২৯ এপ্রিল ২০১২, সোমবার, ১০:১৯:১৮ পূর্বাহ্ন


একতরফা নির্বাচন রুখে দিতে বামদের আহ্বান
বিশেষ প্রতিনিধি
  • আপডেট করা হয়েছে : ২৯-১১-২০২৩
একতরফা নির্বাচন রুখে দিতে বামদের আহ্বান বাম জোটের যৌথ বৈঠকে নেতৃবৃন্দ


বাম গণতান্ত্রিক জোট, ফ্যাসিবাদবিরোধী বাম মোর্চা, জাতীয় মুক্তি কাউন্সিল ও জাতীয় গণফ্রন্টের এক যৌথ সভায় বলা হয়, বর্তমান আওয়ামী লীগের দলীয় সরকারের অধীনে একতরফা প্রহসনের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হলে চলমান স্বৈরাচারী ফ্যাসিবাদী দুঃশাসন আরও দীর্ঘায়িত হবে। জনজীবনের সংকট বাড়বে। জনগণ গণতান্ত্রিক অধিকারহীন পরিস্থিতির শিকার হবে। সভায় ফ্যাসিবাদী দুঃশাসন দীর্ঘায়িত করার একতরফা নির্বাচন বাতিল করা এবং এই একতরফা প্রহসনের নির্বাচন বর্জন ও রুখে দাঁড়ানোর জন্য জনগণের প্রতি আহ্বান জানানো হয়।

গত ২৮ নভেম্বর মঙ্গলবার বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি)’র কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে বাম গণতান্ত্রিক জোটের সমন্বয়ক ও বিপ্লবী কমিউনিস্ট লীগের সাধারণ সম্পাদক ইকবাল কবির জাহিদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এই সভায় উপস্থিত ছিলেন- জাতীয় গণফ্রন্টের কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক টিপু বিশ্বাস, বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি)’র সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স, সহকারী সাধারণ সম্পাদক মিহির ঘোষ, বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল (বাসদ)’র সাধারণ সম্পাদক বজলুর রশীদ ফিরোজ, বাসদ (মার্কসবাদী)’র সমন্বয়ক মাসুদ রানা, জাতীয় মুক্তি কাউন্সিলের সম্পাদক ফয়জুল হাকিম, গণতান্ত্রিক বিপ্লবী পার্টির শহীদুল ইসলাম সবুজ, জাতীয় গণফ্রন্টের কামরুজ্জামান ফিরোজ, ফ্যাসিবাদবিরোধী বাম মোর্চার সমন্বয়ক ও নয়াগণতান্ত্রিক গণমোর্চার সভাপতি জাফর হোসেন, বাংলাদেশের সাম্যবাদী আন্দোলনের সমন্বয়ক শুভ্রাংশু চক্রবর্তী, গণমুক্তি ইউনিয়নের সমন্বয়ক নাসির উদ্দিন আহমেদ নাসু, জাতীয় গণতান্ত্রিক গণমঞ্চের সভাপতি মাসুদ খান, বাসদ (মাহবুব)’র মাহিনউদ্দিন চৌধুরী লিটন, সাম্যবাদী আন্দোলনের মঞ্জুর আলম মিঠু প্রমুখ নেতৃবৃন্দ।

সভায়, সভা-সমাবেশের অধিকার হরণ, শহর ও গ্রামে বিরোধী দলের রাজনৈতিক কর্মীদের ওপর পুলিশ-সাদা পোশাকধারী ও সরকারি দলের সন্ত্রাসীদের হামলা, গুপ্ত হত্যা, গণগ্রেফতারের তীব্র নিন্দা জানিয়ে এর বিরুদ্ধে জনগণকে রুখে দাঁড়ানোর আহ্বান জানানো হয়। রাজনৈতিক কারণে আটককৃতদের নিঃশর্ত মুক্তি ও সকলের গণতান্ত্রিক অধিকারের নিশ্চয়তা প্রদানেরও দাবি জানানো হয়। সভায় নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের লাগামহীন মূল্যবৃদ্ধি ও জনজীবনের সংকটে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়। সভায় সিন্ডিকেট ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ, দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ ও সারাদেশে পূর্ণ রেশনিং ব্যবস্থা চালুর দাবি জানানো হয়। মূল্যবৃদ্ধি ও সিন্ডিকেট ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে সর্বত্র গণপ্রতিরোধ গড়ে তোলার আহ্বান জানানো হয়। 

সভায় গার্মেন্ট শ্রমিকদের দাবি অনুযায়ী ন্যূনতম মজুরি নির্ধারণ না হওয়ায় তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করে ঘোষিত মজুরি বাতিল ও বাঁচার মতো মজুরি নির্ধারণের দাবি জানানো হয়। সভায় গার্মেন্টস শ্রমিক হত্যার বিচার, নিহত প্রতি শ্রমিক পরিবারকে এক জীবনের সমান ক্ষতিপূরণ ও আহতদের উপযুক্ত ক্ষতিপূরণ প্রদানের দাবি জানান হয়। এছাড়া গ্রেফতারকৃত শ্রমিকদের নিঃশর্ত মুক্তি, মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারের দাবি জানানো হয়। সভায় গার্মেন্টসে ছাঁটাই বন্ধ, সর্বত্র নিরাপদ কর্মপরিবেশ ও অবাধ ট্রেড ইউনিয়ন অধিকারের নিশ্চয়তা প্রদানের দাবি জানানো হয়। সভায় দেশের রাজনীতি, অর্থনীতিতে সাম্রাজ্যবাদী, আধিপত্যবাদী বিদেশি শক্তির হস্তক্ষেপ ও শাসকশ্রেণীর নতজানু নীতির বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোরও আহ্বান জানানো হয়। 

সভায় ফ্যাসিবাদী শাসন দীর্ঘায়িত করার একতরফা নির্বাচন রুখে দাঁড়ানো, জনজীবনের সংকট দূর করতে দেশের শ্রমিক-কৃষক-ক্ষেতমজুর-ছাত্র-যুব-নারী, নিপীড়িত জাতিসত্তাসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষকে ঐক্যবদ্ধ করে গণআন্দোলন-গণসংগ্রাম গড়ে তোলায় যুগপৎ আন্দোলন গড়ে তুলতে ঐক্যমত পোষণ করা হয়।

শেয়ার করুন