯ এপ্রিল ২০১২, সোমবার, ০১:৫৩:৪৮ পূর্বাহ্ন


তিনজনের বক্তব্য নিয়ে নানান গুঞ্জন
সৈয়দ মাহবুব মোর্শেদ
  • আপডেট করা হয়েছে : ২৫-১০-২০২৩
তিনজনের বক্তব্য নিয়ে নানান গুঞ্জন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল ও মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাস


প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত পিটার হাস- এই তিন গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তির সম্প্রতি দেয়া বক্তব্য নিয়ে ঢাকার বাতাসে নানান ধরনের গুঞ্জন দেখা দিয়েছে। প্রশ্ন দেখা দিয়েছে- এই তিনজনের বক্তব্যে পেছনে আসল খবর কি? কেনইবা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অনির্বাচিত সরকারের আশঙ্কার কথা বললেন? আবার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল গণমাধ্যমে যে কথা বললেন তার বিপরীতে কেনইবা মার্কিন দূতাবাস চট করে পাল্টা জবাব দিলেন? 

ঘটনাবহুল ২২ অক্টোবর

২২ অক্টোবরে সংসদীয় দলের সভায় শেখ হাসিনা অভিযোগ করেছেন, জাতীয় ও আন্তর্জাতিক একটি মহল বাংলাদেশে অনির্বাচিত সরকার দেখতে চায়। তবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেছেন, নির্বাচন হলে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসবে। তারা আওয়ামী লীগকে ক্ষমতায় দেখতে চায় না। সেই কারণে নির্বাচন বানচাল করতে পারলে একটি অনির্বাচিত সরকার এনে তাদের ইচ্ছামতো নিয়ন্ত্রণ করতে পারবে। এ সময় ভোট বানচালের ষড়যন্ত্র করতে বিএনপি শেষ মুহূর্তে নির্বাচনে আসতে পারে বলেও তিনি মন্তব্য করেন। গত ২২ অক্টোবর রোববার সংসদ ভবনে আওয়ামী লীগের সংসদীয় দলের সভায় তিনি এসব কথা বলেন। সংসদীয় দলের প্রধান শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে সরকারি দলের সভাকক্ষে এ বৈঠক হয়। প্রায় ৫৫ মিনিট বক্তব্য দেন প্রধানমন্ত্রী। 

প্রশ্ন বিএনপি ছাড়াই কি নির্বাচন চায় আওয়ামী লীগ?

রাজনৈতিক অঙ্গনে গুঞ্জন আছে বিএনপি’কে ছাড়াই আওয়ামী লীগ সরকার একতরফা নির্বাচন চায়। প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যে এমটাই ফুটে উঠেছে। ধরে নেয়া যায় যে, আওয়ামী লীগ চাচ্ছে না বিএনপি আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নিক। আবার বিএনপি হয়তবা শেষ মেষ এই সরকারের অধীনে নির্বাচন অংশ নিতেও পারে-এমনটাই আভাস মিলেছে প্রধানমন্ত্রীর ইঙ্গিতপূর্ণ বক্তব্যে। তবে কেনো আওয়মী লীগ এমন আশঙ্কায়? কারণ আওয়ামী লীগ মনে করে এবারে কোনো ভাবেই যেনে যেত ভাবে নির্বাচন করে পার পাওয়া যাবে না। রোরবারের বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী আবার এটাও বলেন যে, আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, এবার নির্বাচন কঠিন হবে। কারণ ষড়যন্ত্রকারীরা ষড়যন্ত্র করে চলেছে। তাই জোর প্রস্তুতি নিতে হবে। নৌকা যাকে দেওয়া হবে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে তাকে জয়ী করতে হবে। ঐক্যবদ্ধ না থাকলে জয় সহজ হবে না। তাহলে ধরে নেয়া যায় বিএনপি নির্বাচনে এলে আওয়ামী লীগের টালমাটাল অবস্থা হবে। কেননা প্রতি পদে পদে পশ্চিমারা এবার বাংলাদেশে সুষ্ঠু নির্বাচনের দিকে তাকিয়ে আছে। সেক্ষেত্রে আওয়ামী লীগের জন্য বিপদ হতে পারে। আবার বিএনপি না এলে নির্বাচনকে অংশগ্রহণমূলক বলে চালিয়ে দেয়া কঠিন হবে। 

