পরিবর্তন আসছে জামায়াতের শীর্ষ নেতৃত্বে। বর্তমান আমির ড. শফিকুর রহমানের এ মেয়াদ শেষ হয়ে যাবে আগামী ডিসেম্বরে। ওই সময় নতুন আমির নির্বাচিত হবে। তবে চাইলে ড.শফিককেও কন্টিনিউ করা হতে পারে। যদি ভোটের মাধ্যমে তাকে কন্টিনিউ করতে চান সবাই। নতুবা নতুন আমির। কিন্তু আমির নির্বাচনটা এমন এক মুহূর্তে হতে যাচ্ছে, যে এর কদিন পর ফেব্রুয়ারিতে গুরুত্বপূর্ণ এক নির্বাচন। অন্য যে কোনো সময়ের চেয়ে এ সময়ের গুরুত্ব অনেক বেশি। এবার জামায়াত অনেক আসন লাভের আশা করে আসছে।
জানা গেছে, দলীয় গঠনতন্ত্র অনুযায়ী তিন বছর পর পর অনুষ্ঠিত হয় আমির নির্বাচন। এবারও নির্দিষ্ট সময়ে সেই নির্বাচন প্রক্রিয়া শুরু হতে যাচ্ছে। জামায়াত সূত্র জানায়, নির্বাচনের আগে কেন্দ্রীয় মজলিসে শুরার সদস্যরা তিনজনের একটি সম্ভাব্য আমির প্যানেল নির্ধারণ করেন। ওই প্যানেল থেকে ভোটাভুটির মাধ্যমে যে কেউ নির্বাচিত হতে পারেন। তবে রুকনরা চাইলে এর বাইরের কাউকেও ভোট দিতে পারেন। যদিও দলটির নির্বাচনের রীতি অনুযায়ী সাধারণত ওই প্যানেল থেকেই একজন নির্বাচিত হয়ে থাকেন। প্যানেলের নামগুলো ভোট শুরুর আগপর্যন্ত গোপন রাখা হয়।
ডা. শফিকুর রহমান ২০১৯ সালের ১২ নভেম্বর প্রথমবারের মতো আমির নির্বাচিত হন। ২০২০ সালের ৫ ডিসেম্বর শপথ গ্রহণের মাধ্যমে শুরু হয় তাঁর প্রথম মেয়াদ। পরে ২০২২ সালের ২৭ অক্টোবর দ্বিতীয় মেয়াদে পুন:নির্বাচিত হন তিনি। এবার নির্বাচিত হলে এটি হবে তাঁর টানা তৃতীয় মেয়াদ।
দলীয় নেতারা জানান, ডা. শফিকুর রহমান মাঠ পর্যায়ে সক্রিয়তা, সিদ্ধান্ত গ্রহণে গতি ও মানবিক সহমর্মিতার কারণে দলে এবং সমর্থকদের মধ্যে জনপ্রিয়তা অর্জন করেছেন। বিশেষ করে ৫ আগস্টের পর দলীয় কার্যক্রমে তাঁর ভূমিকা ইতিবাচকভাবে নজর কাড়ে। গত ১৯ জুলাই রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে দলের মহাসমাবেশে অসুস্থ হয়ে পড়েন তিনি। পরে অপারেশন হলে দীর্ঘদিন বাসায় বিশ্রাম শেষে তিনি আবারও নিয়মিত সভা-সমাবেশে অংশ নিচ্ছেন।
জামায়াতের এক নেতা বলেন, বর্তমান আমির দেশকে নতুন স্বপ্ন দেখাচ্ছেন। ভালো কাজ করছেন। দলের রুকনরা আবারও তাঁকে দলের আমির হিসেবে বেছে নিতে পারেন। যেহেতু জামায়াতে কেউ কতবার আমির হতে পারবেন তা নির্দিষ্ট নয়। তবে রুকনরা চাইলে এর বাইরেও কেউ আমির হতে পারেন।
জানা গেছে, জামায়াতের আমির নির্বাচনের প্রক্রিয়া মোটামুটি দীর্ঘ। সারা দেশে ছড়িয়ে থাকা দলের রুকনদের গোপন ভোটে তিনি নির্বাচিত হয়ে থাকেন। তাঁদের ভোটগ্রহণ ও গণনা আগামী তিন মাসের মধ্যে শেষ হবে। ডিসেম্বরেই নতুন আমিরের নাম ঘোষণার পর তিনি শপথ নিয়ে দায়িত্ব গ্রহণ করবেন।
জামায়াতের আমির নির্বাচনের প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন দলের কেন্দ্রীয় সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা এ টি এম মাসুম। নির্বাচনী কমিটিতে আরো আছেন সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল অ্যাডভোকেট মোয়াজ্জেম হোসেন হেলাল। তিনি বলেন, ‘জামায়াতে ইসলামীর গঠনতন্ত্র অনুযায়ী তিন বছর পর পর আমির নির্বাচন হয়। নির্বাচনী প্রক্রিয়া সাধারণত ভোটগ্রহণের তিন মাস আগে থেকেই শুরু হয়।’
উল্লেখ্য, জামায়াতের আমির দলের রুকনদের গোপন ভোটে নির্বাচিত হলেও সেক্রেটারি নির্বাচিত হন আমিরের পছন্দে। অর্থাৎ দলের আমির নিজের পছন্দমতো কাউকে সেক্রেটারি মনোনীত করে থাকেন।