২৯ এপ্রিল ২০১২, সোমবার, ১০:৪৩:১৯ অপরাহ্ন
শিরোনাম :
সরকার ও বেসরকারি উদ্যোগে দরিদ্রমুক্ত দেশ গড়ে উঠবে - আসাদুজ্জামান খান কামাল ৭০ শতাংশ মৃত্যু অসংক্রামক রোগে, বাজেটে বরাদ্দ বৃদ্ধির দাবি ‘বিদেশে দেশবিরোধী অপপ্রচারকারীদের বিরুদ্ধে স্থানীয় আইনে ব্যবস্থা নিন’ ভূল স্বীকার করে সরে দাড়ানোয় একজনের বহিস্কারাদেশ প্রত্যাহার বাফেলোতে সন্ত্রাসীদের গুলিতে দুই বাংলাদেশী নিহত ‘শেরে বাংলা আপাদমস্তক একজন পারফেক্ট বাঙালি ছিলেন’ বিএনপির বহিস্কৃতদের জন্য সুখবর! মে দিবসে নয়পল্টনে বিএনপির শ্রমিক সমাবেশ উপজেলা নির্বাচনে অংশ নেয়ার জের, বিএনপির বহিস্কার ৭৬ থাইল্যান্ডের ব্যবসায়ীদের বাংলাদেশে বিনিয়োগে পররাষ্ট্রমন্ত্রীর আহ্বান


উভয়পক্ষ অবৈধ সীমান্ত ক্রসিং বন্ধে অভিবাসন চুক্তির দ্বারপ্রান্তে
দেশ রিপোর্ট
  • আপডেট করা হয়েছে : ৩১-০১-২০২৪
উভয়পক্ষ অবৈধ সীমান্ত ক্রসিং বন্ধে অভিবাসন চুক্তির দ্বারপ্রান্তে অভিবাসীরা অবৈধভাবে কাটাতার পেরিয়ে যুক্তরাষ্ট্র-মেক্সিকো সীমান্ত অতিক্রম করছেন


সীমান্তে অভিবাসী ক্রসিংগুলোতে অবৈধ অভিবাসীদের স্রোত যখন বাড়ছে, ঠিক সেই সময় তাদের আসা রোধ করতে রিপাবলিকান এবং ডেমোক্র্যাটরা একটি অভিবাসন চুক্তি করতে যাচ্ছেন। তারা এই চুক্তির দ্বারপ্রান্তে রয়েছেন। যার ফলে অভিবাসীদের আশ্রয় দেওয়ার ক্ষেত্রে প্রেসিডেন্টের ক্ষমতা কমানো, নতুন সীমান্ত নিয়ন্ত্রণ আইন প্রণয়ন করা। গত কয়েক সপ্তাহের বন্ধ দরজায় আলোচনার পর হোয়াইট হাউস এবং তিন জন সিনেটর এই সপ্তাহের প্রথমদিকে একটি চুক্তি উন্মোচন করতে পারে বলে নাম প্রকাশ না করার শর্তে একটি সূত্র জানিয়েছে। বিলটি গত তিন বছরে দক্ষিণ সীমান্ত বরাবর রেকর্ড করা অবৈধ ক্রসিংয়ের চাপ কমাতে সাহায্য করবে।