আসাদুজ্জামান খান কামাল ও পিটার হাসের বক্তব্য নিয়ে ধোঁয়াশা

এদিকে আসাদুজ্জামান খান কামাল ও পিটার হাসের বক্তব্য নিয়ে ধোয়াশার সৃষ্টি হয়েছে রাজনৈতিক অঙ্গনে। ২২ তারিখ রোববার দুপুরে সচিবালয় মার্কিন রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে বৈঠকের পর স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী গণমাধ্যমকে বলেন, আগামী ২৮ অক্টোবর রাজধানীতে বিএনপির মহাসমাবেশ ঘিরে সরকার ঢাকায় প্রবেশের রাস্তাঘাট বন্ধ করে দেবে কি না, তা জানতে চেয়েছেন বাংলাদেশে নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাস। গণমাধ্যমে তিনি জানান, বৈঠকে পিটার হাস জানতে চেয়েছেন বিএনপি যে একটি বিরাট কর্মসূচি দিয়েছে সেখানে অনেক লোক নিয়ে আসবে, আপনারা রাস্তাঘাট বন্ধ করে দেবে কি না, কিংবা আপনারা অন্য কিছু করবা কি না। এব্যাপারে মন্ত্রীকে দেখা গেছে অত্যন্ত বিনয়ী ভঙ্গীমায় কথা বলতে। তিনি গণমাধ্যমের প্রতিনিধিদের জানান, তিনি কি উত্তর দিয়েছেন পিটার হাসের প্রশ্নের পর। মন্ত্রী বলেন, আমরা বলেছি ওই ধরনের কোনো প্রোগ্রাম আমাদের নেই। আমরা মনে করি, তারা যে রাজনৈতিক এজেন্ডা দিয়েছে, তারা তা শান্তিপূর্ণভাবে করবে। কর্মসূচি যদি তারা শান্তিপূর্ণভাবে পালন করে, তবে আমাদের কিছু বলার নেই। তারপরও আমরা অনুরোধ করব ঢাকা শহর এমনিতেই একটি যানজটপূর্ণ শহর। এখানে ২ কোটির বেশি মানুষ বসবাস করে, এমনকি ঢাকার রাস্তাঘাট মানুষে পূর্ণ থাকে। সেখানে যদি ১০ লাখ মানুষ বা এর চেয়ে বেশি লোক ঢোকে তারা যেটা বলেছেন, তাহলে তো একটা মিসম্যাচ হয়ে যাবে, কমিউনিকেশন, এটা-সেটা। সেগুলো যেন তারা না করে, সেটার জন্য আমরা রিকোয়েস্ট করব। তার এমন জবাব পেয়ে সেখানে উপস্থিত একজন সাংবাদিক তখন পাল্টা প্রশ্ন করেন। একটি দেশের রাষ্ট্রদূত একটি রাজনৈতিক দলের কর্মসূচি নিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে জানতে এসেছেন। এটি কূটনীতিক শিষ্টাচারের মধ্যে পড়ে কি না? এক্ষেত্রে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, এই প্রশ্নটি তো আমি আপনার কাছে করতে চাই। আমার কথা হলো, তিনি এসেছেন, তিনি একটি দেশের রাষ্ট্রদূত, তিনি প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করেছেন, আমরা উত্তর দিয়েছি। এটা করতে পারে কি পারে না- সেটা দেখা আমার বিষয় নয়। তাকে উত্তর দেয়ার সময়ে মন্ত্রীকে অনেক নরম মনে হয়েছে টিভি ক্যামেরার সামনে। আর শিষ্টাচার নিয়ে আরেক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, তথ্য যতটুকু দেওয়ার আমরা ততটুকুই দিয়েছি। একটা রাষ্ট্রদূত আমাদের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাতে এসেছেন, জিজ্ঞাসা আমাকে করতেই পারেন। কী ব্যবস্থা নিয়েছেন, কোনো ভায়োলেন্স (সহিংসতা) হবে কি না? সেই জায়গায় আমরা সেইটুকুই মেনটেইন করেছি। যতখানি প্রয়োজন ততটুকুই আমরা (তথ্য) দিয়েছি।

