০২ মে ২০১২, বৃহস্পতিবার, ১১:৫৭:৩০ অপরাহ্ন


ফাইনাল ধাক্কা দেয়ার সময় উপস্থিত : সিপিবি
বিশেষ প্রতিনিধি
  • আপডেট করা হয়েছে : ২৪-০১-২০২৪
ফাইনাল ধাক্কা দেয়ার সময় উপস্থিত : সিপিবি সিপিবির বিক্ষোভ সমাবেশ


সিপিবি’র সাবেক সভাপতি মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম বলেছেন, দ্বিদলীয় মেরুকরণের রাজনীতিক কাঠামোর দেউলিয়াপনা চূড়ান্তভাবে প্রমাণিত হয়েছে। শাসকশ্রেণি বর্তমান সরকারকে দিয়ে বা অন্য কোনো পন্থায় তাদের কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠা চেষ্টায় সফল হবে না। ঘটনাবলি তার প্রমাণ করেছে। রাজনীতিতে নতুন এই দৃশ্যপটের পটভূমিতে ফাইনাল ধাক্কা দেয়ার সময় আজ উপস্থিত। ২০০১ সালের ২০ জানুয়ারি পল্টন ময়দানে অনুষ্ঠিত সিপিবি’র মহাসমাবেশে বোমা হামলায় নিহত শহীদদের স্মরণে সমাবেশে তিনি একথা বলেন। 

মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম আরো বলেন, আওয়ামী ফ্যাসিস্ট দুঃশাসনের বিরুদ্ধে সংগ্রামকে আজ দুর্বার করতে হবে। ‘ভাত ও ভোটের’ সংগ্রামকে অপ্রতিরোধ্য করে তুলে বাম গণতান্ত্রিক বিকল্প শক্তির সরকার প্রতিষ্ঠার সুস্পষ্ট লক্ষ্য নিয়ে এগিয়ে যাওয়াই আজকের সবচাইতে গুরুত্বপূর্ণ কর্তব্য। সংগ্রামকে এই নতুন পর্বে কমিউনিস্ট পার্টিকেই আরও শক্তভাবে হাল ধরতে হবে। 

দিবসটি উপলক্ষে ওইদিন সকাল সাড়ে ১০টা থেকে সাড়ে ১১টা পর্যন্ত শহীদদের স্মরণে সিপিবি’র কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে নির্মিত অস্থায়ী শহীদ বেদীতে পুষ্পমাল্য অর্পণ করা হয়। এরপর অনুষ্ঠিত সমাবেশে আরো বক্তব্য রাখেন সিপিবি সভাপতি মোহাম্মদ শাহ আলম, সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স, সহকারী সাধারণ সম্পাদক মিহির ঘোষ। অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য মানবেন্দ্র দেব। 

মোহাম্মদ শাহ আলম বলেন, যে প্রতিক্রিয়াশীল অপশক্তি হাতে আমাদের কমরেডরা ২০ জানুয়ারি শহীদ হয়েছিল এই সরকারের আমলে তারা আরো শক্তিশালী হয়েছে। এরশাদ স্বৈরাচারের পতনের পর গত ৩৩ বছরে আওয়ামী লীগ-বিএনপি বারবার ক্ষমতায় এসেছে কিন্তু গণতন্ত্র আসেনি। এদের অপরাজনীতি, গণতন্ত্র ও গণবিরোধী রাজনীতি দেশ ও জাতিকে জিম্মি করে রেখেছে। এর থেকে মানুষ মুক্তি চায়। তিনি বলেন, এরশাদ স্বৈরাচারের পতনের মধ্য দিয়ে মানুষ তার ভোটাধিকার ও গণতন্ত্রকে পুনরুদ্ধার করেছিল তা আজ নির্বাসনে চলে গেছে। গত ৭ জানুয়ারি যে একতরফা ও প্রহসনের নির্বাচন হয়েছে জনবিচ্ছিন্ন সরকার আরো জনবিচ্ছিন্ন হয়েছে, সংসদ নিরঙ্কুশভাবে দখল হয়ে গেছে ব্যবসায়ীদের হাতে। লুটেরা-আমলা-ব্যবসায়ী-রাজনীতিবিদ ও সামাজিক দুর্বৃত্তরা যে অর্থনীতি-রাজনীতির ও সমাজের পরিচালক হয়ে বসেছে। তাদের হাত থেকে অর্থনীতি-রাজনীতি ও সমাজকে মুক্ত করতে হবে এবং গণতন্ত্রকে পুনরুদ্ধার করার জন্য সর্বাত্মক ও বহুমুখী লড়াইয়ে কমিউনিস্ট পার্টি ও বামপন্থীরা নামবে। শাসকশ্রেণির দুঃশাসন হঠাতে জন্য শ্রমিক-কৃষক, গ্রাম-শহরের গরিব-মেহনতি মানুষের গণঅভ্যুত্থান গড়ে তুলতে হবে। 

পার্টির সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স বলেন, ৭ জানুয়ারি ‘আমি ও আমিই’র নতুন ধরনের প্রহসনের নির্বাচনের মধ্য দিয়ে দেশে একদলীয় কর্তৃত্ববাদী শাসনের নতুন পর্ব শুরু হয়েছে। এর অবসান ছাড়া দেশে গণতন্ত্র, জনগণের ভাত-কাজের অধিকার প্রতিষ্ঠা করা যাবে না। তিনি বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষকে নিজ নিজ দাবিসহ ভোটাধিকার, গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার দাবিতে ঐক্যবদ্ধ হয়ে গণআন্দোলন গণসংগ্রাম গড়ে তোলার আহ্বান জানান। তিনি বলেন, দেশ ও দেশের মানুষ আজ গণতন্ত্রহীনতা, পুঁজিবাদী লুটপাটতন্ত্র, সাম্প্রদায়িকতা ও সাম্রাজ্যবাদী আধিপত্যবাদী অপশক্তির কবলে। নীতিহীন দুর্বৃত্তায়িত রাজনীতি এদের রক্ষক। এরাই শাসক দলগুলোর চালকের আসনে বসে আছে। এর থেকে দেশবাসীকে মুক্ত করতে নীতিনিষ্ঠ বাম গণতান্ত্রিক শক্তির পতাকাতলে সচেতন দেশবাসীকে সমবেত হতে হবে। তিনি বলেন, কর্তৃত্ববাদী শাসন অব্যাহত থাকলে লুটপাটের ধারা আরও বাড়বে। ইতোমধ্যে নিত্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধি, বিভিন্ন খাতে মূল্য সমন্বয়ের নামে নিয়মিত মূল্যবৃদ্ধি অব্যাহত রাখার আলামত শুরু হয়েছে। প্রার্থীদের হলফনামায় সম্পত্তির যেসব তথ্য দেওয়া হয়েছে তাতে জনমনে প্রশ্ন উঠছে, নির্বাচিত প্রতিনিধিরা সংসদে দায়িত্ব পালন করেন নাকি ঐ পদ ব্যবহার করে ব্যবসা-বাণিজ্য করেন? তিনি ঐসব সম্পদের উৎস খুঁজে বের করা এবং এর বাইরে আরও সম্পদ আছে কিনা তা তদন্তের দাবি জানান।

শেয়ার করুন