রিপাবলিকান সিনেটর জেমস ল্যাংকফোর্ড, ডেমোক্রেটিক সিনেটর ক্রিস মারফি এবং ইনডিপেনডেন্ট সিনেটর কিরস্টেন সিনেমা হোয়াইট হাউসের সঙ্গে সমঝোতা চূড়ান্ত করার কাছাকাছি রয়েছেন। তারা বলেন, যে কোনো দ্বিদলীয় অভিবাসন প্রস্তাব হাউসে কঠিন লড়াইয়ের মুখোমুখি হবে, যেখানে স্পিকার মাইক জনসন এবং অন্যান্য রক্ষণশীল আইনপ্রণেতারা আশ্রয় ব্যবস্থায় আরো কঠোর পরিবর্তনের জন্য চাপ দিয়েছে। প্রেসিডেন্ট বাইডেন প্রশাসনের সঙ্গে সীমান্ত চুক্তিকে সমর্থন করবেন কি না তা নিয়ে রিপাবলিকান আইনপ্রণেতাদের মধ্যে বিভেদও চলছে। সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এই চুক্তির বিরুদ্ধে বক্তব্য দেওয়ার পর তা বিরোধিতা আরো তীব্র হয়েছে। গত ২৭ জানুয়ারি শনিবার লাস ভেগাসে এক সমাবেশে ট্রাম্প বলেন, একটি খারাপ বিলের চেয়ে তিনি কোনো বিলই পছন্দ করবেন না। সীমান্ত চুক্তি নিয়ে ঠান্ডা পানি ছুড়ে দিলেন হাউস স্পিকার জনসন। জনসন দাবি করেছেন, অবৈধ অভিবাসীদের প্রবেশ সীমিত করার জন্য প্রেসিডেন্টের প্রচুর কর্তৃত্ব রয়েছে। প্রেসিডেন্ট বাইডেন ২৬ জানুয়ারি মিথ্যাভাবে দাবি করেছেন যে তাকে দক্ষিণ সীমান্ত বন্ধ করার অনুমতি দেওয়ার জন্য কংগ্রেসকে একটি নতুন আইন পাস করতে হবে। তিনি জানেন এটি অসত্য, জিওপি স্পিকার এক্সে লিখেছেন, যেমন আমি তাকে গত বছরের শেষের দিকে একটি চিঠিতে ব্যাখ্যা করেছিলাম এবং তার পর থেকে একাধিক অনুষ্ঠানে তাকে বিশেষভাবে পুনর্ব্যক্ত করেছি, তিনি যে বিপর্যয় সৃষ্টি করেছেন, তা উল্টাতে অবিলম্বে নির্বাহী পদক্ষেপ নিতে পারেন এবং অবশ্যই করতে পারেন। নতুন সীমান্ত বিল হাউস আসা মাত্র তার মৃত্যু হবে।

অভিবাসন চুক্তি কি করবে

চুক্তিটি আইনে প্রণীত হলে নতুন চুক্তিটি ১৯৯০-এর দশকের পর থেকে দেশের অভিবাসন ব্যবস্থায় ব্যাপক পরিবর্তন হবে। চুক্তিটিতে অভিবাসীরা ক্রসিংগুলো অতিক্রম করলে কার্যনির্বাহী শাখাকে কার্যকরভাবে প্রবেশের অফিসিয়াল পোর্টগুলোর মধ্যে আশ্রয় স্থগিত করার জন্য একটি নতুন আইনি কর্তৃত্ব দেবে। এটি অ্যারিজোনা, ক্যালিফোর্নিয়া, নিউ মেক্সিকো এবং টেক্সাসের প্রত্যন্ত অঞ্চলগুলোকে প্রভাবিত করবে, যেখানে অভিবাসীরা নিয়মিতভাবে অবৈধভাবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ করে। যেখানে অভিবাসীরা ফেডারেল অভিবাসন কর্মকর্তাদের কাছে আত্মসমর্পণ করে। অভিবাসন কর্মকর্তারা প্রায়শই তাদের ছেড়ে দেয়। কারণ তাদের কাছে আশ্রয়ের জন্য সবাইকে স্ক্রিন করার রিসার্সেস নেই।

সূত্র জানায়, বর্তমান মার্কিন আইন আমেরিকার মাটিতে বেশির ভাগ অভিবাসীকে আশ্রয়ের আবেদন করার আইনি অনুমতি দেয়। এমনকি তারা অবৈধভাবে প্রবেশ করলেও। অবৈধভাবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশকারী অভিবাসীদের আশ্রয় চাওয়ার অনুমতি দেওয়া হবে না এবং মেক্সিকো বা তাদের নিজ দেশে দ্রুত ডিপোর্টেশনের মুখোমুখি হবে। যারা নির্যাতনের বিরুদ্ধে জাতিসংঘের কনভেনশনের অধীনে সুরক্ষাসহ অন্য আরো কঠিন মানবিক আশ্রয়ের জন্য স্ক্রিনিং পাস করেন, তাদের জন্য ব্যতিক্রম হবে। যদিও হোয়াইট হাউস এবং আইনপ্রণেতাদের সমঝোতার প্রস্তাবটি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে অবৈধভাবে প্রবেশকারীদের শাস্তি দেবে। প্রকৃতপক্ষে মার্কিন সীমান্ত কর্মকর্তাদের ‘শাটডাউন’-এর আহ্বান জানানো হলেও সীমান্ত ক্রসিংগুলোতে প্রতিদিন ১ হাজার ৪০০-এর বেশি আশ্রয়প্রার্থী প্রক্রিয়া চালিয়ে যেতে পারবে বলে একটি সূত্র জানিয়েছে।