পিটার হাস বললেন অন্য কথা

২৮ অক্টোবর রাজধানীতে বিএনপির মহাসমাবেশ ঘিরে সরকার ঢাকায় প্রবেশের রাস্তাাঘাট বন্ধ করে দেবে কি না, এ বিষয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের সঙ্গে ঢাকায় নিযুক্ত যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত পিটার হাসের সঙ্গে কোনো আলোচনা হয়নি। রোববার রাতেই গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানায় ঢাকার মার্কিন দূতাবাস। বিবৃতিতে ঢাকার মার্কিন দূতাবাসের মুখপাত্র গণমাধ্যমকে জানান, রোববার যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর বৈঠকে বিএনপির আগামী ২৮ অক্টোবর সড়ক বন্ধ করা নিয়ে কোনো আলোচনা হয়নি। রাজনৈতিক প্রক্রিয়ায় শান্তিপূর্ণ সমাবেশ এবং হস্তক্ষেপমুক্ত অংশগ্রহণের গুরুত্বের কথা তুলে ধরেছেন রাষ্ট্রদূত পিটার হাস। অর্থ্যাৎ রাষ্ট্রদূত পিটার হাসের বক্তব্য হচ্ছে তারা দেশ চায় দেশে গণতান্ত্রিক চর্চাটা যেনো সুষ্ঠুভাবে হয়। কোনো খবরদাবি করছে না মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র-রাষ্ট্রদূত পিটার হাস কূটনৈতিক শিষ্টাচার বজায় রেখে এমনটাই বুঝিয়েছেন। 

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী গণমাধ্যমকে অফিসিয়াল স্ট্যাটমেন্ট?

অন্যদিকে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান ও মার্কিন রাষ্ট্রদূতের বৈঠকে ২৮ অক্টোবর ঢাকায় সড়ক বন্ধ করার বিষয়ে আলোচনা হয়নি উল্লেখ করে গত রবিবার রাতেই বিবৃতি দেয় ঢাকায় নিযুক্ত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের দূতাবাস। এ বিবৃতি প্রকাশের পর পৃথক বিজ্ঞপ্তি দিয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানায়, মার্কিন রাষ্ট্রদূত জানতে চেয়েছেন, ২৮ অক্টোবর বিএনপির কর্মসূচির কারণে রাস্তাঘাট বন্ধ করে দেওয়া হবে কি না। গণমাধ্যমে পাঠানো স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ জনসংযোগ কর্মকর্তা মো. শরীফ মাহমুদের সই করা সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বৈঠকের আলোচনার বিষয়বস্তু তুলে ধরা হয়। এতে বলা হয়, রবিবার (২২ অক্টোবর) দুপুর আড়াইটার সময় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খানের  সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন ঢাকায় নিযুক্ত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত পিটার ডি হাস। অত্যন্ত সৌহার্দ্যপূর্ণ পরিবেশে অনুষ্ঠিত সৌজন্য সাক্ষাতে আসন্ন নির্বাচন, বিএনপির ২৮ অক্টোবরের সমাবেশ, চলমান দুর্গাপূজা, মিয়ানমার থেকে বাস্তুচ্যুত হয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গাদের বিষয় এবং প্রাসঙ্গিক অন্যান্য বিষয়ে তাদের মধ্যে আলোচনা হয়। আলোচনায় রাষ্ট্রদূত উল্লেখিত বিষয়গুলো নিয়ে বিভিন্ন ধরনের প্রশ্ন জিজ্ঞাসা ও মতামত জানতে চেয়েছেন। সাক্ষাতের পর মিডিয়া ব্রিফিং করেন মন্ত্রী। সেখানে সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের প্রেক্ষাপটে পূর্বাপর আলোচনার মর্মার্থ এবং তথ্যের ভিত্তিতে প্রশ্নের উত্তর দেন মন্ত্রী। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এমন বক্তব্যে এখন বোঝা যাচ্ছে যে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত পিটার ডি হাস কূটনৈতিক শিষ্টাচার বজায় রেখেই ২২ তারিখ বৈঠক করেছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খানের  সঙ্গে।

পিটার হাস আসলে কি বললেন?

