২৯ এপ্রিল ২০১২, সোমবার, ৬:২৩:০৩ অপরাহ্ন


জিম্বাবুয়ের সঙ্গে কী করবে বাংলাদেশ?
সালেক সুফী, অস্ট্রেলিয়া থেকে
  • আপডেট করা হয়েছে : ২৯-১০-২০২২
জিম্বাবুয়ের সঙ্গে কী করবে বাংলাদেশ? টিম বাংলাদেশের একটি সাফল্যের মুহুতে/ফাইল ছবি


একটা প্রশ্ন খুব তাড়িয়ে বেড়াচ্ছে। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে কী করবে বাংলাদেশ? এ প্রশ্নটা কিছুদিন আগেও উঠতোনা। কিন্তু টিম বাংলাদেশের অব্যহত বাজে পারফরমেন্সে এখন দুর্বলতম দেশগুলোর সঙ্গেও ভয় হচ্ছে। প্রতিপক্ষ জিম্বাবুয়ে। কিন্তু এ দলটার বিরুদ্ধেও রাজ্যের টেনশন। এর পেছনে বড় কারন, শুধু নিজেদের বাজে পারফরমেন্স নয় সাকিবদের, সঙ্গে সদ্য পাকিস্তানকে হারানো জিম্বাবুয়ে এখন উড়ছে সিকান্দার রাজা,চাকাবারা। ফলে দুশ্চিন্তার কালো মেঘ বাংলাদেশের আকাশে ওই জিম্বাবুয়েকে নিয়েই। 

আসলে সেমির স্বপ্নটাই মুল নয়। বাংলাদেশ অন্তত দুর্বল দেশগুলোর বিপক্ষেও জয় পাক এটা এখন বড় প্রত্যাশা হয়ে দাড়িয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে আগামীকাল ব্রিসবেনের ঐতিহাসিক গ্যাবা মাঠে গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচ মুখোমুখী চীরপ্রতিদ্বন্দি জিম্বাবুয়ে দলের সঙ্গে। দক্ষিণ আফ্রিকার সঙ্গে সবচেয়ে বড় ব্যাবধানে হেরে বাংলাদেশ দলের মনোবল এখন তলানিতে। অন্য দিকে কোয়ালিফিকেশন পর্যায়ে অনিশ্চিত থাকার পরেও মূল পর্বে দক্ষিণ আফ্রিকার সঙ্গে বৃষ্টিবিঘ্নিত ম্যাচে পয়েন্ট পেয়েছে। এরপ পাকিস্তানকে হারিয়ে জিম্বাবুয়ে এখন ভাল অবস্থানে।


এ ম্যাচে বাংলাদেশকে বড় ব্যাবধানে হারিয়ে সেমী ফাইনালে ওঠার মিশনে  এখন ওরা। বাংলাদেশের কিন্তু মর্যাদা রাখার লড়াই। হারানোর যা সব কিছু হারিয়েছে। এখন সুযোগ শেষ সম্মান টুকু রক্ষা করার। পাকিস্তান বা ভারতের সাথে এখনও খেলা বাকী। কিন্তু ওসব ম্যাচে একমাত্র পরিণতি পরাজয়। খেলায় হারলেও কিন্তু বার বার বিতর্কে জরাচ্ছে মাঠের বাইরের কার্যক্রমে বাংলাদেশ। দলে শৃংখলার অভাব দেখা দিয়েছে। বিশেষ করে অধিনায়ক সাকিব আল হাসান। এগুলো ম্যাচে প্রভাব পড়তেও পারে!  

