১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫, শনিবার, ৬:২৭:৩৯ পূর্বাহ্ন


জাতীয় সংখ্যালঘু ফাউন্ডেশন ও মন্ত্রণালয় প্রতিষ্ঠার দাবি
প্রধানমন্ত্রীর সাথে ঐক্য পরিষদ নেতৃবৃন্দের বৈঠক
দেশ রিপোর্ট
  • আপডেট করা হয়েছে : ২৯-০৯-২০২২
প্রধানমন্ত্রীর সাথে ঐক্য পরিষদ নেতৃবৃন্দের বৈঠক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা


নিউইয়র্ক প্রবাসী বাংলাদেশি সংখ্যালঘু নেতৃবৃন্দের পাঁচ সদস্য বিশিষ্ট  একটি দল গত ২২ সেপ্টেম্বর সাধারণ পরিষদের ৭৭তম অধিবেশনে অংশগ্রহণের জন্য বর্তমানে নিউইয়র্ক সফররত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছে। এই মতবিনিময় ম্যানহাটনের লটে প্লেস হোটেলে অনুষ্ঠিত হয়। মতবিবিময় সভায় ঐক্য পরিষদ নেতৃবৃন্দ প্রধানমন্ত্রীর কাছে ১০ দাবি উত্থাপন করেন। ঐক্য পরিষদ নেতৃবৃন্দ বাংলাদেশে যুগ যুগ ধরে অব্যাহত এবং ক্রমবর্ধমান সংখ্যালঘু নির্যাতনের একটি টেকসই সমাধানকল্পে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য অনুরোধ জানান। এই প্রতিনিধিদলে ছিলেন যুক্তরাষ্ট্র ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক ও কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলার প্রভাষক ডক্টর দ্বিজেন ভট্টাচার্য্য, জগন্নাথ হল অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশনের চেয়ারম্যান ও মহামায়া মন্দিরের প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট শ্যামল চক্রবর্তি, ইউনাইটেড হিন্দুজ অব আমেরিকার সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট ও বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদের ডিরেক্টর ভজন সরকার,  যুক্তরাষ্ট্র ঐক্য পরিষদের যুগ্ম সম্পাদক ও বাংলাদেশে পূজা সমিতির ডিরেক্টর বিষ্ণু গোপ এবং মূলধারার রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত, যুক্তরাষ্ট্র যুব ঐক্য পরিষদের সাবেক সভাপতি ডক্টর দিলীপ নাথ।

ডক্টর দিলীপ নাথের উদ্যোগে আয়েজিত দেড় ঘণ্টারও অধিক সময় স্থায়ী উক্ত সভায় প্রতিনিধি দলের প্রত্যেকের বক্তব্য প্রধানমন্ত্রী মনযোগ সহকারে শোনে তাঁদের দাবি ও উদ্বেগের বিষয় নিয়ে বিস্তারিতভাবে আলোচনা করে মতামত ব্যক্ত করেন এবং  বিভিন্ন পরামর্শ দেন। তিনি প্রতিনিধিদের স্পষ্ট ভাষায় বলেন যে, বাংলাদেশে সকল নাগরিকের সমান অধিকার রয়েছে এবং সংখ্যালঘু নির্যাতকদের বিচার সব সময়ই হচ্ছে এবং আইনের হাত থেকে কোনো অপরাধীই রেহাই পাবে না। অত্যন্ত সৌহার্দ্যপূর্ণ পরিবেশে দীর্ঘ সময়ব্যাপী এই আলোচনায় হেইট ক্রাইম ও স্পিচ, সংখ্যালঘু সুরক্ষা আইন, পুজোর সময় নিরাপত্তা জোরদার করা প্রভৃতি বিষয় নিয়ে ফলপ্রসূ আলোচনা হয়।

প্রধানমন্ত্রী বরাবরে লিখিত যে স্মারকলিপিটি হস্তান্তর করা হয়, তাতে যে ১০টি সুপারিশনামা রয়েছে সেগুলো: (১) একটি বিচার বিভাগীয় কমিশন গঠন করে, দেশ স্বাধীন হওয়ার পর থেকে এ’ পর্যন্ত সংঘটিত সকল সংখ্যালঘু নির্যাতনের শ্বেতপত্র তৈরি করে প্রকাশ করুন, এবং অবিলম্বে বিশেষ ট্রাইব্যুনালে জজ সাহাবুদ্দীন কমিশন রিপোর্টে চিহ্নিত সংখ্যালঘু নির্যাতকদের বিচার করে দৃষ্টান্ত মূলক শাস্তি প্রদানের প্রক্রিয়া শুরু করুন। আর যারা নির্যাতনের শিকার তাদের সার্বিক পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করে ক্ষতিপূরণ দিন। (২) ডিজিটাল সিকিউরিটি আইনে ‘ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাতে’র মিথ্যা অজুহাতে আটক এবং এই ‘অপরাধে’ শাস্তিপ্রাপ্ত সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ভুক্ত সকলকে  অবিলম্বে মুক্তি দিয়ে, পুলিশকে এই অমানবিক নিষ্ঠুরতা বন্ধ করতে নির্দেশ দিন। (৩) ইউনেস্কো স্বীকৃত বাঙালির সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য দুর্গাপুজো/শারদোৎসবসহ সকল প্রধান পূজাপার্বণে কঠোর নিরাপত্তার ব্যবস্থা করুন। (৪) একটি হেইট ক্রাইম ও স্পিচ আইন পাস করে সকল সংখ্যালঘু নির্যাতকদের ওই আইনে বিচার করে কঠোর শাস্তি দিন। (৫) একটি জাতীয় সংখ্যালঘু কমিশন, সংখ্যালঘু মন্ত্রণালয় গঠন করুন এবং একটি সংখ্যালঘু সুরক্ষা আইন পাশ করুন। (৬) ইসলামিক ফাউন্ডেশনের আদলে হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান ফাউন্ডেশন গঠন করুন। (৭) সংখ্যালঘু নির্যাতক ও এর সহায্যকারীদের নির্বাচনে নমিনেশন দেয়া থেকে বিরত থাকুন। (৮) অর্পিত সম্পিত্তি প্রত্যার্পণ প্রক্রিয়া ত্বরান্বিত করতে ব্যবস্থা গ্রহণ করুন। (৯) পার্বত্য শান্তিচুক্তির পূর্ণ বাস্তবায়ন করুন। (১০) ১৯৭২ সালের সংবিধান পুনর্বহাল করে দেশের সকল নাগরিকের সমঅধিকার প্রতিষ্ঠা করুন।

শেয়ার করুন