এতো সব বিবৃতি পাল্টা বিবৃতির পর রাজনৈতিক মহলে প্রশ্ন জেগেছে আসলে ২২ তারিখ রোববার দুপুরে সচিবালয় মার্কিন রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর বৈঠকে কি হয়েছে? এ নিয়ে নানান ধরনের গুজব, গুঞ্জন বাতাসে ঘুরে বেড়াচ্ছে? কেনোই বা সরাসরি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী গণমাধ্যমকে বলে দিলেন যে, আগামী ২৮ অক্টোবর রাজধানীতে বিএনপির মহাসমাবেশ ঘিরে সরকার ঢাকায় প্রবেশের রাস্তাঘাট বন্ধ করে দেবে কি না, তা জানতে চেয়েছেন বাংলাদেশে নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাস। আর এতে করে কি এমন পরিস্থিতির উদ্ভব হলো যে এরপরপরই মার্কিন দূতাবাসকে বিবৃতি দিতে হলো? রাজনৈতিক ও কূটনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, রোববার রাতেই গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে ঢাকার মার্কিন দূতাবাস যা বলেছে তা কোনোভাবেই অসত্য হতে পারে না। কারণ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মতো দেশের রাষ্ট্রদূত অসত্য তথ্য দিতে পারে না। যা ঘটেছে তা-ই তাদের বলতে হবে। কারণ রাষ্ট্র ও জনগণের কাছে তাদের দায়বদ্ধতা আছে। আর একারণে ২২ তারিখ রোববার দুপুরে সচিবালয় মার্কিন রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে বৈঠকের পর স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী গণমাধ্যমকে যা বলেছেন তা একবারে খণ্ডন করে মার্কিন দূতাবাসকে কথা বলতে বাধ্য হয়েছে। কারণ এখানে সর্বমহলেই মনে হয়েছে যে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের রাজনীতিতে হস্তক্ষেপ করছে। আর একারণে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান ও মার্কিন রাষ্ট্রদূতের বৈঠকে ২৮ অক্টোবর ঢাকায় সড়ক বন্ধ করার বিষয়ে আলোচনা হয়নি উল্লেখ করে গত রবিবার রাতেই ঢাকায় নিযুক্ত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের দূতাবাস যে বিবৃতি দেয় তার বিপরীতে আসলে কি হয়েছে তা তুলে ধরে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয়। এজন্য গণমাধ্যমে পাঠানো হয় একটি বিজ্ঞপ্তি। 

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ জনসংযোগ কর্মকর্তা মো. শরীফ মাহমুদের সই করা সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বৈঠকের আলোচনার বিষয়বস্তু তুলে ধরা হয়। এতে দেখা যায় যে ২২ তারিখে গণমাধ্যমে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খানের বক্তব্যে মনে হয়েছে সর্বমহলে যে পিটার হাস বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয় নিয়ে খবরদারি করেছেন। কিন্তু স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ জনসংযোগ কর্মকর্তা মো. শরীফ মাহমুদের সই করা সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এব্যাপারে কিছুটা পরিস্কার ধারণা পাওয়া যায়। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দেয়া এমন বক্তব্যে এখন বোঝা যাচ্ছে যে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত পিটার ডি হাস কূটনৈতিক শিষ্টাচার বজায় রেখেই ২২ তারিখ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খানের  সঙ্গে বৈঠক করেছেন। 

কিন্তু  প্রশ্ন হচ্ছে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কার পরামর্শে বা অন্য কি কারণে মন্ত্রণালয় থেকে বিজ্ঞপ্তিটি দিতে বাধ্য হয়েছিলেন? আগামী ২৮ অক্টোবর রাজধানীতে বিএনপির মহাসমাবেশ ঘিরে সরকার ঢাকায় প্রবেশের রাস্তাঘাট বন্ধ করে দেবে কি না, তা জানতে চেয়েছেন বাংলাদেশে নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাস- স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খানের দেয়া এমন বক্তব্য কি তাদেরকে (মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র) বিব্রতকর অবস্থায় ফেলেছে। আর এমন বিব্রতকর অবস্থা থেকে রক্ষা করতেই কি গণমাধ্যমে পাঠানো হয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ জনসংযোগ কর্মকর্তা মো. শরীফ মাহমুদের সই করা সংবাদ বিজ্ঞপ্তিটি? অন্যদিকে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান ও মার্কিন রাষ্ট্রদূতের বৈঠকে আসলে কি হয়েছে? বৈঠকের পর গণমাধ্যমে কথা বলার সময় কেনোই বা তাকে (স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খানকে) এতোটা নরম কাহিল দেখিয়েছে?

 রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা এসময় তার (স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান) বডি ল্যাংগুয়েজ লক্ষ্য করে ব্যাখ্যা করেন অন্য কথা। তাদের ধারণা, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান হয়তোবা কোনো চাপ অনুভব করেছেন তা-ই গণমাধ্যমে কথা বলতে গিয়ে একটু হোঁচট খাওয়ার মতো অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। তবে আসলে কি হয়েছে সে গুঞ্জন থেকেই যাবে যতক্ষণ আসল ঘটনা প্রকাশ না পাবে।

শেয়ার করুন