অন্যান্য প্রস্তাব

অন্যান্য সীমানা সম্পর্কিত প্রস্তাবগুলোর ফলে দ্রুত ডিপোর্টেশন বাড়ানো। বর্তমান বছরের দীর্ঘ সময়সীমার পরিবর্তে ছয় মাসের মধ্যে আশ্রয় সংক্রান্ত মামলার সিদ্ধান্ত নিতে অভিবাসন কর্মকর্তাদের নির্দেশ দেওয়া। আশ্রয় প্রার্থীদের প্রাথমিক সাক্ষাৎকারে আশ্রয়েয়র জন্য যোগ্যতা প্রমাণের মান বৃদ্ধি করা। সাধারণত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে কাজ করার তাৎক্ষণিক যোগ্যতাসহ তাদের মামলাগুলো সম্পূর্ণ পর্যালোচনার জন্য মুলতবি করা হবে। নতুন আইনে ছয় মাসের মধ্যে আশ্রয় সংক্রান্ত মামলার সিদ্ধান্ত নিতে হবে। তবে আশ্রয় প্রার্থীদের আইনজীবী প্রদানের প্রস্তাবও রয়েছে।

আলোচনার সবচেয়ে বিতর্কিত বিষয়গুলোর মধ্যে একটি হলো অভিবাসন প্যারোল ক্ষমতা, যা প্রেসিডেন্ট বাইডেন দেড় মিলিয়নেরও বেশি শরণার্থীকে পুনর্বহালে ব্যবহার করেছেন। আলোচকরা স্থল সীমান্তে প্যারোলের ব্যবহার সীমিত করার বিষয়ে আলোচনা করেছেন, কিন্তু হোয়াইট হাউস স্থল সীমান্তে প্যারোলের ব্যবহার সীমিত করতে চাপ দিচ্ছেন।

রাষ্ট্রপতি জো বাইডেন গত ২৬ জানুয়ারি শুক্রবার বলেছেন ডেমোক্র্যাট ও রিপাবলিকান দ্বিদলীয় কংগ্রেস সীমান্তে ক্রসিং বন্ধ করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। তিনি সিনেটে বর্তমানে আলোচিত অভিবাসন চুক্তির পেছনে তার সমর্থন দেওয়ার কথা বলেন। শুক্রবার রাতে প্রেসিডেন্ট বাইডেন বলেন, যা নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে, এটি যদি পাস হয়, তাহলে আমাদের সীমান্ত সুরক্ষিত করার জন্য সবচেয়ে কঠিন এবং ন্যায্য সংস্কার হবে। এটি আমাকে প্রেসিডেন্ট হিসেবে সীমান্ত বন্ধ করার জন্য একটি নতুন জরুরি ক্ষমতা দেবে। আমাকে সেই কর্তৃত্ব দেওয়া হলে আমি যেদিন বিলে স্বাক্ষর করবো, সেদিনই আমি তা ব্যবহার করবো। 

সীমান্ত ক্রসিং প্রতিরোধে বাইডেন-টেক্সাস মুখোমুখি

গত সপ্তাহে যুক্তরাষ্ট্র সুপ্রিম কোর্ট ইউএস বর্ডার পেট্রল এজেন্টদের মেক্সিকো সীমান্তে টেক্সাস স্টেট দ্বারা নির্মিত কাঁটাতার ও রিও গ্র্যান্ড নদী থেকে ভাসমান বাধা (বয়) অপসারণের আদেশ দেয়। মেক্সিকো বর্ডার দিয়ে অবৈধ সীমান্ত ক্রসিং প্রতিরোধের অংশ হিসেবে টেক্সাস স্টেট সীমান্তের স্থলপথে রেজারের তার ও রিও গ্র্যান্ড নদীতে বাসমান বেড়া (বয় ) দিয়েছে। টেক্সাস স্টেট যুক্তরাষ্ট্রের সুপ্রিম কোর্টের রায়কে না মেনে সীমান্তে আর্মি ন্যাশনাল গার্ড মোতায়েন অব্যাহত রেখেছে। ফেডারেল বর্ডার পেট্রোল ও ইমিগ্রেশন অফিসারদের সীমান্তের শেলবি পার্ক ও রিও গ্র্যান্ড নদীর তীরে অ্যাক্সেস দেওয়ার অনুরোধ জোরপূর্বক প্রত্যাখ্যান করেছে। বলা যায় সীমান্ত নিয়ে বাইডেন-টেক্সাস এখন মুখোমুখি। 

শেয়ার করুন