২৮ এপ্রিল ২০১২, রবিবার, ০৫:০৩:৪৪ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম :
‘শেরে বাংলা আপাদমস্তক একজন পারফেক্ট বাঙালি ছিলেন’ বিএনপির বহিস্কৃতদের জন্য সুখবর! মে দিবসে নয়পল্টনে বিএনপির শ্রমিক সমাবেশ উপজেলা নির্বাচনে অংশ নেয়ার জের, বিএনপির বহিস্কার ৭৬ থাইল্যান্ডের ব্যবসায়ীদের বাংলাদেশে বিনিয়োগে পররাষ্ট্রমন্ত্রীর আহ্বান ‘ব্রাজিল থেকে জীবন্ত গরু আনা সম্ভব, তবে প্রক্রিয়া জটিল’ খালেদা জিয়ার সঙ্গে মির্জা ফখরুলের ঘন্টাব্যাপী সাক্ষাৎ বিশ্বের প্রতি যুদ্ধকে ‘না’ বলার আহ্বান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ৭ জানুয়ারির সংসদ নির্বাচনে গণতান্ত্রিক ধারাবাহিকতা প্রতিষ্ঠা হয়েছে - হাবিবুল মার্কিন পররাষ্ট্র দফতরের প্রতিবেদন অনুমান ও অপ্রমাণিত অভিযোগ নির্ভর- পররাষ্ট্র মন্ত্রনালয়


শ্রমিক জোট সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলন গড়ে তুলবে
বিশেষ প্রতিনিধি
  • আপডেট করা হয়েছে : ০৪-১০-২০২৩
শ্রমিক জোট সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলন গড়ে তুলবে শ্রমিক জোটের বিক্ষোভ সমাবেশ


জাতীয় শ্রমিক কর্মচারি সংগ্রাম পরিষদ নামে জোটের আত্মপ্রকাশ উপলক্ষে এর আহ্বায়ক শ্রমিকনেতা সিপিবি’র সাবেক সভাপতি মনজুরুল আহসান খান বলেছেন, দেশের শ্রমিক আন্দোলনকে মাফিয়া গোষ্ঠী কায়েমী স্বার্থের অনুগত দালালিতে পরিণত করেছে। এই সুযোগে ক্রমাগত ট্রেড ইউনিয়ন অধিকার, গণতান্ত্রিক অধিকার, ন্যায্য মজুরির অধিকার থেকে শ্রমিকদের বঞ্চিত করা হচ্ছে। তিনি বলেন, সরকার শ্রমিকদের দাবি বাস্তবায়নে ব্যর্থ হলে এই শ্রমিক জোট সরকারের বিরুদ্ধেও আন্দোলন গড়ে তুলবে।

দেশের বিপ্লবী ধারার ও শ্রেণি-সচেতন জাতীয় ট্রেড ইউনিয়নসমূহ জাতীয় শ্রমিক কর্মচারি সংগ্রাম পরিষদ-এ ঐক্যবদ্ধ হয়েছে। গত ৩ অক্টোবর মঙ্গলবার, জাতীয় প্রেসক্লাবের তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে এক সংবাদ সম্মেলনের মধ্য দিয়ে নবগঠিত জোটের আত্মপ্রকাশ ও দাবিনামা তুলে ধরা হয়। জোটের আহ্বায়ক উপমহাদেশের প্রখ্যাত শ্রমিকনেতা মনজুরুল আহসান খান সংবাদ সম্মেলনে এই ঐতিহাসিক পদক্ষেপ সম্পর্কে বক্তব্য উপস্থাপন করেন। তিনি দেশের শ্রমিক আন্দোলনের বর্তমান প্রেক্ষাপট ও দাবিনামা দেশবাসীর সামনে তুলে ধরেন। 

এসময় মনজুরুল আহসান খান আরো বলেন, আন্দোলনমুখী জোট হিসেবে জাতীয় শ্রমিক কর্মচারি সংগ্রাম পরিষদ ১১ দফার ভিত্তিতে সর্বাত্মক শ্রমিক আন্দোলন গড়ে তুলবে। সরকার শ্রমিকদের ন্যায্য দাবি না মানলে সংগ্রাম পরিষদ ধর্মঘটসহ কঠোর আন্দোলনে সারাদেশের সংগঠিত ও অসংগঠিত সকল খাতের শ্রমিকদের একত্রিত করবে। 