বাংলাদেশ টি ২০ বিশ্বকাপে  ২০২২ যতটুকু খেলেছে, এযাবৎ ক্রিকেট এক্সপার্টরা বলছেন, এই বিশ্বকাপে কোয়ালিফিকেশন রাউন্ড আর মূল পর্বে খেলা ১২ টি দলের মধ্যে বাংলাদেশের অর্জন হয়তো তলানির দিকে। সৌভাগ্য, বাংলাদেশের কোয়ালিফিকেশন রাউন্ড খেলতে হয়নি। না হলে বাংলাদেশ মূল পর্বে উঠতো কিনা তার যথেষ্ট সন্দেহের অবকাশ রাখে। অপেক্ষাকৃত সহজ গ্রুপে নেদারল্যান্ড আর জিম্বাবুয়েকে পেয়ে বাংলাদেশ হয়তো ভেবেছিলো অন্তত দুটি ম্যাচ জিতবে।  নেদরল্যান্ডকে হারাতেই হাপুস হুপুস করেছে।  দক্ষিণ আফ্রিকার সঙ্গে দাঁড়াতেই পারে নি। 

বাংলাদেশের দল নির্বাচন, পরিকল্পনা ,কৌশল নিয়ে প্রতিদিন কথা , লেখা হচ্ছে। বিসিবি বিশ্ব কাপের মতো আসরে শিক্ষানবিশ দল পাঠিয়ে তামাশা করেছে। না আছে টপ অর্ডার ব্যাটিং বলে কিছু , না আছে মিডল অর্ডার বা লেট অর্ডার। এরপর টি২০ ম্যাচে যে হার্ট হিটার প্রয়োজন। বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানদের কব্জিতে সে জোড়ই নেই। ওভাবে প্রাকটিস করারও সুযোগ হয়নি তাদের কোনোদিনও। দলের চলমান ব্যাটিং টি ২০ বিশ্ব কাপে অচল। সেটি আর বলার অবকাশ রাখে না। অথচ তামিম , মুশফিককে বিরক্ত করে অবসর ঘোষণা করাতে বাধ্য করলো বিসিবি। কি লাভ হলো মাহমুদুল্লাহকে অবজ্ঞা করে? ইয়াসির ,সোহান কি ওদের লেজের সমান যোগ্যতা সম্পন্ন? অভিজ্ঞতার কথা নাই বা বলি। শান্ত , সৌম্যকে দিয়ে ওপেনিং চলে না। 

তবুও আশা করি ওরা ব্রিসবেন ম্যাচে ভালো সূচনা দিবে। কিন্তু লিটনকে কেন ওপেনিংয়ে খেলানো হচ্ছে না? সাকিবের ব্যাটিং বোলিং কোনোটাই সাকিবের মতো হচ্ছে না। আফিফকে দিয়ে তিনে ,বা চারে খেললে ও সময় পাবে লম্বা ইনিংস খেলার। সোহান আনাড়ির মতো খেলছে।  আসলে মিডল এবং লেট অর্ডারে মুশফিক ,রিয়াদকে মিস করছে বাংলাদেশ। ওপেনিংয়ে তামিমের বিকল্প হয়নি এখনও। ওই স্থানে এখনও তামিম অতুলনীয়। 

বোলিংয়ে ধারাবাহিকতা নেই। দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে বোলিং দেখে মনে হয়েছে গলির ছেলেরা বোলিং করছে। এই বোলিং নিয়ে জিম্বাবোয়ের বিরুদ্ধেও ভরসা নাই। পাকিস্তান , ভারত ওদের শিক্ষা দিবে। কষ্ট লাগে কথা গুলো লিখে।  বাংলাদেশ কিন্তু এই বিশ্ব কাপে সবচেয়ে কম পরিকল্পিত দল।  এমনকি শিক্ষানবিস দলটির শিক্ষা হচ্ছে না। কাল গ্যাবায় থাকবো আমার তিন প্রজন্ম। আমি, ছেলে ,নাতি। বাংলাদেশ জিতলে ভালো লাগবে। জেতাটাই স্বাভাবিক। তবে কাজটা সহজ হবে না। তেতে আছে জিম্বাবুয়ে। আমি খেলোয়াড়দের দোষ দিবো না। এক দল অসহায় ভেড়ার দলকে পাঠানো হয়েছে যেন কসাই খানায়।  

তবু বাংলাদেশকে ভালোবাসি।  চাই ওরা অন্তত কালকের ম্যাচটি জিতে সম্মান রক্ষা করুক। নাহলে যে আম ছালা দুটোই যাবে বাংলাদেশের।


শেয়ার করুন