গার্মেন্ট শ্রমিক ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্রের উপদেষ্টা আবদুল্লাহ ক্বাফী রতনের পরিচালনায় অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন বাংলাদেশ শ্রমিক কর্মচারি ফেডারেশনের সভাপতি জহিরুল ইসলাম। এসময় উপস্থিত ছিলেন সংযুক্ত শ্রমিক ফেডারেশনের কার্যকরি সভাপতি বর্ষীয়ান শ্রমিকনেতা হারুন অর রশীদ ভূঁইয়া, জাতীয় শ্রমিক ফেডারেশন বাংলাদেশের সাধারণ সম্পাদক শামীম ইমাম, বাংলাদেশ শ্রমিক ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক এএফএম ফয়েজ হোসেন, বিপ্লবী শ্রমিক সংহতির সভাপতি মীর মোফাজ্জল হোসেন মোস্তাক, শ্রমজীবী সংঘের সভাপতি আব্দুল আলী।

সংবাদ সম্মেলনে শ্রমিক অধিকার আদায় ও শোষণ মুক্তির লক্ষ্যে ১১ দফা দাবি উত্থাপন করা হয়। দাবিসমূহ হলো ১- জাতীয় ন্যূনতম মজুরি ২০ হাজার টাকা নির্ধারণ কর। ২। বিরাষ্ট্রীয়করণ বন্ধ কর। পাট ও চিনিকল, সুতা ও বস্ত্রকলসহ বন্ধ সকল কল-কারখানা রাষ্ট্রীয় মালিকানায় চালু কর। ৩। শ্রমিক স্বার্থ বিরোধী শ্রম আইন ও বিধিমালা বাতিল কর, গণতান্ত্রিক শ্রম আইন ও বিধিমালা প্রণয়ন কর। ৪। ক) নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্য কমাও, খ) শ্রমিকের জন্য সস্তায় পূর্ণ রেশনিং চালু কর, গ) শ্রমিকদের জন্য আবাসন প্রকল্প গ্রহণ কর, ঘ) কর্মস্থলে শ্রমিকদের জীবনের নিরাপত্তা নিশ্চিত কর, ঙ) শ্রমিকের স্বাস্থ্য ও চিকিৎসার অধিকার নিশ্চিত কর। ৫। ক) ইপিজেডসহ সর্বত্র অবাধ ট্রেড ইউনিয়ন অধিকার দাও। খ) ধর্মঘট করার গণতান্ত্রিক অধিকার হরণের 'অত্যাবশ্যক পরিষেবা বিল, ২০২৩ বাতিল কর। ৬। লে-অফ, লক-আউট, ছাঁটাই-নির্যাতন, মিথ্যা মামলা-গ্রেফতার ও হয়রানি বন্ধ কর। পুনর্বাসন ছাড়া হকার উচ্ছেদ চলবে না। সকল মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার কর। ৭। গার্মেন্টস্ শ্রমিকের ন্যূনতম মজুরি ২৫ হাজার টাকা ঘোষণা কর। ৮। চা শ্রমিকের ভূমির অধিকার ও দৈনিক মজুরি ৫০০ টাকা নির্ধারণ কর। সকল বকেয়া পাওনা অবিলম্বে পরিশোধ কর। ৯। নীতিমালা প্রণয়ন করে ব্যাটারিচালিত রিকশা-ভ্যান-ইজিবাইকের লাইসেন্স ও রুট পারমিট দাও। ১০। পরিবহন, ট্যানারি, নির্মাণ, চাতাল, মৎস্যজীবী, দর্জি শ্রমিক, গৃহ শ্রমিকসহ সকল সেক্টরের শ্রমিকের ন্যূনতম মজুরি ঘোষণা ও ন্যায়সঙ্গত সকল দাবি মেনে নাও। ১১। অবাধ ভোটাধিকার ও গণতান্ত্রিক অধিকার নিশ্চিত কর। সাম্রাজ্যবাদী আগ্রাসন রুখে দাঁড়াও।

বেলা সাড়ে ১২টায় জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে সংক্ষিপ্ত সমাবেশ ও ১১ দফা দাবিতে শ্রম মন্ত্রণালয় অভিমুখে বিক্ষোভ অনুষ্ঠিত হয়। পুলিশি বাধার মুখে নগরীর পুরানা পল্টন মোড়ে বিক্ষোভ মিছিলটি শেষ হয়। এরপর শ্রমিকনেতা মনজুরুল আহসান খানের নেতৃত্বে ৬ সদস্যের প্রতিনিধি দল সচিবালয়ে শ্রম ও কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী জনাব মুন্নুজান সুফিয়ানের নিকট দাবিনামা পেশ করেন।

শেয়ার করুন